গাজীপুর প্রতিনিধি

গত ঈদের (ঈদুল ফিতর) তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পরিস্থিতি পরিদর্শন এবং যাত্রীদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইজিপি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। গতবার ছিল মহাসড়কে শুধু যাত্রীসাধারণকে গন্তব্যে পার করা। এবার একদিকে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক, পশুবাহী নৌকা যাতায়াত করবে রাস্তাঘাট ও নদীতে। এর সঙ্গে ফলবাহী যানবাহন আসবে, এগুলোকে আটকানো যাবে না। সবকিছু বিবেচনায় রেখে, আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, সরকার এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ঈদযাত্রা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে সভা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, সড়কমন্ত্রীর দপ্তর, রেলপথ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং প্রতিটি জেলায় সকল স্টেকহোল্ডার, মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমরা সবাই একসঙ্গে, একযোগে কাজ করছি। আশা করছি এবারও সকলের সহযোগিতায় যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’
আইজিপি বলেন, ‘গতবারের ঈদের যাতায়াতব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুন্দর ছিল। ওই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। প্রকৌশলী ও রাস্তাঘাটের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, জেলায় জেলায় জেলা প্রশাসকেরা বৈঠক করেছেন। পুলিশের মহানগর, জেলা পুলিশ, পুলিশের সকল বিভাগ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে কাজ করছি। নির্ধারিত সময়ে সাধারণ মানুষ যেন গন্তব্যে যেতে পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রায় মানুষ গতবারের চেয়েও স্বস্তিতে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।’
পুলিশ মহাপরিদর্শক আরও বলেন, ‘আগে রাস্তাঘাট খানাখন্দ ছিল, দুরবস্থা ছিল। আগের চেয়ে রাস্তার অবস্থা অনেক ভালো হয়েছে। সরকার অনেক উন্নয়নকাজ করেছে। এখনো কার্যক্রম চলমান আছে। যার কারণে জনসাধারণ দ্রুততম সময়ে স্বাভাবিক সময়ের মতোই ঈদের সময় রাখার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় পর্যায়ের কর্মকর্তারা সব সময় নিয়োজিত থাকবেন।’
গরুর হাটের নিরাপত্তার বিষয়ে আইজিপি বলেন, ‘গরুর হাটগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে। গরুর হাটে টানাহেঁচড়া, চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। এবার যদি কেউ কোনো ট্রাক বা নৌকা তাদের গন্তব্যের আগে থামায়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলতে চাই, এই কাজগুলো করবেন না। যদি করেন, তাহলে আইনের যে প্রয়োগ করা দরকার, সেটাই করব। ব্যবসায়ী ও ইজারাদার, গরুর মালিক—আপনাদের কোনো সমস্যা হলে নিকটস্থ পুলিশের সহায়তা নেবেন। যদি কাছাকাছি কাউকে না পান, তাহলে ৯৯৯ ফোন দিন। আপনারা আমাদের সহায়তা দিন, আমরা আপনাদের নিশ্চয়তা দেব।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাল টাকার বিস্তার রোধ এবং অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘প্রতিটি মার্কেটে জাল টাকা শনাক্তকারী মেশিন আমাদের কাছে থাকবে। কারও সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। জাল টাকার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। টাকা পরিবহনে সমস্যা হলে সেখানেও পুলিশ সহায়তা করবে।’
এ সময় হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন, গাজীপুর পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম, অতিরিক্ত আইজিপি (হাইওয়ে) মো. শাহাবুদ্দিন খান, ডিআইজি (অপারেশন) হায়দার আলী খান, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব রহমান, পুলিশের হেডকোয়ার্টার্স এআইজি (মিডিয়া) মো. মঞ্জুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

গত ঈদের (ঈদুল ফিতর) তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পরিস্থিতি পরিদর্শন এবং যাত্রীদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইজিপি।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। গতবার ছিল মহাসড়কে শুধু যাত্রীসাধারণকে গন্তব্যে পার করা। এবার একদিকে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক, পশুবাহী নৌকা যাতায়াত করবে রাস্তাঘাট ও নদীতে। এর সঙ্গে ফলবাহী যানবাহন আসবে, এগুলোকে আটকানো যাবে না। সবকিছু বিবেচনায় রেখে, আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, সরকার এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘ঈদযাত্রা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে সভা হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, সড়কমন্ত্রীর দপ্তর, রেলপথ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এবং প্রতিটি জেলায় সকল স্টেকহোল্ডার, মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আমরা সবাই একসঙ্গে, একযোগে কাজ করছি। আশা করছি এবারও সকলের সহযোগিতায় যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’
আইজিপি বলেন, ‘গতবারের ঈদের যাতায়াতব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুন্দর ছিল। ওই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। প্রকৌশলী ও রাস্তাঘাটের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের সবার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, জেলায় জেলায় জেলা প্রশাসকেরা বৈঠক করেছেন। পুলিশের মহানগর, জেলা পুলিশ, পুলিশের সকল বিভাগ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা একযোগে কাজ করছি। নির্ধারিত সময়ে সাধারণ মানুষ যেন গন্তব্যে যেতে পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদযাত্রায় মানুষ গতবারের চেয়েও স্বস্তিতে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।’
পুলিশ মহাপরিদর্শক আরও বলেন, ‘আগে রাস্তাঘাট খানাখন্দ ছিল, দুরবস্থা ছিল। আগের চেয়ে রাস্তার অবস্থা অনেক ভালো হয়েছে। সরকার অনেক উন্নয়নকাজ করেছে। এখনো কার্যক্রম চলমান আছে। যার কারণে জনসাধারণ দ্রুততম সময়ে স্বাভাবিক সময়ের মতোই ঈদের সময় রাখার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বড় পর্যায়ের কর্মকর্তারা সব সময় নিয়োজিত থাকবেন।’
গরুর হাটের নিরাপত্তার বিষয়ে আইজিপি বলেন, ‘গরুর হাটগুলোতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে। গরুর হাটে টানাহেঁচড়া, চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠে। এবার যদি কেউ কোনো ট্রাক বা নৌকা তাদের গন্তব্যের আগে থামায়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলতে চাই, এই কাজগুলো করবেন না। যদি করেন, তাহলে আইনের যে প্রয়োগ করা দরকার, সেটাই করব। ব্যবসায়ী ও ইজারাদার, গরুর মালিক—আপনাদের কোনো সমস্যা হলে নিকটস্থ পুলিশের সহায়তা নেবেন। যদি কাছাকাছি কাউকে না পান, তাহলে ৯৯৯ ফোন দিন। আপনারা আমাদের সহায়তা দিন, আমরা আপনাদের নিশ্চয়তা দেব।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাল টাকার বিস্তার রোধ এবং অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘প্রতিটি মার্কেটে জাল টাকা শনাক্তকারী মেশিন আমাদের কাছে থাকবে। কারও সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। জাল টাকার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। টাকা পরিবহনে সমস্যা হলে সেখানেও পুলিশ সহায়তা করবে।’
এ সময় হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন, গাজীপুর পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম, অতিরিক্ত আইজিপি (হাইওয়ে) মো. শাহাবুদ্দিন খান, ডিআইজি (অপারেশন) হায়দার আলী খান, গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব রহমান, পুলিশের হেডকোয়ার্টার্স এআইজি (মিডিয়া) মো. মঞ্জুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২০২০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষা করে যে বিয়ারিং প্যাড মানহীন ঘোষণা করেছিল, মূলত সেই প্যাড ব্যবহার করেই রাজধানীতে চলছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন, উত্তরা থেকে
২ ঘণ্টা আগে
আমাদের নগর পরিবহনব্যবস্থার আধুনিকায়নের স্বপ্নযাত্রায় এক অশনিসংকেত বেজে উঠেছে। মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ‘বিয়ারিং প্যাড’-সম্পর্কিত দ্বিতীয় দুর্ঘটনা ঘটেছে গত রোববার। এবার প্রাণঘাতী পরিণতি নিয়ে। এই মৌলিক কাঠামোগত উপকরণটির এমন অকাল ব্যর্থতা প্রকল্পের নির্মাণকাজের গুণমান, পরবর্তী তদার
২ ঘণ্টা আগে
বরগুনার বামনা উপজেলায় ৬ বছর আগে শুরু হওয়া মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এ নিয়ে আশাহত স্থানীয় মুসল্লিরা। জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণে একের পর এক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সর্বশেষ, গত বছরের জানুয়ারি আবার মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সময় পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই পর্যন্ত সম্পন্ন হয়।
২ ঘণ্টা আগে
এবার আলু নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন চাষিরা। ১ কেজি আলু উৎপাদনের পর হিমাগারে মজুতে কৃষকের মোট খরচ পড়েছে ৩৫ টাকা। আর পাইকারি বাজারে স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজিতে। হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ টাকায়। এ অবস্থায় গড়ে ১ কেজিই কৃষকের প্রায় ২০ টাকা লোকসান হচ্ছে।
২ ঘণ্টা আগেতৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা

২০২০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষা করে যে বিয়ারিং প্যাড মানহীন ঘোষণা করেছিল, মূলত সেই প্যাড ব্যবহার করেই রাজধানীতে চলছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথেই থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাইয়ের সরবরাহ করা প্যাড বসানো হয়েছে।
গত রোববার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হওয়ায় প্যাডের ‘ত্রুটির’ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এক বছরের একটু বেশি আগেই কাছাকাছি আরেকটি পিলার থেকে প্যাড খুলে পড়েছিল। এ ধরনের ঘটনায় মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
মেট্রোরেলের বর্তমান লাইন-৬-এর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত (প্যাকেজ-৩ ও ৪) অংশের কাজ করেছে থাইল্যান্ডভিত্তিক ইতাল-থাই। আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার (প্যাকেজ-৫) অংশ করেছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম গ্রুপ এবং একটি জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল (প্যাকেজ-৬) অংশে কাজ করেছে ইতাল-থাই ও জাপানি ঠিকাদার এসএমসিসি।
আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার অংশের আগে ও পরে উভয় অংশের লাইনের কাজে যুক্ত ছিল ইতাল-থাই। অর্থাৎ দুই-দুইবার প্যাড পড়ে যাওয়া ফার্মগেট অংশের কাজে তারা সম্পৃক্ত ছিল না। তবে ডিএমটিসিএলের এমডির বক্তব্য অনুযায়ী, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো রুটেই ব্যবহৃত হয়েছে ইতাল-থাইয়ের সরবরাহ করা প্যাড।
ফারুক আহমেদ গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিএমটিসিএলের হাতে বর্তমানে এই ইতাল-থাইয়ের বিয়ারিং প্যাড ছাড়া অন্য প্যাড নেই। ক্ষতিগ্রস্ত পিলারেও গতকাল নতুন করে ইতাল-থাইয়ের প্যাডই বসানো হয়েছে। তবে আমরা যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্যাডটি বসিয়েছি। যেহেতু এই প্যাড নিয়ে কথা উঠেছে, আমরা ভবিষ্যতে অন্য কারও থেকে বিয়ারিং প্যাড নেব।’
ডিএমটিসিএলের তৎকালীন কর্মকর্তাদের অনেকে মেট্রোরেল প্রকল্প বা কোম্পানিতে কর্মরত নন। এমডি ছাড়া বর্তমান কর্মকর্তা বা মেট্রোরেল সম্পর্কে অবগত প্রকৌশলীদের কেউ অবশ্য রুটের ঠিক কোন অংশে কোন কোম্পানির প্যাড ব্যবহৃত হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে সব প্যাডই ভিয়েতনাম থেকে আনা হয়েছিল বলে কেউ কেউ জানিয়েছেন।
কংক্রিটের ঘর্ষণজনিত ক্ষতি ও কম্পন নিয়ন্ত্রণ করতে পিলার এবং তার ওপর থাকা ভায়াডাক্টের সংযোগে বসানো হয় রাবার ও ইস্পাতের মিশ্রণে তৈরি বিয়ারিং প্যাড।
ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, বিয়ারিং প্যাড প্রথমবার ব্যবহারের আগে বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে ২০২০ সালে এর মান পরীক্ষা করা হয়। সে পরীক্ষায় দেখা যায়, কয়েকটি প্যাডের স্থায়িত্ব, নমনীয়তা ও শক্তি নির্ধারিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়নি। এরপরও সেই প্যাড পুরো প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে।
সূত্র বলেছে, বুয়েটের পরীক্ষায় যখন প্যাডের নিম্নমানের অভিযোগ ওঠে, তত দিনে প্রায় ৮ কিলোমিটার উড়ালপথে প্যাড বসানো হয়ে গিয়েছিল। তারপর বাকি পথেও ইতাল-থাইয়ের প্যাডই বসানো হয়।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছিল, বুয়েটের ল্যাবের পরীক্ষায় উত্তরা-আগারগাঁও অংশের দুটি প্যাকেজের জন্য আমদানি করা বিয়ারিং প্যাডের মান যথাযথ নয় বলে দেখা যায়। খবরে বলা হয়, এসব বিয়ারিং প্যাড সরবরাহ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই।
প্যাডের কারিগরি মান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই উপকরণ মানহীন হলে তা গোটা অবকাঠামোকেই ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র বলছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার সে বছরের নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি উদ্বোধন করতে গিয়ে যথাযথভাবে নিরাপত্তা মূল্যায়ন না করেই মেট্রোরেল চালু করে। সে সময় কম্পন সহনশীলতাসহ প্যাডের মান পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হয়নি।
রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি কিংবা কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বিয়ারিং প্যাড পড়ে গেছে বলে মনে করছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান।
সাবেক সচিব এম এ এন সিদ্দিক প্রকল্পের শুরু থেকে একটা সময় পর্যন্ত ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আফতাব উদ্দিন তালুকদার লাইন-৬-এর প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। প্রকল্পের মান ও তদারকির দায়িত্ব তাঁদের হাতে থাকলেও দুজনই ‘নন-টেকনিক্যাল’ হওয়ায় ঠিকাদারি কাজের সম্ভাব্য ভুল কিংবা কারিগরি ত্রুটি শনাক্ত করতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রথম ঘটনার সুস্পষ্ট কারণ চিহ্নিত হয়নি
জানা গেছে, ২০২৪ সালে প্রথমবার প্যাড খুলে পড়ার পর গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে পাঁচ থেকে সাতটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করলেও সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয় করতে পারেনি। এমআরটি লাইন-৬-এর সাবেক পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রথম প্যাড খুলে পড়ার পর জাপানি বিশেষজ্ঞরা ড্রোন ব্যবহার করে খতিয়ে দেখেছিলেন; কিন্তু এর সুনির্দিষ্ট কারণ জানা সম্ভব হয়নি। একটি প্যাডের ওপর প্রায় ২০০ টনের কংক্রিটের তৈরি ভায়াডাক্টের চাপ থাকে বলে এটি পড়ে যাওয়া খুবই অস্বাভাবিক।
আগেরবারের সেই তদন্ত কমিটির সদস্য ডিএমটিসিএলের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আব্দুল বাকী মিয়া বলেন, ওই সময় বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছিল। কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল, এখন তা মনে নেই।
‘মেরামতের দায়িত্ব এখনো ঠিকাদারের’
প্যাডসহ সার্বিক বিষয়ে কী ভাবা হচ্ছে, জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, ‘দু-তিন বছর পরপর প্যাড বদলানোর নিয়ম আছে। আমরা দেড় মাস পরপর মনিটরিং করছি। শর্ত অনুযায়ী মেরামতের দায়িত্ব এখনো ঠিকাদারের হাতে। ঠিকাদার ও পরামর্শক কাজ ঠিকমতো করেছেন কি না, আমরা তা দেখছি। প্রাথমিকভাবে দেখেছি, রোববার পড়ে যাওয়া প্যাডের গ্লু (আঠা) ছিল না। তবে কেন পড়েছে, তা তদন্তের পর বলা যাবে।’
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, প্যাড বসানোর সময় ত্রুটি, উপকরণটির নিম্নমান, রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি এবং ট্রেন চলাচলের সময় অতিরিক্ত কম্পন বা চাপ—এমন কোনো কারণে প্যাড পড়ে গেছে।
পুরো রুটে তিন মাস পরপর ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ‘সমস্যা ডিজাইনে নয়। আমার মতে, এটি নির্মাণে ত্রুটি ও তদারকির ঘাটতির ফল। একই জায়গায় অল্প সময়ে দুবার এমন ঘটনা ঘটায় বোঝা যায়, ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে। তাই পুরো প্রকল্পের নিরাপত্তা নিরীক্ষা করা জরুরি, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো শনাক্ত ও ঠিক করা যায়।’
তদন্ত কমিটির প্রধান যা বললেন
রোববারের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান, মেট্রোর সাবেক এমডি ও সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গতকাল বলেন, ‘এখনই ঘটনার কারণ বলা যাচ্ছে না। আমরা কাজ শুরু করেছি। আগের তদন্ত প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করা হবে।’
মান যাচাই চেয়ে রিট
এদিকে মেট্রোরেল এবং সব ফ্লাইওভারের বিয়ারিং প্যাডের মান যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। রিটে এসব স্থাপনায় ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাডের গুণগত মান যাচাই করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
২৩ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক মেট্রোরেল
ভারী প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় মেট্রোরেলের বিঘ্নিত সেবা গতকাল বেলা ১১টা থেকে আবার স্বাভাবিকভাবে চালু হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পিলারের মাথায় নতুন করে প্যাড বসানোর পর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে দক্ষিণের শেষ গন্তব্য মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যুর পর রোববার নিরাপত্তার কারণে প্রথমে ৩ ঘণ্টা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয় মেট্রোরেল। পরে দুই দফায় ফার্মগেট বাদ দিয়ে উভয় দিকে আংশিকভাবে সেবা চালু করা হয়েছিল।

২০২০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষা করে যে বিয়ারিং প্যাড মানহীন ঘোষণা করেছিল, মূলত সেই প্যাড ব্যবহার করেই রাজধানীতে চলছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথেই থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাইয়ের সরবরাহ করা প্যাড বসানো হয়েছে।
গত রোববার ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড পড়ে এক পথচারীর মৃত্যু হওয়ায় প্যাডের ‘ত্রুটির’ বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এক বছরের একটু বেশি আগেই কাছাকাছি আরেকটি পিলার থেকে প্যাড খুলে পড়েছিল। এ ধরনের ঘটনায় মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ ও জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
মেট্রোরেলের বর্তমান লাইন-৬-এর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত (প্যাকেজ-৩ ও ৪) অংশের কাজ করেছে থাইল্যান্ডভিত্তিক ইতাল-থাই। আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার (প্যাকেজ-৫) অংশ করেছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম গ্রুপ এবং একটি জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর কারওয়ান বাজার থেকে মতিঝিল (প্যাকেজ-৬) অংশে কাজ করেছে ইতাল-থাই ও জাপানি ঠিকাদার এসএমসিসি।
আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার অংশের আগে ও পরে উভয় অংশের লাইনের কাজে যুক্ত ছিল ইতাল-থাই। অর্থাৎ দুই-দুইবার প্যাড পড়ে যাওয়া ফার্মগেট অংশের কাজে তারা সম্পৃক্ত ছিল না। তবে ডিএমটিসিএলের এমডির বক্তব্য অনুযায়ী, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো রুটেই ব্যবহৃত হয়েছে ইতাল-থাইয়ের সরবরাহ করা প্যাড।
ফারুক আহমেদ গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিএমটিসিএলের হাতে বর্তমানে এই ইতাল-থাইয়ের বিয়ারিং প্যাড ছাড়া অন্য প্যাড নেই। ক্ষতিগ্রস্ত পিলারেও গতকাল নতুন করে ইতাল-থাইয়ের প্যাডই বসানো হয়েছে। তবে আমরা যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্যাডটি বসিয়েছি। যেহেতু এই প্যাড নিয়ে কথা উঠেছে, আমরা ভবিষ্যতে অন্য কারও থেকে বিয়ারিং প্যাড নেব।’
ডিএমটিসিএলের তৎকালীন কর্মকর্তাদের অনেকে মেট্রোরেল প্রকল্প বা কোম্পানিতে কর্মরত নন। এমডি ছাড়া বর্তমান কর্মকর্তা বা মেট্রোরেল সম্পর্কে অবগত প্রকৌশলীদের কেউ অবশ্য রুটের ঠিক কোন অংশে কোন কোম্পানির প্যাড ব্যবহৃত হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে সব প্যাডই ভিয়েতনাম থেকে আনা হয়েছিল বলে কেউ কেউ জানিয়েছেন।
কংক্রিটের ঘর্ষণজনিত ক্ষতি ও কম্পন নিয়ন্ত্রণ করতে পিলার এবং তার ওপর থাকা ভায়াডাক্টের সংযোগে বসানো হয় রাবার ও ইস্পাতের মিশ্রণে তৈরি বিয়ারিং প্যাড।
ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, বিয়ারিং প্যাড প্রথমবার ব্যবহারের আগে বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগে ২০২০ সালে এর মান পরীক্ষা করা হয়। সে পরীক্ষায় দেখা যায়, কয়েকটি প্যাডের স্থায়িত্ব, নমনীয়তা ও শক্তি নির্ধারিত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়নি। এরপরও সেই প্যাড পুরো প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে।
সূত্র বলেছে, বুয়েটের পরীক্ষায় যখন প্যাডের নিম্নমানের অভিযোগ ওঠে, তত দিনে প্রায় ৮ কিলোমিটার উড়ালপথে প্যাড বসানো হয়ে গিয়েছিল। তারপর বাকি পথেও ইতাল-থাইয়ের প্যাডই বসানো হয়।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছিল, বুয়েটের ল্যাবের পরীক্ষায় উত্তরা-আগারগাঁও অংশের দুটি প্যাকেজের জন্য আমদানি করা বিয়ারিং প্যাডের মান যথাযথ নয় বলে দেখা যায়। খবরে বলা হয়, এসব বিয়ারিং প্যাড সরবরাহ করেছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই।
প্যাডের কারিগরি মান বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারার বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই উপকরণ মানহীন হলে তা গোটা অবকাঠামোকেই ঝুঁকির মুখে ফেলবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র বলছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার সে বছরের নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি উদ্বোধন করতে গিয়ে যথাযথভাবে নিরাপত্তা মূল্যায়ন না করেই মেট্রোরেল চালু করে। সে সময় কম্পন সহনশীলতাসহ প্যাডের মান পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হয়নি।
রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি কিংবা কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বিয়ারিং প্যাড পড়ে গেছে বলে মনে করছেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান।
সাবেক সচিব এম এ এন সিদ্দিক প্রকল্পের শুরু থেকে একটা সময় পর্যন্ত ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আফতাব উদ্দিন তালুকদার লাইন-৬-এর প্রকল্প পরিচালক ছিলেন। প্রকল্পের মান ও তদারকির দায়িত্ব তাঁদের হাতে থাকলেও দুজনই ‘নন-টেকনিক্যাল’ হওয়ায় ঠিকাদারি কাজের সম্ভাব্য ভুল কিংবা কারিগরি ত্রুটি শনাক্ত করতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
প্রথম ঘটনার সুস্পষ্ট কারণ চিহ্নিত হয়নি
জানা গেছে, ২০২৪ সালে প্রথমবার প্যাড খুলে পড়ার পর গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে পাঁচ থেকে সাতটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করলেও সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয় করতে পারেনি। এমআরটি লাইন-৬-এর সাবেক পদস্থ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রথম প্যাড খুলে পড়ার পর জাপানি বিশেষজ্ঞরা ড্রোন ব্যবহার করে খতিয়ে দেখেছিলেন; কিন্তু এর সুনির্দিষ্ট কারণ জানা সম্ভব হয়নি। একটি প্যাডের ওপর প্রায় ২০০ টনের কংক্রিটের তৈরি ভায়াডাক্টের চাপ থাকে বলে এটি পড়ে যাওয়া খুবই অস্বাভাবিক।
আগেরবারের সেই তদন্ত কমিটির সদস্য ডিএমটিসিএলের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আব্দুল বাকী মিয়া বলেন, ওই সময় বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছিল। কী কী সুপারিশ করা হয়েছিল, এখন তা মনে নেই।
‘মেরামতের দায়িত্ব এখনো ঠিকাদারের’
প্যাডসহ সার্বিক বিষয়ে কী ভাবা হচ্ছে, জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, ‘দু-তিন বছর পরপর প্যাড বদলানোর নিয়ম আছে। আমরা দেড় মাস পরপর মনিটরিং করছি। শর্ত অনুযায়ী মেরামতের দায়িত্ব এখনো ঠিকাদারের হাতে। ঠিকাদার ও পরামর্শক কাজ ঠিকমতো করেছেন কি না, আমরা তা দেখছি। প্রাথমিকভাবে দেখেছি, রোববার পড়ে যাওয়া প্যাডের গ্লু (আঠা) ছিল না। তবে কেন পড়েছে, তা তদন্তের পর বলা যাবে।’
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, প্যাড বসানোর সময় ত্রুটি, উপকরণটির নিম্নমান, রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি এবং ট্রেন চলাচলের সময় অতিরিক্ত কম্পন বা চাপ—এমন কোনো কারণে প্যাড পড়ে গেছে।
পুরো রুটে তিন মাস পরপর ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ‘সমস্যা ডিজাইনে নয়। আমার মতে, এটি নির্মাণে ত্রুটি ও তদারকির ঘাটতির ফল। একই জায়গায় অল্প সময়ে দুবার এমন ঘটনা ঘটায় বোঝা যায়, ঝুঁকি এখনো রয়ে গেছে। তাই পুরো প্রকল্পের নিরাপত্তা নিরীক্ষা করা জরুরি, যাতে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো শনাক্ত ও ঠিক করা যায়।’
তদন্ত কমিটির প্রধান যা বললেন
রোববারের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান, মেট্রোর সাবেক এমডি ও সেতু বিভাগের সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গতকাল বলেন, ‘এখনই ঘটনার কারণ বলা যাচ্ছে না। আমরা কাজ শুরু করেছি। আগের তদন্ত প্রতিবেদনও পর্যালোচনা করা হবে।’
মান যাচাই চেয়ে রিট
এদিকে মেট্রোরেল এবং সব ফ্লাইওভারের বিয়ারিং প্যাডের মান যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন। রিটে এসব স্থাপনায় ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাডের গুণগত মান যাচাই করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
২৩ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক মেট্রোরেল
ভারী প্যাড খুলে পড়ে পথচারীর মৃত্যুর ঘটনায় মেট্রোরেলের বিঘ্নিত সেবা গতকাল বেলা ১১টা থেকে আবার স্বাভাবিকভাবে চালু হয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট পিলারের মাথায় নতুন করে প্যাড বসানোর পর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে দক্ষিণের শেষ গন্তব্য মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যুর পর রোববার নিরাপত্তার কারণে প্রথমে ৩ ঘণ্টা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয় মেট্রোরেল। পরে দুই দফায় ফার্মগেট বাদ দিয়ে উভয় দিকে আংশিকভাবে সেবা চালু করা হয়েছিল।

গতবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। গতবার ছিল মহাসড়কে শুধু যাত্রীসাধারণকে গন্তব্যে পার করা। এবার একদিকে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক, পশুবাহী নৌকা যাতায়াত করবে রাস্তাঘাট ও নদীতে...
২৪ জুন ২০২৩
আমাদের নগর পরিবহনব্যবস্থার আধুনিকায়নের স্বপ্নযাত্রায় এক অশনিসংকেত বেজে উঠেছে। মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ‘বিয়ারিং প্যাড’-সম্পর্কিত দ্বিতীয় দুর্ঘটনা ঘটেছে গত রোববার। এবার প্রাণঘাতী পরিণতি নিয়ে। এই মৌলিক কাঠামোগত উপকরণটির এমন অকাল ব্যর্থতা প্রকল্পের নির্মাণকাজের গুণমান, পরবর্তী তদার
২ ঘণ্টা আগে
বরগুনার বামনা উপজেলায় ৬ বছর আগে শুরু হওয়া মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এ নিয়ে আশাহত স্থানীয় মুসল্লিরা। জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণে একের পর এক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সর্বশেষ, গত বছরের জানুয়ারি আবার মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সময় পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই পর্যন্ত সম্পন্ন হয়।
২ ঘণ্টা আগে
এবার আলু নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন চাষিরা। ১ কেজি আলু উৎপাদনের পর হিমাগারে মজুতে কৃষকের মোট খরচ পড়েছে ৩৫ টাকা। আর পাইকারি বাজারে স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজিতে। হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ টাকায়। এ অবস্থায় গড়ে ১ কেজিই কৃষকের প্রায় ২০ টাকা লোকসান হচ্ছে।
২ ঘণ্টা আগেমো. সামছুল হক, অধ্যাপক, বুয়েট

আমাদের নগর পরিবহনব্যবস্থার আধুনিকায়নের স্বপ্নযাত্রায় এক অশনিসংকেত বেজে উঠেছে। মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ‘বিয়ারিং প্যাড’-সম্পর্কিত দ্বিতীয় দুর্ঘটনা ঘটেছে গত রোববার। এবার প্রাণঘাতী পরিণতি নিয়ে। এই মৌলিক কাঠামোগত উপকরণটির এমন অকাল ব্যর্থতা প্রকল্পের নির্মাণকাজের গুণমান, পরবর্তী তদারকি এবং দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
ডিসেম্বর, ২০২২ থেকে দুই ধাপে চালু হওয়া এমআরটি লাইনটি এখনো আড়াই বছর পূর্ণ করেনি। তাই ২০-৩০ বছরের নকশাগত আয়ুষ্কালের একটি বিয়ারিং প্যাডের এমন বিপর্যয় জিনিসটি পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে ঘটেনি; বরং এটি এক গভীরতর ও মৌলিক ত্রুটির ইঙ্গিত বহন করে।
বিয়ারিং প্যাড হলো ভূমি থেকে কিছু ওপর দিয়ে চলা যে কোনো রেল বা সড়ক অবকাঠামোর (ভায়াডাক্ট) অত্যাবশ্যক অংশ। ইলাস্টোমেরিক রাবার ও স্টিলের সংমিশ্রণে তৈরি এ প্যাডগুলো কংক্রিট ডেক (যার ওপর দিয়ে ট্রেন চলে) ও পিয়ারের (পিলার বা খুঁটি) মাঝখানে বসানো থাকে। এর মূল কাজ হলো ট্রেনের ওজন সমানভাবে বণ্টন করা, কম্পন শোষণ করা এবং তাপমাত্রা বা চলাচলের কারণে সৃষ্ট ক্ষুদ্র গতিবিধি সামলানো।
কঠিন হয়ে যাওয়া বা সরে যাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে এ প্যাড কাজ করতে ব্যর্থ হলে ট্রেনের লোড বণ্টনে ভারসাম্য নষ্ট হয়। ডেকে অসংগতির সৃষ্টি হয় এবং পিয়ারের কাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে।
প্যাড পড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো
রোববারের ঘটনা ইঙ্গিত করে, খুলে পড়া বিয়ারিং প্যাডটি আর পিয়ার ও ডেকের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা অবস্থায় ছিল না। যেহেতু মেট্রো লাইনটি মাত্র দুই বছরের কিছু বেশি সময় আগে চালু করা হয়েছিল, তাই অকাল ক্ষয় বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবজনিত মানের অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ ঘটনার সম্ভাব্য কারণগুলো হলো:
নকশাগত ত্রুটি বা স্থাপনজনিত ভুল: সবচেয়ে সম্ভাব্য কারণ এটিই। পিয়ার পৃষ্ঠের ভুল লেভেলিং, অসম প্যাড পুরুত্ব, তা সঠিকভাবে স্থাপন না করা বা পর্যাপ্ত পার্শ্ব-নিয়ন্ত্রণের অভাবের ফলে বিয়ারিং শুরু থেকেই সঠিকভাবে কাজ করেনি।
নির্মাণপর্যায়ে তদারকির অভাব: এমআরটি লাইন-৬-এর নির্মাণকাজ চলার সময় অভিজ্ঞ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের ঘাটতি ছিল স্পষ্ট। প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিট (PIU) ছিল দুর্বল, যা সড়ক ও রেলওয়ে বিভাগের কয়েকজন প্রেষণে নিযুক্ত প্রকৌশলীর ওপর নির্ভরশীল ছিল। তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নতুন প্রযুক্তিগত জনবল নিয়োগে অনাগ্রহ দেখিয়ে পরামর্শকদের ওপর নির্ভর করেছিলেন, যাঁদের বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণে কঠোর সাইট তদারকি ব্যাহত হয়ে থাকতে পারে। এমনটি দেশের বহু প্রকল্পেই দেখা যায়।
মধ্যপ্রাচ্য ও সিঙ্গাপুরে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং কঠোর নিরাপত্তা মানদণ্ডে অভ্যস্ত নির্মাণকাজে যুক্ত শ্রমিকেরা অনেকে তদারকির অভাব ও নিরাপত্তা প্রটোকল লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। কেউ কেউ যথাযথ তদারকি ছাড়াই কাজ চলছিল বলে সরাসরি অভিযোগও জানিয়েছিলেন।
তাড়াহুড়ো করে নির্মাণ: তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরামর্শকদের ২০২২ সালের সুপারিশ উপেক্ষা করে ২০১৯ সালের মধ্যেই মেট্রোরেল উদ্বোধনের জোর দাবি জানান। নির্বাচনী তাড়নার কারণে তৈরি করা এই অবাস্তব সময়সূচির ফলে মাঠপর্যায়ে কাজ দ্রুত শেষ করতে গিয়ে সাইট তদারকি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। এর সঙ্গে নিজস্ব প্রযুক্তিগত জনবলের অভাব ও পরামর্শক তদারকির দুর্বলতা যুক্ত হয়ে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। ফলে মেট্রোর ট্রানজিট-ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (TOD) এবং নন-অপারেশনাল রাজস্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনাও উপেক্ষিত হয়, প্রথম ও শেষ মাইল সংযোগব্যবস্থা অবহেলিত থাকে এবং জনসাধারণের ব্যবহারের আগে আবশ্যিক নিরাপত্তা মূল্যায়নও অনিষ্পন্ন থেকে যায়।
নিরাপত্তাব্যবস্থা ও সুপারিশ
এক বছর পেরোতে না পেরোতেই দ্বিতীয় এমন ঘটনা প্রমাণ করে, প্রথম দুর্ঘটনার মূল কারণ সঠিকভাবে শনাক্ত বা সমাধান করা হয়নি। এটি বর্তমান নিরাপত্তা নিরীক্ষা ও দায়বদ্ধতা ব্যবস্থার মারাত্মক দুর্বলতা প্রকাশ করে।
উল্লেখ করা দরকার, বর্তমানে রাজধানীর মেট্রোরেল এখনো পূর্ণ সক্ষমতায় পরিচালিত হচ্ছে না। ভায়াডাক্টের ওপর দিয়ে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ব্যবধানে ও কম কামরা নিয়ে চলছে ট্রেন। তবে সেবার মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গতিশীল লোড ও কম্পনও বাড়বে, যা এ দুর্বল উপাদানগুলোর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।
দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে যা করা প্রয়োজন
স্বাধীন বিশেষজ্ঞের নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা নিরীক্ষা: ঘটনার প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন, দক্ষ ও প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম সংস্থার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালানো জরুরি। এটি কোনো অভ্যন্তরীণ তদন্ত হওয়া উচিত নয়।
তাৎক্ষণিক কাঠামোগত ব্যবস্থা: ভায়াডাক্টের সব গুরুত্বপূর্ণ অংশে বাড়তি পার্শ্ব-নিয়ন্ত্রণ, যেমন শিয়ার কি বা গাইডবার সংযোজন করে প্যাডের স্থানচ্যুতি রোধ করতে হবে।
প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট গঠন: ডিএমটিসিএলের অভ্যন্তরে একটি শক্তিশালী, প্রকৌশলী-নেতৃত্বাধীন রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট গঠন করতে হবে। এটি প্রতি ৬ মাসে সরেজমিন পরিদর্শন ও প্রতি এক বছরে লোড টেস্ট পরিচালনা করবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করতে পারবে।
ডিএমটিসিএলের কাঠামোগত সংস্কার: বহু বিলিয়ন টাকার মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী সংস্থাটিকে জ্ঞানভিত্তিক ও সেবাকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে হবে। এটি প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ পেশাদার কর্মীদের হাতে পরিচালিত হতে হবে। বর্তমানের প্রেষণে পাঠানো বা অবসরপ্রাপ্ত সাধারণ আমলাদের প্রাধান্য প্রকল্পের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের জন্য বড় ঝুঁকি।
সবশেষে বলব, দুর্ঘটনার মূল কারণ শনাক্ত করে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত না করা হলে ভবিষ্যতে এ রকম আরও প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটতে পারে। মেট্রোরেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে একাধিক দুর্ঘটনা শুধু এর ব্যবহারকারী নয়; বরং প্রতিদিন নিচের সড়কে চলাচলকারী হাজারো নাগরিকের মধ্যেও ভয়ের সঞ্চার করেছে।
ডিএমটিসিএলকে একটি প্রযুক্তিভিত্তিক, দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করছে রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা। দুটি অবোধ শিশুকে এতিম করা এবারের মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি হোক সে পরিবর্তনের সূচনা।

আমাদের নগর পরিবহনব্যবস্থার আধুনিকায়নের স্বপ্নযাত্রায় এক অশনিসংকেত বেজে উঠেছে। মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ‘বিয়ারিং প্যাড’-সম্পর্কিত দ্বিতীয় দুর্ঘটনা ঘটেছে গত রোববার। এবার প্রাণঘাতী পরিণতি নিয়ে। এই মৌলিক কাঠামোগত উপকরণটির এমন অকাল ব্যর্থতা প্রকল্পের নির্মাণকাজের গুণমান, পরবর্তী তদারকি এবং দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
ডিসেম্বর, ২০২২ থেকে দুই ধাপে চালু হওয়া এমআরটি লাইনটি এখনো আড়াই বছর পূর্ণ করেনি। তাই ২০-৩০ বছরের নকশাগত আয়ুষ্কালের একটি বিয়ারিং প্যাডের এমন বিপর্যয় জিনিসটি পুরোনো হয়ে যাওয়ার কারণে ঘটেনি; বরং এটি এক গভীরতর ও মৌলিক ত্রুটির ইঙ্গিত বহন করে।
বিয়ারিং প্যাড হলো ভূমি থেকে কিছু ওপর দিয়ে চলা যে কোনো রেল বা সড়ক অবকাঠামোর (ভায়াডাক্ট) অত্যাবশ্যক অংশ। ইলাস্টোমেরিক রাবার ও স্টিলের সংমিশ্রণে তৈরি এ প্যাডগুলো কংক্রিট ডেক (যার ওপর দিয়ে ট্রেন চলে) ও পিয়ারের (পিলার বা খুঁটি) মাঝখানে বসানো থাকে। এর মূল কাজ হলো ট্রেনের ওজন সমানভাবে বণ্টন করা, কম্পন শোষণ করা এবং তাপমাত্রা বা চলাচলের কারণে সৃষ্ট ক্ষুদ্র গতিবিধি সামলানো।
কঠিন হয়ে যাওয়া বা সরে যাওয়ার মতো বিভিন্ন কারণে এ প্যাড কাজ করতে ব্যর্থ হলে ট্রেনের লোড বণ্টনে ভারসাম্য নষ্ট হয়। ডেকে অসংগতির সৃষ্টি হয় এবং পিয়ারের কাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে।
প্যাড পড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো
রোববারের ঘটনা ইঙ্গিত করে, খুলে পড়া বিয়ারিং প্যাডটি আর পিয়ার ও ডেকের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা অবস্থায় ছিল না। যেহেতু মেট্রো লাইনটি মাত্র দুই বছরের কিছু বেশি সময় আগে চালু করা হয়েছিল, তাই অকাল ক্ষয় বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবজনিত মানের অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এ ঘটনার সম্ভাব্য কারণগুলো হলো:
নকশাগত ত্রুটি বা স্থাপনজনিত ভুল: সবচেয়ে সম্ভাব্য কারণ এটিই। পিয়ার পৃষ্ঠের ভুল লেভেলিং, অসম প্যাড পুরুত্ব, তা সঠিকভাবে স্থাপন না করা বা পর্যাপ্ত পার্শ্ব-নিয়ন্ত্রণের অভাবের ফলে বিয়ারিং শুরু থেকেই সঠিকভাবে কাজ করেনি।
নির্মাণপর্যায়ে তদারকির অভাব: এমআরটি লাইন-৬-এর নির্মাণকাজ চলার সময় অভিজ্ঞ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের ঘাটতি ছিল স্পষ্ট। প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিট (PIU) ছিল দুর্বল, যা সড়ক ও রেলওয়ে বিভাগের কয়েকজন প্রেষণে নিযুক্ত প্রকৌশলীর ওপর নির্ভরশীল ছিল। তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নতুন প্রযুক্তিগত জনবল নিয়োগে অনাগ্রহ দেখিয়ে পরামর্শকদের ওপর নির্ভর করেছিলেন, যাঁদের বাণিজ্যিক স্বার্থের কারণে কঠোর সাইট তদারকি ব্যাহত হয়ে থাকতে পারে। এমনটি দেশের বহু প্রকল্পেই দেখা যায়।
মধ্যপ্রাচ্য ও সিঙ্গাপুরে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এবং কঠোর নিরাপত্তা মানদণ্ডে অভ্যস্ত নির্মাণকাজে যুক্ত শ্রমিকেরা অনেকে তদারকির অভাব ও নিরাপত্তা প্রটোকল লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। কেউ কেউ যথাযথ তদারকি ছাড়াই কাজ চলছিল বলে সরাসরি অভিযোগও জানিয়েছিলেন।
তাড়াহুড়ো করে নির্মাণ: তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরামর্শকদের ২০২২ সালের সুপারিশ উপেক্ষা করে ২০১৯ সালের মধ্যেই মেট্রোরেল উদ্বোধনের জোর দাবি জানান। নির্বাচনী তাড়নার কারণে তৈরি করা এই অবাস্তব সময়সূচির ফলে মাঠপর্যায়ে কাজ দ্রুত শেষ করতে গিয়ে সাইট তদারকি মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। এর সঙ্গে নিজস্ব প্রযুক্তিগত জনবলের অভাব ও পরামর্শক তদারকির দুর্বলতা যুক্ত হয়ে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। ফলে মেট্রোর ট্রানজিট-ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (TOD) এবং নন-অপারেশনাল রাজস্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনাও উপেক্ষিত হয়, প্রথম ও শেষ মাইল সংযোগব্যবস্থা অবহেলিত থাকে এবং জনসাধারণের ব্যবহারের আগে আবশ্যিক নিরাপত্তা মূল্যায়নও অনিষ্পন্ন থেকে যায়।
নিরাপত্তাব্যবস্থা ও সুপারিশ
এক বছর পেরোতে না পেরোতেই দ্বিতীয় এমন ঘটনা প্রমাণ করে, প্রথম দুর্ঘটনার মূল কারণ সঠিকভাবে শনাক্ত বা সমাধান করা হয়নি। এটি বর্তমান নিরাপত্তা নিরীক্ষা ও দায়বদ্ধতা ব্যবস্থার মারাত্মক দুর্বলতা প্রকাশ করে।
উল্লেখ করা দরকার, বর্তমানে রাজধানীর মেট্রোরেল এখনো পূর্ণ সক্ষমতায় পরিচালিত হচ্ছে না। ভায়াডাক্টের ওপর দিয়ে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ ব্যবধানে ও কম কামরা নিয়ে চলছে ট্রেন। তবে সেবার মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গতিশীল লোড ও কম্পনও বাড়বে, যা এ দুর্বল উপাদানগুলোর ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।
দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অবিলম্বে যা করা প্রয়োজন
স্বাধীন বিশেষজ্ঞের নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা নিরীক্ষা: ঘটনার প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন, দক্ষ ও প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম সংস্থার মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালানো জরুরি। এটি কোনো অভ্যন্তরীণ তদন্ত হওয়া উচিত নয়।
তাৎক্ষণিক কাঠামোগত ব্যবস্থা: ভায়াডাক্টের সব গুরুত্বপূর্ণ অংশে বাড়তি পার্শ্ব-নিয়ন্ত্রণ, যেমন শিয়ার কি বা গাইডবার সংযোজন করে প্যাডের স্থানচ্যুতি রোধ করতে হবে।
প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট গঠন: ডিএমটিসিএলের অভ্যন্তরে একটি শক্তিশালী, প্রকৌশলী-নেতৃত্বাধীন রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিট গঠন করতে হবে। এটি প্রতি ৬ মাসে সরেজমিন পরিদর্শন ও প্রতি এক বছরে লোড টেস্ট পরিচালনা করবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করতে পারবে।
ডিএমটিসিএলের কাঠামোগত সংস্কার: বহু বিলিয়ন টাকার মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনাকারী সংস্থাটিকে জ্ঞানভিত্তিক ও সেবাকেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে হবে। এটি প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ পেশাদার কর্মীদের হাতে পরিচালিত হতে হবে। বর্তমানের প্রেষণে পাঠানো বা অবসরপ্রাপ্ত সাধারণ আমলাদের প্রাধান্য প্রকল্পের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের জন্য বড় ঝুঁকি।
সবশেষে বলব, দুর্ঘটনার মূল কারণ শনাক্ত করে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত না করা হলে ভবিষ্যতে এ রকম আরও প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটতে পারে। মেট্রোরেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে একাধিক দুর্ঘটনা শুধু এর ব্যবহারকারী নয়; বরং প্রতিদিন নিচের সড়কে চলাচলকারী হাজারো নাগরিকের মধ্যেও ভয়ের সঞ্চার করেছে।
ডিএমটিসিএলকে একটি প্রযুক্তিভিত্তিক, দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করছে রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা। দুটি অবোধ শিশুকে এতিম করা এবারের মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি হোক সে পরিবর্তনের সূচনা।

গতবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। গতবার ছিল মহাসড়কে শুধু যাত্রীসাধারণকে গন্তব্যে পার করা। এবার একদিকে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক, পশুবাহী নৌকা যাতায়াত করবে রাস্তাঘাট ও নদীতে...
২৪ জুন ২০২৩
২০২০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষা করে যে বিয়ারিং প্যাড মানহীন ঘোষণা করেছিল, মূলত সেই প্যাড ব্যবহার করেই রাজধানীতে চলছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন, উত্তরা থেকে
২ ঘণ্টা আগে
বরগুনার বামনা উপজেলায় ৬ বছর আগে শুরু হওয়া মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এ নিয়ে আশাহত স্থানীয় মুসল্লিরা। জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণে একের পর এক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সর্বশেষ, গত বছরের জানুয়ারি আবার মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সময় পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই পর্যন্ত সম্পন্ন হয়।
২ ঘণ্টা আগে
এবার আলু নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন চাষিরা। ১ কেজি আলু উৎপাদনের পর হিমাগারে মজুতে কৃষকের মোট খরচ পড়েছে ৩৫ টাকা। আর পাইকারি বাজারে স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজিতে। হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ টাকায়। এ অবস্থায় গড়ে ১ কেজিই কৃষকের প্রায় ২০ টাকা লোকসান হচ্ছে।
২ ঘণ্টা আগেবরগুনা প্রতিনিধি

বরগুনার বামনা উপজেলায় ৬ বছর আগে শুরু হওয়া মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এ নিয়ে আশাহত স্থানীয় মুসল্লিরা। জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণে একের পর এক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সর্বশেষ, গত বছরের জানুয়ারি আবার মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সময় পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই পর্যন্ত সম্পন্ন হয়। এরপর আবার থমকে যায় কাজ। এর মধ্যে ঠিকাদারও পরিবর্তন করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতিকেন্দ্র নির্মাণ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বামনা উপজেলায়ও মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়। ইসলামিক বই বিক্রি, ইমাম প্রশিক্ষণ, ইসলামি গবেষণা, হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন প্রভৃতি কার্যক্রম মডেল মসজিদ থেকে পরিচালিত হবে। বামনা উপজেলায় ১২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালে ৯০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করার জন্য তিন তলা মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুরুতে মঠবাড়িয়ার সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি উদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌসের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএসআই জেবি বামনা মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য নির্বাচিত হয়। সে সময় বামনা কোর্ট বিল্ডিং ভেঙে সেখানে মসজিদ নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করে উপজেলা প্রশাসন। পরবর্তী সময়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘদিন পর কোর্ট বিল্ডিংয়ে পাশে উপজেলা পরিষদের দুটি পরিত্যক্ত ডরমিটরি ও কর্মকর্তাদের দুটি বাস ভেঙে সেখানে ৪০ শতক জমিতে মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়। পরে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মসজিদের পাইলিং নির্মাণ শেষ না করেই কাজ বন্ধ করে চলে যায়। পরে গণপূর্ত অধিদপ্তর ১ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে মোট ১৩ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়। গত বছরের জানুয়ারি মাসে মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রিপন জমাদ্দার ওরফে রাঙ্গা রিপনের এমকেটি নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবার মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করে। সে সময় মসজিদটির পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হয়। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে জেলে যান বামনার মডেল মসজিদ নির্মাণের ঠিকাদার রিপন জমাদ্দার ওরফে রাঙ্গা রিপন। এরপর থেকেই ঝিমিয়ে পড়ে নির্মাণকাজ।
এ অবস্থায় বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের দাবিতে স্থানীয় মুসল্লিরা কয়েকবার জেলা প্রশাসক ও গণপূর্ত দপ্তরে লিখিত আবেদন এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বলেও জানা গেছে।
উপজেলার হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা কবির হাওলাদার আক্ষেপ করে বলেন, ‘যে উপজেলায়
যাই দেখি, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদের মিনার। মনের আনন্দে অনেক জায়গায় গিয়ে নামাজ আদায় করেছি। কত হতভাগা আমরা, ছয় বছর ধরে এখনো কাজ চলে অথচ মসজিদের আকৃতিই তৈরি হলো না।’ শুধু কবির হাওলাদারই নন,
বামনার মডেল মসজিদ নির্মাণের ধীরগতিতে আশাহত এখানকার সব ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
এ ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বামনা উপজেলার সভাপতি আবদুস সোবাহান খান বলেন, ‘আমাদের পাশের মঠবাড়িয়া, বেতাগী, কাঠালিয়া, পাথরঘাটার মুসল্লিরা
মডেল মসজিদে নামাজ আদায় করেন, আর আমরা নির্মাণকাজ দেখেই যাচ্ছি। দ্রুত মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানাই।’
বামনা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ রানা বলেন, ‘দেশের ৫৬০টি মডেল মসজিদ বিদেশি দাতা সংস্থার অনুদানে নির্মাণ করা হয়েছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের লোক দিয়ে এর কাজ করাচ্ছিল। দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ফেরদৌস ও রিপন দুর্নীতি করে এখন জেলে। আমরা চাই নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে দ্রুত এর কাজ সম্পন্ন করা হোক।’
এ বিষয়ে বামনার মডেল মসজিদ নির্মাণের বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সুজন মিয়া বলেন, ‘আমাদের এ প্রতিষ্ঠানের মালিক দুজন। তাঁদের মধ্যে একজন রাজনৈতিক মামলায় জেলে এবং অন্য জন কিছু দিন আগে মারা গেছেন। তাই অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মসজিদ নির্মাণকাজ কিছুটা মন্থর হয়ে পড়ে। মডেল মসজিদের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।’
এ বিষয়ে বরগুনা জেলার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোল্যা রবিউল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েকবার বামনা উপজেলার মডেল মসজিদের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক পরিলক্ষিত না হলে তাদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বরগুনার বামনা উপজেলায় ৬ বছর আগে শুরু হওয়া মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এ নিয়ে আশাহত স্থানীয় মুসল্লিরা। জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণে একের পর এক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সর্বশেষ, গত বছরের জানুয়ারি আবার মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সময় পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই পর্যন্ত সম্পন্ন হয়। এরপর আবার থমকে যায় কাজ। এর মধ্যে ঠিকাদারও পরিবর্তন করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতিকেন্দ্র নির্মাণ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বামনা উপজেলায়ও মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়। ইসলামিক বই বিক্রি, ইমাম প্রশিক্ষণ, ইসলামি গবেষণা, হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন প্রভৃতি কার্যক্রম মডেল মসজিদ থেকে পরিচালিত হবে। বামনা উপজেলায় ১২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালে ৯০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করার জন্য তিন তলা মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুরুতে মঠবাড়িয়ার সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি উদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌসের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএসআই জেবি বামনা মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য নির্বাচিত হয়। সে সময় বামনা কোর্ট বিল্ডিং ভেঙে সেখানে মসজিদ নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করে উপজেলা প্রশাসন। পরবর্তী সময়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আপত্তিতে সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘদিন পর কোর্ট বিল্ডিংয়ে পাশে উপজেলা পরিষদের দুটি পরিত্যক্ত ডরমিটরি ও কর্মকর্তাদের দুটি বাস ভেঙে সেখানে ৪০ শতক জমিতে মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়। পরে নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মসজিদের পাইলিং নির্মাণ শেষ না করেই কাজ বন্ধ করে চলে যায়। পরে গণপূর্ত অধিদপ্তর ১ কোটি টাকা নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে মোট ১৩ কোটি ১৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়। গত বছরের জানুয়ারি মাসে মঠবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রিপন জমাদ্দার ওরফে রাঙ্গা রিপনের এমকেটি নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবার মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু করে। সে সময় মসজিদটির পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হয়। ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে জেলে যান বামনার মডেল মসজিদ নির্মাণের ঠিকাদার রিপন জমাদ্দার ওরফে রাঙ্গা রিপন। এরপর থেকেই ঝিমিয়ে পড়ে নির্মাণকাজ।
এ অবস্থায় বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের দাবিতে স্থানীয় মুসল্লিরা কয়েকবার জেলা প্রশাসক ও গণপূর্ত দপ্তরে লিখিত আবেদন এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বলেও জানা গেছে।
উপজেলার হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা কবির হাওলাদার আক্ষেপ করে বলেন, ‘যে উপজেলায়
যাই দেখি, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদের মিনার। মনের আনন্দে অনেক জায়গায় গিয়ে নামাজ আদায় করেছি। কত হতভাগা আমরা, ছয় বছর ধরে এখনো কাজ চলে অথচ মসজিদের আকৃতিই তৈরি হলো না।’ শুধু কবির হাওলাদারই নন,
বামনার মডেল মসজিদ নির্মাণের ধীরগতিতে আশাহত এখানকার সব ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
এ ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বামনা উপজেলার সভাপতি আবদুস সোবাহান খান বলেন, ‘আমাদের পাশের মঠবাড়িয়া, বেতাগী, কাঠালিয়া, পাথরঘাটার মুসল্লিরা
মডেল মসজিদে নামাজ আদায় করেন, আর আমরা নির্মাণকাজ দেখেই যাচ্ছি। দ্রুত মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানাই।’
বামনা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ রানা বলেন, ‘দেশের ৫৬০টি মডেল মসজিদ বিদেশি দাতা সংস্থার অনুদানে নির্মাণ করা হয়েছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার তাদের লোক দিয়ে এর কাজ করাচ্ছিল। দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার ফেরদৌস ও রিপন দুর্নীতি করে এখন জেলে। আমরা চাই নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে দ্রুত এর কাজ সম্পন্ন করা হোক।’
এ বিষয়ে বামনার মডেল মসজিদ নির্মাণের বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সুজন মিয়া বলেন, ‘আমাদের এ প্রতিষ্ঠানের মালিক দুজন। তাঁদের মধ্যে একজন রাজনৈতিক মামলায় জেলে এবং অন্য জন কিছু দিন আগে মারা গেছেন। তাই অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মসজিদ নির্মাণকাজ কিছুটা মন্থর হয়ে পড়ে। মডেল মসজিদের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।’
এ বিষয়ে বরগুনা জেলার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোল্যা রবিউল ইসলাম বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েকবার বামনা উপজেলার মডেল মসজিদের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক পরিলক্ষিত না হলে তাদের বিরুদ্ধে দাপ্তরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

গতবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। গতবার ছিল মহাসড়কে শুধু যাত্রীসাধারণকে গন্তব্যে পার করা। এবার একদিকে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক, পশুবাহী নৌকা যাতায়াত করবে রাস্তাঘাট ও নদীতে...
২৪ জুন ২০২৩
২০২০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষা করে যে বিয়ারিং প্যাড মানহীন ঘোষণা করেছিল, মূলত সেই প্যাড ব্যবহার করেই রাজধানীতে চলছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন, উত্তরা থেকে
২ ঘণ্টা আগে
আমাদের নগর পরিবহনব্যবস্থার আধুনিকায়নের স্বপ্নযাত্রায় এক অশনিসংকেত বেজে উঠেছে। মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ‘বিয়ারিং প্যাড’-সম্পর্কিত দ্বিতীয় দুর্ঘটনা ঘটেছে গত রোববার। এবার প্রাণঘাতী পরিণতি নিয়ে। এই মৌলিক কাঠামোগত উপকরণটির এমন অকাল ব্যর্থতা প্রকল্পের নির্মাণকাজের গুণমান, পরবর্তী তদার
২ ঘণ্টা আগে
এবার আলু নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন চাষিরা। ১ কেজি আলু উৎপাদনের পর হিমাগারে মজুতে কৃষকের মোট খরচ পড়েছে ৩৫ টাকা। আর পাইকারি বাজারে স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজিতে। হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ টাকায়। এ অবস্থায় গড়ে ১ কেজিই কৃষকের প্রায় ২০ টাকা লোকসান হচ্ছে।
২ ঘণ্টা আগেরিমন রহমান, রাজশাহী

এবার আলু নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন চাষিরা। ১ কেজি আলু উৎপাদনের পর হিমাগারে মজুতে কৃষকের মোট খরচ পড়েছে ৩৫ টাকা। আর পাইকারি বাজারে স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজিতে। হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ টাকায়। এ অবস্থায় গড়ে ১ কেজিই কৃষকের প্রায় ২০ টাকা লোকসান হচ্ছে।
আলু ব্যবসায়ী, চাষি, কৃষি বিভাগ ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজার উঠছে না। গত বছরের অক্টোবরে যেখানে বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকায়, সেখানে এবার দাম ঠেকেছে তলানিতে। মৌসুমের শুরু থেকেই দাম পড়ে আছে। ফলে সব আলুচাষিরই লোকসান হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় আলুর বার্ষিক চাহিদা ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৫ টন। এ বছর ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৫১৭ টন, যা জেলার বার্ষিক চাহিদার ৯ গুণ বেশি। গত বছর ৩৪ হাজার ৯৫৫ হেক্টরে উৎপাদন হয়েছিল ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৪ টন। তবে সেবার কৃষকের লাভ হয়েছিল। ফলে এবার আরও ৩ হাজার ৫৪৫ হেক্টরে বেশি আলু চাষ করা হয়। গত বছরের তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে ৯১ হাজার ৬৯৩ টন।
রাজশাহীতে আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার রয়েছে ৩৯টি। এর মধ্যে ৩৭টি সচল। এসব হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৪ লাখ ৩৩ হাজার ২৫০ টন। তবে সংরক্ষণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪৯১ টন। এর মধ্যে খাবার আলু ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭৩২ টন। আর বীজ আলু ৭৩ হাজার ৭৫৯ টন। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ লাখ ২৯ হাজার ৩০৫ টন আলু হিমাগার থেকে বের হয়েছে। বাকি আছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৮৬ টন। এই আলু এখন কৃষকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করে থাকে। সবশেষ গত রোববার তাদের তথ্যে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হয়েছে ১২-১৩ টাকা কেজিতে। আর স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হয়েছে ১৫-১৮ টাকায়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর আলু বিক্রি হয়েছে ১৫-২০ টাকায়। আর চলতি ২৪ অক্টোবর বিক্রি হয় ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে। এ বছর আলুর দর অনেক কম।
আলুচাষিরা বলছেন, গত আগস্টে সরকার হিমাগার গেটে কমপক্ষে ২২ টাকা দামে ৫০ হাজার টন আলু কেনার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, কোথাও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই দরে আলু কেনেননি। ২২ টাকায় আলু বিক্রি করতে পারলেও কৃষকদের লোকসান অর্ধেকে নামত বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু এখন কেজিতেই লোকসান ২০ টাকা। কৃষককে লাভের মুখ দেখতে হলে আলু দাম ৪০ টাকার ওপরে ওঠাতে হবে। কিন্তু খুচরা বাজারেই এখন স্থানীয় লাল আলু ২০-২৫ ও হল্যান্ড ১৪-১৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব আলু অনেকেই গোখাদ্য হিসেবে বস্তাসহ কিনছেন।
জেলা আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আহাদ আলী আলুর দরপতনের জন্য বেশি উৎপাদন ও হিমাগারে পচে যাওয়াকে দায়ী করছেন। তাঁর মতে, পাইকারি বাজারে দাম কম হওয়ায় হিমাগার থেকে আলু তুলে বাজারে নেওয়ার খরচও উঠছে না। অনেকে আলু হিমাগার থেকে তুলতে পারছেন না।
জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি থাকায় কৃষকেরা এবার বেশি পরিমাণে চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম একেবারেই কমে গেছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনও একই কথা বলছেন। তিনি বলেন, রাজশাহী জেলার উদ্বৃত্ত আলু আগের বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে। তাই বাজার ঠিক থেকেছে। এবার সব জেলাতেই আলুর উৎপাদন বেশি। ফলে সবখানেই মূল্য কম। চেষ্টা করেও বাড়ানো যাচ্ছে না।

এবার আলু নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন চাষিরা। ১ কেজি আলু উৎপাদনের পর হিমাগারে মজুতে কৃষকের মোট খরচ পড়েছে ৩৫ টাকা। আর পাইকারি বাজারে স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকা কেজিতে। হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ টাকায়। এ অবস্থায় গড়ে ১ কেজিই কৃষকের প্রায় ২০ টাকা লোকসান হচ্ছে।
আলু ব্যবসায়ী, চাষি, কৃষি বিভাগ ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজার উঠছে না। গত বছরের অক্টোবরে যেখানে বিক্রি হয়েছে ৫৫-৬০ টাকায়, সেখানে এবার দাম ঠেকেছে তলানিতে। মৌসুমের শুরু থেকেই দাম পড়ে আছে। ফলে সব আলুচাষিরই লোকসান হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় আলুর বার্ষিক চাহিদা ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৫ টন। এ বছর ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৫১৭ টন, যা জেলার বার্ষিক চাহিদার ৯ গুণ বেশি। গত বছর ৩৪ হাজার ৯৫৫ হেক্টরে উৎপাদন হয়েছিল ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৪ টন। তবে সেবার কৃষকের লাভ হয়েছিল। ফলে এবার আরও ৩ হাজার ৫৪৫ হেক্টরে বেশি আলু চাষ করা হয়। গত বছরের তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে ৯১ হাজার ৬৯৩ টন।
রাজশাহীতে আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার রয়েছে ৩৯টি। এর মধ্যে ৩৭টি সচল। এসব হিমাগারের ধারণক্ষমতা ৪ লাখ ৩৩ হাজার ২৫০ টন। তবে সংরক্ষণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪৯১ টন। এর মধ্যে খাবার আলু ৩ লাখ ৬০ হাজার ৭৩২ টন। আর বীজ আলু ৭৩ হাজার ৭৫৯ টন। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ লাখ ২৯ হাজার ৩০৫ টন আলু হিমাগার থেকে বের হয়েছে। বাকি আছে ২ লাখ ৫ হাজার ১৮৬ টন। এই আলু এখন কৃষকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করে থাকে। সবশেষ গত রোববার তাদের তথ্যে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে হল্যান্ড বা কার্ডিনাল লাল আলু বিক্রি হয়েছে ১২-১৩ টাকা কেজিতে। আর স্থানীয় লাল আলু বিক্রি হয়েছে ১৫-১৮ টাকায়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর আলু বিক্রি হয়েছে ১৫-২০ টাকায়। আর চলতি ২৪ অক্টোবর বিক্রি হয় ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে। এ বছর আলুর দর অনেক কম।
আলুচাষিরা বলছেন, গত আগস্টে সরকার হিমাগার গেটে কমপক্ষে ২২ টাকা দামে ৫০ হাজার টন আলু কেনার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, কোথাও পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই দরে আলু কেনেননি। ২২ টাকায় আলু বিক্রি করতে পারলেও কৃষকদের লোকসান অর্ধেকে নামত বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কিন্তু এখন কেজিতেই লোকসান ২০ টাকা। কৃষককে লাভের মুখ দেখতে হলে আলু দাম ৪০ টাকার ওপরে ওঠাতে হবে। কিন্তু খুচরা বাজারেই এখন স্থানীয় লাল আলু ২০-২৫ ও হল্যান্ড ১৪-১৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব আলু অনেকেই গোখাদ্য হিসেবে বস্তাসহ কিনছেন।
জেলা আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আহাদ আলী আলুর দরপতনের জন্য বেশি উৎপাদন ও হিমাগারে পচে যাওয়াকে দায়ী করছেন। তাঁর মতে, পাইকারি বাজারে দাম কম হওয়ায় হিমাগার থেকে আলু তুলে বাজারে নেওয়ার খরচও উঠছে না। অনেকে আলু হিমাগার থেকে তুলতে পারছেন না।
জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি থাকায় কৃষকেরা এবার বেশি পরিমাণে চাষ করেছেন। চলতি মৌসুমে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম একেবারেই কমে গেছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপপরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনও একই কথা বলছেন। তিনি বলেন, রাজশাহী জেলার উদ্বৃত্ত আলু আগের বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়েছে। তাই বাজার ঠিক থেকেছে। এবার সব জেলাতেই আলুর উৎপাদন বেশি। ফলে সবখানেই মূল্য কম। চেষ্টা করেও বাড়ানো যাচ্ছে না।

গতবারের চেয়ে এবার ঈদযাত্রা চ্যালেঞ্জিং, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে। গতবার ছিল মহাসড়কে শুধু যাত্রীসাধারণকে গন্তব্যে পার করা। এবার একদিকে যাত্রীরা গন্তব্যে যাবেন, অন্যদিকে পশুবাহী ট্রাক, পশুবাহী নৌকা যাতায়াত করবে রাস্তাঘাট ও নদীতে...
২৪ জুন ২০২৩
২০২০ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পরীক্ষা করে যে বিয়ারিং প্যাড মানহীন ঘোষণা করেছিল, মূলত সেই প্যাড ব্যবহার করেই রাজধানীতে চলছে মেট্রোরেল। মেট্রোরেলের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ বলেছেন, উত্তরা থেকে
২ ঘণ্টা আগে
আমাদের নগর পরিবহনব্যবস্থার আধুনিকায়নের স্বপ্নযাত্রায় এক অশনিসংকেত বেজে উঠেছে। মেট্রোরেল ভায়াডাক্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ‘বিয়ারিং প্যাড’-সম্পর্কিত দ্বিতীয় দুর্ঘটনা ঘটেছে গত রোববার। এবার প্রাণঘাতী পরিণতি নিয়ে। এই মৌলিক কাঠামোগত উপকরণটির এমন অকাল ব্যর্থতা প্রকল্পের নির্মাণকাজের গুণমান, পরবর্তী তদার
২ ঘণ্টা আগে
বরগুনার বামনা উপজেলায় ৬ বছর আগে শুরু হওয়া মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এ নিয়ে আশাহত স্থানীয় মুসল্লিরা। জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণে একের পর এক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। সর্বশেষ, গত বছরের জানুয়ারি আবার মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। এ সময় পিলারসহ দোতলার ছাদ ঢালাই পর্যন্ত সম্পন্ন হয়।
২ ঘণ্টা আগে