গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারানো আকলিমা খাতুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়নের রাইপুর গ্রামের মৃত মো. জোয়াদ আলী মোল্লার মেয়ে। বর্তমানে তিনি উপজেলার রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
আকলিমা খাতুন রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সুনামের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। পরে ভর্তি হন গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজে। সেখান থেকে তিনি ২০০৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০০৫-৬ সেশনে অনার্সে ভর্তি হন মেহেরপুর সরকারি কলেজে। ২০১৩ সালে তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
স্থানীয়রা জানায়, আকলিমা খাতুন অত্যন্ত মেধাবী একজন মানুষ। তিনি জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ১৮ বছর আগে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারান তিনি। তবে অচল পা নিয়ে জীবনসংগ্রামে লড়াই করে সফল হয়েছেন তিনি। তিনি এখন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁকে দেখে সবারই শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই রয়েছে।
আকলিমা খাতুন বলেন, ‘আমি জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী ছিলাম না। যখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী, তখন আমার জীবনে ঘটে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। ২০০৬ সালের ৬ মার্চ মেহেরপুর সরকারি কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দুই পা গুরুতর জখম হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও আর সচল হয়নি পা দুটি। তবে দুই পা অচল হলেও থেমে থাকেনি আমার জীবনসংগ্রাম। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও চালিয়েছি লেখাপড়া। আর সে সময় থেকে আমার চলাচলের মূল মাধ্যম হয় হুইলচেয়ার।’
আকলিমা খাতুন আরও বলেন, ‘আমার ২০১০ সালে বানিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু হয়। পরে ২০১৪ সালে রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দিই। আমার অনার্স থার্ড ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পরই আল্লাহর অশেষ রহমতে চাকরি হয়ে যায়। আমার জীবনের গল্পটা এতটা সহজ ছিল না। অনেক কষ্টের পথ পেরিয়ে আসতে হয়েছে এত দূর। একসময় আমি নিজেই নিজের মৃত্যু কামনা করতাম। তবে এই দুঃসময়ে মাসহ পরিবারের সবাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে বলে সব সম্ভব হয়েছে।’
আকলিমা খাতুন মনে করেন, প্রতিটি বাবা-মায়ের উচিত প্রতিবন্ধী, অক্ষম সন্তানকে বোঝা মনে না করে ভালো কিছু করার উৎসাহ দেওয়া।
রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. ফৌজিয়ারা খাতুন বলেন, প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয়, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ আকলিমা খাতুন। বাড়িতে হুইল চেয়ারে চলাচল করেন। আর স্কুলে আসার সময় ব্যাটারিচালিত হুইল চেয়ার ব্যবহার করেন। আর ক্লাসগুলো নেন হুইল চেয়ারে বসে। তিনি মনোযোগসহ ক্লাস নেন। তাঁর প্রতিটি গুণে আমরা মুগ্ধ।’
আকলিমা ২০১৮ সালে নাটোর সদর উপজেলার দক্ষিণপুরের মহররম আলীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্বামী মহররম আলী বর্তমানে লিগ্যাল এইডে কর্মরত।
আকলিমার মা মমতাজ খাতুন জোসনা বলেন, ‘আমার মেয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। দুটি পা অচল হলেও লেখাপড়া বন্ধ করেনি। এখন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করছে। সে তার সংসারের সব কাজ নিজেই করে। কোনো না পারলে আমি সাহায্য করি।’
মমতাজ খাতুন জোসনা আরও বলেন, ‘প্রথমে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে তার মতো দুর্ঘটনার শিকার অনেক মানুষকে দেখে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়।’
রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. গোলাম সাকলায়েন ছেপু বলেন, ‘আকলিমা খাতুন শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও আর পাঁচজনের মতোই তাঁর কাজ নিজে করেন। তিনি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করে থাকেন। তিনি আমাদের গ্রামের গর্ব। তাঁর বাড়ি থেকে হুইল চেয়ারে চলাচলের রাস্তার যেটুকু সমস্যা ছিল তা ঠিক করে দিয়েছি। তাঁর থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আকলিমার আমাদের গর্ব। তাঁকে দেখে সমাজের আরও যারা এ রকম সমস্যায় রয়েছেন, তাঁরা ঘুরে দাঁড়াবেন বলে আমি মনে করি। যারা সমাজে এ ধরনের সমস্যা দিয়ে চলছে, তাদের এড়িয়ে না চলে আমাদের সহযোগিতা করা উচিত।’
সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারানো আকলিমা খাতুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়নের রাইপুর গ্রামের মৃত মো. জোয়াদ আলী মোল্লার মেয়ে। বর্তমানে তিনি উপজেলার রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
আকলিমা খাতুন রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় সুনামের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। পরে ভর্তি হন গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজে। সেখান থেকে তিনি ২০০৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ২০০৫-৬ সেশনে অনার্সে ভর্তি হন মেহেরপুর সরকারি কলেজে। ২০১৩ সালে তিনি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
স্থানীয়রা জানায়, আকলিমা খাতুন অত্যন্ত মেধাবী একজন মানুষ। তিনি জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। ১৮ বছর আগে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পা হারান তিনি। তবে অচল পা নিয়ে জীবনসংগ্রামে লড়াই করে সফল হয়েছেন তিনি। তিনি এখন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁকে দেখে সবারই শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই রয়েছে।
আকলিমা খাতুন বলেন, ‘আমি জন্মগতভাবে প্রতিবন্ধী ছিলাম না। যখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী, তখন আমার জীবনে ঘটে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। ২০০৬ সালের ৬ মার্চ মেহেরপুর সরকারি কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দুই পা গুরুতর জখম হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও আর সচল হয়নি পা দুটি। তবে দুই পা অচল হলেও থেমে থাকেনি আমার জীবনসংগ্রাম। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও চালিয়েছি লেখাপড়া। আর সে সময় থেকে আমার চলাচলের মূল মাধ্যম হয় হুইলচেয়ার।’
আকলিমা খাতুন আরও বলেন, ‘আমার ২০১০ সালে বানিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু হয়। পরে ২০১৪ সালে রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দিই। আমার অনার্স থার্ড ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার পরই আল্লাহর অশেষ রহমতে চাকরি হয়ে যায়। আমার জীবনের গল্পটা এতটা সহজ ছিল না। অনেক কষ্টের পথ পেরিয়ে আসতে হয়েছে এত দূর। একসময় আমি নিজেই নিজের মৃত্যু কামনা করতাম। তবে এই দুঃসময়ে মাসহ পরিবারের সবাই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে বলে সব সম্ভব হয়েছে।’
আকলিমা খাতুন মনে করেন, প্রতিটি বাবা-মায়ের উচিত প্রতিবন্ধী, অক্ষম সন্তানকে বোঝা মনে না করে ভালো কিছু করার উৎসাহ দেওয়া।
রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. ফৌজিয়ারা খাতুন বলেন, প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয়, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ আকলিমা খাতুন। বাড়িতে হুইল চেয়ারে চলাচল করেন। আর স্কুলে আসার সময় ব্যাটারিচালিত হুইল চেয়ার ব্যবহার করেন। আর ক্লাসগুলো নেন হুইল চেয়ারে বসে। তিনি মনোযোগসহ ক্লাস নেন। তাঁর প্রতিটি গুণে আমরা মুগ্ধ।’
আকলিমা ২০১৮ সালে নাটোর সদর উপজেলার দক্ষিণপুরের মহররম আলীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্বামী মহররম আলী বর্তমানে লিগ্যাল এইডে কর্মরত।
আকলিমার মা মমতাজ খাতুন জোসনা বলেন, ‘আমার মেয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। দুটি পা অচল হলেও লেখাপড়া বন্ধ করেনি। এখন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করছে। সে তার সংসারের সব কাজ নিজেই করে। কোনো না পারলে আমি সাহায্য করি।’
মমতাজ খাতুন জোসনা আরও বলেন, ‘প্রথমে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে তার মতো দুর্ঘটনার শিকার অনেক মানুষকে দেখে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায়।’
রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. গোলাম সাকলায়েন ছেপু বলেন, ‘আকলিমা খাতুন শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও আর পাঁচজনের মতোই তাঁর কাজ নিজে করেন। তিনি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো করে থাকেন। তিনি আমাদের গ্রামের গর্ব। তাঁর বাড়ি থেকে হুইল চেয়ারে চলাচলের রাস্তার যেটুকু সমস্যা ছিল তা ঠিক করে দিয়েছি। তাঁর থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাংনী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আকলিমার আমাদের গর্ব। তাঁকে দেখে সমাজের আরও যারা এ রকম সমস্যায় রয়েছেন, তাঁরা ঘুরে দাঁড়াবেন বলে আমি মনে করি। যারা সমাজে এ ধরনের সমস্যা দিয়ে চলছে, তাদের এড়িয়ে না চলে আমাদের সহযোগিতা করা উচিত।’
ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় দুই পথের উভয় প্রান্তে আটকা পড়ে অ্যাম্বুলেন্স, ব্যক্তিগত গাড়ি, যাত্রীবাহী বাসসহ দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।
২৬ মিনিট আগেরংপুরে ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একই স্থানে একে একে ছয়টি পরিবহন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে প্রাণহানির কোনো ঘটনা না ঘটলেও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাকবলিত পরিবহনগুলোর মধ্যে তিনটি যাত্রীবাহী বাসসহ ট্রাক, পিকআপ ও কাভার্ডভ্যান রয়েছে। গাড়িগুলো ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে...
২৭ মিনিট আগেচট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে বাসে-ট্রাকে করে মানুষ মাহফিলে আসতে থাকে। বিকেল ৪টা নাগাদ প্যারেড ময়দানের আশপাশের রাস্তাঘাট লোকারণ্য হয়ে যায়, বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। প্যারেড ময়দানসংলগ্ন চকবাজার তেলিপট্টি মোড় থেকে এক্সেস রোড, অলিখাঁ মোড় থেকে গণি বেকারির মোড় পর্যন্ত যানচলাচল সীমিত হয়ে পড়ে।
৪৩ মিনিট আগেমাঝনদীতে আটকা পড়া এসব ফেরিতে ১৫টির মতো যাত্রীবাহী বাস আছে। এসব বাসের যাত্রীরা কনকনে শীতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এদিকে পাটুরিয়া ঘাটে ৩০টির মতো যাত্রীবাহী বাস এবং শতাধিক পণ্যবাহী যানবাহন আটকা পড়েছে।
২ ঘণ্টা আগে