Ajker Patrika

শ্রীপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর লাশ উদ্ধার, শাশুড়ি-ননদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল পরিবারের

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
ইতি আক্তার। ছবি: সংগৃহীত
ইতি আক্তার। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে ইতি আক্তার নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের বিন্দুবাড়ি গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। ইতি আক্তারের বাবার পরিবারের অভিযোগ, শাশুড়ি ও ননদ তাদের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মেরে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছেন।

মৃত ইতি আক্তার কাপাসিয়া উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ঘিঘাট গ্রামের মো. বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। তাঁর স্বামী আকতার হোসেন সৌদি আরবে থাকেন।

মৃত নারীর মা বিলকিস বেগম বলেন, ‘আজ সকালে ইতির শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফোন করে বলে, মেয়েকে দেখতে হলে দ্রুত তাঁদের বাড়িতে যেতে হবে। এরপর আমি দ্রুত গিয়ে দেখি, বারান্দায় মেয়ের লাশ পরে আছে। শাশুড়ি-ননদ জানায়, ইতি আত্মহত্যা করেছে। আমি জানতে চাইলাম, ঝুলন্ত অবস্থায় থাকত, তাকে কে নামাল। এরপর তারা কোনো কথা বলেনি।’ বিলকিস বেগম আরও বলেন, ‘পাঁচ বছর হলো মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে ইতিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করত। মেয়ের সুখের কথা ভেবে ইতির স্বামীকে আমরা টাকাপয়সা দিয়ে সৌদিতে পাঠাই। তবু শাশুড়ি-ননদের নির্যাতন থামেনি। নির্যাতনের কারণে অনেকবার ইতি বাবার বাড়িতে চলে এসেছে। তাকে বুঝিয়ে ফের স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হতো। কিছুদিন আগেও নির্যাতিত হয়ে ইতি বাবার বাড়ি চলে আসে। ওর স্বামী দেশে ফিরে তাকে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। এক মাস আগে ইতির স্বামী সৌদিতে চলে যায়।’

মৃতের ভাবি শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমরা ইতির শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঘরের বারান্দায় লাশ দেখতে পাই। বাড়ির লোকজন বলে, সে আত্মহত্যা করেছে। ঘরের আড়ায় ওড়না ঝোলানো ছিল। গলায় একটি চিকন দাগ রয়েছে।’ শারমিন বলেন, ‘বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে ইতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। পরে এটিকে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

ইতি আক্তারের দেবর আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি ঘুম থেকে উঠে দাঁত মাজার সময় ভাবিকে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। কাছে গিয়ে দেখতে পাই, তিনি ঝুলে আছেন। আমরা দ্রুত তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে নামাই। পরে দেখি, তিনি মারা গেছেন।’

মৃত গৃহবধূর বাবার বাড়ির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ননদ মিনারা খাতুন বলেন, ‘ভাবির সঙ্গে আমাদের তেমন কোনো ধরনের ঝগড়াঝাঁটি কোনো দিন হয়নি। ভাই প্রবাসে থাকার কারণে ভাবি বেশির ভাগ সময় বাবার বাড়িতে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। এ নিয়ে মা মাঝেমধ্যে একটু কটু কথা বলতেন। তবে কোনো দিন হাত তোলেননি। কী কারণে ভাবি আত্মহত্যা করলেন, এটা বলতে পারছি না। মৃত্যুর পর ভাবির বাড়ির লোকজন এমন অভিযোগ তুলছে। এগুলো সব মিথ্যা।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত