Ajker Patrika

মরদেহ রাস্তায় এনে গ্রামবাসীর মানববন্ধন, আসামি গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি

আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২: ২৪
মরদেহ রাস্তায় এনে গ্রামবাসীর মানববন্ধন, আসামি গ্রেপ্তারের হুঁশিয়ারি

গাজীপুরের শ্রীপুরে রাতভর নির্যাতনের পর নিহত যুবক রানার মরদেহ রাস্তায় রেখে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী। মরদেহ দাফনের আগে রাস্তার দুপাশে প্রায় সহস্রাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়। এ সময় পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে যুবকের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত সকল আসামির মৃত্যুদণ্ডের দাবি করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচির দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। 

আজ রোববার রাত আটটার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা নয়নপুর সংযোগ সড়কের সরকার বাড়ি সংলগ্ন এক কিলোমিটার সড়কে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। 

নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত মো. রানা মিয়া (২২) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা গ্রামের মো. আমিরুল ইসলামের ছেলে। তিনি পেশায় নির্মাণ শ্রমিকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। 

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন—শিপন (২৭), আকাশ (২৫), উজ্বল (৪৫), শওকত (৩০), ইমন (৩০) ও মোশাররফ (৫০)। তারা প্রত্যেকেই একই এলাকার বাসিন্দা ও প্রতিবেশী। 

সরেজমিনে দেখা যায়, নিহতের মরদেহ বাড়ি থেকে কাঁধে নিয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করছে। পরে মরদেহ রাস্তায় রেখে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা। এ সময় বিভিন্ন বয়সী হাজারো নারী–পুরুষ, রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মী, পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা মানববন্ধনে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করেন। এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে এলাকাবাসী বলেন, হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। 

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম আলম বলেন, ‘রানাকে নির্দয়ভাবে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেছে। রানার গোপাঙ্গন দিয়ে লোহার তার ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ সময় রানার মুখে গামছা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।’ 

একই গ্রামের বাসিন্দা লোকমান হেকিম বলেন, ‘মানুষকে খুন করার অনেক ঘটনা জানি, শুনি কিন্তু রানাকে যেভাবে মারা হলো সেটা সত্যিই লোমহর্ষক। এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটার অনেক সময় পার হলেও এখনো কোনো আসামিকে ধরতে পারেনি পুলিশ। 

ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম রিপন বলেন, ‘আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সকল আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। প্রশাসনের কাছে এলাকাবাসীর জোর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করে।’ 

নিহত রানা মিয়ার বাবা আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলেকে ওঁরা নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। আমি খুনের বিচার না পেলে ছেলেকে দাফন করব না। সারা রাত আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছে ওরা। আমার ছেলের হাত, পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি।’ 

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহত যুবকের বাবা বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ্য করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করতে কাজ করছে পুলিশের একাধিক টিম। মরদেহ নিয়ে এলাকাবাসীর মানববন্ধনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ অবস্থায় মানববন্ধনের কারণে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে আরও কঠিন হবে।’ 

উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গুরুতর আহত যুবক রানাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতভর তাঁকে শারীরিক নির্যাতন চালায় অভিযুক্ত স্থানীয় যুবক শিপনসহ তার সঙ্গের লোকজন। এতে রানা গুরুতর আহত হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনের আগে এসআই-এএসআইদের ব্যক্তিগত তথ্য তালাশে পুলিশ

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প: ইউএনও-উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে শুনানি কাল

ইরানি নকশার ড্রোন হয়ে গেছে রাশিয়ার, ক্ষোভ বাড়ছে তেহরানে

ফ্লাইট এক্সপার্ট: গ্রামবাসীর কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়েছেন এমডি

আটজন উপদেষ্টার ‘সীমাহীন’ দুর্নীতির প্রমাণ আছে: সাবেক সচিব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত