Ajker Patrika

৩৩ বছর নখ কাটেন না ফুলবাড়ীর অরুণ

মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ০৮
অরুন সরকার। ছবি: আজকের পত্রিকা
অরুন সরকার। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানুষ শখের বশে কত কিছুই না করে! তবে সেই শখ যদি হয় ব্যতিক্রম, তাহলে তা নিঃসন্দেহে কৌতূহলের জন্ম দেয়। তেমনই ব্যতিক্রম এক শখ থেকে নখের প্রতি ভালোবাসা জন্মে অরুণ কুমার সরকারের (৪০)। আর সেই ভালোবাসাকে চিরস্থায়ী রূপ দিতে ৩৩ বছর ধরে বাঁ হাতের নখ কাটেননি তিনি। এতে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য, আর অরুণ হয়ে উঠেছেন এক দর্শনীয় ব্যক্তি।

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা অরুণ। বাবা রবীন্দ্রনাথ সরকার একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে কয়েক সপ্তাহ নখ না কাটায় শিক্ষক তাঁকে নখ কাটার নির্দেশ দেন। কিন্তু কৌতূহলবশত অরুণ নখ আর না কেটে বড় করতে থাকেন। একপর্যায়ে সেই নখের প্রতি মায়া জন্মে যায় তাঁর। শুরু হয় দীর্ঘ নখ রাখার যাত্রা।

বর্তমানে অরুণের বাঁ হাতের আঙুলগুলোর নখের দৈর্ঘ্য হলো:

অনামিকা: ১৫ ইঞ্চি

কনিষ্ঠা: ১৩ ইঞ্চি

মধ্যমা: ১১ ইঞ্চি

তর্জনী: ২ ইঞ্চি

বৃদ্ধাঙ্গুল: দেড় ইঞ্চি

অরুণের এই নখ দেখার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় করে। কেউ কেউ ছবি তুলে নিয়ে যান স্মৃতিস্বরূপ।

প্রতিবেশী মাসুদ রানা, রেজাউল করিম ও পার্থ মণ্ডল বলেন, ‘অরুণ দীর্ঘদিন ধরে নখ রেখে আসছেন। দেখতে ভালোই লাগে। এটা সবার পক্ষে সম্ভব নয়, অনেক ধৈর্য আর সাধনার ব্যাপার।’

অরুণ জানান, প্রথম দিকে পরিবার থেকে আপত্তি এলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবাই তা মেনে নিয়েছেন। ২০০৩ সালে বিয়ের পর তাঁর দুই সন্তান হয়। বর্তমানে তিনি ‘কান্না ডিজিটাল ফটো স্টুডিও’ নামে একটি দোকান চালান, যেখানে বিকাশ, ফ্লেক্সিলোড ও ছবি তোলার সেবা দেন। তাঁর দাবি, নখ বড় হলেও কোনো কাজেই অসুবিধা হয় না।

অরুণ বলেন, ‘নখের প্রতি ভালোবাসা এমন যে কাটার কথা ভাবতেই পারি না। যদি ভেঙে যায়, খুব কষ্ট পাই।’

তবে নখ রাখা স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপযোগী—এই প্রশ্নে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মশিউর বলেন, ‘দীর্ঘদিন নখ রাখা ঠিক নয়। এতে ময়লা জমে সংক্রমণ হতে পারে। নখ উঁচু হয়ে আঙুলের ক্ষতিও করতে পারে। এ ধরনের শখ থেকে বিরত থাকাই ভালো।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ধুনটে চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক কাউন্সিলরসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ২১
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার ধুনট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে পৌরসভার চর ধুনট এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে চর ধুনট গ্রামের নির্মাণশ্রমিক ও ঠিকাদার রিপন প্রামাণিককে চাঁদার দাবিতে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় আহত রিপন প্রামাণিকের স্ত্রী তাহমিনা আকতার বাদী হয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। গ্রেপ্তার হওয়া অন্য দুজন হলেন চর ধুনট গ্রামের সোবাহান প্রামাণিক (৪৬) ও তাঁর ছেলে মনির হোসেন (২২)।

পুলিশ ও মামলার সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর সহযোগীরা রিপন প্রামাণিকের কাছে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু রিপন প্রামাণিক টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর লোকজন মঙ্গলবার রাতে রিপন প্রামাণিকের বাড়িতে গিয়ে চাঁদার টাকা চান। তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়।

এ সময় রিপন প্রামাণিকের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে জাহাঙ্গীর ও তাঁর সহযোগীরা পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা আহত রিপন প্রামাণিককে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রিপনের স্ত্রী তাহমিনা আকতার বাদী হয়ে জাহাঙ্গীর আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

থানাহাজতে থাকা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে রিপন প্রামাণিকের মারামারির ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, ‘চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলায় জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পরকীয়ার জেরে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় পুলিশ দম্পতির ফাঁসি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সহকর্মী পুলিশ সদস্যকে পরকীয়ার জেরে হত্যার দায়ে এক পুলিশ দম্পতিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক হারুন-অর রশিদ। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন কনস্টেবল মো. আলাউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী কনস্টেবল নাসরিন নেলী। আলাউদ্দিনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভবানীপুর এলাকায়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালে কনস্টেবল আলাউদ্দিনের স্ত্রী নাসরিন নেলীর সঙ্গে সহকর্মী কনস্টেবল সাইফুল ইসলামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের জের ধরেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলি এলাকায় প্রেমিকা নেলীর ভাড়া বাসাতেই পরকীয়া প্রেমিক পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলামকে খুন করেন নেলী ও তাঁর স্বামী আলাউদ্দিন।

হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত পুলিশ দম্পতি সাইফুল ইসলামের মরদেহ বস্তাবন্দী করে গুম করার চেষ্টা করেন। তবে লাশ গুম করতে গিয়েই বিপত্তি বাধে। নগরীর টাউন হল মোড়ে পুলিশের তল্লাশির সময় বস্তাবন্দী লাশসহ তাঁরা হাতেনাতে আটক হন।

ঘটনার পর নিহত সাইফুলের মা মোছা. মুলেদা বেগম ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় কনস্টেবল আলাউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী নাসরিন নেলীসহ আরও অজ্ঞাতনামা দুজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভাবি ও ভাতিজাকে হত্যার দায়ে দেবরের মৃত্যুদণ্ড

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৭
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে টাকা ধার চাওয়াকে কেন্দ্র করে ভাবি ও ভাতিজাকে হত্যার দায়ে দেবর সাদিকুর রহমান সাদিককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এই রায় দেন।

নারায়ণগঞ্জ আদলত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান জানান, ২০২২ সালের ২ জুলাই রাতে সাদিকুর তাঁর ভাবি রাজিয়া সুলতানা কাকলীর কাছে টাকা ধার চান। এ সময় ভাবি রাজিয়া টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। পরে রাজিয়ার ঘুমন্ত ছেলে তালহাকেও (৮) কুপিয়ে হত্যা করে আলমারিতে রাখা স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় পরদিন নিহত রাজিয়ার মা তাসলিমা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে মামলা করেন।

পরে মামলার তদন্তে দেবর সাদিকুরের সংশ্লিষ্টতা পায় পুলিশ। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার মামলার আদেশ দেন আদালত।

সাদিকুর রহমান আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দ এলাকার মোবারক হোসেনের ছেলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অপসো স্যালাইন ফার্মাতে ৫৭০ শ্রমিক ছাঁটাই: থালা নিয়ে রাস্তায় সন্তানেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
আজ দুপুরে বরিশাল নগরের বগুড়া রোডে অপসো স্যালাইন ফার্মা লিমিটেডের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ দুপুরে বরিশাল নগরের বগুড়া রোডে অপসো স্যালাইন ফার্মা লিমিটেডের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাবার চাকরি নেই। তাই মা-বাবার সঙ্গে প্রতিবাদ জানাতে থালা হাতে রাস্তায় বসেছে প্রায় অর্ধশত শিশু। মা-বাবা যখন চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন, সন্তানেরা তখন ফ্যাল ফ্যাল চোখে তাঁদের পাশে বসে আছে।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরের বগুড়া রোডে অপসো স্যালাইন ফার্মা লিমিটেডের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের সময় এমন হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা গেছে। এদিকে শ্রম অধিদপ্তরের মধ্যস্থতায় মালিক-শ্রমিক সমঝোতা বৈঠক বৃহস্পতিবার আলোচনা ছাড়াই ভেস্তে গেছে।

জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর দেশের বৃহত্তম ওষুধশিল্প প্রতিষ্ঠান অপসোনিন লিমিটেডের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান অপসো স্যালাইন ফার্মা কর্তৃপক্ষ ৫৭০ জন কর্মচারীকে ছাঁটাই করে। এর পর থেকে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা লাগাতার আন্দোলন শুরু করেন। এর ফলে আট দিন ধরে কারখানাটি অচল হয়ে আছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কারখানার সামনে শ্রমিকদের আন্দোলনের সঙ্গে তাঁদের কোমলমতি সন্তানেরাও যুক্ত হয়।

শ্রমিক গোপাল চন্দ বলেন, ‘বুধবার শ্রম অধিদপ্তরে মালিক-শ্রমিক বৈঠক হয়েছে, কিন্তু কোনো সমঝোতা হয়নি। আজ বৃহস্পতিবার আবারও বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। আমরা তো মরবই। তবে ঘরে বসে মরতে চাই না, তাই রাস্তায় নেমেছি।’

শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা বাসদ নেত্রী ডা. মনীষা চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় বলেন, ‘শ্রম অধিদপ্তরে আবারও সভা হওয়ার কথা থাকলেও মালিকপক্ষ জানিয়েছে, তারা আর শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে না। এরপর শ্রমিকেরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে। বর্তমানে অপসো স্যালাইন ফার্মার সামনে আন্দোলন চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত