Ajker Patrika

কাদিয়ানিদের ওপর হামলাকারীরা রেলমন্ত্রীর সঙ্গেই ছিলেন: হাফিজ উদ্দিন

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৩, ২২: ৪৮
কাদিয়ানিদের ওপর হামলাকারীরা রেলমন্ত্রীর সঙ্গেই ছিলেন: হাফিজ উদ্দিন

কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের বার্ষিক ‘সালানা জলসা’ বন্ধ করা নিয়ে পঞ্চগড় সদরের আহমদনগর ও বোদা উপজেলার শালশিরি গ্রামে কাদিয়ানিদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

পরিদর্শনের পর আজ বুধবার বিকেলে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘১৭৯টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, জনগণের কাছে তা স্পষ্ট। কয়েক দিন আগে রেলমন্ত্রী যখন এখানে আসেন, তখন হামলাকারীরা তাঁর সফরসঙ্গী ছিল। আমরা আশা করেছিলাম প্রশাসন তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করবে। কিন্তু তা করা হয়নি।’ 

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের থেকে অনুমতি নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কাদিয়ানি সম্প্রদায় বাৎসরিক জলসার আয়োজন করেছিল। অথচ হামলা ও অগ্নিসংযোগের সময় প্রশাসনে ফোন করলেও প্রশাসন এগিয়ে আসেনি। পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হামলার দৃশ্য দেখেছে। তিন ঘণ্টা পর ডিসি-এসপি এসে দুষ্কৃতকারীদের খানিকটা প্রতিরোধ করেছে। তার আগেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব আলামত দেখে বোঝা যায়, দেশে গণতন্ত্র নাই, আইনের শাসন নাই, গণমানুষের কোনো অধিকার নাই। মানবতা প্রতিদিনই লুণ্ঠিত হচ্ছে।’ 

হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, ‘সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি মানবাধিকার বিরোধী রাষ্ট্রযন্ত্র রূপে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন সবাই এক বাক্যে বলেছে, বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের কোনো অধিকার নেই। গুম, খুন, হত্যা এটি নিত্যদিনের ব্যাপার। সরকার নির্বাচিত নয়। নিশিরাতে ব্যালটবাক্স ভরে দিয়ে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে না দিয়ে তারা নিজেদের নির্বাচিত বলে দাবি করছে। এহেন পরিস্থিতিতে একধরনের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চলবে—এটাই স্বাভাবিক। কারণ, প্রশাসনের কোনো জবাবদিহি নেই। সন্ত্রাসীরা সরকারি দলের ছত্রচ্ছায়ায় এই ধরনের তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’ 

হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনকে স্তিমিত করার লক্ষ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, প্রকৃতপক্ষে সরকার জনগণের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য হীন এই সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করছে। অবৈধ সরকার এই জঘন্য ন্যক্কারজনক সংঘাত ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বিরোধী দল বিএনপির ওপর দোষারোপ করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায়। এ ঘটনায় অবৈধ সরকার এখন পর্যন্ত শতাধিক বিএনপির সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। তল্লাশির নামে নেতা-কর্মীদের মাঝে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। এঁরা সবাই নিরপরাধ, কোনোভাবেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সিসিটিভি এবং ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখলে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। অথচ রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করে আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে।’ 

পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও বিএনপি নেতারাহামলায় আওয়ামী লীগ নেতারা ছিল দাবি করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘রেলমন্ত্রী সুজন পঞ্চগড়ে ওই এলাকা সফরে গেলে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা তাঁকে স্পষ্ট জানান আক্রমণকারীরা তাঁর সঙ্গেই রয়েছে। এ জন্য আমরা মনে করি, এই ঘটনা প্রমাণ করে যে সরকারের হীন পরিকল্পনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা এই সাম্প্রদায়িক হামলা সংঘটিত হয়েছে। এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই ধারাবাহিকভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটছে। এগুলো সবই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার নীলনকশার অংশ।’ 

সাধারণ মানুষের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে পঞ্চগড়ে ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। হাজার হাজার সাধারণ লোককে আসামি করে তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে এবং অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নাগরিকের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। পঞ্চগড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার দায়ভার সরকারের ওপরই বর্তায়। রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। 

এরপরও আওয়ামী লীগ ঘটনার দায়ভার বিএনপির ওপর চাপাতে চায়। এটা ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর মতো। সে ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না। সুষ্ঠু তদন্ত করে গ্রেপ্তারকৃত নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তি ও পঞ্চগড়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার দাবি জানান তিনি। 

এ সময় সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আদম সুফি উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান ও পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র জাকিয়া খাতুন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন কালে জানান, এই পৈশাচিক ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। 

আহমদিয়া সম্প্রদায়ের গণসংযোগ ও প্রেস বিভাগের প্রধান আহমদ তবশির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কারও সাহায্য-সহযোগিতা চাই না। আমরা শুধু নিরাপদে বসবাস করতে চাই। নিজেদের জানমালের নিরাপত্তা চাই। নাম উল্লেখসহ ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা করেছে। পুলিশও মামলা করেছে। কিন্তু প্রকৃত অপরাধীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। আহমদিয়া সম্প্রদায় অধ্যুষিত দুটি গ্রামে ও পঞ্চগড় শহরের আহমদিয়াদের দুই শতাধিক বাড়িঘর, দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে। ৭০ জন সদস্য আহত হয়েছে। একজনকে কুপিয়ে মেরেছে। দুষ্কৃতকারীরা তিন ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। কিন্তু বিজিবি ও পুলিশ কোনো অ্যাকশনে যায়নি। যা আমাদের বিস্মিত ও হতবাক করেছে। তিন ঘণ্টা পর অ্যাকশন শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ততক্ষণে সব শেষ। এলাকার চিহ্নিতদের নাম পুলিশকে জানানো হয়েছে। ঘটনাটিকে কেউ কেউ রাজনীতির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। যা মোটেও কাম্য নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মা-মেয়ে খুন: প্রথমবার শ্বশুরবাড়িতে গৃহকর্মী আয়েশা, ফিরলেন গ্রেপ্তার হয়ে

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ঝালকাঠির নলছিটিতে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও তাঁর পাশে জামাল সিকদার রাব্বি। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঝালকাঠির নলছিটিতে আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আয়েশা আক্তার (বাঁ থেকে তৃতীয়) ও তাঁর পাশে জামাল সিকদার রাব্বি। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুনের মামলার আসামি আয়েশা আক্তারকে নিয়ে প্রথমবারের মতো ঝালকাঠির নলছিটিতে নিজ বাড়িতে আসেন জামাল সিকদার রাব্বি। ১৫ বছর আগে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হলে তিনি বাড়ি ছাড়েন। এরপর আর তাঁকে এলাকায় ফিরতে দেখা যায়নি।

আজ বুধবার সকালে হঠাৎ আয়েশাকে নিয়ে বাড়িতে হাজির হন রাব্বি। আয়েশাকে সবার কাছে পরিচয় করিয়ে দেন তাঁর স্ত্রী হিসেবে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের বাড়িতে এসে হাজির হয় মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ। বেরিয়ে আসে, তিনিই আলোচিত জোড়া খুনের মামলার পলাতক আসামি আয়েশা।

পুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামাল স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে বেড়ানোর জন্য নয়, আত্মগোপনে এসেছিলেন। দীর্ঘ বছর পর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে আসার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আলোচিত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আজ দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর এলাকা থেকে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশ আয়েশাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি নরসিংদীর সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে। হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকা থেকে নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর এলাকায় জামালের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে আসেন আয়েশা। পুলিশের অভিযানে তাঁর স্বামী জামাল সিকদার রাব্বিকেও আটক করা হয়েছে। তিনি ওই এলাকার জাকির সিকদারের ছেলে। রাব্বি ও আয়েশা ঢাকায় থাকেন। একসময় কারখানার শ্রমিক ছিলেন এই যুবক।

দপদপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কয়ারচর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মন্নান মৃধা চুন্নু বলেন, প্রায় ১৫ বছর আগে জামাল সিকদার রাব্বির বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। তখন রাব্বিকে রেখে অন্য সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান তাঁর মা। এরপর রাব্বি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে কখনো তাঁকে এই এলাকায় দেখা যায়নি। আজ সকালে তিনি একটি মেয়েকে (আয়েশা) নিয়ে বাড়িতে আসেন এবং তাঁকে তাঁর স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। রাব্বির বাবা প্রবাসে থাকেন। তাঁর বৃদ্ধ দাদি একাই বাড়িতে থাকেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাব্বি তাঁর নানার সহায়তায় চাচার বাসায় ওঠেন। তিনি নিজেও বাবার বাড়ি চিনতে পারছিলেন না। এলাকাবাসী জানতেন, রাব্বি ধনী পরিবারের কোনো মেয়েকে বিয়ে করেছেন। আজ সকালে রাব্বি স্ত্রীকে নিয়ে চাচার বাড়িতে পৌঁছান। দুপুরে ঢাকা থেকে পুলিশ এসে মামলার আসামি আয়েশাকে গ্রেপ্তার এবং রাব্বিকে আটক করে নিয়ে যায়।

ঝালকাঠিতে অভিযানে অংশ নেওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, মোহাম্মদপুরে গৃহকর্তার বাসা থেকে কিছু মালামাল চুরি করার পর সেখানে ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় আয়েশা আক্তার ছুরিকাঘাত করে গৃহকর্তার স্ত্রী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তাঁর মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে (১৫) হত্যা করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে তিনি এসব কথা বলেন।

অভিযানে তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুনও ছিলেন। পরে আয়েশাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন পুলিশ সদস্যরা।

এর আগে গত সোমবার সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা একটি আবাসিক ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ ও তাঁর মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার তাঁদের মরদেহ নাটোরে দাফন করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বাসা থেকে মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভবনের ভেতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর এক নারী স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেওয়া তরুণী এই জোড়া খুনে জড়িত বলে সন্দেহ হয় স্বজনদের।

ঘটনার পর থেকে ওই তরুণী পলাতক ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহভাজন গৃহকর্মীকে আসামি করে সোমবার রাতে লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। লায়লা ও তাঁর মেয়ের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল গ্রামের বাড়ি নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নেওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁদের মরদেহ দাফন করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কারওয়ান বাজারে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের অবরোধ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ৩৪
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সংস্কার, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ ও মোবাইল ফোন আমদানিতে উন্মুক্ত সুযোগের দাবিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। এতে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ভোগান্তিতে পড়েন পথচারী ও যাত্রীরা।

আজ বুধবার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ব্যবসায়ীরা সার্ক ফোয়ারা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা সড়কে কাঠ ও বাঁশ জড়ো করে আগুন জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। সেখানে কিছু যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘আনঅফিশিয়াল’ মোবাইল ফোন বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা সার্ক ফোয়ারা ক্রসিংয়ে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করছেন। সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে তাঁরা সড়কে আগুন জ্বালান। তিনি জানান, তাঁদের অবস্থানের কারণে আশপাশের সব রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ইবনে মিজান সন্ধ্যা ৭টায় আজকের পত্রিকাকে জানান, মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাঁরা কিছুক্ষণ পর রাস্তা ছেড়ে দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত তাঁরা কারওয়ান বাজার সড়কেই অবস্থান করছেন।

গত কয়েক দিন ধরে এনইআইআর পদ্ধতির বিরোধিতা করে আন্দোলন করে আসছেন এই শ্রেণির ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, এনইআইআর চালু হলে অবৈধ পথে আসা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না, ফলে বিদেশ থেকে আনা পুরোনো ফোনের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নির্বাচনে সব পুলিশ সদস্যকে শতভাগ নিরপেক্ষ থাকতে হবে: ডিএমপি কমিশনার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ফাইল ছবি
শেখ মো. সাজ্জাত আলী। ফাইল ছবি

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে সব পুলিশ সদস্যকে শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে আজ বুধবার ‘নভেম্বর ২০২৫’-এর মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।

সদ্য যোগ দেওয়া ডিএমপির বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) উদ্দেশে সাজ্জাত আলী বলেন, নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের থানা এলাকার অপরাধের চিত্র ও পরিস্থিতি ভালো করে বুঝে নিতে হবে এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অভ্যাসগত অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মো. সরওয়ার (অতিরিক্ত আইজি) বলেন, অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতি থানায় টহল কার্যক্রম জোরদার করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা প্রতিস্থাপন করা হবে।

এ ছাড়া টহলকাজে সরকারি মোটরসাইকেল ব্যবহারের তাগিদ দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাটির ৩৫ ফুট গভীর গর্তে ২ বছরের শিশু, উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের ৩ ইউনিট

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গর্তে পড়া শিশুকে উদ্ধারে চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গর্তে পড়া শিশুকে উদ্ধারে চেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীর তানোর উপজেলায় ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের সরু একটি গর্ত দিয়ে মাটির ৩৫ ফুট গভীরে পড়ে গেছে ২ বছর বয়সী এক শিশু।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক মানুষ উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছেন।

শিশুটির নাম সাজিদ। বাবার নাম রাকিবুল ইসলাম। কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামেই তার বাড়ি।

স্থানীয় লোকজন জানান, গ্রামের পাশের এ জমিটির মালিক কছির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। এক বছর আগে কছির উদ্দিন তার জমিতে সেচের জন্য একটি সেমিডিপ নলকূপ বসানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩৫ ফুট বোরিং করার পর সেখানে পানি পাননি। তাই নলকূপ বসানো হয়নি। একবছর ধরে ৮ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের গর্তটি সেভাবেই পড়ে ছিল।

বুধবার দুপুরে শিশুটির মা ওই মাঠে ধানগাছের খড় নিতে যান। ওই সময় সাজিদ খেলতে গিয়ে গর্তে পড়ে মাটির ভেতরে ঢুকে যায়। স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়।

পরে ফায়ার সার্ভিসের তানোর, চাপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী সদর স্টেশনের তিনটি ইউনিট গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। শিশুটিকে জীবিত রাখতে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। গর্তের পাশে স্কেভেটর দিয়ে মাটি খনন করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের রাজশাহী স্টেশনের সহকারী পরিচালক দিদারুল ইসলাম জানান, তারা আসার আগেই স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তখন কিছু মাটি গর্তে পড়ে গেছে। তারা ক্যামেরা পাঠিয়ে দেখার চেষ্টা করেছেন। মানুষের কোলাহলের কারণে শিশুটির কোনো সাড়া বুঝতে পারছেন না।

তিনি জানান, শিশুটিকে জীবিত উদ্ধারের জন্য তারা অক্সিজেন পাঠাচ্ছেন। পাশে স্কেভেটর দিয়ে খনন করছেন। এতে আরো ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার

প্রাথমিকভাবে ১২৫ আসনে এনসিপির প্রার্থী ঘোষণা

আজকের রাশিফল: অতিরিক্ত রাগ লজ্জায় ফেলবে, ঘরে শান্তি চাইলে রান্না নিয়ে চুপ থাকুন

৫০ বছর ধরে কবর খুঁড়ছেন মজিরুল, নিঃস্বার্থ সেবায় গাংনীর গোরখোদকেরা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার ২

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত