Ajker Patrika

বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে যমুনা নদীর পানি প্রবাহিত

প্রতিনিধি, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) 
বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে যমুনা নদীর পানি প্রবাহিত

কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত কয়েক দিন ধরেই যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনা নদীর পানি। এতে যমুনা নদীর চরগুলোর বেশির ভাগই বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

এলাকাগুলোর মধ্যে উপজেলার দক্ষিণ শংকরপুর, পূর্বধারাবর্ষা, পশ্চিম ধারাবর্ষা, কেষ্টিয়ারচর, কোমরপুর, চানবাড়ী, মাঝবাড়ী, কালাইহাটা, পৌতিবাড়ী, চর মাঝিরা, হাতিয়া বাড়ী, কালিয়ান, আগ বোহাইল, নিজ বোহাইল, আওলাকান্দি, ভাংগারছে ও উত্তর বেণীপুর, দক্ষিণ বেণীপুর, মিঠনেরপাড়া, কাজলা, বাওইটোনা, কুড়িপাড়া, পাকেরদহ, উত্তর টেংরাকুড়া, দক্ষিণ টেংরাকুড়া, পাকুড়িয়া, ময়ুরেরচর, ট্যাকামাগুড়া, চর ঘাগুয়া,  জামথল, বেড়াপাঁচবাড়ীয়া ফাজিলপুর, বহুলাডাঙ্গা, চালুয়াবাড়ী, আওচারপাড়া, সুজালিরপাড়া, শিমুলতাইড়, তেলিগাড়ী, কাকালীহাতা, হরিরামপুর, ভাংগরগাছা, ধারাবরির্ষা, বিরামেরপাঁচগাছি, হাটবাড়ী, দলিকা, মানিকদাইড়, কর্ণিবাড়ী, শনপচা, মুলবাড়ী, নান্দিনাচর, ডাকাতমারা, তালতলা, মিলনপুর, শালুখা, চর বাটিয়া, গজারিয়া, দারনা, হাটশেরপুর, ধনারপাড়া, শিমুলবাড়ী, চকরতিনাথ, করমজাপাড়া, নয়াপাড়া, কর্ণিবাড়ী, ধরবন্ধ, দিঘাপাড়া, ক্ষেপির পাড়াসহ ১১২টি চরের আশপাশে পানি এসে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

জানা গেছে, কোথাও কোথাও লোকালয়ে ও বাড়িতে পানি উঠেছে। এতে অনেকে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। এসব চরগুলোর জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জমিতে থাকা আমন ধানসহ বিভিন্ন জাতের ধান, বীজতলা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এসব চরগুলোর বিস্তীর্ণ এলাকার পশুচারণভূমি পানিতে ডুবে গেছে। 

এ বিষয়ে কাজলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাসেদ জামান বলেন, আমার ইউনিয়নের সকল চরের আমন ধান এবং স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধানের বীজতলাগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

উপজেলার চালুয়াবাড়ীর চেয়ারম্যান শওকত আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের ২৭টি চরের অধিকাংশ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। নিচু বাড়িগুলোতে পানি উঠেছে। এসব এলাকার জনসাধারণ এবং গবাদিপশু সীমাহীন দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছে। 

সারিয়াকান্দির দায়িত্বে থাকা গেজ রিডার পরশুরাম বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত যমুনা নদীতে সারিয়াকান্দি পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, বাঙালি নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১৪ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার। যা বিপৎসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

সারিয়াকান্দিতে দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ তাসকিয়া বলেন, গত কয়েক দিন ধরেই যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বাঙালি নদীতে পানি কমছে। যেহেতু উজানে পানি বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে। তাই সারিয়াকান্দিতে পানি আরও বেড়ে প্রবল বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, এভাবে পানি বাড়লে আজকের মধ্যেই পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। পানি বৃদ্ধিতে উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কাজলা, কর্নিবাড়ী, কামালপুর, শেরপুরের কিছু অংশ, সদর ইউনিয়নের কিছু অংশ এবং বোহাইল ইউনিয়নের চরগুলোর নিচু এলাকার ফসলগুলো নিমজ্জিত হয়েছে। পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলে কৃষকেরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকায় সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়া বলেন, এ অসময়ে বন্যা হলে উপজেলার বাঙালি এবং যমুনা নদী সংলগ্ন কৃষকেরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ পানিবন্দী হবেন। ক্ষতিগ্রস্তদের যথেষ্ট সরকারি সহযোগিতা প্রদান করতে আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত