Ajker Patrika

সভায় অনুপস্থিত থাকায় যশোর জেলা ছাত্রলীগের ১১ নেতাকে শোকজ

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৩, ১৪: ৪১
সভায় অনুপস্থিত থাকায় যশোর জেলা ছাত্রলীগের ১১ নেতাকে শোকজ

যশোর জেলা ছাত্রলীগের বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নোটিশ দেওয়া হয়। এতে ওই ১১ নেতাকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে নোটিশের জবাব সশরীরে উপস্থিত হয়ে দিতে বলা হয়েছে। 

কারণ দর্শানোর নোটিশ পাওয়া ১১ নেতা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমরান হোসেন, শাহাদাৎ হোসেন রনি হাওলাদার, কায়েস আহমেদ রিমু, আব্দুর রউফ পিন্টু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিফাতুজ্জামান রিফাত, আসাদুজ্জামান আসাদ, আশিকুর রহমান হৃদয়, মাসুদ হাসান কৌশিক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, রাকিবুল আলম ও ফাহমিদ হুদা বিজয়। 

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বিকেলে যশোর শহরের গাড়িখানায় জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। এতে জেলার আট উপজেলাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কলেজের ২৮টি ইউনিটের মধ্যে বেশির ভাগ নেতা উপস্থিত ছিলেন। তবে শোকজ পাওয়া ওই ১১ নেতা উপস্থিত ছিলেন না।

এদিকে নোটিশ পাওয়া ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, ২০২১ সালের ৫ জুলাই থেকে জেলার সভাপতি পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক পল্লব দায়িত্ব পালনকালে পদে পদে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সংগঠনের সিদ্ধান্ত তাঁরা দুজন নিয়েছেন। সংগঠন পরিচালনায় তাঁদের চরম স্বেচ্ছাচারিতায় ২৩ সদস্যের কমিটিকে একসঙ্গে করতে পারেননি এই সভাপতি-সম্পাদক। তাঁদের সাংগঠনিক অক্ষমতায় ইতিমধ্যে জেলা ছাত্রলীগ অনেকগুলো উপগ্রুপে বিভক্ত হয়েছে। অনেকে কাঙ্ক্ষিত পদে বসতে না পারায় পদ ব্যবহার করেন না, একই সঙ্গে দলীয় কর্মসূচিতেও অংশ নেন না। 

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, বর্ধিত সভার কোনো চিঠি পাননি তিনি। জেলার সভাপতি-সম্পাদক সাংগঠনিক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সমন্বয় নেই। তাঁদের দুজনের একক সিদ্ধান্তে কমিটি প্রেসরিলিজ দেয়, আবার তুলেও নেয়। সভাপতি-সম্পাদকের স্বেচ্ছাচারিতায় সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম নেই। এই দুজন যে কয়েকটা কমিটি দিয়েছে, সাংগঠনিক কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেনি। অছাত্র, জামায়াত–বিএনপি পরিবারের লোকদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কোনো সাংগঠনিক কাজে কাউকে ডাকেন না। 

তিনি আরও বলেন, ‘বর্ধিত সভার কথা শুনেছিলাম। কিন্তু যাইনি তাঁদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে। শোকজ করেছে, শোকজের জবাব দেব কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। জেলার সভাপতি-সম্পাদকের কাছে দেব না।’ 

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান হৃদয় বলেন, ‘প্রেসরিলিজ ফেসবুকে ঘুরছে, ওটা দেখেছি। জেলা ছাত্রলীগ তো প্রেসরিলিজ-নির্ভর। ওনারা তো কমিটির অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন না। সভাপতি-সম্পাদক দুজনে আলোচনা করে কমিটি দেওয়া থেকে শুরু করে যা কার্যক্রম করেন, সেটা রাতের আঁধারে প্রেসরিলিজের মাধ্যমে করেন। এখন শোকজ করেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে আমার জবাব দেব।’ 

আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘অসুস্থ ছিলাম, বর্ধিত সভার বিষয়টি জানি না। এ ছাড়া সারা দিন বৃষ্টি হয়েছে, তাই বের হতে পারিনি।’ 

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের মোবাইল ফোনে কয়েক দফায় ফোন দিলেও তাঁরা দুজনেই ফোন রিসিভ করেননি। 

তবে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইয়াসিন আরাফাত তরুণ বলেন, বিশেষ প্রস্তুতি সভায় উপস্থিত না থাকায় ১১ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সবাইকে লিখিত জবাব নিয়ে সভাপতি-সম্পাদকের কাছে সশরীরে উপস্থিত হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত