Ajker Patrika

রাজধানীর মগবাজারে ভোরে অস্ত্রের মুখে ছিনতাই, যা জানালেন ভুক্তভোগী

মোদাব্বির হাশমী
আপডেট : ২৬ মে ২০২৫, ২১: ২৪
মগবাজারে ছিনতাইয়ের ভাইরাল ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট
মগবাজারে ছিনতাইয়ের ভাইরাল ভিডিও। ছবি: স্ক্রিনশট

রাজধানীর মগবাজারে অস্ত্র ঠেকিয়ে এক তরুণের ব্যাগ ছিনতাইয়ের দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটি একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, টুইটারসহ ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবেও ছড়িয়েছে। ভিডিওটি দেখে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বলে মনে হয়। ফুটেজের টাইম স্ট্যাম্প অনুযায়ী, ঘটনা ১৮ মে বিকেল ৫টা ২২ নাগাদ ঘটেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সাদা টি-শার্ট পরিহিত তরুণ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। হঠাৎ মোটরসাইকেলে করে আসা তিন যুবক তাঁর পথ আটকান। তিনজনের দুজনের মাথায় হেলমেট ও একজন মাস্ক পরা। দুজনের হাতে চাপাতি। অস্ত্র ঠেকিয়ে তরুণটির ব্যাগ ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। চাপাতি দিয়ে তাঁকে কয়েকবার আঘাতও করা হয়। এরপর তিন যুবক ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে মোটরসাইকেলে করে চলে যেতে উদ্যত হন। ভুক্তভোগী তরুণটি তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় আবারও তাঁরা মোটরসাইকেল থেকে নেমে পায়ে, হাতে ও ঊরুতে এলোপাতাড়ি কোপ দিয়ে চলে যান।

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এসব পোস্টের কমেন্টে ঘটনাটি মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন। আবার অনেকে এটি সাজানো ঘটনা বলেও মন্তব্য করেছেন। ভিডিওটির সত্যতা ও ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।

একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাঁদের পোস্টের ক্যাপশনে উল্লেখ করেছেন, ঘটনাটি মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলিতে ঘটেছে। গুগল ম্যাপসে ‘মগবাজারের গ্রিনওয়ে গলি’ লিখে সার্চ করলে রাজধানীর মগবাজারের গ্রিনওয়ে রোড নামের একটি রাস্তার মানচিত্র প্রদর্শিত হয়।

এই রাস্তার জিও লোকেশনে যুক্ত ছবির সূত্রে অনুসন্ধানে ঘটনাস্থলটি চিহ্নিত করা হয়। ঘটনাস্থল মগবাজারের গ্রিনওয়ে রোডেই এবং গ্রিনওয়ে জামে মসজিদের পাশেই অবস্থিত।

ঘটনাস্থলের একটু সামনে ‘মেসার্স গোল্ডেন রেফ্রিজারেশন ওয়ার্কস’ নামের একটি ইলেকট্রনিক দোকান রয়েছে। দোকানের নামফলকে থাকা ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অপর প্রান্ত থেকে শওকত হোসেন নামের একজন কথা বলেন। এই দোকানটি তাঁর বলে জানান।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছিনতাইয়ের ভিডিওটির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শওকত হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য। এই সম্পর্কে আমি শুনেছি। কয়েক দিন আগের ঘটনা। আসলে ঘটনাটি খুব সকালে ঘটেছে। যার কারণে আমি দোকানে ছিলাম না। ঘটনা যার সঙ্গে ঘটেছে, সে আমাদের কাছের মানুষ। তাদের থেকে আমি যতটুকু শুনেছি, ঘটনার আগের দিন রাতে ছেলেটি তার বোনের স্বামী সাজ্জাদ উজ্জ্বলের বাসায় ছিল। ঘটনার দিন খুব সকালে সে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিনজন এসে তাঁকে আহত করে ব্যাগ নিয়ে নেয়।’

শওকত হোসেনের কাছে ভুক্তভোগীর ফোন নম্বর চাইলে তিনি ভগ্নিপতি সাজ্জাদ উজ্জ্বলের ফোন নম্বর দেন।

সাজ্জাদ উজ্জ্বলের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ঘটনাটি সত্য। ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওর নাম আব্দুল্লাহ। আমার স্ত্রীর মামাতো ভাই। সে পল্টনে চাকরি করে এবং আমতলায় থাকে। সে আমাদের গ্রিনওয়ে রোড দিয়েই অফিসে যেত। সে আমাদের এখানে তার বেতনের কিছু টাকা কলেজের ফি দেওয়ার জন্য জমিয়ে রেখেছিল। সেই টাকা নিয়ে গত সোমবার ভোরে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। আমার বাসা পার হয়ে নুরজাহান ভিলার সামনে আসামাত্র মোটরসাইকেলে করে তিনজন এসে তাকে আহত করে তার ব্যাগসহ টাকা ও ফোন নিয়ে যায়।’

থানায় অভিযোগ দিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে সাজ্জাদ বলেন, ‘গতকাল রোববার রাতে আমি হাতিরঝিল থানায় অভিযোগ করে এসেছি। আজ সকালে পুলিশ তদন্তের জন্য এসেছিল।’

সাজ্জাদ উজ্জ্বলের কাছ থেকে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহর ফোন নম্বর সংগ্রহ করে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। নম্বরে যোগাযোগ করা হলে অপর প্রান্ত থেকে আব্দুল্লাহ পরিচয়ে একজন কথা বলেন। ভিডিওতে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তি তিনিই বলে জানান আব্দুল্লাহ।

ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘আমি ইন্টারমিডিয়েটে পড়াশোনা করেছি। এর পাশাপাশি পল্টনে একটি চাকরি করি। আমার পড়াশোনার ফি বাবদ কিছু টাকা আমি আমার বোনের বাসায় জমা রেখেছিলাম। গত সোমবার (১৯ মে) ভোরে আমার বোনের বাসা থেকে টাকাগুলো নিয়ে আমি আমার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে রওনা দিই। তখন গ্রিনওয়ে রোডের নুরজাহান ভিলার সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাইকে করে তিনজন এসে তাদের দুজন আমাকে ধরে ফেলে। আমি খুব আতঙ্কিত ছিলাম। আমি কাউকে চিনতে পারিনি। এই প্রথম আমি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছি।’

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মোটরসাইকেলে আসা তিনজন ব্যক্তির দুজন আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আমার সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে নেয়। ব্যাগে ১৪ হাজার টাকা, আমার কিছু কাপড়চোপড় ও কোম্পানির কার্ড ছিল। অস্ত্র দিয়ে আমার হাতে, পেটে ও পায়ের রানে, হাঁটুতে জখম করেছে।’

থানায় অভিযোগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিনই আমি পুলিশকে অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমার অভিযোগ না নিয়ে বলেছিল হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট নিয়ে আসতে। পরে স্থানীয় হাসপাতালে গেলে বলেছিল ঢাকা মেডিকেলে (ঢামেক) যেতে। তখন আমি শারীরিক দুর্বলতা অনুভব করায় আর ঢাকা মেডিকেলে যাইনি। আর পরে পুলিশে অভিযোগও জানাইনি। পরে গতকাল ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ নিজেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং মামলা করে।’

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজু বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি নিয়ে কাজ করছি। এরই মধ্যে কিছু ক্লু পেয়েছি। পুরো তদন্ত শেষ হলে তা জানানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চুরি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কারাগারে

ফেনী প্রতিনিধি
চুরি মামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা কারাগারে

ফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

গ্রেপ্তার আলা উদ্দিন পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকার মজিবুল হকের ছেলে। তিনি দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

জানা গেছে, ৫ অক্টোবর গভীর রাতে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনিয়া খুশিপুর এলাকায় দুই বাড়ি থেকে ছয়টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। এ ঘটনায় সর্বশেষ ২১ অক্টোবর দিবাগত রাতে পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকা থেকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

গ্রেপ্তার আলা উদ্দিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে ভিন্নমতের রাজনীতি করার কারণে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হয়েছিলেন। ওই মামলাগুলোয় জামিনে আছেন। বর্তমানে প্রতিহিংসা করে তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’

দাগনভূঞা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যদি এ ঘটনা সত্য হয়, তাহলে তা দলের জন্য বিব্রতকর। ঘটনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে যদি তিনি জড়িত থাকেন, অবশ্যই তাঁর বিচার হোক। আইন সবার জন্য সমান। এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হবে।   

এ ব্যাপারে দাগনভূঞা থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, গরু চুরির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দাগনভূঞা ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, তাঁর পক্ষে সবাই কাজ করব: আরিফুল হক চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেটে পদযাত্রায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে পদযাত্রায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার প্রচারের মধ্য দিয়ে সিলেট-১ আসনে ধানের শীষের পক্ষে পদযাত্রা করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

বুধবার (২২ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে জোহরের নামাজের পর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে তিনি এই প্রচার শুরু করেন।

আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমার নেতা তারেক রহমান বলেছেন, তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করবেন। অনেকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এখনো কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলের মনোনয়ন বোর্ড বসে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করবে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আরিফ বলেন, ‘৪৭ বছর ধরে আমি দলের সঙ্গে আছি। সব সময় দলের সিদ্ধান্ত মেনে এসেছি। কখনো দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করিনি। আর উনিও (তারেক রহমান) বলেছেন, জনগণের ভালোবাসা, জনগণের সম্পৃক্ততা যাঁর সঙ্গে থাকবে, তিনি তাঁকে নমিনেশন দেবেন। আজকে দেখুন, শুধু প্রচার অভিযানে হাজার হাজার মানুষ চলে এসেছেন।’

পদযাত্রায় সিলেটের বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ অংশ নেন। এ সময় অনেকে ধানের শীষ হাতে নিয়ে প্রচারণায় অংশ নেন। রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে আরিফুল হক চৌধুরীকে স্বাগত জানান অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুলিশের বলা ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ নিয়ে প্রশ্ন জোবায়েদের শিক্ষকের

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বুধবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনে শিক্ষক সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা
বুধবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনে শিক্ষক সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা মো. জোবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’ বলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সংবাদ সম্মেলন থেকে ত্রিভুজ প্রেমের গল্পের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু জোবায়েদের সম্পর্কে তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা যতটুকু জানে, তাতে এই ধরনের মন্তব্য তার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়। তা ছাড়া জোবায়েদ যদি প্রেমই করত, তাহলে তো তাকে আর মেয়ের পরিবার টিউশনিতেই রাখত না।’

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আজকের পত্রিকাকে এসব কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্‌দীন। এর আগে বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে ভাষাশহীদ রফিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির সংবাদ সম্মেলনের নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ছাত্রদল ও অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং জোবায়েদের আইনজীবী মো. ইশতিয়াক হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ঘটনার দ্বিতীয় দিনে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮), মাহির রহমান (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)। এরপর মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো নজরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্ষাকে পড়াতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে জোবায়েদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে বর্ষার সঙ্গে মাহিরের পূর্ববর্তী সম্পর্ক ছিল। এটা মূলত ‘ত্রিভুজ প্রেমের গল্প’। এর জেরে মাহির ও আয়লান মিলে বর্ষার সহযোগিতায় হত্যা করেন জোবায়েদকে।

পুলিশের এই বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন বলেন, ‘আমাদের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে সংশয় আছে, প্রশ্ন আছে। জোবায়েদকে হত্যার আগে তার ছাত্রী বর্ষা তাকে কল দিয়ে জিজ্ঞাসা করে, সে কখন আসতেছে, কতটুকু এসেছে এবং তার আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়, পরে তার লোকেশন চেক করে। বিষয়টা স্বীকারোক্তি দিয়েছিল ছাত্রী বর্ষা। সেটি এজাহারের প্রথম সূত্র হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটি কেন বাদ দেওয়া হলো? সেটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, নাকি পরে বাদ দেওয়া হয়েছে, সেটা আমাদের প্রথম প্রশ্ন।’

ডিএমপির বক্তব্য অনুযায়ী, মাহিরকে বর্ষা বলেছিলেন, জোবায়েদকে না সরালে তিনি ‘মাহিরের হতে পারবেন না’। এরপর এক মাস আগে জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

পুলিশের দেওয়া ঘটনার বর্ণনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক রইছ উদ্‌দীন। তিনি বলেন, ‘জোবায়েদকে আক্রোশে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি, আক্রোশে হত্যা করলে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয়। কিন্তু পুলিশ বলল, এক আঘাতেই হত্যা করা হয়েছে জোবায়েদকে। এটা তো পেশাদার হত্যাকারী ছাড়া কেউ করতে পারার কথা নয়। তাহলে আমাদের প্রশ্ন পেশাদার হত্যাকারী দিয়ে হত্যা করিয়ে অন্যদের ফাঁসানো হয়েছে কি? এ ছাড়া মাহিরের উচ্চতা ও জোবায়েদের উচ্চতায় অনেক তফাত। জোবায়েদ মাহিরের থেকে অনেক লম্বা, সে (মাহির) তার (জোবায়েদ) গলা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারার কথা নয়। সে জায়গা থেকে হত্যা করা সম্ভব কি?’

তিনি আরও বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দুজন ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে। একজন কালো টি-শার্ট পরিহিত, আরেকজন লাল টি-শার্ট পরিধান করা ছিল। এই দুজনই কি গ্রেপ্তার হওয়া দুজন কি না, আমরা কীভাবে নিশ্চিত হব? সংশ্লিষ্ট প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রমাণ জব্দ করেছে কি না, সেটা আমরা জানতে চাই।’

পুলিশের বিবরণের আরেকটি অংশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই অধ্যাপক বলেন, ‘অভিযুক্ত বার্জিস শাবনাম বর্ষার মা-বাবার জবানবন্দি নেওয়া প্রয়োজন ছিল, হত্যার সময় বাসায় তাঁরা উপস্থিত ছিলেন। যদি তাঁরা এ ঘটনায় সমর্থন দিয়ে থাকেন, তাঁদেরও তো এই মামলার আসামি হওয়ার কথা। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে জবানবন্দি নেওয়ার বিষয়েও পুলিশ স্পষ্ট কিছু জানায়নি।’

এদিকে জোবায়েদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সেখান থেকেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সমাবেশে পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবু সাইদ মো. রিপন রউফ বলেন, ‘গতকাল পুলিশের কর্মকর্তারা যেভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা যেভাবে হাসাহাসি করেছেন, তাতে মনে হয় না, তাঁরা একটি হত্যার বিবরণ দিচ্ছেন। তাঁরা কোনোভাবেই দায়িত্বশীল আচরণ করেননি।’

জোবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা, নিহত ২

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মিজানুর রহমান ও শিহাব আলী নামের দুই যুবক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন ইমন আলী নামের আরও এক যুবক।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের কেন্দুল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নিহত যুবকেরা হলেন সদর উপজেলার মাঝপাড়ার তাজেবুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান (২২) ও ধীনগর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে শিহাব আলী (২০)।

আহত যুবক হলেন আমনুরা কলোনির শফিকুল ইসলামের ছেলে ইমন আলী।

সুকোমল চন্দ্র দেবনাথ বলেন, আজ বেলা পৌনে ৩টার দিকে একই মোটরসাইকেলে তিন যুবক ঝিলিমবাজার থেকে গোদাগাড়ীর দিকে যাচ্ছিলেন। পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি একটি কালভার্টের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে গুরুতর আহত তিনজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মিজানুর। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিহাব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ড্রাইভিং লাইসেন্সে বিআরটিএর নিয়ন্ত্রণ থাকছে না: উপদেষ্টা ফাওজুল কবির

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় নতুন ৩ ব্যাটালিয়ন, দুই হাজার ২৫৮ পদ সৃষ্টি

সন্তান জন্মের ৪ মাস পর বিয়ের খবর দিলেন জেমস

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

কাপের অবশিষ্ট কফি ড্রেনে ঢেলে দেওয়ায় নারীকে ২৪ হাজার টাকা জরিমানা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত