Ajker Patrika

জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত তরুণী, প্রেমিক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২৪, ১৬: ৩৯
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত তরুণী, প্রেমিক গ্রেপ্তার

প্রেমিকের বন্ধুর বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ছুরিকাঘাতে এক তরুণী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের বোনের দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। বিয়ের দাবি করায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও নিহতের পরিবার। গত রোববার এ ঘটনাটি ঘটে ঢাকার সাভার পৌর এলাকার বাড্ডা মহল্লার একটি বাড়িতে।

নিহত তরুণী জারা আক্তার সেতু (২০) পাবনা জেলার ফরিদপুর উপজেলার খাগুরিয়া গ্রামের এরশাদ মিয়ার মেয়ে। তিনি বাড্ডা মহল্লার একটি বাসায় ভাড়া থেকে পারলারে কাজ করতেন। হত্যায় অভিযুক্ত যুবক সাইফুল ইসলাম আকাশ (২০) ওই এলাকারই হোসেন আলীর ছেলে। তিনি সাভারের একটি কলেজ থেকে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন।

পুলিশ বলছে, প্রায় ৭ মাস আগে আকাশের সঙ্গে জারার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্ক গভীর হলে জারা আকাশ বিয়ে করার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু আকাশের পরিবার তাতে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে আকাশ ও জারার মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। এরই মধ্যে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে জারা খুন হন। এ ঘটনায় জারার বড় বোন মিতু আক্তার গতকাল সোমবার রাতে আকাশের বিরুদ্ধে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, গত রোববার রাতে বাড্ডা মহল্লার জনৈক মাঈনুল ইসলামের বাসায় (পাঁচ তলা বাড়ির তিন তলার ফ্ল্যাট) তাঁর নাতি জাকারিয়া সরকারের (৪) জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। জারাকে নিয়ে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন আকাশ। তিনি মাঈনুল ইসলামের ছেলে আবু সাঈদের বন্ধু। অনুষ্ঠানে আবু সাঈদের মোসাব্বিরুল নামে আরও এক বন্ধু উপস্থিত ছিলেন।

অভিযুক্ত আকাশের বন্ধু আবু সাঈদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানের দিন (গত রোববার) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জারা, আকাশ ও মোসাব্বিরুলকে নিয়ে আমি এক সঙ্গে বসে খাবার খাই। এর কিছু সময় পরে গল্প করার জন্য আমরা একসঙ্গে ছাদে যাই। রাত পৌনে ১১টার দিকে আকাশ, জারা ও মোসাব্বিরুলকে ছাদে রেখে আমি বাসায় চলে আসি। এর কিছু সময় পরে রাত সোয়া ১১টার দিকে চিৎকার শুনতে শুনতে বাড়ির নিচে নেমে দেখি জারাকে কোলে নিয়ে মোসাব্বিরুল একটি রিকশার ওপর বসে আছে। জারার শরীর থেকে তখন রক্ত ঝরছিল। ও (জারা) শুধু চিৎকার করছিল। পাশেই বসা ছিল আকাশ।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোসাব্বিরুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবু সাঈদ নিচে নামার পর জারা ও আকাশ ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলে। আমি আরেক কোণে দাঁড়িয়ে মোবাইল টিপছিলাম। ছাদে তখন আলো ছিল না। একপর্যায়ে তাঁদের দুজনের মধ্যে উচ্চ স্বরে ঝগড়া শুরু হয়। বিষয়টি তাঁদের একান্ত ভেবে আমি তখনো মোবাইল নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। এরপর জারার চিৎকার শুনে আমি ওদের দিকে এগিয়ে যাই। তখন মোবাইলের আলোতে দেখি দুজনই ছাদে পড়ে আছে। তাঁদের মাথার কাছে একটা ছুড়ি। জারার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। তখন আমি জারাকে নিয়ে দ্রুত বাসার নিচে নামি। পরে আবু সাঈদ আসে।’

মোসাব্বিরুল বলেন, ‘আমি, আকাশ ও আবু সাঈদ প্রথমে জারাকে স্থানীয় সুপার মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখান থেকে আমাদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে জারাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। খবর পেয়ে ওমর ফারুক নামে আরেক বন্ধু এনামে এসে আমাদের সঙ্গে যোগ হয়। পরে আমরা চার বন্ধু মিলে জারাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হই। পথে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে যাওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জারাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

তিনি বলেন, ‘এরপর লাশ মর্গে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের চার বন্ধুকে আটক করে শেরে-বাংলা নগর থানায় সোপর্দ করেন। পরে বিষয়টি সাভার থানাকে জানালে গতকাল (সোমবার) সকালে পুলিশ আমাদের সাভার থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের পর আকাশকে আটকে রেখে আবু সাঈদ, ওমর ফারুক ও আমাকে রাতে ছেড়ে দেয়।’

মৃত্যুর আগে ছুরিকাঘাতের বিষয়ে জারা কিছু বলেছিলেন কি না, জানতে চাইলে মোসাব্বিরুল বলেন, ‘জারা শুধু বলেছে-আমার ব্যথা কমাইয়া দেন ভাই। এর বাইরে আর কিছুই বলেনি সে। আর ওই অবস্থায় আমিও কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারিনি।’

অভিযুক্ত আকাশের বিষয়ে মোসাব্বিরুল বলেন, ‘ঘটনার পর আকাশ আমাকে জানিয়েছিল-ছাদে যাওয়ার পর জারা বিয়ের জন্য তাঁকে চাপ দিতে দিচ্ছিল। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়ার একপর্যায়ে সে (আকাশ) জারার বুকে ও তলপেটে ছুরিকাঘাত করে। কিছু সময় পরই আকাশ আবার বলেছে-উত্তেজিত হয়ে সঙ্গে থাকা ছুড়ি দিয়ে জারা নিজেই তাঁর শরীরে ছুড়ি চালিয়েছে।’

তবে জারার বড় বোন মিতু আক্তার বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আকাশ আমার বোনকে আবু সাঈদদের বাসায় ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে।’

এ বিষয়ে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জুয়েল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় আকাশকে আটকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গতকালই নিহতের বোন মিতু হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আজ (মঙ্গলবার) আকাশকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাগরে মাছ শিকার: ৬টি ট্রলার জব্দসহ ১০৪ জন আটক

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আটক জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আটক জেলেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের অভিযোগে ছয়টি ফিশিং ট্রলার জব্দসহ ১০৪ জন জেলেকে আটক করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। গত সোমবার গভীর সাগর থেকে আটক জেলেদের গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে নৌবাহিনীর মোংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ মাছ আহরণের সময় টহলরত নৌবাহিনী গত সোমবার বিকেলে ছয়টি ফিশিং ট্রলার জব্দ করে। জব্দ ট্রলারগুলোতে ১০৪ জন জেলে ছিলেন। এই জেলেরা মূলত বরগুনা, পাথরঘাটা, পটুয়াখালী, রাঙ্গাবালী ও মহিরপুর এলাকার বাসিন্দা।

এ ছাড়া ট্রলারগুলোতে আনুমানিক ৫ টন মাছ পাওয়া গেছে, যার বেশির ভাগই ইলিশ। মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, উদ্ধার হওয়া এসব মাছ বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হবে। আটক জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হবে, তবে ট্রলারমালিকদের আর্থিক জরিমানা করা হবে।

উল্লেখ্য, মা ইলিশ রক্ষা ও প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে সাগর-নদীতে মাছ শিকার না করতে ২২ দিনের (৪ থেকে ২৫ অক্টোবর) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ায় এ জেলেদের নৌবাহিনী আটক করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা, ১ নভেম্বর অনশনের ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিদেশিদের হাতে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ইজারার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ১ নভেম্বর অনশনের ঘোষণা দিয়েছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ বুধবার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদ মোড়ে শ্রমিক সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ-মিছিল বন্দরের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে।

নগরীর আক্তারুজ্জামান সেন্টারের উত্তর গেটে বিশাল শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খোরশেদুল ইসলাম, বিএলএফের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক শিমুল, বিএফটিইউসির সভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক হুনি, বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতা ইব্রাহিম খোকন, ডকইয়ার্ড শ্রমিক দল নেতা তসলিম হোসেন সেলিম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, সঞ্চালনা করেন স্কপ নেতা জাহেদ উদ্দিন শাহিন।

সমাবেশে নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার এবং অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এখন দেশের সবচেয়ে সফল কনটেইনার টার্মিনাল। অথচ একে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী।

চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখী মিছিলে পুলিশের বাধা। ছবি: আজকের পত্রিকা

বক্তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে একতরফাভাবে নেওয়া এই সিদ্ধান্তকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

নেতারা আগামী ১ নভেম্বর দিনব্যাপী অনশনে শ্রমিক, কর্মচারী ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান, যাতে চট্টগ্রাম বন্দর ও এনসিটিকে দেশি-বিদেশি ইজারা ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করা যায়।

সমাবেশে সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত সব প্রকার সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্কপ নেতারা।

তাঁরা বলেন, পুলিশ দিয়ে কিংবা প্রশাসনিক বাধা সৃষ্টি করে কখনোই কোনো ন্যায্য আন্দোলন-সংগ্রামকে দমন করা যায়নি, এবারও তা সম্ভব হবে না। শ্রমিকেরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফরিদপুরে মাদ্রাসাছাত্রের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

‘আমার একটাই ছেলে। আমার মাসুম বাচ্চাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করল কারা! আমি আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ এভাবেই আহাজারি করছেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস। ছেলে আমির হামজার নিহতের খবর শুনে শোকে পাগলপ্রায় তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চর চান্দড়া গ্রামের একটি পুকুর থেকে আমির হামজার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশ।

সে চান্দড়া তা’লিমুল কোরআন মাদ্রাসা ও এতিমখানার জামাতখানা বিভাগের দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল। গত রোববার আসরের নামাজের পর থেকে ওই মাদ্রাসাশিক্ষার্থী নিখোঁজ ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার দিকে চর চান্দড়া গ্রামের মতিয়ার শেখের স্ত্রী বাড়ির পাশের পুকুরে হাঁস আনতে গিয়ে পানিতে ভাসমান একটি বস্তা দেখতে পান। বস্তা থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে আলফাডাঙ্গা থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাটি খুললে এক কিশোরের মরদেহ বেরিয়ে আসে। মরদেহটি অর্ধগলিত অবস্থায় ছিল এবং মুখে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ ডুবিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে বস্তার মধ্যে কিছু ইটও পাওয়া যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমির হামজার বাবা ছেলের লাশ শনাক্ত করেন।

পারিবারিক ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার বিকেলে আমির হামজা মাদ্রাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেনি। পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি। গত সোমবার সন্ধ্যায় আমির হামজার বাবা আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গত দুই দিন ধরে পরিবার ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিংও করেছিল।

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজালাল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বস্তাবন্দী মরদেহটি উদ্ধার করে রাতেই থানায় আনা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আজ সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও জানান, ঘটনা উদ্‌ঘাটন করতে পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করেছে এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় জরিমানা

ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় লাল চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

আ. সালামের বাড়ি ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড লাহেড়িপাড়া মহল্লায় পলাশতলী গ্রামে।

চিনিতে ভেজাল মেশানোর খবর পেয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় এক ড্রাম চিটাগুড় ও ভেজালমিশ্রিত ২ হাজার কেজি লাল চিনি জব্দ করা হয়।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, চিনিতে ভেজাল মেশানোয় ২ হাজার কেজি চিনি জব্দ এবং আ. সালাম নামের এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত