Ajker Patrika

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া হয়নি অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর, সহকারী গ্রন্থাগারিকের বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২২, ১২: ৩৮
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া হয়নি অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর, সহকারী গ্রন্থাগারিকের বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ

প্রবেশপত্র না পাওয়ায় জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার শিমুলতলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থী এইচএসসি (বিএম শাখা) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তারের ফরম পূরনের অর্থ আত্মসাতের কারণে এই শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র পায়নি। এতে বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা মোরশেদা আক্তারের বসতবাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ। আজ রোববার দুপুরে পৌরসভার দরিয়াবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  সকাল ১০টার দিকে এইচএসসি ও সমমানের প্রথম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলায় ছয়টি কেন্দ্রের ২হাজার ৯৯০জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন।

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তার ফরম পূরণের টাকা আত্মসাৎ করায় তাঁরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। মোরশেদা আক্তার ফরম পূরণের নামে অন্তত ৬০ জনের কাছ থেকে মাথাপিছু ৪-৫ হাজার টাকা জমা নেন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষকে টাকা জমা না দেওয়ায় তাঁদের ফরম পূরণ হয়নি। প্রবেশপত্রের জন্য পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে কলেজে গেলে অন্য শিক্ষকেরা জানান তাঁদের ফরম পুরন করা হয়নি।

শিমুলতলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের ফারাজিপাড়া টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজকেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। ফারাজিপাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব আব্দুস ছালাম বলেন, ‘আজ সকাল ১০টার দিকে পরীক্ষাবঞ্চিতরা কেন্দ্রের বাইরে ভিড় করেন। পরে তাঁদের বুঝিয়ে বিদায় দেওয়া হয়।’ 

এ সময় ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মেহেদী হাসান আতিক বলেন, ‘আমি ফরম পূরণের জন্য মোরশেদা ম্যাডামকে ৫ হাজার টাকা দিই। কিন্তু তিনি আমার ফরম পূরণ না করায় পরীক্ষা দিতে পারেনি।’

পরীক্ষার্থী জাহিদ বলেন, ‘আমি মোরশেদা আক্তার ম্যাডামকে ফরম পূরণের জন্য চার হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু তিনি টাকা আত্মসাৎ করায় আমার ফরম পূরণ করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ।’

ইসমা আক্তার বলেন, ‘আমি মোরশেদা ম্যাডামকে গত শুক্রবার আমার কাছে প্রবেশপত্রের জন্য এক হাজার টাকা নিয়েছেন। এর আগে ফরম পূরণের জন্য চার হাজার টাকা নিয়েছেন, কিন্তু তিনি আমার ফরম করেননি।’

এ ছাড়া জয় কর্মকার, খোরশেদ, শর্মি আক্তারসহ অনেকেই বলেন, ‘মোরশেদা ম্যাডাম অন্তত ৬০জনের কাছে ফরম পূরণের টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে এখন আত্মগোপনে রয়েছেন।’

আজ দুপুরে শিমুলতলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ‘দরজায় তালা ঝুলছে। এ বিষয়ে কথা বলতে  কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হয়। ফোন না ধরায় তাঁর কোনো মন্তব্য জানা যায়নি।

এ ছাড়া আত্মগোপনে থাকায় অভিযুক্ত কলেজের সহকারী গ্রন্থাগারিক মোরশেদা আক্তারের  সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে কলেজের অফিস সহকারী ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘এবার ১২৪ জন পরীক্ষার্থীকে প্রবেশপত্র দিয়েছি। ফরম পূরণ না হওয়ায় অনেকেই আমাকে জানিয়েছিল। পরে নতুন করে ১৫ জনের প্রবেশপত্র পেয়েছি।’ 

এ নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ তানভীর হাসান রুমান বলেন, ‘ফরম পূরণে জটিলতার বিষয়টি গতকাল শনিবার দুপুরে আমি জেনেছি। ওই কলেজের অধ্যক্ষকে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। এরপর মাত্র ১৫ জনের প্রবেশপত্র পাওয়া গেছে এবং তাঁরা পরীক্ষা দিতে পেরেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত