Ajker Patrika

সোহাগ হত্যার ঘটনায় ছয় দফা দাবিতে ব্যবসায়ীদের আলটিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৫, ২০: ১৪
আজ সোমবার দুপুরে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার ব্যবসা সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি জানানো হয়। ছবি: সংগৃহীত
আজ সোমবার দুপুরে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার ব্যবসা সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি জানানো হয়। ছবি: সংগৃহীত

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের পাশে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারসহ ছয় দফা দাবি জানিয়ে আলটিমেটাম দিয়েছে মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতি। আজ সোমবার দুপুরে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার ব্যবসা সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

ছয় দফা দাবি হচ্ছে, সোহাগ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে, ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সাত দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে, পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী এলাকাগুলোতে সেনাবাহিনীর টহল বাড়াতে হবে এবং সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজি ও মাদক নির্মূল করতে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। দাবিগুলো সাত দিনের মধ্যে কার্যকর না হলে দেশজুড়ে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ব্যবসায়ীরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দেশের অর্থনীতিতে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা বিশাল ভূমিকা পালন করলেও তাঁদের নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে। ফলে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, ৯ জুলাই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড হাসপাতালসংলগ্ন রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে পুরাতন মেটাল ভাঙারি ব্যবসায়ী মো. সোহাগকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার প্রতিবাদে তাঁদের এই সংবাদ সম্মেলন।

ব্যবসায়ীরা বলেন, পুরান ঢাকা সমগ্র বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রাণকেন্দ্র। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা এই পুরান ঢাকায় এসে ব্যবসায়িক লেনদেন করেন। পুরান ঢাকা থেকে সরকার সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদাই করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, বর্তমানে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীরা অরক্ষিত, একটি অনিরাপদ অবস্থায় বর্তমানে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনা করতে হচ্ছে।

গত ৫ আগস্টে পটপরিবর্তনের পর থেকে একটি শৃঙ্খলিত পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনা করা ব্যবসায়ীদের জন্য দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও রাহাজানির কারণে ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি হাজি এনায়েত উল্লাহ বলেন, প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যার ঘটনা জঙ্গলেও হয় না। পাশেই ছিল আনসার বাহিনী। অস্ত্র ছিল, তারপরও তারা কিছুই করেনি। ঘটনা দুদিন পর প্রকাশ হলো। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ না পেলে ব্যবসায়ী সোহাগকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হতো। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ মামলা নিলেও অনেকে বাদ পড়েছেন, অনেককে জড়ানো হয়েছে। কেন এমনটা হবে? তদন্তের আগে এমনটা হলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কীভাবে হবে?

তিনি বলেন, ‘আমরা রাজস্ব দেই, সরকার দেশ চালায়। আমাদের রাজস্ব রক্ষায় দেশ চলবে, আর সেখানে ব্যবসায়ীরা নিরাপদে থাকবে না, এটা হতে পারে না। আমরা আর চাঁদাবাজি প্রশ্রয় দেব না। বাঁশের লাঠি দোকানে রাখুন। আর চাঁদাবাজি নয়, সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি, থাকব।’

হাফেজ হারুন বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্কিত। আমরা ৫০০ লোক বসবাস করি, সেখানে পাঁচজনের কাছে কেন জিম্মি হব? আপনারা বাঁশের লাঠি রাখবেন। চাঁদাবাজের কোনো দল নেই, তাদের রুখে দিতে হবে। পাশাপাশি মৌলভীবাজার-চকবাজার এলাকায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপনের আহ্বান জানাই।’

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার ব্যবসা সমিতির সভাপতি হাজি বশির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা, বাংলাদেশ গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সভাপতি হাফেজ এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত