Ajker Patrika

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা কলেজ শিক্ষার্থী, সব নির্বাচনে এমন করেন বলে জানালেন পরিচালক

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা কলেজ শিক্ষার্থী, সব নির্বাচনে এমন করেন বলে জানালেন পরিচালক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনার কলমাকান্দায় অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজের (কারিগরি) প্রভাষক পরিচয়ে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন কলেজেরই শিক্ষার্থী নাঈম মিয়া। 

নাঈম নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এবং জেলার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ধলপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। নেত্রকোনা সরকারি কলেজ সূত্রে নাঈমের শিক্ষার্থী পরিচয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

এ নির্বাচনে নেত্রকোনা–১ (দুর্গাপুর–কলমাকান্দা) আসনের কলমাকান্দা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

উপজেলা নির্বাচন অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবু তাহের কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ ১৪ জন শিক্ষকের নামের তালিকা পাঠান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। এ তালিকায় কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও বাকিরা খণ্ডকালীন। তাঁরা একইভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে একই পদে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেন। নাঈম মিয়া তাঁদেরই একজন।

এলাকাবাসী জানায়, শুধু নাঈম মিয়া নন, আল আমিনসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী কলেজের প্রভাষক পরিচয়ে এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজটি কলমাকান্দার কৈলাটী ইউনিয়ন বেলতলী গ্রামে অবস্থিত। কলেজের অধ্যক্ষ এ. কে. এম আব্দুল হামিদ। তিনি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের (অর্থনীতি বিভাগ) অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আর কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আবু তাহের খান বর্তমানে নেত্রকোনা সরকারি কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। 

কলেজের পরিচালক শাহ আলম খান লিটন শিক্ষার্থীর প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করার সত্যতা স্বীকার করে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘প্রতি নির্বাচনে আমরা এভাবেই তাদের পাঠাই।’ পরক্ষণেই সাক্ষাতে বিস্তারিত বলবেন বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। 

বিষয়টি জানালে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আবু তাহের এ বিষয়ে জানতে অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। 

অধ্যক্ষ একেএম আব্দুল হামিদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। একপর্যায়ে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

কলমাকান্দা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী বলেন, ‘এ ধরনের তালিকা পাঠানো ঠিক করেননি অধ্যক্ষ মহোদয়। বিষয়টি জানার পর অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে কারিগরি ওই কলেজটি এমপিওভুক্ত না। শিক্ষার্থীর নাম কীভাবে তালিকায় দেওয়া হয়েছে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আবু তাহের মহোদয়ের কাছে জানতে চেয়েছি। তিনি এখানো আমাকে জানাননি।’ 

কলমাকান্দার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পেরেছি ওই শিক্ষার্থী আইসিটির (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) খণ্ডকালীন শিক্ষক ও কলেজের শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে কলেজটি সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।’ 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষক বানানোর সুযোগ নেই। অধ্যক্ষ এটা করে থাকলে ভুল করেছেন। এটা যদি সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট হয় তাহলে আইনের আওতায় আসবেন।’ 

এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজকে একাধিকবার ফোন কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত