Ajker Patrika

‘আরওয়ানফাইভ থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করতে পারতেন না, আপনাদের ওপর দিয়ে চালিয়ে চলে যেতাম’

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরের আলোচিত ডন শরিফ খ্যাত শরিফুল ইসলামকে (ডানে) সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুরের আলোচিত ডন শরিফ খ্যাত শরিফুল ইসলামকে (ডানে) সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘স্যার, আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন, আমাকে তো গ্রেপ্তার করার কথা না’—গ্রেপ্তারের সময় এভাবে র‍্যাবকে প্রশ্ন করেন ফরিদপুরের আলোচিত ডন শরিফ খ্যাত শরিফুল ইসলাম (৩৮)। র‍্যাব জানায়, অপরাধ জগতে তাঁর এতটাই দক্ষতা যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করবে কখনো প্রত্যাশা করেননি এবং গ্রেপ্তারের সময় তিনি নিজেই অবাক হয়ে যান। একপর্যায়ে বলেন, ‘আমার ছোট ভুল হয়েছে, আরওয়ানফাইভ মোটরসাইকেল থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করতে পারতেন না, আপনাদের ওপর দিয়ে চালিয়ে চলে যেতাম।’

আজ শনিবার দুপুরে ফরিদপুর র‍্যাব ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে শরিফুলকে গ্রেপ্তারের বর্ণনা দেন র‍্যাব-১০-এর অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহম্মাদ কামরুজ্জামান। এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন র‍্যাব সদস্যরা। তিনি শহরের কবিরপুর এলাকার মৃত ফারুক শেখের ছেলে।   

এ ছাড়া রায়হান মোল্যা (২৫) নামে তাঁর এক সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় দেড় কেজি গাঁজা ও ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি খেলনা পিস্তল (র‍্যাবের ভাষ্য), সুইচ গিয়ার, ক্ষুর, কাঁচি ও একটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত আরওয়ানফাইভ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। র‍্যাব জানায়, এটিও সম্প্রতি পাবনা জেলা থেকে ক্রয়ের নামে ট্রায়াল দেওয়ার সময় পালিয়ে নিয়ে আসেন।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, গত ২১ অক্টোবর শহরের উত্তর শোভারামপুরে এক গৃহবধূকে পিস্তল ঠেকিয়ে কানের দুল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার একটি সিসিটিভির ক্যামেরার দৃশ্যে ব্যাপক আলোচিত হয়। ওই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হলে ছায়াতদন্ত শুরু করে র‍্যাব। তিনি বারবার তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকেন।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি (শরিফ) অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০০৮ সালে একটি মাদক মামলার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো পুলিশের খাতায় নাম আসে শরিফুলের। এর পর থেকে অপরাধ সাম্রাজ্যে জড়িয়ে পড়েন তিনি। মাদক কারবার, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির মতো অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এসব ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় আটটি মামলাসহ ১০টি মামলা রয়েছে তাঁর নামে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত চারবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।

র‍্যাবের ও তৎকালীন তথ্যমতে, ২০১৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শহরের ঝিলটুলী এলাকায় ভোরে ছিনতাইকারীদের হাতে নিহত হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ নার্স অরুনিমা ভৌমিক। ওই দিন ভোরে ডিউটি শেষে রিকশায় বাসায় ফিরছিলেন অরুনিমা, তখন শরিফুলসহ দুজন ছিনতাইকারীরা তাঁর হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেন। তখন রিকশা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজে দৃশ্য ফুটে ওঠে এবং ব্যাপক আলোচিত হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে ওই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে তাঁকেসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব জানায়, অরুনিমা হত্যা মামলায় দুই বছরের মধ্যেই শরিফুল জামিনে বের হয়ে আসেন এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালেও আরেক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এরপর গত দুই বছর নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন শরিফুল। তাঁকে থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানান র‍্যাব কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচন পর্যন্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে কড়াকড়ি

গ্রেপ্তার হয়ে অবাক ডন, বললেন—‘স্যার আমাকে কীভাবে গ্রেপ্তার করলেন’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন: জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাহিল ৫ অ্যান্টিবায়োটিক

এবার তেলের খনি নাইজেরিয়াতে নজর ট্রাম্পের, অজুহাত—খ্রিষ্টানরা ভালো নেই

সকালে নাশতা না খাওয়ার পাঁচ ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি

এলাকার খবর
Loading...