Ajker Patrika

একই অফিসে পাশাপাশি বসেন স্বামী-স্ত্রী, আর্থিক অনিয়মের শত অভিযোগ

পরশুরাম (ফেনী) প্রতিনিধি
একই অফিসে পাশাপাশি বসেন স্বামী-স্ত্রী, আর্থিক অনিয়মের শত অভিযোগ

ফেনীর পরশুরাম উপজেলা সমাজসেবা অফিসে পাশাপাশি চেয়ারে বসেন মাহবুবুর রহমান মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী সায়েরা খাতুন। সম্প্রতি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আর্থিক অনিয়মের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। এসবের সঙ্গে একজন অফিস সহায়কসহ এই দম্পতির জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে তাঁরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।

মাহবুবুর রহমান মোল্লা ইউনিয়ন সমাজকর্মী আর সায়েরা খাতুন কারিগরি প্রশিক্ষক। লোকবল সংকটের অজুহাতে তাঁদের অফিসে একসঙ্গে বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সায়েরা খাতুন নিজেকে আওয়ামী লীগের নেত্রী পরিচয় দিয়েও অনেক সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেন। তিনি আগামী কমিটিতে জেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদ পাবেন বলে এই প্রতিবেদকের কাছে দাবি করেন। তবে এখন তিনি কোনো কমিটিতে নেই। অনিয়মের সঙ্গে অফিস সহায়ক মো. নবী হোসেনও জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পৌর এলাকার অনন্তপুরের বৃদ্ধ কাজল আক্তারকে ফোন দিয়ে ১ হাজার টাকা নিয়ে পরশুরাম উপজেলা সমাজসেবা অফিসে আসতে বলা হয়। কাজল আক্তার অসুস্থ থাকায় আসতে না পেরে নিকটাত্মীয় কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাঈন উদ্দিন মানিককে বিষয়টি জানান। মানিক মোবাইল অ্যাপসের সহযোগিতায় নম্বর যাচাই করে দেখেন ওই নম্বরের মালিক মাহবুবুর রহমান মোল্লা। সেখানে ভেসে ওঠা টাই পরা মোল্লা উপজেলা সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী। পরশুরাম সমাজসেবা অফিসের বিরুদ্ধে প্রতারণার এমন অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে।

অফিসে পাশাপাশি বসেন স্বামী-স্ত্রী, আর্থিক অনিয়মের শত অভিযোগ।উপজেলা সমাজসেবা অফিসে অনিয়ম, দুর্নীতি, কারসাজি করে ভাতা আত্মসাৎ; টাকার বিনিময়ে নকল কাগজপত্র দিয়ে হতদরিদ্রদের বঞ্চিত করে স্বাবলম্বীদের ভাতাভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা; বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীদের মোবাইল নম্বর পাল্টে নিজেদের নম্বর দিয়ে দিনের পর দিন ভাতা আত্মসাৎসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসে কর্মরত স্বামী-স্ত্রী ও পিয়ন মিলে দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন বলে অভিযোগ।

ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি বলেন, গত শুক্রবার উপজেলার গুথুমার এক ব্যক্তিকে মোবাইলে ফোন দিয়ে ৫ হাজার টাকা নিয়ে গেলে ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে সমাজসেবা অফিসে যেতে বলা হয়। হতদরিদ্র ভাতাভোগী বিষয়টি স্থানীয় মসজিদের ইমামকে অবহিত করেন। ইমাম সাহেব উপজেলায় কর্মরত একজনকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেন। সরকারি কর্মচারী ওই নম্বরে কল দিলে জানতে পারেন, তিনি সমাজসেবা অফিসের লোক।

এ বিষয়ে মির্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. সাখাওয়াত হোসেন রুবেল অভিযোগ করেন, তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছালেহ আহাম্মদের স্ত্রী আমেনা আক্তার বাক্প্রতিবন্ধী হওয়ায় গত বছরের শুরুতে ভাতার জন্য আবেদন করে তালিকাভুক্ত হন। কিন্তু গত এক বছর তিনি কোনো ভাতা পাননি। এ বিষয়ে জানতে আবেদনকারী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য রুবেল বেশ কয়েকবার অফিসে মোল্লার কাছে যান। কিন্তু মোল্লা নানা অজুহাত দেখিয়ে আমেনার নাম তালিকাভুক্ত হয়নি বলে জানান।

চলতি মাসে ভাতার জন্য আবেদন শুরু হলে আবার ইউপি সদস্য ওই আমেনা খাতুনের নামে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আবেদন করতে গেলে সফটওয়্যার তাঁর আবেদন গ্রহণ করেনি। বিষয়টি ইউপি সদস্য রুবেল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে গেলে তিনি অনুসন্ধান করে দেখেন, আমেনার নামে এক বছর ধরে ভাতা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে। তথ্য যাচাই করে দেখেন, আমেনার নামে ভাতা বরাদ্দ হলেও ভাতা চলে যাচ্ছে অন্য নম্বরে।

ইউপি সদস্য সাখাওয়াত হোসেন রুবেল আরও অভিযোগ করেন, তিনি ১৩টি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন। প্রতিটি কার্ডের জন্য মোল্লা ৫০০ টাকা করে সাড়ে ৬ হাজার টাকা তাঁর কাছ থেকে নিয়েছেন।

তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে আরও অভিযোগ করেন, গত ৩০ আগস্ট সুবার বাজারের এক ভাতাভোগী ওয়াসিমের কাছে মোবাইলে ফোন দিয়ে স্মার্টকার্ড দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও টাকা দাবি করেন। একইভাবে মির্জানগর ইউনিয়নের ডিএম সাহেবনগর গ্রামের মনির আহাম্মদের কাছে ফোন দিয়ে তথ্য ও টাকা দাবি করা হয়।

উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বয়স্ক ভাতাভোগী ৪,৬৯৪ জন, বিধবা ভাতাভোগী ১,৪৪৭ জন, প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী রয়েছেন ২,০১৯ জন। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি পান ৩২ জন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ভাতাভোগী ৫৩ জন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী উপবৃত্তি পাচ্ছেন ৩১ জন।

উপজেলার তিনটি ইউপি চেয়ারম্যান ও পৌরসভার কাউন্সিলররা মৌখিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করেন, ভাতাভোগীদের ভাতা তালিকাভুক্ত হলেও অফিসে মোল্লার নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট ভাতাভোগীর বিভিন্ন কৌশলে নিজেরা ভাতা তুলে আত্মসাৎ করছেন।

মির্জানগর ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান ভুট্টো অভিযোগ করেন, নম্বর পাল্টে মোল্লা কৌশলে এসব ভাতা আত্মসাৎ করছেন। ভাতাভোগীদের নম্বর, নাম-ঠিকানাসহ বিভিন্ন তথ্য একাধিকবার যাচাই করা হয়। তাই নম্বর ভুল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

উপজেলার চিথলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, মাহবুবুর রহমান মোল্লা তাঁর স্ত্রী সায়েরা খাতুন ও অফিস সহায়ক নবী হোসেনের সহযোগিতায় ভাগাভোগীদের মোবাইল নম্বর পাল্টে তাঁদের ভাতা নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা তিনজন মিলে অফিসে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অফিস সহায়ক মো. নবী হোসেন বলেন, ‘ভাতাভোগীদের সব তথ্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে থাকে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার সুযোগ থাকে না। অনিয়ম করলে সেটা কর্মকর্তা করতে পারেন। আমি একসময় সমাজসেবা প্রধান কার্যালয়ে ছিলাম। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তকালীন আমি অনেক সহযোগিতা করেছি।’

কারিগরি প্রশিক্ষক সায়েরা খাতুন বলেন, ‘অফিসে জনবল সংকটের কারণে কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা অফিসে কাজ করছি। কারও কাজ থেকে কোনো টাকাপয়সা নেইনি। ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানরা লোক পাঠালে আমি তো তাঁদের সহযোগিতা করি। কিন্তু কখনো টাকা চাইনি। কিন্তু কেন তারা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন সেটা বুঝতেছি না।’

কাজল আক্তারের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবুর রহমান মোল্লা এই প্রতিবেদককে বলেন, কোনো প্রতারক চক্র তাঁর ছবি ব্যবহার করে তাঁর নামে মোবাইল সিম কিনে লোকজনের কাছে টাকা দাবি করছেন। তিনি কাজল আক্তারের কাছে টাকা দাবি করেননি। একইভাবে ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, তাঁর অফিসে লোকবলের সংকট রয়েছে। তবে মোল্লা, সায়েরা ও অফিস সহায়ক নবীর বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ রয়েছে। বিষয়গুলো তিনি জেলা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। তা ছাড়া সতর্ক করার পরও ভাতাভোগীরা মোল্লার সঙ্গে টাকাপয়সা লেনদেন করেন। তিনি জানতে চাইলে অস্বীকার করেন। তারপরও টাকাপয়সা নেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজা হাবিব শাপলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগের বিষয়টি তিনি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত কালাম ভাইদের সংসারও সামলাতেন, এখন চার পরিবারে হাহাকার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
নিহত আবুল কালাম চোকদার। ছবি: সংগৃহীত
নিহত আবুল কালাম চোকদার। ছবি: সংগৃহীত

শরীয়তপুরের আবুল কালাম চোকদারের সঙ্গে বাড়ির লোকজনের শেষবারের মতো কথা হয়েছিলো আজ রোববার দুপুরে। বেলা ১১টার দিকে ভাবী আসমা বেগমকে তিনি জানিয়েছিলেন, কয়েকদিন পরই বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু ফেরা আর হলো না তাঁর। মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এই তরুণের মৃত্যুর পৌঁছালে গ্রামজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠী গ্রামের মৃত আব্দুল জলিল চোকদারের ছেলে আবুল কালাম (৩৬)। চার ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিলেন তিনি। স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায়। গ্রামে থাকা ভাইদের সংসারের জন্যও নিয়মিত টাকা পাঠাতেন তিনি।

রোববার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে তার উপর পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠায় পুলিশ।

স্বজনদের কান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্বজনদের কান্না। ছবি: আজকের পত্রিকা

আবুল কালামের ভাবী আসমা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সকালে ফোনে কথা হইছিলো। আমি বলছিলাম, ভাইয়ের সাথে কথা বলো, বাড়িতে চলে আস। সে বলেছিল, কয়েক দিনের মধ্যেই আসবে। কিছু ঘণ্টাখানেক পর শুনি-মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে মারা গেছে!’

সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসমা বলেন, ‘আমাদের সংসারের হাল ওই ধরেছিল। এখন ওর সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’

ছোটবেলা থেকেই কালাম পরিশ্রমী ছিল বলে জানান নিহতের চাচাতো ভাই আব্দুল গণি মিয়া চোকদার। তিনি বলেন, ‘সংসারের বোঝা একা কাঁধে নিয়েছিল সে। হঠাৎ এমন মৃত্যুকে মেনে নেয়া কঠিন।’

এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল কাইয়ুম খান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা ইতোমধ্যে খবর পেয়েছি। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারটিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। ”

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

র‍্যাবের হাতে ‘জিনের বাদশা’ ধরা

ভোলা প্রতিনিধি
র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত
র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর মাঝি। ছবি: সংগৃহীত

জিনের বাদশাহ সেজে প্রতারণার অভিযোগে মো. জাহাঙ্গীর মাঝি (৬০) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকার হাটবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীর মাঝি লালমোহন উপজেলার চর কালাই দাস গ্রামের বাসিন্দা মৃত আজগর মাঝির ছেলে।

তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‍্যাব-৮-এর ভোলা ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শাহরিয়ার রিফাত অভি। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, জাহাঙ্গীর মাঝি ও মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন মীর নামের দুজনসহ কয়েকজন প্রতারক জিনের বাদশাহ সেজে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারণা করে আসছিলেন। সম্প্রতি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার মো. দিদারুল আলম (৪০) নামের এক ব্যক্তি অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেখে তাঁদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যার কথা বললে প্রতারকেরা বিভিন্ন কৌশলে তাঁর সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এর জন্য গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিকাশে ৫৩ লাখ ৫ হাজার টাকাও হাতিয়ে নেন। পরে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ভুক্তভোগী দিদারুল আলম চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালতের নির্দেশে ফটিকছড়ি থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শাহরিয়ার রিফাত অভি বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার মানিকার হাটবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করি। আমরা এর আগে ১ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক কামাল উদ্দিনকেও গ্রেপ্তার করি। অন্য প্রতারকদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক সপ্তাহ পর উৎপাদনে ফিরল বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট সচল করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ২টার দিকে ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিটটি চালু হয়।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, চালু হওয়া ইউনিট থেকে প্রতিদিন ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ইউনিটটি চালু রাখতে দৈনিক ৮০০ থেকে ৯০০ টন কয়লার প্রয়োজন হবে।

এর আগে ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথম ইউনিটের বয়লারের পাইপ ফেটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তারও আগে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তৃতীয় ইউনিট বন্ধ হয়। এর ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের উৎপাদন কার্যক্রম। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিট দুটি ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এবং তৃতীয় ইউনিটটি ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন। ওই কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ৪ বছর ১১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রথম ইউনিটের মেরামতের কাজ শেষে দুপুর ১২টায় বয়লারে ফায়ারিং করা হয়। বেলা ২টা থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটির চালু হলে সন্ধ্যায় আবারও আংশিক ত্রুটি দেখা দেয়, কিছু পরে পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে উৎপাদিত ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে উত্তরাঞ্চলের লোডশেডিং কিছুটা কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

আবু বক্কর সিদ্দিক আরও বলেন, কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটটি মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। চায়না থেকে মেশিন এনে সেটি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ফিরতে প্রায় ৯০ দিন সময় লাগবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি ও ভৈরব সংবাদদাতা
ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্র-জনতা। আজ রোববার সকালে নগরীর দুর্জয় মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করেন। আন্দোলনের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা মহাসড়কসহ শহরের বিভিন্ন সড়কে যানবাহন আটকা পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

কিশোরগঞ্জ-৩
কিশোরগঞ্জ-৩

আজ সকাল ১০টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দুর্জয় মোড়ে আসেন আন্দোলনকারীরা। সাড়ে ১০টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশসহ ভৈরব বাজার ও কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক ব্লকেড করেন তাঁরা।

ভৈরব পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম পাভেল বলেন, ‘সর্বস্তরের মানুষের আন্দোলনের ফলে ভৈরবকে ৬৫তম জেলা ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি হলেও পরে সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আজ আমরা জেলার দাবিতে মাঠে নেমেছি, ঘোষণা না আসা পর্যন্ত মাঠে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

বাঁশগাড়ি জিল্লুর রহমান স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রায়হান বলে, ‘জেলার ঘোষণা দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে এসেছি। ব্লকেড কর্মসূচি পালন করতে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড দিয়েছি, যানবাহন যেন চলতে না পারে। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি।’

কিশোরগঞ্জ-২
কিশোরগঞ্জ-২

এই আন্দোলনে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন সুজন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও যুবদল নেতা আলহাজ আল মামুন, গণঅধিকার পরিষদের নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ কাজল প্রমুখ। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেয়।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুহাদ রুহানী বলেন, ‘জেলার দাবিতে দুর্জয় মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। আন্দোলন চলাকালে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক ছিলাম। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি শবনম শারমিন বলেন, ‘সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে মনিটরিং করেছি। কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা বা বিশৃঙ্খলা যাতে সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ছিল সর্বোচ্চ সতর্ক ও প্রস্তুত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মসজিদে আমির হামজাকে রাজনৈতিক আলোচনা করতে নিষেধ করায় লাঞ্ছিত বিএনপি নেতা

বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যু, মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ

তিন ঘণ্টা পর আংশিক চালু মেট্রোরেল

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে ট্রেন থেকে আগ্নেয়াস্ত্রভর্তি ট্রলি ব্যাগ উদ্ধার

সুদান: সবুজ স্বর্গে পচে যাচ্ছে খাবার, অন্য পাশে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে শিশু

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত