Ajker Patrika

নিষিদ্ধ বেহুন্দি জালে বিপাকে ৫০ হাজার জেলে

ইসমাইল হোসেন কিরন, হাতিয়া (নোয়াখালী) 
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের শতফুল বাজার এলাকায় খালে মাছ ধরার নৌকা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের শতফুল বাজার এলাকায় খালে মাছ ধরার নৌকা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় এখন ছেউয়া বা চেওয়া মাছ শিকার ও শুঁটকি উৎপাদনের মৌসুম। বছরের এ সময় অনেকে নদীতে গিয়ে মাছ ধরেন। কেউ কেউ সেগুলো শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করেন। প্রতিটি ঘাট ব্যবসায়ী, দোকানি ও শ্রমিকের হাঁকডাকে সরগরম থাকে গভীর রাত পর্যন্ত। কিন্তু এবার চিরচেনা সেই চিত্র বদলে গেছে।

চেওয়া মাছ শিকারে ব্যবহার করা হয় বেহুন্দি জাল। পানিতে স্থির থাকা এই জালে নির্বিচারে মাছ ধরা পড়ে বলে এটি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। এবার হাতিয়ায় কোস্ট গার্ড ও মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে এ নিষেধাজ্ঞা কড়াকড়িভাবে কার্যকর হচ্ছে। এতে মৎস্যসম্পদ রক্ষা পেলেও বিপাকে পড়েছেন জেলে ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, হাতিয়া উপজেলার বন্দরটিলা, শতফুল, নামার বাজার, জঙ্গলিয়া, সূর্যমুখী, কাজিরবাজার, কাদিরা সুইজসহ ২০টি ঘাটের প্রায় ৫০ হাজার জেলে, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক চেওয়া মাছ ধরা ও শুঁটকি তৈরির সঙ্গে জড়িত।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে মার্চ পর্যন্ত চলে চেওয়া মাছের মৌসুম। এ মাছ ধরায় ইলিশের তুলনায় পুঁজি কম লাগায় অনেকে বংশানুক্রমে এই কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিবছরের মতো এবারও জেলেরা চেওয়া মাছ শিকার করতে জাল, নৌকা ও প্রয়োজনীয় রসদ নিয়ে নদীতে নেমেছিলেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই সরকারি নির্দেশনায় জাল গুটিয়ে নিতে হয় তাঁদের।

উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের শতফুল বাজারে গিয়ে জানা যায়, এ ঘাটে ২০০ মাঝি আছেন, যাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গ ২০-২২ জন জেলে কাজ করেন। এক সপ্তাহ ধরে তাঁরা বেকার। প্রশাসনের নির্দেশে সবাই ঘাটে বসে আছেন। কেউ নদীতে যাওয়ার সাহস করছেন না।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের শতফুল বাজার এলাকায় মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের শতফুল বাজার এলাকায় মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রবীণ মাঝি মোস্তান মিয়া বলেন, ‘সামান্য কিছু মাছ শুঁটকি করেছি। কিন্তু লাভের মুখ দেখার আগেই দেওয়া হলো বাধা। এখন জাল, নৌকা নিয়ে ঘাটে অলস সময় পার করতে হচ্ছে। দৈনন্দিন খাবার জোগান দিতেই হিমশিত খেতে হচ্ছে। মৌসুম শুরুর আগেই এই সিদ্ধান্ত জানতে পারলে এত বড় ক্ষতির মধ্যে আমাদের পড়তে হতো না। গত সপ্তাহে হঠাৎ কোস্ট গার্ড এসে বেহুন্দি জাল ব্যবহার করা যাবে না বলে ঘোষণা করে যায়। ইতিমধ্যে অনেকের জাল তুলে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে। উপজেলা মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকেও লোকজন এসে বেহুন্দি ব্যবহার করতে নিষেধ করে গেছে।’

একই এলাকার জেলে আনাজল হক বলেন, ‘আমরা নদীভাঙনে বাস্তুহারা পরিবার। নিঝুম দ্বীপে এসে কোনোরকম মাথা গোঁজার ব্যবস্থা হয়েছে। এখানে কোনো কলকারখানাও নাই যে চাকরি-বাকরি করে জীবন যাপন করব। আমাদের একেকজনের পরিবারে ৭-৮ জন সদস্য। নদীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ। নদীতে মাছ ধরে কিছু পেলে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে খাই। এখন ছেউয়া ধরার সময়। ঋণ করে জাল কিনে, দোকান থেকে বাকিতে যাবতীয় বাজার করে, নৌকা নিয়ে নদীতে নেমেছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের মাছ ধরতে দিচ্ছে না। মৌসুমও শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদি মাছ ধরতে না পারি, তাহলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।’

হাতিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের নিঝুম দ্বীপসহ চারটি ইউনিয়নের জেলেরা চেওয়া মাছ বেশি ধরেন। সরকারি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন নিঝুম দ্বীপের জেলেরা।

মাছ ধরতে দেওয়ার দাবিতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারে জেলেদের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাছ ধরতে দেওয়ার দাবিতে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারে জেলেদের বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম জানান, তিন থেকে চার মাস নিঝুম দ্বীপে চেওয়া মাছ ধরার মৌসুম। এই মৌসুমে অন্য কোনো মাছের পোনা পাওয়া যায় না। এই চেওয়া ধরে এখানকার জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোরকমে জীবন অতিবাহিত করেন। গত বছর এখানে প্রায় ১৬ হাজার টন চেওয়া শুঁটকি উৎপন্ন হয়েছে এবং প্রায় ২০ হাজার টন কাঁচা চেওয়া মাছ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়েছে। প্রতি টন শুঁটকি প্রায় ১ লাখ এবং প্রতি টন কাঁচা চেওয়া ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহাদ হাসান বলেন, ‘নদীতে স্থির থাকে এমন ধরনের যেকোনো জাল ব্যবহার আইনগতভাবে নিষিদ্ধ। বেহুন্দি জাল নদীতে স্থির থাকে। তাই এ জাল সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আমরা অনেক আগে থেকে এ জাল ব্যবহার বন্ধ করার জন্য জেলেদের বলে আসছি। কিন্তু তাঁরা মানছেন না। এদিকে হাতিয়াতে বেহুন্দি জাল ব্যবহার করে জেলেরা কাঁচা মাছ ধরে ও শুঁটকি তৈরি করে কোটি কোটি টাকা আয় করেন। আমরা চেষ্টা করছি, এই মাছ ধরতে বিকল্প কোনো উপায় বের করা যায় কি না। বিষয়টি আমি অধিদপ্তরে অবহিত করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় জরিমানা

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আ. সালামের বাড়ি ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড লাহেড়িপাড়া মহল্লায় পলাশতলী গ্রামে।

চিনিতে ভেজাল মেশানোর খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় এক ড্রাম চিটাগুড় ও ভেজালমিশ্রিত ২ হাজার কেজি লাল চিনি জব্দ করা হয়।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজবাড়ীতে পদ্মার চর থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজবাড়ী-পাবনা সীমান্তবর্তী পাংশা উপজেলার হাবাসপুর খেয়াঘাট এলাকার অদূরে পদ্মার চর থেকে হাত-পা বাঁধা অজ্ঞাতনামা এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন জানান, পদ্মায় মাছ ধরার সময় দুপুরে জেলেরা চরে মরদেহটি দেখতে পান। পরে পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। মরদেহটি পাবনা জেলার সীমানায় পাওয়ায় পাবনা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।

ওসি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দু-এক দিন আগে হত্যার পর লাশ চরে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। মরদেহের পরিচয় নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করা যুবক পালাল পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে চীনা নাগরিককে ছুরিকাঘাত করে পালানোর সময় গণধোলাইয়ে আহত ছিনতাইকারী এবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশকে ছুরিকাঘাত করেছে। তবে ঘটনার পর পুলিশের একাধিক দলের সাঁড়াশি অভিযানে ছুরিকাঘাতকারী ওই যুবকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাতে চমেক হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে পাহারায় নিয়োজিত এক কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ইমাম হোসেন আকাশ (৩০) নামের ওই যুবক। তিনি আনোয়ারার দিঘীরপাড় বরুমছড়া এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং বন্দর এলাকার আজাদ কলোনির বাসিন্দা। পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার তাঁর দুই সহযোগীর নাম এখনো জানা যায়নি।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলায়মান আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পুলিশ সদস্যকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া ছিনতাইকারী ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই বিষয়ে একটি ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

পাঁচলাইশ থানা-পুলিশের একটি সূত্র জানায়, চমেক হাসপাতালে পুলিশের পাহারায় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিযুক্ত ছিনতাইকারী ইমাম হোসেন আকাশ। ওই দিন রাতে ইমামের সঙ্গে দুজন নারীসহ তিনজন দেখা করতে আসেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইমাম হোসেন রাজু সেখানে দায়িত্বরত একজন কনস্টেবলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর ওই দিন রাতেই নগর পুলিশের একাধিক টিম ওই ছিনতাইকারীকে ধরতে মাঠে নামে। পরে আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকা থেকে তাঁকে দুই সহযোগীসহ আটক করা হয়।

গত মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতর সিপিআর ৫ নম্বর গেট-সংলগ্ন ব্রিজের সামনে এক চীনা নাগরিক ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। দুই-তিনজন ছিনতাইকারী ওই চীনা নাগরিককে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তাঁর সঙ্গে থাকা পাসপোর্ট, ভিসা, নগদ অর্থ ও নথিপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় সেখানে উপস্থিত জনতা ধাওয়া দিয়ে দুই ছিনতাইকারীদের ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

বন্দর থানার পুলিশ জানায়, ঘটনার পর পুলিশের হাতে আটক দুই ছিনতাইকারীদের মধ্যে ইমাম হোসেন আকাশ গুরুতর আহত থাকায় তাঁকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। শাহাদাত হোসেন (২৫) নামের আরেক ছিনতাইকারীকে হাজতে রাখা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘নির্যাতন সইতে না পেরে’ কেরোসিন ঢেলে গায়ে আগুন, গৃহবধূর মৃত্যু

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মিতু বেগম। ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া মিতু বেগম। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ এক গৃহবধূ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। যৌতুকের জন্য স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মারা যাওয়া নারীর নাম মিতু বেগম (২০)। গায়ে আগুন দেওয়ার পাঁচ দিন পর গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মিতু বেগম ফরিদগঞ্জের উত্তর হাঁসা গ্রামের অটোরিকশাচালক রাকিবের স্ত্রী।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিতু তাঁর স্বামীর বসতঘরে পারিবারিক কলহের জেরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় তাঁর মা পারভীন বেগম ফরিদগঞ্জ থানায় মিতুর স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে যৌতুকের জন্য চাপ ও নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়।

পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর আগে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে জামাতা ও তার পরিবার আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য চাপ দেয় এবং শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ও আমার মেয়েকে মারধর করলে নির্যাতন সইতে না পেরে নিজ শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পাঁচ দিন পর আমার মেয়ের মৃত্যু হয়। আমি থানায় অভিযোগ করেছি। এ ঘটনায় উপযুক্ত বিচার চাই।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মিতু বেগমের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর স্বামী রাকিব ও পরিবারের সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছেন।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অগ্নিদগ্ধ মিতু ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর মায়ের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত