Ajker Patrika

ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কপাল পুড়ল কৃষকের

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কপাল পুড়ল কৃষকের

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সোনাপুর, তাঁতিপাড়া এলাকার ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কৃষকের প্রায় শতাধিক বিঘা জমির ধান পুড়ে যাওয়া ও একটি ফার্মের ৭০০ ব্রয়লার মুরগির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তাঁতিপাড়া গ্রামের ফার্মের মালিক জরিনা বেগম সহ কৃষক আব্দুর রাজ্জাক ও জফুর উদ্দীন মণ্ডল এবং সাইফুল ইসলাম এ অভিযোগ করেন।

বেশির ভাগ জমিতে ধানের শিষ দেখা দিলে। কৃষক সেই ধান বিক্রি করে মানুষের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করে দুই পয়সা লাভের স্বপ্ন দেখেন। বিবিসি ইটভাটার নির্গত বিষাক্ত গ্যাস ও কালো ধোঁয়ায় সে স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছে। 

খোর্দ্দো মৌশুল তাঁতিপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক ও জফুর উদ্দীন মণ্ডল কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ইটভার বিষাক্ত গ্যাসে আমাদের ৫-৭ বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ধান না হলে আমরা খাব কি, সারা বছর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে না খেয়ে কাটাতে হবে।’

তাঁতিপাড়া গ্রামের জরিনা বেগম নামে এক বৃদ্ধা মহিলা বলেন, ‘ইট ভাটর গ্যাসের কারণে দুই দিনে আমার ফার্মের ৭০০ ব্রয়লার মুরগি মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।’ 

কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, ‘প্রতি বিঘা জমি ৭ হাজার টাকা দরে অগ্রিম টাকা দিয়ে অন্যের কাছ থেকে ৭ বিঘা জামি নিয়ে ধান চাষা করেছি। লাভ তো দূরের কথা এখন খরচের টাকা নিয়ে চিন্তিত। ইটভাটার গ্যাসের কারণে আমার মতো এলাকার বহু কৃষকের যে ক্ষতি হয়েছে সেই দায়ভার কে নিবে? সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’ 

একই এলাকার কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে এলাকার প্রায় দেড় শত বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের কৃষকের এমন দুঃসময়ে কাউকে পাশে পাচ্ছি না।'

সোনাপুর বিবিসি ইটভাটার স্বত্বাধিকারী আরিফ হোসেন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার ইটভাটার কারণেই যে জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা ঠিক নয়। তবে ২০ থেকে ৩০ বিঘা জমির ধানের কিছু ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সঙ্গে কথা হয়েছে।’ 

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, ‘সোনাপুর বিবিসি ইট ভাটর বিষাক্ত গ্যাসে ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।   মাঠ পরিদর্শন করে ফসলের ক্ষতির পরিমাণ যেন বৃদ্ধি না পায় এ জন্য স্থানীয় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। সেই সঙ্গে কৃষকেরা যদি এর ক্ষতিপূরণ চেয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করে তাহলে কৃষি বিভাগ তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বরমান হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় কৃষকেরা অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কৃষকেরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত