Ajker Patrika

লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে অজগর সাপকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ৪৪
লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনে অজগর সাপকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ 

মৌলভীবাজারের জুড়ী লাঠিটিলা সংরক্ষিত বনের আট কিলোমিটার ভেতরে বিশাল আকৃতির অজগর সাপকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে গত রোববার ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের সদস্যরা। ততক্ষণে অজগর সাপের দেহের ৭৫ ভাগ পচে যায়।

এর আগে ৫ অক্টোবর অজগর সাপটিকে মৃত পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। গবাদিপশু (গরু) খেয়ে ফেলবে বা বড় কোনো ক্ষতি করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে সাপটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  এ ঘটনায় বন বিভাগ জুড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেই দায় শেষ করেছে। এমন কী অজগরের দেহটি মাটিচাপা দেওয়া বা কীভাবে মারা গেল তা জানার জন্য ময়নাতদন্তের প্রয়োজনও মনে করেনি তারা।

অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের উদাসীনতা এবং পরিচর্যার অভাবে সংরক্ষিত এই অঞ্চলের বন্য প্রাণীগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

জানা গেছে, লাঠিটিলা সংরক্ষিত এই বনের আয়তন পাঁচ হাজার ৬৩১ দশমিক ৩০ হেক্টর। নিবিড় পর্যবেক্ষণে এই বনে সম্প্রতি নতুন কয়েক ধরনের বন্যপ্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। এটি সিলেট বিভাগের অন্যতম চির হরিৎ বন। সংরক্ষিত এই বনে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ থাকলেও মানছেন না কেউই। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নজরদারিও কম। হয়রানির ভয়েও মুখ খোলেন না স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা অনেক সময় বন বিভাগের জন্য কথা বলতে পারি না। যদি বলি, পরে বন বিভাগ আমাদের ওপর বিভিন্ন চাপ প্রয়োগ করে। মিথ্যা মামলায় জেল খাটায়। তবে এই সাপটি মরে নি। সাপটিকে বনে ভেতরে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এখানে বনের ভেতরে অনেকেই গরু চরায় ও বাগান পরিচর্যা করে। তারা বলাবলি করেছে, এই সাপটি যখন এত বড় প্রাণী গিলে ফেলছে নিশ্চয়ই গরুও খেতে পারবে। এই চিন্তায় যারা গরু রাখে ও বাগান পরিচর্যা করে তারাই মেরেছে।’

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের দুই সদস্য আবিদ হোসাইন ও জেবলু আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লোকালয় থেকে ৭/৮ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। সেখানে প্রায় ৮ থেকে ৯ ফুট লম্বা মৃত একটি অজগর সাপ পড়ে থাকতে দেখি। আমরা রাস্তায় মানুষ চলাচলের বেশ কিছু আলামত পেয়েছি। সঙ্গে বনের বড় একটি অংশ পরিষ্কার করে রাখা। অজগরটি দেখা বোঝা যাচ্ছে বড় কোনো প্রাণী খেয়ে পড়ে আছে। সঙ্গে অজগরের গায়ে আঘাতের চিহ্নও দেখতে পাই। যে কেউ দেখলেই বুঝবে সাপটিকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন আগে অজগরটি বন্য শূকর খেয়ে পড়ে থাকে। অজগরের পেট খাবারে ভর্তি থাকায় তাৎক্ষণিক নড়াচড়া করতে পারেনি। এই সুযোগে সাপটিকে পিটিয়ে মারা হতে পারে। ওই দিনের দুইটি ভিডিও সন্ধান পাওয়া যায়, একটি ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের ও অপরটি এক মিনিটের।

এতে দেখা যায়, ‘স্থানীয় কিছু মানুষ সাপটিকে বনের ঝোপঝাড় থেকে লেজ ধরে টেনে হিঁচড়ে বাইরে বের করার চেষ্টা করছে। আবার, সাপটি মানুষের হাত থেকে বাঁচার জন্য বনের দিকে জোর করে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা সাপটির গায়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। ভিডিওতে শোনা যায় কেউ বলছেন, মারো বাড়ি (আঘাত করো)।’ 

পাথারিয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিমের আরেক সদস্য খোর্শেদ আলম বলেন, ‘গিয়ে দেখি মৃত সাপটি প্রায় ৭৫ শতাংশ পচে গেছে। শেষ বারের মতো খাওয়া বুনো শূকরের হাড় দেখা যাচ্ছে। এখানে এসে যা দেখলাম তাতে মনে হচ্ছে না সাপটি এমনি মারা যায়নি। এখানকার পরিবেশ বলছে, এটা পরিকল্পিতভাবে মারা হয়েছে।’

সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাংলাদেশের এই অঞ্চলে যে অজগরগুলো পাওয়া যায়, সেগুলো হলো বর্মিজ পাইথন। এরা কোনোভাবে মানুষ কিংবা গরুর মতো প্রাণী খাওয়া সম্ভব না। সাপ যখন খাবার খায় তখন হজম করার জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় নিবে। খাবার যদি একটু বড় সাইজের হয়, তখন অজগরের জন্য কোনো কোনো সময় ৫ থেকে ৬ দিনও সময় লাগতে পারে হজম করার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্য শূকরের স্বাভাবিক খাবারের চেয়ে সাইজে একটু বড় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মানুষ যদি তাকে বিরক্ত করে তাহলে সাপ বমি করার চেষ্টা করে এবং মারা যেতে পারে। এই সাপটাকে আঘাত করা হয়েছে এটা স্পষ্ট। তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সাপের পেটে খাবার থাকায় সে পালাতে পারেনি। এটা সাপের জন্য খুব নাজুক অবস্থা।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাধারণভাবে যে কোনো প্রাণী মারা গেলে মাটি ছাপা দেওয়া পরিবেশ-প্রকৃতি এবং ওই এলাকায় বসবাসরত মানুষের জন্য ভালো।’ 

জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাপটি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ডিএফও স্যারকে জানানো হয়। উনি যেভাবে বলেছেন, সেভাবে কাজ করেছি। তবে সাপটি কীভাবে মারা গেছে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রটোকল ডিউটিতে সিলেটে ছিলাম। বিট অফিসার গিয়েছিলেন। সাপটিকে মারা হয়েছে এমন কোন তথ্য পাইনি। বিষয়টি নিয়ে থানায় জিডি হয়েছে, তদন্ত চলছে।’ 

লাঠিটিলা বনের বিট কর্মকর্তা রুমিজ্জামান হোসেন বলেন, ‘৫ তারিখ গিয়েছিলাম। সাপটির শরীরের কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখিনি। মাটিচাপা ওয়ার্ল্ড লাইফের কাজ, আমাদের নয়।’ 

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. জাহাঙ্গীর আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয় বিট অফিসার আমাদের জানিয়েছে প্রাকৃতিক কারণে বা ওভার হিটিংয়ের কারণে সাপটি মারা গেছে। আমার কাছে যে ছবি পাঠানো হয়েছে, তা দেখে মনে হয়েছে ওভার হিটিং এর কারণে সাপটি মারা যেতে পারে। সাধারণত সাপকে মারা হলে থেঁতলে যায়। ছবিতে এ রকম কিছু চোখে পড়েনি। তবে বিষয়টি নিয়ে থানায় জিডি হয়েছে। সাপটিকে যদি পিটিয়ে মারা হয়, তাহলে থানায় নিয়মিত মামলা হবে। মাটিচাপা দেওয়ার কথা। এটাতো সিলেট বন বিভাগের অধীনে, আমাদের না।’

সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের অধীনে তো সবই কিন্তু বন্যপ্রাণীর বিষয়গুলো তো ওয়ার্ল্ড লাইফের। অসুবিধা নাই আমি বিট অফিসারকে বলে দিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।
ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের খানপুরে আবু হানিফ (৩০) নামের যুবককে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার মুরাদনগরের সায়েস্তারা গ্রামের ফরচান মিয়ার ছেলে বাহার (৩৬) ও তাঁর ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রোহল এলাকার শফিকুর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

এ দিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী আবু হানিফকে হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

৬৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি খোলা জায়গায় হানিফকে মাটিতে ফেলে বারবার ইট দিয়ে আঘাত করছেন কয়েকজন। অন্তত ৫-৭ জনের ওই দল দফায় দফায় তাঁকে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

তথ্যমতে, গত সোমবার দুপুরে আবু হানিফকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে শহরের খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে তাঁকে দফায় দফায় মারধর করা হয়।

সন্ধ্যায় হানিফ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাঁকে রাস্তায় ফেলে যান অপরাধীরা। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরাসহ তাঁদের কয়েকজন সহযোগী আবু হানিফের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় দফায় দফায় মারধর করেন।

জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির বোন রাবেয়া বলেন, ‘দুপুরের দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে এসেই ভাইরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি, কী কারণে মারতেছে তাও বলেনি। অনেক পরে বলতেছে সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চাইছে। কিন্তু কোন মেয়ে-কবে, তার কিছুই আমরা জানি না।’

নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘শুরু থেকে আমি ছিলাম না। আমি ছিলাম ডিউটিতে। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক ছেলে বাসায় ঝামেলা করতেছে। ফোন পাইয়া আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধইরা খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়ে আসে। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীর (হানিফ) ভেতরে বসাইয়া রাখছে। ১০-১২ জন যুবক পোলাপান ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামের স্থানীয় একজনকে চিনেছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুলে কোথায় যেন নিয়ে চলে যায়। অনেক পরে আমরা তাঁরে হাসপাতালে পাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মামার বদলে আদালতে হাজিরা ভাগনের, কারাফটকে ধরা

­যশোর প্রতিনিধি
শামীম আহম্মেদ। ছবি: সংগৃহীত
শামীম আহম্মেদ। ছবি: সংগৃহীত

চাঁদাবাজি ও শ্লীলতাহানির মামলায় মামার পক্ষে যশোরের আদালতে হাজিরা দেন ভাগনে। আদালতে জেরার উত্তরও দেন তিনি। শেষে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত আসামিকে (ভাগনে) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে আসামি নিয়ে প্রিজন ভ্যান কারাফটকে গেলে নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাইকালে বেরিয়ে আসে আসল পরিচয়।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, আসামি হাসানের পক্ষে কারাগারে যাওয়া ভাগনে মো. শামীম আহম্মেদ (২৭) যশোর সদর উপজেলা ভেকুটিয়া গ্রামের জামশেদ আলীর ছেলে। আর হাসান বড় ভেকুটিয়া গ্রামের মন্টুর ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার আবিদ আহম্মেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন আদালতের নির্দেশে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করা ও মূল আসামি হাসানের নামে পরোয়ানা জারি হবে। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন বলে এর বেশি জানাতে চাননি তিনি।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৮ নভেম্বর সদরের ভেকুটিয়া এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলামের বাড়িতে চাঁদাবাজি করতে আসেন স্থানীয় নিশানুর রহমান অন্তরের নেতৃত্বে সাত থেকে আটজন। এ সময় রাকিবুলের কাছে পাঁচ লাখ চাঁদা দাবি করেন। একপর্যায়ে তাঁদের ওপর হামলা ও রাকিবুলের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি ঘটে। এ সময় তাঁরা নগদ ও বিকাশে ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।

পরদিন ভুক্তভোগী রাকিবুল চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও হামলার অভিযোগে সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার ৫ নম্বর আসামি হাসান। বিভিন্ন সময়ে আসামিরা আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনে রয়েছেন।

গতকাল দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে আসামিরা হাজিরা দিতে আসেন। আসামি হাসানের পক্ষে তিন থেকে চারবার আদালতে হাজিরাও দেন ভাগনে শামীম। এদিন (২১ অক্টোবর) শামীম আদালতে হাজিরা দিতে গেলে আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ফলে আসামি হাসানের পরিবর্তে কারাগারে পাঠানো হয় শামীমকে।

প্রিজন ভ্যানে আসামি কারাগারে যাওয়ার পর আদালত থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং আসামির নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা যাচাইয়ের সময় শামীমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ফলে কারাগারের সিস্টেমের মাধ্যমে তাঁর ফিঙ্গার প্রিন্টে প্রকৃত নাম মো. শামীম আহম্মেদ শনাক্ত হয়।

সূত্রে আরও জানা গেছে, আসামি হাসানের পরিবর্তে কারাগারে যাওয়া শামীম জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন হাসান তাঁর আপন ছোট মামা। মামার পরিবর্তে তিনি তিন থেকে চারবার আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন আকারে আদালতে পাঠিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সাবেরুল হক সাবুর মোবাইল ফোনে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া না পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাজ্জাদ ফোস্তফা রাজা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। অনেক সময় মুহুরিদের ম্যানেজ করে আসামির পক্ষে কেউ হাজিরা দিয়ে সহায়তা করতে পারে। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। কীভাবে এটি হলো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাচার ঠেকাতে সিলেট সীমান্তে বিজিবির অভিযান, যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের সঙ্গে সুপারি পাচারকারীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এতে আলমাস উদ্দিন (২৩) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চারিকাটা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বালিদাড়া কান্দির মুখ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলমাস উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের নয়াখেল পূর্ব গ্রামের শরীফ উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিজিবি সদস্যদের গুলিতে আলমাস মারা গেছেন। পুলিশ গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে জানিয়ে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে তিনটি গুলির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

তবে বিজিবি তাদের ওপর হামলা ও একজন বিজিবি সদস্য আহত হওয়ার কথা জানালেও ওই যুবকের মৃত্যু নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, আজ সকাল ১০টার দিকে বিজিবির জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধীন সুইরঘাট বিওপির চারজন সদস্য দুটি মোটরসাইকেলে টহল দিচ্ছিলেন। এ সময় জৈন্তাপুরের সীমান্তবর্তী বালিদাড়া কান্দিরমুখ মসজিদের দক্ষিণে তাজ উদ্দিনের বাড়ির পাশে চতুল-লালাখাল সড়কের ওপর পিকআপে করে দেশীয় সুপারি নিয়ে যাওয়ার সময় গুলি চালানো হয়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলমাস উদ্দিন নিহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কান্দিরমুখে মসজিদের কাছে এলে বিজিবিকে দেখতে পেয়ে গাড়ি (পিকআপ) ঘুরিয়ে বাজারের দিকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন আলমাসসহ অন্যরা। তখন বিজিবি তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য সামসুজ্জামান সেলিমের জিম্মায় জব্দ সুপারি রেখে গেছে বিজিবি।

এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার সকাল ১০টার দিকে সুরাইঘাট বিওপির একটি টহল দল জৈন্তাপুরের চারিকাটা ইউনিয়নের ভিত্তিখলা সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানবিরোধী অভিযানে যায়। অভিযানের সময় টহল দল একটি অবৈধ পণ্যবাহী পিকআপ আটক করলে অজ্ঞাতনামা একদল সশস্ত্র চোরাকারবারি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, দা, বল্লম, লাঠিসোঁটাসহ টহল দলের ওপর আকস্মিক হামলা করে জব্দ করা মালপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সরকারি সম্পদ অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং টহল দলের সদস্যদের জানমাল রক্ষার্থে বিজিবি সদস্যরা নিরুপায় হয়ে ৪-৫ রাউন্ড ফাঁকা ফায়ার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। হামলাকারীদের আক্রমণে বিজিবির এক সদস্য মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’

তবে চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, একটি পিকআপে দেশি সুপারি ছিল। বিডিআর (বিজিবি) ধাওয়া দিয়ে পিকআপে বেশ কয়েকটি গুলি করে। পিকআপের ওপরে থাকা একটা ছেলেকে ডিরেক্ট (সরাসরি) গুলি করে। গুলির আঘাতে ছেলেটা মারা গেছে। হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যায়।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, নিহত ছেলেটি পিকআপশ্রমিক মানে চালকের সহকারী, চোরাকারবারি নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার বলেন, ‘আমাদের হেডকোয়ার্টার্সে তথ্য পাঠানো হয়েছে, সেখান থেকে মেসেজ এলে আপনাদের জানানো হবে। এর বাইরে এখন কিছু বলতে পারব না।’

জৈন্তাপুর থানার ওসি আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আমরা লাশ সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। নিহত ব্যক্তির শরীরে তিনটি গুলির আঘাত পাওয়া গেছে।’

বিজিবির গুলিতে নিহতের অভিযোগ প্রশ্নে ওসি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা দাবি করেছেন, বিজিবির গুলিতে আলমাস মিয়া মারা গেছেন।’

তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ তাঁদের কাছে কোনো অভিযোগ করতে আসেনি বলে জানান ওসি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে মর্গে মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার, ডোম গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার ডোম আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার ডোম আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা এক তরুণীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করার অভিযোগ উঠেছে মর্গের ডোম আবু সাঈদের (১৯) বিরুদ্ধে। মর্গের চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করার পর পুলিশ দ্রুত ডোমকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনাটি গত সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন চিকিৎসক ও পুলিশ। বিষয়টি জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মামুন। হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার রাতে ময়নাতদন্তের জন্য ওই তরুণীর মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়। পরদিন সকালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃতদেহের ময়নাতদন্ত শুরু করার সময় অস্বাভাবিক কিছু বিষয় লক্ষ করেন।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক পরে জানান, ময়নাতদন্তের সময় তিনি নিশ্চিত হন, মৃতদেহটি মর্গে আসার পর তার ওপর পাশবিক নির্যাতন হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে জানান।

পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্দেহবশত মর্গের দায়িত্বে থাকা ডোম আবু সাঈদকে (১৯) জিজ্ঞাসাবাদ করে। জেরায় অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাঁকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার করা ডোমের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ডোম সাঈদের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায়।

মেডিকেল কলেজের মর্গের মতো একটি সুরক্ষিত ও সংবেদনশীল স্থানে এমন ঘটনায় হাসপাতালের কর্মী মহল এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মরদেহের নিরাপদ আশ্রয়স্থল বলে বিবেচিত স্থানে এমন ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত হওয়ায় অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আত্মহত্যার ঘটনায় হালুয়াঘাট থেকে তরুণীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়েছিল। মৃতদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের খবর পেয়ে দুই ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তকে আটক করা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করার পর আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘এটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক অপরাধ। আমরা দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষ করে আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করব, যাতে এমন বর্বরতা কেউ আর কখনো করার সাহস না পায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত