Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে ধারণক্ষমতার চেয়ে ৮ গুণ বেশি শিশু রোগী হাসপাতালে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুরে ধারণক্ষমতার চেয়ে ৮ গুণ বেশি শিশু রোগী হাসপাতালে

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে শিশু শয্যা মাত্র ১২টি। কিন্তু এই ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি ৯৭ জন। একেকটি শয্যায় তিন-চারজন শিশু রোগী রাখা হয়েছে। শয্যায় থাকা শিশুর তুলনায় বেশি শিশু রোগীকে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। জ্বর, ডেঙ্গু, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে তারা। আজ বুধবার সকালে সদর হাসপাতালে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।

শুধু শিশু ওয়ার্ড নয়; পুরুষ ও মহিলা সার্জারি ওয়ার্ড, গাইনি ওয়ার্ডসহ পুরো হাসপাতালেই রোগী যেন উপচে পড়ছে। হাসপাতালের বারান্দা, প্রতিটি ওয়ার্ডের মেঝে, করিডোর, টয়লেটের সামনের অংশ, চলাচলের পথ, এমনকি লাশ ঘরের সামনেও বিছানা পেতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে। কদিন ধরে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসছে হাজারের বেশি রোগী।

আজ বুধবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, এসব শিশু রোগীর সঙ্গে এক-দুজন করে স্বজন রয়েছেন। রোগী ও স্বজনের চাপে প্রতিটি ওয়ার্ডে গাদাগাদি অবস্থা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একই অবস্থা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও।

এ বিষয়ে কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক লিটন চন্দ্র দাস বলেন, জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। বেড না থাকায় মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। একটি বেডে একজন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে তিন-চারজন। এবারের মতো রোগীর এত চাপ আগে আর দেখা যায়নি।

হাসপাতালে রোগীর উপচে পড়া ভিড়হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি মরিয়ম বেগমের মা রহিমা বেগম বলেন, তিন দিন আগে তাঁর মেয়ে জ্বরে আক্রান্ত হলে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু এখনো জ্বর কমেনি। চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বলেছেন।

সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, হাসপাতালে রোগীর প্রচুর চাপ। বিশেষ করে ডেঙ্গু রোগী সবচেয়ে বেশি। সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু আক্রান্তদের চিকিৎসায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সচেতন না হলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়বে। সবাইকে বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার রাখাসহ বাসায় মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। এ কারণে নানা রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। সেবাপ্রার্থীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সবাইকে সুস্থ থাকার বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পীরগঞ্জে আরও ৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ শনাক্ত

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি  
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় আরও ৯ জনের শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা হলেন রামনাথপুর ইউনিয়নের দ্বারিয়াপুর গ্রামের আশুরা বেগম (৬৫), রবিউল ইসলাম (৫৫), শাহিন মিয়া (২৩), শরীফ মিয়া (২২), খাসা মিয়া (৫২), চেরাগপুরের রওহাবুল মিয়া (৩২), দ্বারিয়াপুরের শিল্পী (২৮), মামুন (১৬) ও খোরশেদ ইসলাম (২৫)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চেরাগপুর গ্রামের শমসের আলীর ছেলে সাদেক আলী ৪ অক্টোবর অসুস্থ গরু জবাই করে ১৮টি পরিবারের মধ্যে মাংস বিতরণ করেন। পরে ১১ অক্টোবর দ্বারিয়াপুর গ্রামের টুটুল মিয়াও অসুস্থ গরু জবাই করে গ্রামবাসীর মধ্যে মাংস ভাগ করে দেন। ধারণা করা হচ্ছে, এসব গরুর মাংস খেয়ে বা কাটাকাটির সময় সংস্পর্শে এসে তাঁরা অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছেন।

আক্রান্ত শিল্পী, মামুন ও খোরশেদ জানান, গরু জবাইয়ের পরপরই কয়েকজনের শরীরে ঘা দেখা দেয়। তাঁরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না গিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন।

রংপুর জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার পর্যন্ত রংপুরের পীরগাছায় ৩৮, কাউনিয়ায় ১৮, মিঠাপুকুরে ১২, গঙ্গাচড়ায় ৭, পীরগঞ্জে একজনসহ জেলায় ৭৮ জন সন্দেহজনক অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে পীরগঞ্জের নতুন ৯ জন আক্রান্তের তথ্য এখনো ওই হিসাবে যুক্ত হয়নি।

জেলা সিভিল সার্জন শাহীন সুলতানা জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্তের সংখ্যা ১১। তবে সন্দেহজনক রোগীর সংখ্যা আরও বেশি। তিনি বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স রোগীর শরীরে কাঁচা ঘা না থাকলে নমুনা সংগ্রহ করা যায় না, তাই অনেক ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না।’ এদিকে গত জুলাই ও সেপ্টেম্বরে পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গে দুজনের মৃত্যু হয়। পরে গাইবান্ধায়ও একাধিক আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ ৪ অক্টোবর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের রোজিনা বেগম (৪৫) অ্যানথ্রাক্স উপসর্গ নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তাড়াশে কীটনাশকের দোকান থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র চুরি

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় রাতের আঁধারে সার ও কীটনাশকের দোকানে চুরি হয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার মালপত্র খোয়া গেছে মালিকের।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার কাস্তা বাজারে মেসার্স জিসা এন্টারপ্রাইজে এই ঘটনা ঘটে।

দোকানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম দাবি করে বলেন, ‘রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাই। সকালে এসে দেখি দোকানের পেছনের টিন কাটা। দোকান থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকার কীটনাশক ও অন্য মালপত্র চুরি হয়ে গেছে।’

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘চুরির বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘আমি বিএনপি করে শ ম রেজাউলের আমলে মামলায় জেল খেটেছি। এমনকি আমাকে মেরে ফেলারও চেষ্টা হয়েছে। তবে শেখ হাসিনার আদর্শ ধারণ করে এযাবৎ কাজ করেছি।’ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এমন মন্তব্য করে আবারও আলোচনায় পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বিতর্কিত ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা।

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে ভাই ও চাচাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনি আগে থেকেই সমালোচিত। অভিযোগ উঠেছে, ওই মামলায় রেহাই পেতে তাঁর ভাই ও চাচা ৫০ হাজার টাকা দিলেও হয়রানি থেকে মুক্তি পাননি। তাঁরা এখনো ভুগছেন সেই ঘর পোড়ানোর মামলায়। বিতর্কিত মন্তব্য করে এখন তিনি আবারও আলোচনায় উঠে এসেছেন।

সোহাগ মৃধার চাচা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘ওয়ারিশ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে সোহাগ তার ভাইকে হয়রানি করত। আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চুরির মামলায় ফাঁসায়। পরে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে আমি ও তার ভাই তৈমুর রেজার নামে মামলা দেয়। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েও রেহাই দেয়নি।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আওয়ামী আমলে সোহাগ মৃধা এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে রেখেছিলেন। প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো, সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অপকর্মে তিনি জড়িত ছিলেন। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এখন তিনি বিএনপি পরিচয়ে সক্রিয় হয়েছেন।

জানতে চাইলে বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘সোহাগ মৃধা কেমন মানুষ, তা সবাই জানে। সে আমার বাবাকেও একসময় হয়রানি করেছে।’

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ফকরুল আলম বলেন, ‘শুনেছি সোহাগ মৃধা আওয়ামী লীগ করতেন। এখন কীভাবে বিএনপি করলেন জানি না। কেউ নিজেকে বিএনপি বললেই সে বিএনপি হয়ে যায় না। তিনি আমাদের দলের কেউ নন।’

এসব নিয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সোহাগ মৃধা বলেন, ‘আমি কাউকে মিথ্যা মামলা দিইনি। আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী। ইউপি সদস্যদের নির্দিষ্ট দল থাকে না—যে সরকার আসে, তার হয়ে কাজ করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাউয়াছড়া বন থেকে টহল দলের সদস্যের লাশ উদ্ধার

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দায়িত্বরত মো. সিরাজ মিয়া (৭০) নামের এক বন টহল দলের (সিপিজি) সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের জানকিছড়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত সিরাজ মিয়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার ডলুছড়া এলাকার বাসিন্দা।

পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, সিরাজ মিয়া মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে লাউয়াছড়া বনের জানকিছড়া এলাকায় বন পাহারায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। আজ সকালে খবর পাওয়া যায়, লাউয়াছড়া বনের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ প্রধান সড়কের পাশে সিপিজি ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় তাঁর মরদেহ পড়ে আছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বন বিভাগের সদস্যরা।

জানতে চাইলে লাউয়াছড়া বনের বনবিট কর্মকর্তা মারজুক হোসেন বলেন, ‘নিহত সিরাজ মিয়ার ডিউটি শেষ হয়েছিল ভোর ৫টার দিকে। সকাল ৬টার দিকে খবর পাই, তাঁর মরদেহ সড়কের পাশে পড়ে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ডিউটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে কোনো গাড়ির ধাক্কায় তিনি মারা গেছেন। মরদেহের পাশে গ্লাস ভাঙা টুকরো পাওয়া গেছে।’

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত