Ajker Patrika

কুয়েটে সংকট নিরসনে ভিসি নিয়োগ চায় শিক্ষক সমিতি, শুরু হচ্ছে না ক্লাস

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ক্লাস আপাতত শুরু হচ্ছে না। আজ সোমবার সভার পর শিক্ষক সমিতি জানায়, ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অটল আছে তারা। তারা অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ চায়।

টানা চার মাস বন্ধ কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। অচলাবস্থা নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান কুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতাদের ফোন করে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার অনুরোধ জানানোর পর আজ শিক্ষক সমিতির সভা থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষক সমিতির সভায় একাডেমিক কার্যক্রম চালুর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তারা তাদের আগের অবস্থানেই অটল রয়েছে।

আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ ঠিক করতে শিক্ষক সমিতির সভা শুরু হয়। সভা চলে বেলা ১টা পর্যন্ত। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সাহিদুল ইসলাম। সভা শেষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘কুয়েটের অচলাবস্থা নিরসনের জন্য দ্রুত ভিসি নিয়োগ দিতে আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষকদের আগের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে।’ তিনি বলেন, সভায় শিক্ষকেরা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভাইস চ্যান্সেলার দরকার। তাঁর অবর্তমানে অনেক সিদ্ধান্ত ও সংকট নিরসন করা সম্ভব নয়। এ কারণে শিক্ষক সমিতি সরকারের কাছে অবিলম্বে একজন ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে। সুতরাং ক্লাস আপাতত চালু হচ্ছে না।

সভা শেষে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. নুরুন্নবী মোল্লা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আমাদের সংসদ থেকে পাস করা যে আইন, ওই আইনে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়ভার উনার ওপর। আমরা কিন্তু শুরু করতে চাই, বাট উই নিড আ লিডার। আমরা করতে গেলে কে অ্যাপ্রুভাল দেবে? একটা একাডেমিক ক্যালেন্ডার লাগবে। কে দেবে? প্রথম বর্ষের ক্লাস কখন শুরু হবে, একাডেমিক কাউন্সিলে পাস হতে হবে। এই মেসেজটা আমরা বুঝাতে পারছি না। ভিসি আসা মানে ক্লাসে যাওয়ার রাস্তা তৈরি হওয়া। এ জন্য সরকারকে দ্রুত ভিসি নিয়োগ দিতে হবে।’

এদিকে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ছাত্র কল্যাণ কমিটি রেজিস্ট্রার বরাবর একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত চালুর আবেদন করা হয়েছে। ওই আবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার যে সিদ্ধান্ত, সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা সেশনজটে পড়ে আছি। সিন্ডিকেটের ওই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। আবেদনে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ভিসি না থাকায় আপনি আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবকের দায়িত্বে আছেন। সিন্ডিকেটের ওই সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।

দীর্ঘদিন ক্লাস না হওয়ায় সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরাও। আজ রাজশাহী থেকে এক অভিভাবক অভিযোগ করেন, কুয়েটের দায়িত্বশীল কেউ ফোনও ধরেন না। তিনি অবিলম্বে ক্লাস শুরুর দাবি জানান।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অচলাবস্থা নিরসনে ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদিসহ অন্যান্য আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চলমান রাখার স্বার্থে বিকল্প নির্দেশনা চেয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর গতকাল চিঠি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী সমিতির নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত