Ajker Patrika

অ্যাম্বুলেন্সে নারীর লাশ, ঘাতক স্বামীকে ধরিয়ে দিলেন চালক 

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪, ১৭: ৩৩
অ্যাম্বুলেন্সে নারীর লাশ, ঘাতক স্বামীকে ধরিয়ে দিলেন চালক 

মারধরে আহত স্ত্রীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আশুলিয়া থেকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন স্বামী। হাসপাতালে এসে জানতে পারেন স্ত্রী মারা গেছেন। তখন থেকেই পালিয়ে যাওয়ার জন্য সুযোগ খোঁজেন তিনি। অ্যাম্বুলেন্সের চালক ঘটনাটি বুঝতে পেরে কৌশলে পুনরায় তাঁদের নিয়ে আশুলিয়ায় রওনা দেন। পথে ৯৯৯-এ কল করে ওই ব্যক্তিকে (স্বামী) র‍্যাবের হাতে ধরিয়ে দেন চালক। আজ বুধবার তাঁকে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

আটক ব্যক্তির (স্বামী) নাম শহিদুল ইসলাম মীর (৩৬), তিনি আশুলিয়ার শিমুলতলা দরগারপাড় এলাকার মৃত নজরুল ইসলাম মীরের ছেলে। তাঁর স্ত্রী (নিহত) ফারজানা আক্তার মীম (৩৪) জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানার জহিরুল হকের মেয়ে।

র‍্যাব-৪ (সিপিসি-২)-এর কোম্পানি কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরের পর গুরুতর আহত হয়ে মারা যান মীম। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী শহিদুল হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।’

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় স্ত্রীকে (মীম) নিয়ে আশুলিয়ার ইউনিক এলাকার নোভা হাসপাতালে যান স্বামী শহিদুল ইসলাম। অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে করে স্ত্রীকে নিয়ে রওনা দেন স্বামী।

হাসপাতালে পৌঁছার পর চিকিৎসক রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলে আবার রাত ১০টার দিকে আশুলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। পরে আশুলিয়ায় পৌঁছালেই খবর পেয়ে উপস্থিত হয় র‍্যাব ও আশুলিয়া থানা-পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করে র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে তাঁদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় তিন-চার বছর পর যৌতুক নিয়ে দ্বন্দ্ব তাঁদের বিচ্ছেদও হয়েছিল। পরে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্তের পর আবার একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু যৌতুক নিয়ে দ্বন্দ্ব পিছু ছাড়েনি। এসব নিয়ে প্রায়ই তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয় এবং স্বামী প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতেন।

অ্যাম্বুলেন্সের চালক মেহেদী বলেন, ‘আমাকে হাসপাতাল থেকে রোগী দিয়েছিল; আমি সেই রোগী নিয়ে সোহরাওয়ার্দী যাই। পরে সেখানকার ডাক্তারদের কাছ থেকে জানতে পারি, রোগীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। পরে বুঝতে পারি স্বামীই তাকে মারধর করেছে। পরে কৌশলে তাকে আটকে ফেলি। সে আমার হাত-পা ধরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে। কিন্তু আমি তাকে আবার গাড়িতে তুলে আশুলিয়ায় নিয়ে এসে র‍্যাব-পুলিশকে খবর দিই।’

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আগামীকাল আসামিকে আশুলিয়া থানা থেকে আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত