Ajker Patrika

কুষ্টিয়ায় নান্নু হত্যা: আতঙ্কে গ্রামছাড়া পুরুষ, বিদ্যালয় শিক্ষার্থীশূন্য

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় নান্নু হত্যা: আতঙ্কে গ্রামছাড়া পুরুষ, বিদ্যালয় শিক্ষার্থীশূন্য

সময় তখন বেলা ১১টা। প্রাক্‌-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির কক্ষে ঝুলছে তালা। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পাঁচজন শিক্ষার্থী বসে আছে। আর অফিসকক্ষে বসে আছেন পাঁচ শিক্ষক। চার দিকে সুনসান নীরবতা, নেই কোনো পড়াশোনার আওয়াজ।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার উত্তর চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত মঙ্গলবার গিয়ে এমনটাই দেখা গেছে। এ সময় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী স্নেহা খাতুন জানায়, এলাকায় একজন মারা গেছেন। মোড়ে মোড়ে পুলিশ বসে আছে। ভয়ে কেউ স্কুলে আসে না। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৩৬ জনের মধ্যে মাত্র পাঁচজন এসেছে।

এ নিয়ে কথা হয় সহকারী শিক্ষক রুনা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সে জন্য হামলা ও মামলার ভয়ে মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। থমথমে পরিবেশ। শিক্ষার্থীরা আসে না কিন্তু চাকরির কারণে আমরা প্রতিদিনই এসে বসে থাকি।’

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজিবুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৬ জন কিন্তু মঙ্গলবার উপস্থিত হয়েছে মাত্র ১৪ জন। তিনি উপস্থিতি বাড়াতে অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সামাজিক দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে ১৪ মার্চ যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম ওরফে নান্নুকে (৫২) হত্যা করে প্রতিপক্ষ। পুলিশ রাতে গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন রাতেই নান্নুর সমর্থকেরা বেশ কিছু ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। এসব ঘটনায় কুমারখালী থানায় দুটি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। মামলায় যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজানসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার গ্রাম ঘুরে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশের অবস্থান দেখা গেছে। বেশ কিছু ঘরবাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের চিহ্ন রয়েছে। এতে অর্ধশত বাড়ি পুরুষশূন্য। গৃহপালিত পশু নেই। অনেকটা সুনসান ও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

এ নিয়ে কথা হলে যদুবয়রা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজাদ খান বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। হত্যা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।

বিদ্যালয় স্বাভাবিক করার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দুর্বৃত্তের গুলিতে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
নিহত রুহুল আমিন। ছবি: সংগৃহীত
নিহত রুহুল আমিন। ছবি: সংগৃহীত

‎চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে দুর্বৃত্তের গুলিতে রুহুল আমিন (৩৫) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত ১০টায় উপজেলার রুপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ‎নিহত রুহুল আমিন ফরিদগঞ্জ পৌরসভা এলাকার পূর্ব বড়ালী গ্রামের মিজি বাড়ির মাওলানা মাহমুদুল হাসানের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক। পেশায় একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন।

‎ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ‘দয়াগাজী বাড়ি মসজিদের সামনে একটি মোটরসাইকেলে মুখোশধারী দুই আরোহী অপর একটি মোটরসাইকেলের আরোহীকে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিয়ে আমার সামনে এসে পড়ে। এ সময় দুজন আরোহী থাকা মোটরসাইকেল থেকে অপর মোটরসাইকেল আরোহীকে গুলি করে নিজেরা ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।’

‎স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা কাউসার আহমেদসহ আরও অনেকে বলেন, গুলির শব্দ শুনে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন মোটরসাইকেলসহ সড়কের ওপর একজনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে আছে।

নিহত ব্যক্তির চাচা মো. আলী হোসেন মিজি বলেন, ‘সিটি গ্রুপের বেঙ্গল কোম্পানির চা-পাতা বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন রুহুল আমিন। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার সকালেও মোটরসাইকেলযোগে কোম্পানির পণ্য নিয়ে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বের হন। রাতে মোবাইলে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ভাতিজার মরদেহ শনাক্ত করি।’

‎‎ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, কারা, কী কারণে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে‌ পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিবচরে মহাসড়কে তল্লাশি, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৭
উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর জেলার শিবচরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের তল্লাশিতে ২০টি গুলিসহ ২টি শটগান উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বর এলাকায় বিশেষ অভিযানে এই অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুটি গাড়ি জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে শিবচর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মহাসড়কের গোলচত্বরে গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়িতে তল্লাশি করা হয় এবং তাদের কাগজপত্র যাচাই করা হয়। অভিযানের সময় একটি নোয়াহ গাড়ি থেকে ২টি শটগান ও ২০টি গুলি উদ্ধার করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়াও ১৫টি গাড়িতে ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে অস্ত্র দুটি লাইসেন্সকৃত কি না তা যাচাই করে দেখছে পুলিশ।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা বলেন, ’সাম্প্রতিক সময়ে অস্থিরতার মধ্যে সাধারণ মানুষের চলাচলে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় এবং সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমাদের এই অভিযান। দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম বলেন, ’ঘটনাস্থল থেকে ২টি শটগান ও ২০টি গুলি জব্দ করা হয়েছে। আমরা এর লাইসেন্স যাচাই-বাছাই করার পরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শাহজালালে অগ্নিকাণ্ড: আসছে না রি-এজেন্ট, চমেকে বন্ধ ৩ পরীক্ষা

  • টেস্ট তিনটি হলো বোন স্ক্যান, রেনোগ্রাম ও থাইরয়েড স্ক্যান।
  • সপ্তাহে গড়ে ১৫০ রোগী এই তিন পরীক্ষা করাতে আসেন।
  • বেসরকারি ল্যাবে এসব পরীক্ষা না হওয়ায় বিপাকে রোগী।
  • দ্রুত এই সংকটের সমাধানের দাবি ভুক্তভোগীদের।
  • সমাধানে দ্রুত সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়া জরুরি: পরিচালক
সবুর শুভ, চট্টগ্রাম    
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৬
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রি-এজেন্ট সংকটে কিডনি ও ক্যানসারের মতো মরণব্যাধির বিশেষায়িত তিন ধরনের পরীক্ষা হচ্ছে না চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ ধরে এসব পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। এদিকে বেসরকারি ল্যাবে এসব পরীক্ষা করা যায় না বলে বিপাকে রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে আগুন লাগার পর থেকে এসব টেস্টের রি-এজেন্ট আসছে না। বন্ধ হয়ে যাওয়া পরীক্ষা তিনটি হলো বোন স্ক্যান, রেনোগ্রাম ও থাইরয়েড স্ক্যান। এর মধ্যে বোন স্ক্যান ও রেনোগ্রাম টেস্ট ৩ হাজার টাকা করে এবং থাইরয়েড স্ক্যান টেস্ট ৭০০ টাকা।

জানা গেছে, চমেক হাসপাতাল ক্যাম্পাসের ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সে (ইনমাস) আধুনিক মেশিনের মাধ্যমে কিডনি ও ক্যানসার নির্ণয়ে ওই তিনটি পরীক্ষা করা হয়। তথ্যমতে, গত ১৯ অক্টোবর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে ভয়াবহ আগুন লাগে। কার্গো ভিলেজের (পণ্য রাখার স্থান) যে অংশে আগুন লেগেছিল, সেখানে আমদানি করা পণ্য রাখা হয়। সেখানে ওষুধের বিভিন্ন উপকরণও ছিল। আগুনের হাত থেকে সেসব রক্ষা করা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের পর নতুন করে উল্লিখিত টেস্টের উপকরণ বিদেশ থেকে আনা হয়নি।

এ বিষয়ে ইনমাস চট্টগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক পবিত্র কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন লাগার পরও কিছুদিন এ তিনটি পরীক্ষা চলছিল। আগের রি-এজেন্টগুলো শেষ হয়ে যাওয়ায় দুই সপ্তাহ ধরে কিডনি ও ক্যানসার নির্ণয়ে পরীক্ষাগুলো বন্ধ রয়েছে। এখন সমস্যা হলো, এই তিনটি পরীক্ষা বেসরকারিভাবে চট্টগ্রামে কোথাও হয় না। তাই এখন রোগীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে।’

পবিত্র কুমার আরও বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে গড়ে প্রায় ১৫০ জন রোগী তিনটি পরীক্ষা করাতে আসেন।

এখন পরীক্ষাগুলো বন্ধ হওয়ায় তাঁরা ঝুঁকিতে পড়ছেন। এ নিয়ে রোগীরাও আমাদের কাছে আসেন। তাঁদের আবার সময় নিয়ে কাউন্সেলিং করতে হয়।’ এই বিষয়ে খুব দ্রুত সংশ্লিষ্টদের নজর দেওয়া উচিত বলেও জানান এই চিকিৎসক।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বোন স্ক্যান হলো চিকিৎসায় একটি পারমাণবিক ইমেজিং পরীক্ষা, যা হাড়ের বিভিন্ন রোগনির্ণয়, যেমন ফ্র্যাকচার, সংক্রমণ, হাড়ের ক্যানসার এবং অন্যান্য অস্বাভাবিকতা শনাক্তে ব্যবহৃত হয়। এই পরীক্ষায় শরীরে একটি তেজস্ক্রিয় ট্রেসার ইনজেকশন দেওয়া হয়, যা পরে হাড়ে জমা হয় এবং স্ক্যানার দিয়ে হাড়ের একটি বিস্তারিত ছবি তোলা হয়। এটি এক্স-রে বা সিটি স্ক্যানের চেয়েও দ্রুত হাড়ের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারে।

অন্যদিকে, রেনোগ্রাম হচ্ছে একটি রেডিও নিউক্লিয়ার ইমেজিং পরীক্ষা, যা কিডনির গঠন এবং কার্যকারিতা মূল্যায়নে ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে একটি তেজস্ক্রিয় ট্রেসার শিরায় ইনজেকশন করা হয় এবং বিশেষ ক্যামেরা ব্যবহার করে কিডনির ছবি তোলা হয়; যাতে দুটি কিডনি সঠিকভাবে কাজ করে কি না এবং এতে কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়।

থাইরয়েড স্ক্যান হলো একটি ইমেজিং পদ্ধতি, যা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা এবং গঠন পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়। এটি থাইরয়েডের আয়োডিন শোষণ করার ক্ষমতা মূল্যায়ন করে এবং হাইপারথাইরয়েডিজম, ক্যানসার বা অন্য কোনো অস্বাভাবিকতা বৃদ্ধি শনাক্ত করতে সাহায্য করে। থাইরয়েড স্ক্যানের দুটি প্রধান পদ্ধতি হলো নিউক্লিয়ার মেডিসিন স্ক্যান এবং আলট্রাসাউন্ড (ইউএসজি) স্ক্যান।

দ্রুততার সঙ্গে এই সংকটের সমাধান না হলে রোগীদের অবস্থা আরও নাজুক হবে বলে মন্তব্য করেন কাপ্তাই থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আপ্রুমা মারমা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফরিদপুরের বোয়ালমারী: এক মামলায় স্থবির ৫ ইউপি

  • গত শুক্রবার বিকেলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
  • উপজেলার ১০ ইউপির মধ্যে ৫টির চেয়ারম্যান আসামি।
হাসান মাতুব্বর (শ্রাবণ) ফরিদপুর
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ১৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় পাঁচ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়েছে। মামলা করার পর থেকেই এসব ইউপির স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে নাগরিক সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপির একাধিক সদস্য (মেম্বার) জানিয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার বিকেলে বোয়ালমারী উপজেলা সদরে বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরদিন শনিবার রাতে থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি মামলা করে দুই পক্ষ। দুই মামলায় ২২৪ জনের নাম উল্লেখসহ ৮৭৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

থানা-পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুটি মামলার মধ্যে একটি করেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও ফরিদপুর-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর সমর্থক মজিবুর রহমান বাবু। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তাঁর করা মামলায় অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামকে ১ নম্বর আসামিসহ ১৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২০০-২৫০ জনকে।

মজিবুর রহমান বাবুর করা মামলার এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার ১০টি ইউপির মধ্যে ৫টির চেয়ারম্যানকে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৬ নম্বরে গুনবহা ইউপির চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম (৫৭), ২২ নম্বরে শেখর ইউপির চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ (৪৮), ১১২ নম্বরে সাতৈর ইউপির চেয়ারম্যান রাফিউল আলম মিন্টু (৪৮), ১১৩ নম্বরে দাদপুরের মোশারফ হোসেন মুশা (৪৭) ও ১৫০ নম্বরে রূপাপাতের মিজানুর রহমান সোনা মিয়া (৪৪)।

সংশ্লিষ্ট ইউপির একাধিক সদস্য ও সচিবদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব ইউপির চেয়ারম্যানদের আসামি করায় স্বাভাবিক কার্যক্রমে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটছে। কেউ কেউ পরিষদে এলেও কিছু সময় থেকেই চলে যান।

শেখর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম সরদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান ঠিকমতো পরিষদে আসছেন না, কোনো একসময় আসেন আবার চলে যান। তাঁকে আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ছাড়া যাঁরা জন্মনিবন্ধনসহ অন্য সেবা নিতে আসছেন, সে ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরের জন্য সময়ক্ষেপণ হচ্ছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, নাগরিক সেবায় যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া এমন অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে মামলার বাদী মজিবুর রহমান বাবু বলেন, ‘এই পাঁচ চেয়ারম্যান খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক। এই পাঁচজনের মধ্যে শুধু সিরাজুল ইসলাম বিএনপির এবং বাকিরা আওয়ামী লীগের লোক। গত ৫ আগস্টের পর খন্দকার নাসির সাহেবের আশ্রয়ে যায় এবং তাঁকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিপুল পরিমাণ টাকা ও লোকজন দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে। শুক্রবারের ঘটনায় তাঁরাই বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম ঘটিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান।’

তবে এ সংঘর্ষ ও মামলা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না দাবি করে দাদপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতিই করি না এবং সম্পৃক্তও নই।’ তিনি বলেন, ‘আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ইউনিয়নের প্রতিপক্ষের ইন্ধনে আসামি করা হয়েছে।’

এদিকে সাতৈর ইউপির চেয়ারম্যানকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি চিকিৎসক দেখাতে ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানান। বাকি তিনজনের সঙ্গে কথা বলতে মোবাইলে নম্বরে কল করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

শুক্রবারের ওই সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি গুনবহা ইউপির চেয়ারম্যান ও অন্য মামলার আসামি

বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদুল হাসান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত