Ajker Patrika

গাংনীর খুদে বিজ্ঞানী আল কাসাভ: রকেট ইঞ্জিনিয়ারের স্বপ্নে উদ্ভাবনের আলো

রাকিবুল ইসলাম (গাংনী) মেহেরপুর
আল কাসাভ যখনই সময় পায়, নিজের কাজে ব্যস্ত থাকে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আল কাসাভ যখনই সময় পায়, নিজের কাজে ব্যস্ত থাকে। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহেবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আল কাসাভ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নানা ক্ষেত্রে অনবদ্য সাফল্যের মাধ্যমে খুদে বিজ্ঞানী হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন। তার স্বপ্ন একদিন রকেট ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের বিজ্ঞানক্ষেত্রের উন্নতিতে অবদান রাখা। নিজ উদ্যোগে অনলাইন থেকে শিখে বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরি করে সে সবাইকে মুগ্ধ করেছে।

যে সময় অধিকাংশ শিক্ষার্থী মোবাইলে গেম, টিকটক, ইউটিউব ও ফেসবুক নিয়ে ব্যস্ত, ঠিক সেই সময় এই ব্যতিক্রমী বিস্ময় বালকের দেখা মিলল গাংনী উপজেলায়। আল কাসাভ গাংনীর কাজীপুর ইউনিয়নের পীরতলা গ্রামের মোসাদ্দেক হাসানের ছেলে। ইতিমধ্যে কয়েকটি জিনিস আবিষ্কার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সবাইকে। সবার মুখে মুখে এখন সে খুদে বিজ্ঞানী নামেই পরিচিত। আকাশছোঁয়া স্বপ্ন নিয়ে নিজের মতো কাজ করে যাচ্ছে আল কাসাভ।

স্থানীয়রা বলেন, তার মতো বয়সে এমন গবেষণায় সময় দেওয়া সত্যিই আশ্চর্যজনক। ‘খুদে বিজ্ঞানী’ নামে এখন তার পরিচিতি। অন্য ছেলেমেয়েদের মতো বিনোদনে ব্যস্ত না থেকে আল কাসাভ তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিনিয়ত তৎপর।

আল কাসাভ বলে, ‘আমি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বাংলাদেশের গৌরব বয়ে আনতে চাই এবং আমার আবিষ্কার দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন আমার মেধাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি। আর আমার স্বপ্ন, আমি রকেট ইঞ্জিনিয়ার হব। সেই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। মোবাইল থেকে অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম দেখে এগুলো শিখেছি, আরও শিখছি।’

সে আরও বলে, ‘আমার তৈরি প্রজেক্টগুলো হলো– রকেট গাইডেন্স অ্যান্ড ফ্লাইট ট্রাজেক্টরি কন্ট্রোল, কিউরিসিটি রোভার-০১, লেজার কমিউনিকেশন সিস্টেম, বাংলাদেশ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং Kasav-0.5 km।’

আল কাসাভ যখনই সময় পায়, নিজের কাজে ব্যস্ত থাকে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আল কাসাভ যখনই সময় পায়, নিজের কাজে ব্যস্ত থাকে। ছবি: আজকের পত্রিকা

তার বাবা মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘আল কাসাভ লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। তার প্রতিভা যথাযথভাবে কাজে লাগানো দরকার। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সে দেশের গর্ব হবে। উচ্চশিক্ষার পর গবেষণাকেন্দ্রে নিয়ে যেতে চাই।’

কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মু. আলম হোসাইন বলেন, ‘আল কাসাভকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। যে প্রতিভা নিয়ে সে বড় হচ্ছে—এই প্রতিভাকে কাজে লাগাতে পারলে সে দেশের গর্ব হয়ে উঠবে। সরকারিভাবে তার সহযোগিতা প্রয়োজন। তার সুপ্ত প্রতিভাকে কাজে লাগাতে পারলে সে আমাদের দেশের বড় সম্পদ হয়ে উঠবে। আমার পক্ষ থেকে যতটুকু পারি তাকে সহযোগিতা করব।’

সাহেবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রশীদ বলেন, ‘আল কাসাভ আমাদের জেলার গর্ব। তার গবেষণা সবাইকে মুগ্ধ করেছে। তার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা দোয়া করি।’

গাংনী উপজেলা অতিরিক্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আল কাসাভের কাজ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমরা সহযোগিতা করব।’

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আল কাসাভের বিষয়ে আমাদের প্রথম পরামর্শ থাকবে তাকে ভালোভাবে লেখাপড়া করতে হবে। লেখাপড়ার পাশাপাশি উদ্বোধনী যে বিষয়গুলো আবিষ্কার করবে, সে বিষয়েও তাকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আমরা তার সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত