Ajker Patrika

ইলেকট্রিক মেকানিক থেকে কৃষি উদ্যোক্তা সুমন

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
ইলেকট্রিক মেকানিক থেকে কৃষি উদ্যোক্তা সুমন

যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের সুমন হোসেন বাপ্পি। গ্রামের বাজারে একটি দোকানে ইলেকট্রিক মেকানিকের কাজ করতেন। ইউটিউবে ভিডিও দেখে শুরু করেন বীজবিহীন (সিড লেস) লেবু চাষ। প্রথমবারেই আবাদ করা জমিতে লেবুর ব্যাপক ফলন পাওয়ায় ও বাজারে এ লেবুর চাহিদা থাকায় মেকানিকের কাজ ছেড়ে এখন তিনি হয়ে উঠেছেন কৃষি উদ্যোক্তা।

মঙ্গলকোট গ্রামের মোজাম উদ্দীন গাজীর ছেলে সুমনের (২১) এসএসসি পাশ করার পর থেমে যায় পড়াশোনা। পরে ইলেকট্রিক মেকানিকের কাজ শিখে মঙ্গলকোট বাজারের পাশে একটি দোকান নিয়ে কাজ করতে থাকেন। তবে ব্যবসা মন্দা যাওয়ায় ইউটিউবে ভিডিও দেখে বছর দেড়েক আগে যশোরের বাঘারপাড়া থেকে দেড় শতাধিক লেবুর কলম কিনে আনেন। জমি প্রস্তুত করা, লেবুর কলম লাগানোসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ১০ হাজার টাকা ব্যয় করেন। ৮ মাস পর প্রতিটি গাছে লেবু ধরে।

প্রথমবারেই সুমন প্রায় ১৫ হাজার লেবু বিক্রি করেছেন। একেকটি লেবু বিক্রি করে ১ থেকে ৬ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত দাম পেয়েছেন। এ ছাড়া প্রায় ৪ হাজার লেবুর কলম তৈরি করেছেন। একেকটি কলম ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন। বীজবিহীন এ লেবুতে প্রচুর রস হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া এ লেবুর কলম কিনতে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ওই বাগানে আসছেন। লেবু বাগানে নিয়মিত একজন শ্রমিক কাজ করেন। পাশাপাশি লেবুর কলম তৈরির সময় কাজ করেন ৩-৪ জন শ্রমিক।

কৃষি উদ্যোক্তা সুমন বলেন, ‘ইউটিউবে ভিডিও দেখে দেড় শতাধিক বীজবিহীন লেবুর কলম কিনে ২৬ শতক জমিতে আবাদ করি। ৮ মাসের মাথায় প্রথম ফলন পাই। গাছের বয়স এখন ১৮ মাস। প্রতিটি গাছে প্রায় দেড় হাজার লেবুর ফলন পেয়েছি। এসব লেবু পাশের চুকনগরের আঠারোমাইল বাজারসহ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করি। লেবুতে বীজ না থাকায় শরবত বিক্রেতারও বাগান থেকে লেবু কিনে নিয়ে যান।’

 ‘লেবু বিক্রি করে ভালো লাভবান হওয়ায় আরও ৩৬ শতক জমিতে লেবু চাষ শুরু করেছি। এ লেবু চাষে তেমন রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। জৈব সার ব্যবহার করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাই খরচও কম। বারোমাসি এ লেবু চাষ করে প্রতি মৌসুমে লক্ষাধিক টাকা আয় করা সম্ভব।’ এ কাজে কৃষি অফিসের পরামর্শ পেয়েছি। বলেন উদ্যোক্তা সুমন।

সুমন আরও বলেন, প্রথম যখন লেবুর কলম কিনে আনি তখন এলাকার অনেকেই পাগলসহ বিভিন্ন কথা বলত। যাঁরা এসব কথা বলত এখন তাঁরাই এ লেবু কিনছেন। এ কাজে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। তাঁদের অনেকেই এখন লেবুর বাগান করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। দেশে অসংখ্য বেকার যুবক রয়েছে। তারা যদি কৃষি উদ্যোক্তা হয় তাহলে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বলেন, বীজবিহীন লেবু চাষের বিষয়ে সুমনকে উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়। তাঁর বাগান দেখে অন্যরাও লেবুর বাগান করার জন্য উৎসাহী হয়েছেন। নতুন কৃষি উদ্যোক্তাদেরও কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হবে। এভাবে নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি হলে কৃষি খাত এগিয়ে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

বৃদ্ধের চার বিয়ে, থানায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জেরার মুখে হাসির রোল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত