Ajker Patrika

মমেকে একদিনে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় ১৫৫ শিশু ভর্তি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
মমেকে একদিনে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় ১৫৫ শিশু ভর্তি

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ঠান্ডাজনিত সমস্যা, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৫৫ শিশু ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে এক শিশু মারা গেছে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৪৫০ জন। অপরদিকে, ৬০ বেডের স্থলে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকেরা। 

জানা গেছে, শীতের শুরু থেকেই মমেক হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত সমস্যা, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই ১২০ থেকে ১৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত আট দিনে শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় ২৩ শিশু মারা গেছেন। 

আজ সোমবার দুপুরে মমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক অভিভাবক তাদের শিশুদের নিয়ে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। কেউ কেউ এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা গ্রহণ করছে। তবে, ঠান্ডাজনিত সমস্যা, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আতঙ্কিত না হয়ে শিশুদের সার্বক্ষণিক শীতের পোশাক পরিয়ে রাখতে এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। 

ফুলবাড়িয়া উপজেলার মারুফা আক্তার তাঁর দুই বছরের ছেলেকে নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে মমেক হাসপাতালের ৩০ নম্বর শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শিশু ওয়ার্ডের সিট ও মেঝে খালি নেই। আমি নিজেই বারান্দায় একটু ঠাঁই পেয়েছি। সেখানে দিনরাত কাটাচ্ছি। রাতে ঠান্ডা বাতাসে একটু কষ্ট হয়। তবে, এখানকার চিকিৎসকেরা খুব আন্তরিকভাবে সেবা দিচ্ছেন।’ 

গত শুক্রবার রাতে ছয় মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন নেত্রকোনার সদর উপজেলার বাসিন্দা অর্চনা রানী। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে আমার বাচ্চার পাতলা পায়খানা শুরু হলে স্থানীয় ডাক্তার দেখিয়ে দুদিন চিকিৎসা নেই। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। পরে মমেক হাসপাতালে ভর্তি হলে চিকিৎসক ও নার্সদের সেবায় আমার বাচ্চা এখন মোটামুটি সুস্থ আছে। তবে কবে নাগাদ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাব তা এখন বলতে পারছি না।’ 

এ বিষয়ে শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. বিশ্বজিৎ চৌধুরী জানান, শীতজনিত রোগে সবচেয়ে বেশি শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডের ৬০ বেডের স্থলে ভর্তি আছে প্রায় ৪৫০ রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ১৫৫ শিশু। শিশুদের বেশির ভাগ ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, ঠান্ডা এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। ওয়ার্ডে স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝে এবং বারান্দায় সেবা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক ও জনবল সংকট থাকা সত্ত্বেও সাধ্য অনুযায়ী সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

ডা. বিশ্বজিৎ চৌধুরী আরও বলেন, অভিভাবকের কাছে পরামর্শ থাকবে যেহেতু শীত পড়েছে সেহেতু বাচ্চাদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে। শিশুদের সব সময় হাত মোজা ও পা মোজা পরিয়ে রাখতে হবে। ছোট বাচ্চাদের সব সময় মায়েদের কাছাকাছি রাখতে হবে। যাতে মায়ের শরীরের তাপ শিশুর শরীরে লাগে। এটি শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যার জন্য অত্যন্ত সহায়ক। 

মমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ায় সেবা দিতে কিছুটা হিমশিম হলেও চিকিৎসক ও নার্সরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। কোনো শিশুকেই আমরা সেবা না দিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছি না। আমাদের ওপর সাধারণ মানুষের একটা আস্থা রয়েছে। তাই ময়মনসিংহের ছয়টি ছাড়াও অন্তত ১০ জেলার মানুষ হাসপাতালে সেবা নেয়।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত