Ajker Patrika

নেতাই নদীর ভাঙনে দুর্ভোগে ৩০ গ্রামের মানুষ, ফসলি জমিতে জমেছে বালি

প্রতিনিধি, ধোবাউড়া (ময়মনসিংহ) 
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২১, ২৩: ৪৯
Thumbnail image

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় নেতাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ। টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে এই ভাঙনের দেখা দেয়। এতে নেতাই পাড়ের আশপাশে অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না। বন্যার স্রোতে অন্তত কয়েক হাজার হেক্টর ফসলি জমিতে বালি জমেছে। এতে আগামী আমন ধানের ফসল উৎপাদন অনিশ্চিত বলে জানান কৃষকেরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ঘোঁষগাও ইউনিয়নের ঘোঁষগাও-কলসিন্দুর বেড়িবাঁধে রায়পুর, পূর্ব ভালুকাপাড়া এবং ভালুকাপাড়া মার্সেল চিসামের বাড়ির পাশে তিনটি স্থানে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গামারীতলা ইউনিয়নের কলসিন্দুর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা বিল্লাল হোসেনের বাড়ির পাশে এবং কামালপুর এলাকায় ভাঙন দেখা গেছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষজন। এই বেড়িবাঁধে দিয়ে কলসিন্দুর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভালুকাপাড়া সরকারি ও উচ্চ বিদ্যালয়, ঘোঁষগাও সরকারি ও উচ্চ বিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী যাতায়াত করেন। অপরদিকে, গামারীতলা ইউনিয়নের কলসিন্দুর এলাকা ও কামালপুর এলাকায় ভাঙনে কামালপুর, ছান্দেরনগর, গৌরিপুরসহ প্রায় ১৪টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘোষগাও ইউনিয়নে ভাঙনের ফলে ভারুকাপাড়া, বল্লভপুর, জরিপাপাড়া, রায়পুর, চকপাড়া, লাঙ্গলজোড়াসহ প্রায় ১৬টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না।

ভালুকাপাড়া গ্রামের সিদ্দিক মিয়া বলেন, নার্সারিতে থাকা আমার প্রায় লক্ষাধিক টাকার গাছ নষ্ট হয়ে গেছে।

একই গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের ফসলি জমিতে বালি পড়ে আছে। এই জমিগুলোতে ফসল আর হবে না। আমার ১০ একর জমির অবস্থা একই। নেতাইয়ের ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছি। স্থায়ী বেড়িবাঁধ না দিলে আমাদের সমস্যা আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে ঘোষগাও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুল হক বলেন, ভাঙন মেরামত করার জন্য আমি এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।

গামারীতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে এই ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২০ বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ জেলার অফিসের উদ্যোগে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর জনপ্রতিনিধিরা বারবার সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসলেও কোন কাজ করা হয়নি। বন্যায় ভাঙন দেখা দিলে নানান প্রতিশ্রুতি দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। কিন্তু বাস্তবে তা রূপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ময়মনসিংহ জেলার সহকারী প্রকৌশলী আরাফাত আহমেদ বলেন, এরই মধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত