Ajker Patrika

মেয়ের প্রিয় কেক কেটে তাকে নিয়েই ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪, ২১: ১৫
মেয়ের প্রিয় কেক কেটে তাকে নিয়েই ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা

রেললাইনের পাশে বসে কেক খাচ্ছিলেন মা-মেয়ে। অর্ধেক কেক খেয়ে মেয়ের হাত ধরে রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন মা। এ সময় বিপরীত দিক থেকে ট্রেন কাছে আসতেই মেয়েকে জোর করে টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে রেললাইনের ওপর ঝাঁপ দেন তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই বিচ্ছিন্ন হয় মা-মেয়ের শরীর। 

আজ সোমবার বেলা ২টার দিকে যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি শ্মশানঘাট রেললাইন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। যশোর থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে আত্মহত্যা করা নারীর পরনে ছিল কালো বোরকা। তাঁর নাম লাকী বেগম (৩৫)। আর মেয়ে সালোয়ার কামিজ পরিহিত ছিল। তার নাম সামিয়া আক্তার মিম (১২)। লাকী উপজেলার বড় হৈবতপুর গ্রামের মকছেদ আলীর মেয়ে। মা-মেয়ে স্থানীয় সাতমাইল বাজারে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। আর মিম স্থানীয় বড় হৈবতপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফাঁকা মাঠের মধ্যে রেললাইনের পাশে বসে মা-মেয়ে কেক খাচ্ছিলেন। কেক খাওয়ার মধ্যে ট্রেন চলে আসে। কালো বোরকা পরা ওই নারী তাঁর মেয়ের হাত ধরে ট্রেন লাইনের ওপরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু বারবার মেয়েটি তার মায়ের হাত জোর করে ছাড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু ওই মা তাঁর মেয়েটিকে নিয়ে জোর করে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেন। এতে ঘটনাস্থলেই মা-মেয়ে মারা যান।’ 

সাখাওয়াত বলেন, ‘বাঁচার জন্য মেয়েটি তার মায়ের হাত অনেকবার ছাড়ানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু মা তাঁর মেয়েটির হাত ছাড়েননি। মনে হয়েছে অনেক কষ্ট নিয়ে ওই মা তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই আত্মহত্যা করেছেন।’

সরেজমিন দেখা গেছে, যশোর-ঢাকা রুটের রেললাইনের সদরের চুড়ামনকাটি শ্মশানঘাট এলাকায় রেললাইনের ওপরেই মা-মেয়ের মরদেহ পড়ে রয়েছে। যেখানে মরদেহটি পড়ে রয়েছে তার থেকে ৫০ গজ দূরে লাইনের পাশে অর্ধেক খাওয়া একটি কেক পড়ে রয়েছে। পাশের কেক কাটার ছুরিটি রয়েছে। একটু দূরে মা-মেয়ের দুই জোড়া জুতা ও দুটি ভ্যানিটি ব্যাগ পড়ে রয়েছে। 

লাকী বেগমের ছোট বোন রোজিনা বেগমকে ঘটনাস্থলে আহাজারি করতে দেখা যায়। ছবি: আজকের পত্রিকারেললাইনের পাশেই একটি বড় মেহগনিগাছের নিচে কান্না করছেন নিহত লাকী বেগমের ছোট বোন রোজিনা বেগম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘১২ বছর আগে পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কবিরুলের সঙ্গে বিয়ে হয় লাকীর। সেই ঘরের সন্তান মিম। মিম হওয়ার বছর চারেক পর লাকীকে ডিভোর্স দেয় কবিরুল। এরপর তিনি বাবার বাড়িতে বাস করতে থাকেন। এর মধ্যে বড় হৈবতপুর গ্রামের এজাজুল ইসলামকে বিয়ে করেন লাকী। এই বিয়ের বছর দেড়েক পর এজাজুলও লাকীকে ডিভোর্স দেয়। ডিভোর্সের পর মেয়েকে নিয়ে লাকী স্থানীয় সাতমাইল বাজারে ভাড়া থাকতে শুরু করে।’

রোজিনা বলেন, ‘মাস তিনেক আগে আবারও এজাজুল লাকীকে বিয়ের করার প্রতিশ্রুতি দেন। মাঝেমধ্যে এজাজুল লাকীর বাসাতে যাতায়াত শুরু করেন। তিন মাসের মধ্যে এজাজুল লাকীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও এজাজুল বিয়ে না করার টালবাহানা শুরু করেন। এতে মেয়েকে নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন লাকী।’ 

রোজিনা আরও বলেন, ‘এজাজুল বিয়ে না করার টালবাহানা শুরু করাতে বিভিন্ন সময়ে আমার বোন আত্মহত্যার হুমকি দিতেন। আজ সকালে ডাক্তার দেখানোর নাম করে আমার বোন ও তাঁর মেয়ে মিমকে নিয়ে শহরে যান। এরপর মিমের প্রিয় কেক নিয়ে তাঁরা রেললাইনের কাছে যান। তারপরে মিমকে নিয়ে আমার বোন আত্মহত্যা করেছেন।’ 

লাকীর ভগ্নিপতি জুম্মান আলী বলেন, ‘একাকিত্ব ও অভাবের মধ্যেই লাকীর সংসার পরিচালিত হচ্ছিল। লাকী হাতের কাজ করলেও সংসার ঠিকভাবে চলত না। আমি বাজার করে দিলে তা দিয়েই চলত। আমার মনে হয় অভাবের কারণে তিনি এ পথ বেছে নিয়েছেন।’

নিহত লাকী বেগম। ছবি: সংগৃহীত ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে যায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম। জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে এলাকাবাসী ৯৯৯-এ নম্বরে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর জানায়। এরপর আমরা এসে দেখি ট্রেন লাইনের ওপরে দুজনের মরদেহ পড়ে রয়েছে। কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করি।’ 

ডিবি জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা এখনো জানা যায়নি। মরদেহের পাশ থেকে একটি বড় আকারের কেক, একটি মোবাইল ফোন ও দুটি ভ্যানিটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। রেলওয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। 

যশোর রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মনিতোষ বিশ্বাস জানান, খবর পেয়ে ট্রেনে কাটা মা ও মেয়ের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। এরপর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন। তবে কেন এবং কী কারণে মেয়েকে নিয়ে ওই নারী আত্মহত্যা করলেন তা এখনো জানা যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাগরে মাছ শিকার: ৬টি ট্রলার জব্দসহ ১০৪ জন আটক

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আটক জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আটক জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের অভিযোগে ছয়টি ফিশিং ট্রলার জব্দসহ ১০৪ জন জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। গত সোমবার গভীর সাগর থেকে আটক জেলেদের গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে নৌবাহিনীর মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ মাছ আহরণের সময় টহলরত নৌবাহিনী গত সোমবার বিকেলে ছয়টি ফিশিং ট্রলার জব্দ করে। জব্দ ট্রলারগুলোতে ১০৪ জন জেলে ছিলেন। এই জেলেরা মূলত বরগুনা, পাথরঘাটা, পটুয়াখালী, রাঙ্গাবালী ও মহিরপুর এলাকার বাসিন্দা।

এ ছাড়া ট্রলারগুলোতে আনুমানিক ৫ টন মাছ পাওয়া গেছে, যার বেশির ভাগই ইলিশ। মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, উদ্ধার হওয়া এসব মাছ বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হবে। আটক জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হবে, তবে ট্রলারমালিকদের আর্থিক জরিমানা করা হবে।

উল্লেখ্য, মা ইলিশ রক্ষা ও প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে সাগর-নদীতে মাছ শিকার না করতে ২২ দিনের (৪ থেকে ২৫ অক্টোবর) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ায় এ জেলেদের নৌবাহিনী আটক করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা, ১ নভেম্বর অনশনের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিদেশিদের হাতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ইজারার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ১ নভেম্বর অনশনের ঘোষণা দিয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ বুধবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদ মোড়ে শ্রমিক সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ-মিছিল বন্দরের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

নগরীর আক্তারুজ্জামান সেন্টারের উত্তর গেটে বিশাল শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খোরশেদুল ইসলাম, বিএলএফের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক শিমুল, বিএফটিইউসির সভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক হুনি, বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা ইব্রাহিম খোকন, ডকইয়ার্ড শ্রমিক দল নেতা তসলিম হোসেন সেলিম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, সঞ্চালনা করেন স্কপ নেতা জাহেদ উদ্দিন শাহিন।

সমাবেশে নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার এবং অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এখন দেশের সবচেয়ে সফল কনটেইনার টার্মিনাল। অথচ একে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী।

চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বক্তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে একতরফাভাবে নেওয়া এই সিদ্ধান্তকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

নেতারা আগামী ১ নভেম্বর দিনব্যাপী অনশনে শ্রমিক, কর্মচারী ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে চট্টগ্রাম বন্দর ও এনসিটিকে দেশি-বিদেশি ইজারা ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করা যায়।

সমাবেশে সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত সব প্রকার সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্কপ নেতারা।

তাঁরা বলেন, পুলিশ দিয়ে কিংবা প্রশাসনিক বাধা সৃষ্টি করে কখনোই কোনো ন্যায্য আন্দোলন-সংগ্রামকে দমন করা যায়নি, এবারও তা সম্ভব হবে না। শ্রমিকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে মাদ্রাসাছাত্রের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‘আমার একটাই ছেলে। আমার মাসুম বাচ্চাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করল কারা! আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ এভাবেই আহাজারি করছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস। ছেলে আমির হামজার নিহতের খবর শুনে শোকে পাগলপ্রায় তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর চান্দড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে আমির হামজার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশ।

সে চান্দড়া তা’লিমুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল। গত রোববার আসরের নামাজের পর থেকে ওই মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নিখোঁজ ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে চর চান্দড়া গ্রামের মতিয়ার শেখের স্ত্রী বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁস আনতে গিয়ে পানিতে ভাসমান একটি বস্তা দেখতে পান। বস্তা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাটি খুললে এক কিশোরের মরদেহ বেরিয়ে আসে। মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল এবং মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে বস্তার মধ্যে কিছু ইটও পাওয়া যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমির হামজার বাবা ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।

পারিবারিক ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বিকেলে আমির হামজা মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেনি। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। গত সোমবার সন্ধ্যায় আমির হামজার বাবা আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত দুই দিন ধরে পরিবার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিংও করেছিল।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাবন্দী মরদেহটি উদ্ধার করে রাতেই থানায় আনা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, ঘটনা উদ্‌ঘাটন করতে পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করেছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় জরিমানা

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আ. সালামের বাড়ি ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড লাহেড়িপাড়া মহল্লায় পলাশতলী গ্রামে।

চিনিতে ভেজাল মেশানোর খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় এক ড্রাম চিটাগুড় ও ভেজালমিশ্রিত ২ হাজার কেজি লাল চিনি জব্দ করা হয়।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত