Ajker Patrika

দুর্গাপুরে হাজংদের দেউলি উৎসব অনুষ্ঠিত

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৪
দুর্গাপুরে হাজংদের দেউলি উৎসবে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
দুর্গাপুরে হাজংদের দেউলি উৎসবে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির আয়োজনে হাজং সম্প্রদায়ের দেউলি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুর্গাপুর ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামে দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন আদিবাসী লেখক ও গবেষক মতিলাল হাজং।

পরে আলোচনা সভায় কালচারাল একাডেমির পরিচালক কবি পরাগ রিছিল সভাপতিত্ব করেন। দোলন হাজংয়ের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন নেত্রকোনা-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মিজানুর রহমান, বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদসহ বিভিন্ন অঞ্চলের হাজং সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

প্রধান অতিথি বলেন, হাজংরা নিজেদের আত্মপরিচয়, সংস্কৃতিচর্চা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে যেন আরও বেশি যত্মশীল হয় এবং তাঁরা যেন সোনালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করতে পারে, বিএনপি রাস্ট্রক্ষমতায় গেলে এসব নিয়ে কাজ করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভাই কাদের সিদ্দিকীকে নিয়ে আদালতে হাজিরা দিলেন লতিফ সিদ্দিকী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ আওলাদ হোসাইনের আদালতের সামনে কাদের সিদ্দিকী ও লতিফ সিদ্দিকী। ছবি: ফোকাস বাংলা
রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ আওলাদ হোসাইনের আদালতের সামনে কাদের সিদ্দিকী ও লতিফ সিদ্দিকী। ছবি: ফোকাস বাংলা

রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত একটি গোলটেবিল বৈঠক ঘিরে শাহবাগ থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় আদালতে হাজিরা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহম্মদ আওলাদ হোসাইনের আদালতে আজ রোববার হাজিরা দেন লতিফ সিদ্দিকী।

তাঁর আইনজীবী রেজাউল করিম হিরন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত লতিফ সিদ্দিকীকে আর আদালতে হাজিরা দিতে হবে না। আগামী ৩০ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।

রেজাউল করিম বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর বয়স হওয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফের আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফ করে আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

গত ২৮ আগস্ট সকালে ডিআরইউতে ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক চলাকালে হট্টগোল করে কয়েকজন ব্যক্তি। এ সময় লতিফ সিদ্দিকীসহ অন্তত ১৬ জনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে ডিবি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রাতে শাহবাগ থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন শাহবাগ থানার এসআই মো. আমিরুল ইসলাম। এই মামলায় গ্রেপ্তারের পর ১২ নভেম্বর জামিনে মুক্তি পান লতিফ সিদ্দিকী।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২৮ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে মামলার বাদী দেখতে পান, বেশ কিছু ব্যক্তি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির অডিটরিয়ামে কিছু লোককে ঘেরাও করে তাঁদের ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিচ্ছে এবং আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বক্তব্য দিচ্ছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধে ৫ আগস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ওই সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২৮ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে ওই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরাসহ আরও ৭০-৮০ জন ব্যক্তি বৈঠকটিতে অংশ নেন। পরে পুলিশ তাঁদের হেফাজতে নেয়। উপস্থিত লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, লতিফ সিদ্দিকী ‘মঞ্চ ৭১’-এর ব্যানারকে পুঁজি করে প্রকৃতপক্ষে দেশকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে অস্থিতিশীল করে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও উপস্থিত অন্যদের প্ররোচিত করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফেনীতে গভীর রাতে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন

ফেনী প্রতিনিধি
ফেনীতে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফেনীতে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে আগুন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফেনীতে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ রোববার শহরের মুক্তবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে স্মৃতিস্তম্ভের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ গভীর রাতে দুই যুবক মুক্তবাজার স্টাডি কেয়ার কোচিংয়ের পাশে অবস্থান নেন। পরে তাঁরা কেরোসিন ঢেলে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে অগ্নিসংযোগ করে মডেল কলেজের পাশের গলি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ ও আলামত সংগ্রহ করেছে।  

জানতে চাইলে ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, কেরোসিন ব্যবহার করে আগুন দেওয়া হয়েছে। স্মৃতিস্তম্ভের একটি অংশ কালো হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গত বুধবার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল পল্লী বিদ্যুৎসংলগ্ন এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নানাবাড়ির পাশে বাগানে পড়ে ছিল শিশুর লাশ

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ০৯
নিহত হাফসা। ছবি: সংগৃহীত
নিহত হাফসা। ছবি: সংগৃহীত

বাবা প্রবাসে থাকায় নানা মল্লিক সরদারের বাড়িতে থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করত ৯ বছরের শিশু হাফসা। সেই বাড়িতে আজ শোকের আঁধার নেমে এসেছে। কারণ, শিশু হাফসা আর নেই। তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে পাবনা পৌর সদরের শালগাড়িয়া সরদারপাড়া এলাকায় নানাবাড়ির পাশে বাগান থেকে শিশু হাফসার লাশ উদ্ধার করা হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শিশু হাফসাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে রমজান আলী (২৮) ও সাব্বির হোসেন (২৫) নামের দুজনকে আটক করা হয়েছে।

নিহত হাফসা সদর উপজেলার মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের প্রবাসী হাফিজুর রহমানের মেয়ে।

হাফসার নানা মল্লিক সরদার জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে শিশু হাফসাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার সন্ধান চেয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে বাড়ির পেছনের জঙ্গলের ভেতর, সুতার মিলের পেছনে, পাটিতে মোড়ানো কাদা মাখানো লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

হাফসার নানার বাড়ির পাশের বাগানটি দীর্ঘদিন ধরে বখাটে, মাদকসেবী ও জুয়াড়িদের আড্ডাস্থল ছিল বলে জানায় স্থানীয়রা। তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাবনা সদর থানার ওসি আব্দুস সালাম জানান, প্রাথমিক ধারণা, কানের দুল ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশে দুর্বৃত্তরা শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাগানে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। রোববার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে ‘আমা দাবলাম’ জয় তৌকিরের

পাবনা প্রতিনিধি
আমা দাবলাম চূড়া স্পর্শ করে ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা উড়ান তৌকির। ছবি: সংগৃহীত
আমা দাবলাম চূড়া স্পর্শ করে ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে সেখানে বাংলাদেশের পতাকা উড়ান তৌকির। ছবি: সংগৃহীত

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে হিমালয়ের অন্যতম টেকনিক্যাল পর্বত আমা দাবলাম জয় করেছেন পাবনার আহসানুজ্জামান তৌকির (২৭)। ৪ নভেম্বর নেপাল সময় বেলা ১টার দিকে ৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম চূড়া স্পর্শ করেন তিনি।

আমা-দাবলাম-২
আমা-দাবলাম-২

পর্বতারোহণ-বিষয়ক অর্গানাইজেশন রোপ ফোরের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধানে এই অভিযানটি পরিচালিত হয়। তাঁর এই অভিযানে সঙ্গী হিসেবে ছিলেন রোপ ফোরের আরেকজন তরুণ পর্বতারোহী আবরারুল আমিন অর্ণব।

আমা দাবলাম তার খাড়া বরফ দেয়াল, গভীর ক্রেভাস, ঝুলন্ত বরফ খণ্ড এবং কঠিন আবহাওয়ার প্রতিকূলতার জন্য পৃথিবীর অন্যতম চ্যালেঞ্জিং পর্বত হিসেবে পরিচিত। তৌকিরের এই অভিযানটি ছিল বাংলাদেশি পর্বতারোহণ ইতিহাসে এক গৌরবময় সংযোজন।

৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম চূড়া। ছবি: সংগৃহীত
৬ হাজার ৮১২ মিটার উচ্চতার আমা দাবলাম চূড়া। ছবি: সংগৃহীত

চূড়ায় পৌঁছার প্রতিক্রিয়ায় তৌকির বলেন, ‘আমা দাবলাম আমার কাছে শুধু একটা পর্বত নয়, এটা ছিল নিজের সীমা পরীক্ষা করার যাত্রা। পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর এই পর্বতের চূড়ায় দাঁড়িয়ে যখন লাল-সবুজ পতাকাটা তুলে ধরলাম, মনে হলো এটি শুধু আমার সফলতা নয়, এটি বাংলাদেশের সকল তরুণের স্বপ্নের স্পন্দন।’

তৌকির বলেন, ‘আমার এই অভিযানটা ছিল পৃথিবীর সকল বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য, যাদের জীবনটা কেটে যায় অন্যের ওপর ডিপেন্ড করে এবং চার দেয়ালের আলোতে পৃথিবী দেখে। আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবীতে আসা সকল প্রাণই শক্তিশালী। তাই আসুন ডিপেন্ডেবল এই মানুষগুলোর ওপর আরও বিনয়ী হই, ভালোবাসা এবং সাহায্যে তৈরি করি তাদের নতুন পৃথিবী।’

যেভাবে ‘আমা দাবলাম’ জয় করলেন তৌকির

গত ১২ অক্টোবর দুঃসাহসিক এই অভিযানের জন্য দেশ ছেড়েছিলেন তৌকির। এরপর অভিযানে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে শুরু হয় মূল অভিযান। হিমালয়ের পাহাড়ি বন্ধুর পথ ধরে ট্রেকিং করে তিনি বেস ক্যাম্পে পৌঁছান ২২ অক্টোবর। বেস ক্যাম্পে পৌঁছে তিনি শুরু করেন উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ায় কৌশল। যা অ্যাক্লিমাটাইজ রোটেশন নামে পরিচিত। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাঁদের ২৯ অক্টোবর সামিটের কথা থাকলেও ২৭ অক্টোবর থেকে হিমালয়ের শুরু হয় তীব্র তুষারপাত। এই তুষারপাতের মধ্যেই তৌকির অবস্থান করেন আমা দাবলাম ক্যাম্প-১-এ। যার উচ্চতা প্রায় ১৯ হাজার ফুট। ২৮ অক্টোবর আবহাওয়া আরও খারাপ হলে তাঁদের শেরপা লিডার সিদ্ধান্ত নেন বেস ক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার। তীব্র এই তুষার ঝড়ের মধ্যে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে তাঁদের দল বেস ক্যাম্পে পৌঁছায়। বেস ক্যাম্পে পৌঁছে শুরু হয় নতুন দুশ্চিন্তার কারণ।

তীব্র তুষার পাতের কারণে ফিক্সড রোপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবহাওয়া ভালো হতে শুরু করলেও নতুন রুট ওপেন না করা পর্যন্ত সামিট পুশ সম্ভব হচ্ছিল না। এভাবেই কেটে যায় পাঁচ দিন। তারপর সুখবর আসে রুট ওপেন হওয়ার। নভেম্বরের ২ তারিখ শুরু হয় আবার সামিট বিট। এদিনে তৌকির পৌঁছে যান ১৯ হাজার ফুট উচ্চতার ক্যাম্প-১-এ। এরপর ৩ তারিখ ইয়োলো টাওয়ার খ্যাত ১৯ হাজার ৬৮৫ ফুট উচ্চতার ক্যাম্প-২-এ পৌঁছে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে শুরু করেন সামিট পুশ। তীব্র বাতাস, ফিক্সড রোপে অতিরিক্ত ট্রাফিক এবং আইস ফলকে উপেক্ষা করে ৪ নভেম্বর ২২ হাজার ৩৪৯ ফুট উচ্চতার ‘আমা দাবালাম’ চূড়ায় পৌঁছান তিনি।

তৌকির বলেন, ‘স্বপ্ন যদি সত্যিকার অর্থে জ্বলে, তবে পাহাড়ও নত হয়। প্রতিটি শিখর আমাদের শেখায়, সীমা কেবল মনেই থাকে, সফলতায় নয়।’

তরুণ এই পর্বতারোহী জানান, এবারের স্বপ্ন পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া মাউন্ট এভারেস্ট। এই লক্ষ্য নিয়েই তিনি এগোচ্ছেন। এখন প্রয়োজন তাঁর সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ২০২৬ সালেই পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়ায় আবারও উড়াতে চান বাংলাদেশের পতাকা।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের অক্টোবরে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নেপালের তিনটি ছয় হাজার মিটার পর্বত চূড়া স্পর্শ করেন পাবনার আহসানুজ্জামান তৌকির। ২৭ দিনের অভিযানে গিয়ে কোনো শেরপা সাপোর্ট ছাড়াই পর্বতগুলো আরোহণ করেন তিনি। পর্বতগুলো হলো ৬ হাজার ১১৯ মিটার উচ্চতার লবুচে পিক, ৬ হাজার ১৬৫ মিটার উচ্চতার আইল্যান্ড পিক এবং ৬ হাজার ৪৬১ মিটার উচ্চতার মেরা পিক।

আহসানুজ্জামান তৌকির পাবনার চাটমোহর পৌর সদরের বালুচর মহল্লার আকরাম হোসেন সাবু-সুলতানা সামিয়া পারভীন দম্পতি ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট তৌকির। তিনি চাটমোহর রাজা চন্দ্রনাথ ও বাবু শম্ভুনাথ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা এবং অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রিপল ই-তে বিএসসি সম্পন্ন করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত