Ajker Patrika

সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬: ০৩
Thumbnail image

বগুড়ার শেরপুরে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে তিনজনকে গণধোলাই দিয়েছে ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে পুলিশ গিয়ে তাঁদের আটক করে। 

গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলার শুবলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। 

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব বগুড়া জেলার সভাপতি আব্দুল হালিম, স্বাধীন বাংলা নিউজ অনলাইন পত্রিকার বগুড়া জেলা প্রতিনিধি পরিচয়ে মুক্তার শেখ, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার শেরপুর প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া রায়হান কমল ও উপজেলার ঘোলাগাড়ী ঘুটু বটতলা এলাকার মো. মাসুদ। 

এ ছাড়া মামলার এজাহারে তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে শুবলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলাম মামলাটি দায়ের করেন। 

শেরপুর থানার পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এই চক্র অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। গত রোববার দুপুরে আসামিরা উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হুসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। পরে তাঁরা ১ হাজার টাকা নেন। 

একই দিন বেলা ২টার দিকে শুবলী কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে দেড় হাজার টাকা নিয়েছেন। একই ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি পান ৫ হাজার টাকা। বাকি টাকা পরের দিন নেওয়ার কথা বলে তাঁরা চলে আসেন। পরদিন সোমবার দুপুরে একই গ্রুপ শুবলী উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলামের কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। 

এ ঘটনা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা জানাজানি করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এলাকাবাসী। এ সময় আবদুল হালিম, মুক্তার শেখ ও রায়হান পারভেজকে ক্ষুব্ধ মানুষ আটক করে গণধোলাই দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সংঘবদ্ধ গ্রুপের মো. মাসুদসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিনজন ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তিনজনকে ঘেরাও করে রাখে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টায় তাঁদের পুলিশে সোপর্দ করে। 

শুবলী কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা প্রদানকারী মাসুদ রানা বলেন, ‘রোববার দুপুরে আমি অফিসরুমে তালা দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যাই। এই সুযোগে ওই ব্যক্তিরা ভিডিও ধারণ করেন। আমি ফিরে এলে তাঁরা আমাকে ব্ল্যাকমেল করে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমার কাছে থাকা দেড় হাজার টাকা দিয়েছি। তাঁরা একইভাবে আমার অফিসের স্বাস্থ্য সহকারী জাহানারা বেগমের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। সোমবার তাঁরা বাকি টাকা নিতে এলে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা তাঁদের ওপর হামলা করে।’ 
 
মামলার বাদী শুবলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘রোববার আমি ছুটিতে ছিলাম। আমাকে না পেয়ে তারা সোমবার স্কুলে এসে গাছ কাটা, জাল সনদ ইত্যাদি আপত্তিকর প্রশ্ন তুলে আমাকে ও অন্য শিক্ষকদের হুমকি দিয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। এ সময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা এসে তাদের ঘেরাও করে ফেলে। খবর পেয়ে পাশেই শুবলী কমিউনিটি ক্লিনিক ও সুবলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লোকজনও ছুটে আসেন। নিমেষেই সেখানে সহস্রাধিক লোক জড়ো হয়ে তাদের মারধর শুরু করে। আমরা তাদের রক্ষা করে থানায় খবর দিই।’ 

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত