Ajker Patrika

হানিফের আসনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ, পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
হানিফের আসনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ, পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে ‘ভোট ডাকাতি’ ও সহিংসতার অভিযোগ তুলে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তণুর সমর্থকেরা। এ নিয়ে আজ বুধবার দুপুরে শহরের কালেক্টরেট চত্বরের সামনে মানববন্ধন করেন তাঁরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন তণুর বাবা কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পাঁচবারের পৌর মেয়র আনোয়ার আলীসহ অন্যরা। প্রায় এক কিলোমিটার লম্বা এই মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এহেতেশাম রেজার কাছে স্মারক লিপি দেন সংশ্লিষ্টরা।

কুষ্টিয়া-৩ আসনে ১ লাখ ২৭ হাজার ৮০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তণু ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৪২ হাজার ১৮১ ভোট।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে আনোয়ার আলী বলেন, ‘আপনি দলের লোকদের মনোনয়ন দিলেন, আবার দলের অন্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে বললেন। এতে দল দুই ভাগে হয়ে গেছে। এর দায় কে নেবে? আপনাকেই নিতে হবে।

আনোয়ার আলী বলেন, ‘কুষ্টিয়ায় নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। এখানে প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। আপনার কাছে অনুরোধ, এই নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দেবেন।’

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘ভোটের আগের সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নৌকার প্রার্থীর ক্যাডাররা সদলবলে প্রতিটি ইউনিয়নে ভোট কেন্দ্রের আশপাশে মহড়া দেয়। তণুর পোলিং এজেন্টদের হুমকি দেওয়া শুরু করে। ওই রাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তণুর ঈগল প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো হয়। ভোটের দিন সকাল ৯টার মধ্যে ৫২টি কেন্দ্র থেকে তণুর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। বেলা ১১টার মধ্যে প্রায় ৭০টি কেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়া হয়।’

কুষ্টিয়া শহরের কুওয়াতুল ইসলাম আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের নারী পোলিং এজেন্টের কাছে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র ও নিয়োগপত্র কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং তাঁকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিলন মন্ডল পোলিং এজেন্টদের বের করে দেন। আব্দালপুর ইউনিয়নের হাসানবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পোলিং এজেন্টকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়। এ ছাড়া বিষ্ণুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জিয়ারখী, ঝাউদিয়া, বটতৈল, আলামপুর, হরিনারায়নপুর, গোস্বামী দূর্গাপুর, মনোহরদিয়া, পাটিকাবাড়ি ও কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ও পৌরসভা অন্তর্গত শতাধিক কেন্দ্রে একই ঘটনা ঘটতে থাকে বলে স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে।

নির্বাচনের দিনে দুপুর ১২টার দিকে সবচেয়ে ঝামেলাপূর্ণ ২১টি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার বরাবর ভোট স্থগিত করার লিখিত আবেদন পাঠানো হয়। মাত্র দুটি কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার আবেদন গ্রহণ করেন, কিন্তু বাকিরা কেউ আবেদন গ্রহণ করেননি। দুপুর দেড়টা থেকে খবর আসতে থাকে তণুর পোলিং এজেন্ট শূন্য করে প্রশাসনের সহায়তায় নৌকায় সিল মারা হচ্ছে। সে সময় তণু ভোট গ্রহণ স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করলেও কোনো ফল হয়নি বলে দাবি করা হয় স্মারকলিপিতে।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা এহেতেশাম রেজা জানান, ‘এই সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।’

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত