Ajker Patrika

বাবরকে বরণে তোরণ-ফেস্টুনে সেজেছে হাওরাঞ্চল

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
Thumbnail image
মদন উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নে তৈরি গেট। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেষ হচ্ছে লুৎফুজ্জামান বাবরের ১৭ বছরের কারাজীবন। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ সব মামলায় খালাস পাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে সাবেক এই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর। এদিকে প্রিয় নেতাকে বরণে সাজ সাজ রব হাওরাঞ্চলে।

সর্বশেষ গত ১৪ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ পাঁচজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর এই সংবাদ শোনার পর তাঁর নিজ জেলা নেত্রকোনা এবং নির্বাচনি এলাকা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের জোয়ার। ভাটি বাংলার এই নেতাকে বরণ করতে নেত্রকোনার সর্বত্র তোরণ-গেট তৈরিসহ নানা সাজে সেজেছে। তাঁর নিজ উপজেলা মদনে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র তৈরি করা হয়েছে নানা রঙের তোরণ-গেট। এ ছাড়া মদনসহ তাঁর নির্বাচনি এলাকা মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরীতেও তোরণ তৈরিসহ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

জানা গেছে, বাবরের মুক্তির খবর পেয়ে আজ তাঁর নির্বাচনি এলাকা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীসহ জেলার কয়েক লাখ মানুষ গত রাতেই ঢাকা উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সকাল থেকেই তাঁরা কেরানীগঞ্জ কারাগারের সামনের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন।

এর আগে লুৎফুজ্জামান বাবর সব মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা শহরে আনন্দ মিছিল বের করেন নেতা-কর্মীরা। মিছিল হয়েছে বাবরের নিজ উপজেলা মদনে।

স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ বলছেন, লুৎফুজ্জামান বাবর সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলাসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এ কারণে তিনি জেলাবাসীর কাছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

নেত্রকোনার হাওরবেষ্টিত তিনটি উপজেলা মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী। এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত নেত্রকোনা-৪ আসন। এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। হাওরবেষ্টিত জনপদের সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়।

লুৎফুজ্জামান বাবর ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেপ্তার হন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাঁর দণ্ড হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয় এবং একটিতে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব মামলার আপিল শুনানি শেষে একে একে খালাস পান বাবর। এর মধ্যে গত ২৩ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় আট বছরের দণ্ড থেকে এবং ১ ডিসেম্বর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে খালাস পান তিনি। ২১ আগস্টের মামলায়ও বাবরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত