Ajker Patrika

‘খামারিদের পাশে নেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, ঘুষ ছাড়া মেলে না পশুর চিকিৎসা’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুন ২০২৪, ১৪: ৪৬
Thumbnail image

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক খামারিবান্ধব নন। তিনি খামারিদের কোনো সহযোগিতা করছেন না। তাঁর কার্যক্রমে বোঝাচ্ছেন, দেশের দুধ উৎপাদনে তাঁদের ডাক্তার ও মিল্ক প্রসেসিং কোম্পানিগুলোই সব কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। 

আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। কোরবানিতে চোরাই পথে গরু আসা বন্ধ, রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তা ও গুঁড়া দুধের শুল্ক বাড়ানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

বিডিএফএর সভাপতি মো. ইমরান হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি আলী আজম শিবলী, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ ইমরান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে এম নাজীব উল্লাহ, আলী আজম রহমান শিবলী, অর্থ সম্পাদক জাফর আহমেদ পাটোয়ারী প্রমুখ। 

জামাল হোসেন নামে এক প্রান্তিক খামারি বলেন, ‘আমি ডিজির সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিন দিন পরে দেখা করার জন্য সময় দেন। গরু অসুস্থ হলে ডাক্তারদের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।’ 

মোহাম্মদপুরের আদাবরের খামারি রাশিদা বেগুন জানান, তাঁর ২০টি গাভির মধ্যে ১৫টি মারা গেছে। গরু অসুস্থ হলে ডাক্তারকে ফোন দিলে ১০ হাজার টাকা চায়। এক দিন পরে খামারবাড়ি থেকে ডাক্তার গেছেন। 

রাশেদা বেগম বলেন, ‘গরু যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন ডাক্তারদের ফোন দিলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হবে বলে দাবি জানান। বাধ্য হয়ে ৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ডাক্তারের সামনেই দুটি গাভি মারা গেছে। কী রোগ হয়েছিল তা জানতে তাঁরা পরীক্ষার জন্য আলামত নিলেও এখনো রিপোর্ট দেননি। আমি এখন নিঃস্ব।’ 

এ সময় বিডিএফএর সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, আগে ডাক্তাররা মোটরসাইকেলযোগে আসতেন, তাঁদের ২০০-৩০০ টাকা দিলেই হতো। বর্তমানে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিতে হয়। এসব ঘুষ ছাড়া সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। 

গুঁড়া দুধের ওপর আমদানি শুল্ক বাড়ানোর দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বাংলাদেশের তথ্যানুযায়ী দেশে বছরে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন দুধের প্রয়োজন। তবে উৎপাদন হচ্ছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৬৮ হাজার টন। পুষ্টির চাহিদা দেশের দুগ্ধ খামারের মাধ্যমেই সম্ভব। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকলেও বেশ কিছু বাধার কারণে দুধের উৎপাদন বাড়ছে না। এসব বাধা দূর করলে দেশ দুগ্ধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। আমরা মনে করি দুধ উৎপাদনের প্রধান বাধা আমদানি করা দুধ। আমদানি করা গুঁড়ো দুধ আমাদের সাংঘাতিকভাবে ক্ষতি করছে। এসব দুধের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণের কাছাকাছি বস্তা আকারে বাল্ক ফিল্ড মিল্ক নামক গুঁড়া দুধ এনে নতুন মোড়কে বাজারজাত করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ঘটনা ঘটে। গুঁড়ো দুধ আমদানির মাধ্যমে দেশের দুগ্ধশিল্প একধরনের বাধার মুখে পড়েছে। 

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আঘাত হানা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে বড় ক্ষত তৈরি করেছে। বিশেষ করে কোরবানির হাটের উদ্দেশ্যে যাঁরা গবাদিপশু লালন করেছেন, তাঁরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। দুর্গত অনেক এলাকায় পশুর প্রয়োজনীয় খাবার নেই। অনাহারে কিংবা পচা খাদ্য খেয়ে অনেক পশু নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও পড়ছে। চারণভূমি ডুবে যাওয়ায় পাওয়া যাচ্ছে না সবুজ ঘাস। ১৯ জেলার ১০৭টি উপজেলায় গবাদিপশু ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হয়েছে। অন্তত ২৫ লাখ গবাদিপশু ঝড়ের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত