Ajker Patrika

মুরগি চুরির অপবাদে কিশোরী ও মাকে নির্যাতনের অভিযোগ, ইউপি সদস্যের অস্বীকার 

বাগেরহাট প্রতিনিধি
Thumbnail image

বাগেরহাটের শরণখোলায় মুরগি চুরির অপবাদে এক কিশোরী ও তার মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

বর্তমানে মা ও মেয়ে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। অভিযুক্ত তপু বিশ্বাস ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। 

আজ শনিবার বিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরী (১৪) বলে, ‘মা অনেক দিন ধরে অসুস্থ। গত বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের ওষুধ কিনতে বাজারে যাওয়ার পথে স্থানীয় আশ্বাপ আলী আমাকে ডেকে তার বাড়ির মধ্যে নেয় এবং মুরগি চুরি করেছি বলে মারধর করে। পরে তারা ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তপু বিশ্বাসকে ডেকে নিয়ে আসে। তপু বিশ্বাস এসে কোনো কিছু না শুনে প্রথমে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করে। পরে হাত-পা বেঁধে পায়ের তলায় পেটাতে থাকেন।’ 

কিশোরী আরও বলে, ‘একপর্যায়ে মা আসলে, তাকেও বেঁধে মারধর করেন তপু বিশ্বাস। মুরগি চুরির জরিমানা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে আবারও মারধর করা হবে বলে হুমকি দেয়। মারধর শেষে আমার গলায় ধারালো দা ধরে, মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দিতে বলে। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে আমি মুরগি চুরি করেছি বলে স্বীকারোক্তি দেই।’ 

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরী আরও বলে, ‘আমি কখনো মুরগি চুরি করিনি। আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। অন্যায়ের বিচার চাই।’ 

নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে ওই কিশোরীর মাও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি বলেন, ‘ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস আমার মেয়েকে মারপিট করছে, ডেকে নিয়ে আমাকেও মারধর করেছে। আলাদা ঘরের মধ্যে বসিয়ে হাত বেঁধে মারধর করেছে। আমার বাচ্চা মেয়েকে যেভাবে পিটিয়েছে তা কোনো মা সহ্য করতে পারে না। আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা চেয়েছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই।’ 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য তপু বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্থানীয়রা মুরগি চোর ধরেছে বলে আমাকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে অনেক লোকজন ছিল। আমি থানার পরিদর্শককে কর্মকর্তাকে ফোন দিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, ‘‘স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করে ফেলতে।’’ ঘটনাস্থলে যারা ছিল তাদের সমন্বয়ে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে শুনি রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আসলে তাদের নির্যাতন করা হয়নি।’ 

বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডা. পার্শা সানজানা বলেন, ‘নির্যাতনের শিকার মা-মেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের অবস্থা এখন কিছুটা ভালো।’ 

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘ঘটনা শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত