Ajker Patrika

সাভারে নাশকতার মামলায় আসামি হকার্স লীগের নেতা, তাঁকে চেনেন না বাদী

অরূপ রায়, সাভার
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৪, ১৯: ১৮
সাভারে নাশকতার মামলায় আসামি হকার্স লীগের নেতা, তাঁকে চেনেন না বাদী

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে করা দুটি মামলায় আসামি সাভার পৌর হকার্স লীগের সভাপতি কবির হোসেন! মামলার এজাহারে তাঁকে হকার্স দলের সাবেক সভাপতি দেখানো হয়েছে।

পূর্বশত্রুতার জের ধরে দলের লোকজনই পুলিশের সহায়তায় মামলায় নাম দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কবির হোসেন।

অন্যদিকে সহিংসতার ঘটনায় আটক সাভারের বনগাঁও ইউনিয়ন যুবদল নেতা জাকির হোসেনকে এক দিন পর ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে সাভার থানায় দুটি মামলা চলমান।

কবির হোসেনের বিরুদ্ধে হওয়া একটি মামলার বাদী পুড়ে যাওয়া বাসের মালিক বলেছেন, তিনি মামলায় আসামি করেছেন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের। কবির হোসেন নামে কাউকে তিনি চেনেন না।

অপর মামলার বাদী পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে মামলা হয়েছে।

আর জাকির হোসেনকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে পুলিশ বলছে, জাকিরের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা চলাকালে ১৮ জুলাই আন্দোলনকারীরা সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চারটি বাস ও একটি ট্রাকে আগুন দেয়। ওই ঘটনায় সাভার পরিবহনের পুড়ে যাওয়া একটি বাসের মালিক গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বনগ্রাম গ্রামের ছাকিব হোসেন মৃধা ২৪ জুলাই সাভার থানায় মামলা করেন।

এদিকে একই দিন (১৮ জুলাই) একই স্থান ও সময়ে সোনার তরী পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের মামলা এবং সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার ট্রাফিক বক্সে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মামলায় আসামি করা হয়েছে সাভার পরিবহনের আরেক মালিক ও পরিবহনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সোহরাব হোসেনকে।

ছাকিব হোসেনের মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারে সাধারণ মানুষসহ বিএনপি ও জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীর সঙ্গে সাভার পৌর হকার্স লীগের সভাপতি কবির হোসেনের নামও রয়েছে। তবে এজাহারে তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় দেখানো হয়েছে হকার্স দলের সাবেক সভাপতি।

২৬ জুলাই সাভার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তানিম হোসেনের করা মামলায়ও কবির হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলার এজাহারেও কবির হোসেনকে হকার্স দলের সাবেক সভাপতি বলা হয়েছে।

হকার্স লীগ নেতা কবির হোসেনকে হকার্স দলের নেতা দেখিয়ে আসামি করার বিষয়ে মামলার বাদী এসআই তানিম হোসেন বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে মামলা হয়েছে। এখানে আমার কিছু করার ছিল না।’

আরেক মামলার বাদী ছাকিব হোসেন মৃধা বলেন, ‘যাঁরা আমার বাস পুড়িয়েছে তাঁদের আমি চিনি না। তাই অজ্ঞাতনামা লোকজনকে আসামি করে মামলা করেছি। সেই মামলায় আসামির নাম কী করে এল তা পুলিশই ভালো বলতে পারবে।’

কবির হোসেনের বিষয়ে ছাকিব হোসেন মৃধা বলেন, ‘আমি তাঁকে চিনিও না, কোনো দিন দেখিও নাই। তিনি কোন দল করেন, কী করেন না করেন না তাও আমার জানা নেই।’

জানতে চাইলে কবির হোসেন বলেন, ‘আমি দলের একজন নেতা হিসেবে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা ঠেকাতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কাজ করেছি। আর আমাকেই আন্দোলনকারী হিসেবে মামলার আসামি করা হয়েছে। আমাকে দল থেকে বহিষ্কারের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দলের লোকজনই পুলিশের সহায়তায় এসব করেছে।’

কবির হোসেন আরও বলেন, ‘আমি পৌর হকার্স লীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি। আমার কাছে অনুমোদিত কমিটির পেপারসও আছে। এরপরেও মামলায় আমাকে হকার্স দলের নেতা দেখানো হয়েছে। এটা ভাবা যায় না!’

এদিকে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহম্মেদ বলেন, ‘২৩ জুলাই সাভার থানার এসআই সাব্বির আহাম্মেদ বনগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় জড়িত ছিলেন। তার প্রমাণও আমরা থানায় দিয়েছি। এর পরেও এক দিন পর ২৫ জুলাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

একই রকম অভিযোগ করেন বনগাঁও ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই সাব্বির আহাম্মেদ বলেন, ‘জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সহিংসতায় জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না তাও আমার জানা নেই।’

কিন্তু সাভার থানার নথি ঘেঁটে দেখা যায়, জাকির হোসেনের নামে ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা হয়, যার নম্বর ৯৬। একই আইনে অপর মামলাটি হয় ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই। দুটি মামলা এখনো চলমান।

জাকির হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ্ জামান বলেন, ‘আমি অসুস্থ ছিলাম। জাকিরের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখি। আপনাকে পরে জানানো হবে।’

কবির হোসেনের বিষয়ে ওসি মোহাম্মদ শাহ্ জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। এ রকম হয়ে থাকলে পরবর্তীতে আমি ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পবিপ্রবি: নবনির্মিত শেডে উদ্বোধনের আগেই ফাটল, কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন

পবিপ্রবি সংবাদদাতা
উদ্বোধনের আগেই ভেঙে গেছে বাসশেডের স্ল্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্বোধনের আগেই ভেঙে গেছে বাসশেডের স্ল্যাব। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) বরিশাল ক্যাম্পাসে সদ্য নির্মিত বাসশেডের সামনের একটি স্ল্যাব উদ্বোধনের আগেই ভেঙে পড়েছে। এতে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় নির্মাণের মান ও স্বচ্ছতা নিয়ে শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, টিনের ছাউনিযুক্ত এই বাসশেড নির্মাণে প্রায় ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। তবে উদ্বোধনের আগেই স্ল্যাব ভেঙে পড়ায় প্রকল্পের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে থাকা দুর্বল কংক্রিট, খোয়া ও মরিচা পড়া রডের টুকরাগুলো নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের প্রমাণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন স্থাপনার এমন পরিণতি উদ্বেগজনক। এটি ভবিষ্যতে অন্যান্য নির্মাণ প্রকল্পের মান নিয়েও সন্দেহ সৃষ্টি করছে।

এদিকে ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্ল্যাব পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে ঠিকাদার আব্দুল হালিম বলেন, ‘সাধারণত নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পর ২৭ দিন পর্যন্ত ব্যবহার না করার নির্দেশনা থাকে। কিন্তু ভারী মালবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে স্ল্যাবের এক পাশে ক্ষতি হয়েছে।’ নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে কিছু পুরোনো ইট ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে অভিযোগ পাওয়ার পর তা বন্ধ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহসানুর রেজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিম্নমানের ইট ব্যবহারের কথা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি, কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। খুব দ্রুত আমরা এটি ঠিক করার ব্যবস্থা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রেমিকা আসার খবরে বাড়ি থেকে পালালেন প্রেমিক, বিয়ের দাবিতে অনশন

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
প্রেমিকা আসার খবরে বাড়ি থেকে পালালেন প্রেমিক, বিয়ের দাবিতে অনশন

িয়ের দাবিতে চাচার শ্যালিকা দুই দিন ধরে ভাতিজার বাড়িতে অবস্থান নিয়ে অনশন করছেন। প্রেমিকা (১৮) বাড়িতে আসার খবর পেয়ে পালিয়ে গেছেন প্রেমিক সোহান হোসেন (২০)। গতকাল সোমবার সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।

ওই তরুণী প্রেমিক সোহান হোসেনের চাচার আপন শ্যালিকা। সোহান হোসেন বোয়ালিয়া গ্রামের জাব্বার সরকারের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ভাতিজা ও খালার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক আগে থেকে। উভয়ের বাড়ি একই এলাকায় হওয়ার তাঁরা অনায়াসে যাতায়াত করতেন। এর আগেও জাব্বার সরকারের বাড়িতে বিয়ের দাবি তুলেছিলেন ওই তরুণী। পরে বুঝিয়ে তাঁকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এবার বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করলে প্রেমিক পালিয়ে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সোহানের বাড়ির সামনে উৎসুক নারী-পুরুষের ভিড় জমেছে। গণমাধ্যমকর্মীরা পৌঁছালে জাব্বার সরকারের পরিবারের লোকেরা কথা বলতে রাজি হননি। অনশনরত ওই তরুণী এখনো বাড়িতে অবস্থান করছেন, তবে কাউকে বাড়িতে প্রবেশ বা কথা বলা নিষিদ্ধ করেছেন সোহানের বাবা।

স্থানীয় লোকজন জানায়, জাব্বার সরকারের বাড়িতে গত রাত থেকে তাঁর ছেলের কথিত প্রেমিকা অনশন শুরু করেন। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সোহান হোসেনের এমন অসামাজিক কর্মকাণ্ড দেখে পরিবারের যাতায়াতের পথও বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু উৎসুক জনতা সেসব উপেক্ষা করে সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন।

জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সোলায়মান হোসেন জানান, ‘মহিলার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, তাঁদের সম্পর্ক প্রায় দেড় মাস ধরে। গত সোমবার রাত থেকে তিনি জাব্বারের বাড়িতে অবস্থান করছেন, কিন্তু ছেলেটি পালিয়ে গেছেন।’

এ বিষয়ে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমি এখনো বিষয়টি জানি না। কেউ অবহিত করেননি। তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে এনসিপি থেকে পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৩৩
পরিমল চন্দ্র ওঁরাও। ছবি: সংগৃহীত
পরিমল চন্দ্র ওঁরাও। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজশাহী মহানগর সমন্বয় কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন এক সদস্য। তাঁর নাম পরিমল চন্দ্র ওঁরাও। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে এনসিপির রাজশাহী মহানগর সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তিনি।

এতে পরিমল চন্দ্র লিখেছেন, ‘সম্প্রতি ব্যক্তিগত জীবনে কিছু নতুন দায়িত্ব ও উদ্যোগের কারণে আমার সময় ও মনোযোগ সম্পূর্ণভাবে সেদিকে দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দলের কাজের প্রতি আগের মতো সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করা সম্ভব হচ্ছে না, যা দলের প্রতি অন্যায় হবে বলে মনে করি।’

পরিমল চন্দ্র ওঁরাও বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাবেক সদস্য। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় তাঁর বাড়ি। তবে তিনি রাজশাহীতে থাকতেন। তাই এনসিপির মহানগর সমন্বয় কমিটিতে সদস্যপদ পেয়েছিলেন। তিনি এখন নওগাঁয় রাজনীতি করতে চান।

জানতে চাইলে পরিমল চন্দ্র ওঁরাও বলেন, ‘আমি নওগাঁ-৩ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাই। তাই এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছি। আমি এনসিপিতে থাকব না।’

যোগাযোগ করা হলে এনসিপির রাজশাহী মহানগর সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলী তাঁর পদত্যাগপত্রটি পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিপেটা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ করলে সরিয়ে দিতে পুলিশের লাঠিপেটা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ করলে সরিয়ে দিতে পুলিশের লাঠিপেটা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ করেন এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেডের শ্রমিকেরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে শ্রমিকদের সরিয়ে দিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করেছে। এতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

গাজীপুরের শ্রীপুর, কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি, শ্রমিকদের দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, লাঠিপেটা
গাজীপুরের শ্রীপুর, কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি, শ্রমিকদের দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, লাঠিপেটা

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামে এএ ইয়ার্ন মিলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে দফায় দফায় অবরোধ করেন।

কারখানার শ্রমিক সুজন মিয়া বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ২৩ তারিখ কারখানার প্রায় সব শ্রমিক আন্দোলন করে। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এরপর পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে বেতন পরিশোধের আশ্বাসে আন্দোলন বন্ধ করেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সোমবার থেকে পুরোদমে কারখানা চালু হবে। কিন্তু গতকাল সোমবার কর্মস্থলে এসে দেখি মূল ফটকের সামনে কারখানা বন্ধের অনির্দিষ্টকালের নোটিশ।

গাজীপুরের শ্রীপুর, কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি, শ্রমিকদের দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ
গাজীপুরের শ্রীপুর, কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি, শ্রমিকদের দফায় দফায় মহাসড়ক অবরোধ

এরপর পুলিশ আমাদের আশ্বাস দেয় যে আজ মঙ্গলবার ১০টার দিকে কারখানা খুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। কিন্তু কারখানা ফটকের সামনে এসে দেখি কারখানা বন্ধের নোটিশ। এরপরই শ্রমিকেরা রাস্তায় নামে। রাস্তায় নামার পরপরই পুলিশ এসে কোনো কথা না বলে লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।’

কারখানার শ্রমিক ঝুটন বলেন, ‘হঠাৎ করে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করল। আমাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করল না। দীর্ঘদিন ধরে এই কারখানায় শ্রমিকের কাজ করছি। কয়েক মাস ধরে বেতন পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা করছে। হঠাৎ আন্দোলনের জেরে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করছে। আমার বকেয়া বেতনসহ অনন্য দাবি পরিশোধ না করে কারখানা বন্ধ করা হয়েছে, যা শ্রমিকদের সঙ্গে অনেক অন্যায় করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে কারখানার মানবসম্পদ কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘২৩ অক্টোবর শ্রমিকেরা বেতন দাবির সময় কারখানার ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করে। ফলে কারখানা চালু রাখা সম্ভব নয়। মালিকপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ বলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই কারখানায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করলেও আজকে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে। তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নিতে আমরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করি। কিন্তু শ্রমিকেরা দফায় দফায় রাস্তায় নামছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত