Ajker Patrika

বেনাপোলে জোড়া খুন: ৪ ভাইসহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন

যশোর প্রতিনিধি
বেনাপোলে জোড়া খুন: ৪ ভাইসহ পাঁচজনের যাবজ্জীবন

যশোরের বেনাপোলের রঘুনাথপুরে বুদো সরকার ও আব্দুল্লাহ হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাঁচ আসামির মধ্যে চার ভাই আছেন। 

আজ রোববার যশোরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম দুই আসামির উপস্থিতিতে এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি এম ইদ্রিস আলী। 

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন—বেনাপোলের রঘুনাথপুর গ্রামের চার ভাই নাসির উদ্দিন নছু, ফুলছদ্দিন ওরফে কটা, আলাউদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন ও একই গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে ঈমান আলী। এছাড়া এ মামলায় ওই চার ভাইয়ের বাবা আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। 

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে বেনাপোলের রঘুনাথপুরে ব্যাপক ঝড় হয়। এতে রাস্তায় বিভিন্ন গাছ উপড়ে পড়ে। তা বিক্রি করে এর অর্থ এলাকার মসজিদের ফান্ডে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে মতবিরোধ হয়। 

 ২৪ এপ্রিল সকালে গাছের ডাল কাটতে আসেন ওই এলাকার নছু, আলাউদ্দিনসহ আরও কয়েকজন। এ সময় আরেক পক্ষ আব্দুল্লাহ, বুদোসহ অন্যরা এসে ওই গাছ কাটতে নিষেধ করে বলেন, ওই গাছ কেটে বিক্রি করে মসজিদের ফান্ডে দিবেন তারা। এ সময় নছু, আলাউদ্দিনরা বলেন, ‘ওই গাছ কি তোর বাপের। যা ইচ্ছে তা করবি।’ এরপর উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। 

একপর্যায়ে দুপক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আব্দুল্লাহ, বুদো, আজগার, সুমনসহ আরও কয়েকজনকে গুরুতর জখম করে। পরে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় আবদুল্লাহ। পরে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যায় বুদোও। এ ঘটনায় নিহতদের স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত আসামিদের তিনটি বসত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। 

এ ঘটনায় নিহত আব্দুল্লার ভাই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় ওই ছয়জনসহ সালমান শাহ নামের আরেক যুবককে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন পোর্ট থানার তৎকালীন এসআই দীন মোহাম্মদ। পরে তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই শরীফ হাবিবুর রহমান। তিনি তদন্ত শেষে ওই সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। 

মামলা বিচার চলাকালীন সালমান শাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অপর ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়। 

আজ রোববার এ মামলার রায় ঘোষণার দিনে দুই আসামি আলাউদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনের উপস্থিতিতে আদালত পাঁচজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং একজনকে বেকসুর খালাস দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছোট ফেনী নদী থেকে বালু উত্তোলন: ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ২ কর্মকর্তার এক বছর কারাদণ্ড

নোয়াখালী প্রতিনিধি
অভিযানের পর দুজনকে দণ্ড দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
অভিযানের পর দুজনকে দণ্ড দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছোট ফেনী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সেই বালু নদীটির ওপর সেতু নির্মাণকাজে ব্যবহারের অভিযোগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীসহ দুই কর্মকর্তাকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত প্রায় ১.৫ কিলোমিটার পাইপ ধ্বংস এবং একটি ইঞ্জিন জব্দ করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার নূর নবী (৩৮) ও সাইট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ রিয়াজুল (৩২)।

গতকাল বুধবার রাতে চরহাজারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেল্লারঘাট-ধনীপাড়া কানেক্টিং ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ছোট ফেনী নদীর ওপর এলজিইডি নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যান্ডার্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড’ তেল্লার ঘাট-ধনীপাড়া সংযোগ ব্রিজ নির্মাণ করার ফাঁকে নির্মাণাধীন ব্রিজের পাশ থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে, যা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। এটি নদী ও সেতু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুজনকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময় ১.৫ কিলোমিটার পাইপ ধ্বংস করা হয় এবং একটি ইঞ্জিন জব্দ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা থেকে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মব সৃষ্টি করে নারীর টাকা-চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
এআই দিয়ে তৈরি প্রতীকী ছবি
এআই দিয়ে তৈরি প্রতীকী ছবি

নাটোরের বড়াইগ্রামে ফুল কুমারী গোমেজ (৪৬) নামের এক নারীর বাড়িতে মব সৃষ্টি করে টাকা ও সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। বুধবার দিবাগত রাতে ওই নারী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে বড়াইগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার দিঘইর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ফুল কুমারী গোমেজ দিঘইর গ্রামের মৃত করনেলিউস গোমেজের স্ত্রী।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার চরগোবিন্দপুর গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে নিসান হাসান (২২), কুশমাইল গ্রামের আজিমুদ্দিনের ছেলে নয়ন হোসেন (২৩) সরাবাড়িয়া গ্রামের ইউসুব আলীর ছেলে কামরুল ইসলাম (২০) ও ময়লাল আলীর ছেলে হৃদয় হাসান (২১)। তাঁদের মধ্যে নিসান হাসান জোনাইল ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি এবং অন্যরা কর্মী হিসেবে পরিচিত।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে ওই নারীর স্বামী মারা গেছেন। একমাত্র মেয়ে ঢাকায় লেখাপড়া করেন। বাড়িতে ওই নারী একাই বসবাস করেন। মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাড়িতে এসে দরজা খুলতে বলেন। দরজা খুলতে না চাইলে তাঁরা ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘরে আগুন দিয়ে মারার হুমকি দেন। পরে ঘরের দরজা খুলে দিলে তাঁরা ঘরে প্রবেশ করে তল্লাশি চালান। এ সময় বিছানার নিচ থেকে ৫ হাজার টাকা ও ওই নারীর গলা থেকে সোনার চেইন নিয়ে চলে যান।

ফুল কুমারী গোমেজ বলেন, ‘আমি বারবার অনুরোধ করার পরও তারা আমার কথা শোনে না। তারা আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়ে মব সৃষ্টি করে টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে গেল। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’

অভিযুক্ত নিসান হাসান বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়ে আমার জানা নাই। তবে ওই মহিলা মদ তৈরি করেন। ধারণা করছি, আমরা বাধা দেওয়ার কারণে এই ধরনের অভিযোগ করেছেন।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চরগোবিন্দপুর গ্রামের এক ব্যক্তি বলেন, নিসান হাসান হত্যা মামলার আসামি। তবে তিনি এখন জামিনে আছেন। তাঁর বাবা গোলজার হোসেন ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি হিসেবে জেলহাজতে রয়েছেন।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থ্যা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাছের অঙ্গের কেজি কোটি টাকা

  • পিটুইটারি গ্লান্ড মাছের প্রজননক্ষমতা বাড়ায়।
  • ৩৫টি দেশে মাছের এ প্রাকৃতিক হরমোনের চাহিদা রয়েছে।
মো. জাহিদ হাসান, যশোর 
পিটুইটারি গ্লান্ড মেডিসিনযুক্ত ছোট বোতলে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
পিটুইটারি গ্লান্ড মেডিসিনযুক্ত ছোট বোতলে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

যশোর শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড মাছবাজারে এক দশকের বেশি সময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কাটাকুটি করে আসছেন বিল্লাল হোসেন সানি। দীর্ঘদিন মাছ কাটার কাজ করলেও মাথার ভেতরে থাকা ছোট্ট মুক্তাসদৃশ দানা কী সেটা কখনো ভাবেননি। বছর চারেক আগে স্থানীয় একটি সংস্থার মাধ্যমে সাদা এই দানার গুরুত্ব বুঝতে পেরে এখন প্রতিনিয়ত করছেন সংরক্ষণ।

সানির মতো যশোর শহরের মাছের বাজারগুলোতে মাছের মাথার ভেতরের এই সাদা দানাটি মাছের উচ্ছিষ্ট বস্তু হিসেবেই ফেলে দিতেন। এখন মাছ কেটেকুটে দেওয়ার পরই মাছের মাথা থেকে এই দানা সংগ্রহ করে রাখছেন বঁটিওয়ালা। মূলত মাছের মাথার ভেতরে থাকা ছোট্ট এই দানার নাম ‘পিটুইটারি গ্লান্ড’, যা মাছের প্রজননক্ষমতা বাড়িয়ে বছরে তিন থেকে চারবার ডিম ছাড়তে সহায়তা করে।

বিল্লাল হোসেন সানি জানান, সব মাছের মাথায় একটি করে পিটুইটারি গ্লান্ড থাকে। তবে সব ধরনের মাছ থেকে তিনি সেটা সংগ্রহ করেন না। কার্পজাতীয় মাছ থেকে সংগ্রহ করেন।

সানি বলেন, ‘মাথা থেকে পিটুইটারি গ্লান্ডটি মেডিসিনযুক্ত ছোট বোতলে সংরক্ষণ করি। প্রতি সপ্তাহে কোম্পানির এজেন্টরা এসে টাকা দিয়ে সেগুলো নিয়ে যান। প্রতি পিছ চার থেকে পাঁচ টাকা দেয়।’ তিনি জানান, মাছ কাটার পরে এটা থেকে তাঁদের বাড়তি আয় হয়। দিনে ৩০ থেকে ৫০ পিছ পর্যন্ত হয়ে থাকে। বাড়তি আয়ের জোগান হওয়ায় বাজারে প্রায় সব বঁটিওয়ালাই পিটুইটারি গ্লান্ড সংরক্ষণ করছেন বলে জানান তিনি।

সম্প্রতি শহরের বড় বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, মাছের আঁশ ছাড়িয়ে মাছ পিছ করে কেটে দেওয়ার জন্য বঁটি নিয়ে বাজারে বসেছেন কয়েক ব্যক্তি। ক্রেতারা খুচরা মাছ কিনে তাঁদের কাছে দিলে তাঁরা আঁশ ছাড়িয়ে পিছ করে কেটে দিচ্ছেন। প্রত্যেকের বঁটির পাশে রাসায়নিক ভর্তি ছোট ছোট দু-একটি কাচের বোতল রাখা আছে। মাছ কাটার সময় কার্পজাতীয় মাছ যেমন রুই, কাতলা, সিলভার, মৃগেলসহ বিভিন্ন মাছের মাথার ভেতর থেকে ছোট একটি দানা (পিজি) সংগ্রহ করে বোতলে সংরক্ষণ করছেন তাঁরা।

মৎস্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হ্যাচারির পুকুরে প্রজননের সময় মা ও পুরুষ মাছের দেহে নির্দিষ্ট মাত্রায় পিজি সিরিঞ্জের মাধ্যমে পুশ করা হয়। এতে মাছের দেহে উত্তেজনা আসে। এ সময় মাছের প্রজনন হয়। প্রাকৃতিক এ হরমোন ব্যবহারে মাছের জীবনচক্রে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। মাছের প্রজননের প্রধান নিয়ামক এই হরমোন রপ্তানি করে দেশে বিদেশি মুদ্রা আনছেন উদ্যোক্তারা। মৎস্য অঞ্চল যশোর-সাতক্ষীরায় এই হরমোন নিয়ে কাজ করে আলোড়ন তৈরি করেছেন যশোরের মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী। প্রথম দিকে কাঁচা পিটুইটারি গ্লান্ড সংগ্রহ করলেও আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে শুরু করেন সংরক্ষণের। তাই শহরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলেন ল্যাবরেটরি। নাম দিয়েছেন ইউনাইটেড এগ্রো ফিশারিজ। এখানে বাছাই শেষে অ্যালকোহল থেকে আলাদা করে গ্লান্ড শুকানো হয় ড্রাইং মেশিনে। ময়েশ্চার টেস্টসহ নানা পরীক্ষা শেষে বোতলজাত করে পাঠানো হয় দেশি-বিদেশি হ্যাচারিতে।

জেলার বিভিন্ন বাজার থেকে একইভাবে প্রাকৃতিক এই হরমোন সংগ্রহ করেন তাঁরা।

রপ্তানির পাশাপাশি ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হ্যাচারিতে এ হরমোনের পিজি পাঠায় ইউনাইটেড এগ্রো। বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, ইরাকসহ ৩৫টি দেশে মাছের এ প্রাকৃতিক হরমোনের চাহিদা রয়েছে বলে জানান লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, ‘বছরে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা মূল্যের পিজি দেশে-বিদেশে সরবরাহ করি। প্রতি গ্রাম পিজি বর্তমানে ৮০ মার্কিন ডলারে রপ্তানি হয়।’

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনিরুল মামুন বলেন, কৃত্রিম প্রজননের জন্য দেশ-বিদেশের হ্যাচারিতে হরমোন বিক্রি হচ্ছে কোটি টাকার ওপরে। এ থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আনা সম্ভব। দেশের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদন বাড়াতে বঁটিওয়ালাসহ উদ্যাক্তাদের প্রশিক্ষণসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৈয়দপুর থানায় জব্দ মোটরসাইকেল বাইরে বিক্রির চেষ্টা, প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

নীলফামারী প্রতিনিধি
জব্দ করা মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা
জব্দ করা মোটরসাইকেল। ছবি: আজকের পত্রিকা

নীলফামারীর সৈয়দপুরে মাদক কারবারি দম্পতিসহ জব্দ করা একটি মোটরসাইকেল ছয় মাস পর থানার বাইরে নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করা হয়। পরে মোটরসাইকেলের প্রকৃত মালিকের স্বজনদের সহায়তায় সেটি উদ্ধার করে ফের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছ এলাকার পশ্চিমপাড়া থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় জনমনে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মে শহরের কয়ানিজপাড়ার ফারুক হোসেন ও মুক্তা বানু দম্পতির বাড়িতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে মাদকদ্রব্যসহ দুটি মোবাইল ফোন, নগদ অর্থ ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় মাদক ব্যবসায়ী দম্পতিকে। ঘটনার ১৪৬ দিন পর বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে জব্দ করা মোটরসাইকেলটি থানার বাইরে বিক্রির চেষ্টা করে একটি চক্র। এ সময় মোটরসাইকেলের মালিকের স্বজনেরা যৌথ বাহিনীর অভিযানে জব্দ করা মোটরসাইকেল হিসেবে চিহ্নিত করেন।

এ বিষয়ে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার মুক্তার ভাই আতিক হাসান বলেন, ‘আমার বোন ও তার স্বামীকে যৌথ বাহিনী মাদকসহ আটক করে। তখন তাদের মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নেওয়া হয়। বুধবার রাতে একজন ফোনে জানায়, মোটরসাইকেলটি থানার প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে মতির মোড়ে বিক্রি করার চেষ্টা হচ্ছে। আমি গিয়ে কাগজপত্র মিলিয়ে দেখি সেটি আমার বোনজামাইয়ের। এরপর পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে মোটরসাইকেলটি থানায় নিয়ে যায়।’

স্থানীয় বাসিন্দা মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যৌথ বাহিনী ওই দম্পতিকে মাদকসহ আটক করে এবং মোটরসাইকেলটি জব্দ করে নিয়ে যায়। কিন্তু থানার মালখানায় মোটরসাইকেলটি থাকার কথা। পরে সেটি থানার বাইরে পাওয়া গেল, এটা প্রশাসনের দুর্বলতা ছাড়া কিছু নয়।’

এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এনসিপিকে ‘নাস্তিকদের সংগঠন’ বলে আমাকে মাদ্রাসা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে: মুফতি আমিনীর নাতি

সোনার বড় দরপতন, একলাফে ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা কমল ভরিতে

নারায়ণগঞ্জে ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যার ভিডিও ভাইরাল, গ্রেপ্তার ৩

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতি মনোনয়নের প্রজ্ঞাপন স্থগিত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত