Ajker Patrika

ধান-চাল সংগ্রহ: ‘সর্বোচ্চ’ চেষ্টা করেও অর্জিত হয়নি লক্ষ্য

  • নওগাঁর রাণীনগরে নির্ধারিত সময়ে অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রা।
  • চাল ৭৭ এবং ধান সংগ্রহ করা হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার ৭৬ শতাংশ।
  • মিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ খাদ্য নিয়ন্ত্রকের।
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭: ৩৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নওগাঁর রাণীনগরে অভ্যন্তরীণ ধান-চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ে অর্জিত হয়নি। কৃষকেরা ধান না দেওয়ায় এবং মিলাররা চাল না দেওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। এই অবস্থায় মিলারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা।

রাণীনগর উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইরি-বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ৩৬ টাকা কেজি দরে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ হাজার ৩৩৮ টন। এ ছাড়া ৪৯ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে চাল ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ২ হাজার ৩২৮ টন। কিন্তু খোলাবাজারে সরকারি দরের চেয়ে দাম বেশি পাওয়ায় খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করেননি কৃষকেরা। ফলে মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত মাত্র ৮১৩ টন ধান ক্রয় করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় মোট ৭১টি চালকল রয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টি কলের বিপরীতে সরকারিভাবে ২ হাজার ৩২৮ টন চাল ক্রয়ের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে ৩৬ জন মিলারের মধ্যে ৩১ জন সরকারিভাবে চাল দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে চুক্তি করেও মণ্ডল চালকল ১ ছটাক চালও দেয়নি। চুক্তিবদ্ধ অনেক মিলারও শতভাগ চাল সরবরাহ করেননি। ফলে ১ হাজার ৬৮২ টন সংগ্রহ হয়েছে। এতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৪৬ টন চাল কম সংগ্রহ হয়েছে।

চমণ্ডল চালকলের মালিক আক্তার হোসেন বলেন, ‘চাল সরবরাহে চুক্তির পরপরই লাইসেন্সের মেয়াদ পার হয়ে যায়। অসুস্থতার কারণে সময়মতো নবায়ন করতে পারিনি।’

আল আমিন চালকলের মালিক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘৭ বছর ধরে অনেক লোকসান দিয়ে খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করেছি; কিন্তু অতিরিক্ত ঋণগ্রস্ত হওয়ার কারণে এবার চাল সরবরাহে চুক্তি করিনি।’ শাহানাজ চালকলের মালিক শাহানাজ বেগম বলেন, ‘২০২০ সাল থেকে গত অগ্রহায়ণ পর্যন্ত লোকসান করে সরকারকে চাল দিয়েছি। সরকার চাল ক্রয়ে যে বাজার নির্ধারণ করেছে, তার চেয়ে খোলাবাজারে দাম বেশি। ফলে চাল সরবরাহে অনেক লোকসান হচ্ছে। এ জন্য চুক্তিতে যাইনি।’

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব মিলার চাল সরবরাহে চুক্তিতে আসেননি এবং চুক্তি করেও যে মিলার চাল সরবরাহ করেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা ও বিধি মোতাবেক মিলারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলার অভ্যন্তরীণভাবে ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাকিবুল হাসান বলেন, ‘আমরা ধান-চাল ক্রয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে চাল ৭৭ শতাংশ এবং ধান ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত ক্রয় করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত