Ajker Patrika

শিক্ষার্থীদের রমজানের আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের হামলা, আহত ৫ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪, ০০: ১৪
Thumbnail image

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের রমজান নিয়ে এক আলোচনা সভায় হামলা করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। বুধবার বেলা ২টার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন আইন বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী রেজোয়ান আহমেদ রিফাত, শাহীনুর আলম রাসেল, সাকিব আজাদ তূর্য, রাফিদ হাসান সাফওয়ান এবং ফাহিম দস্তগীর। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

জানা যায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অংশ হিসেবে’ প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শিরোনামে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে শিক্ষার্থীরা। 

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী আজকের পত্রিকাকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে জোহরের নামাজ শেষে রমজান নিয়ে আলোচনা করছিল। পরে বঙ্গবন্ধু টাওয়ার কল্যাণ সমিতির সভাপতি সিরাজুল ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী মিলে তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। সেখানে কোনো প্রোগ্রাম করা যাবে না বলেও জানান তাঁরা। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা চলে যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের গেটের কাছে ১০-১২টা মোটরসাইকেল করে আসা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের উপর্যুপরি মারধর করেন।’ 

আহত রেজওয়ান আহমেদ রিফাত জানান, তাঁরা বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের নিচতলায় জোহরের নামাজ আদায় করেন। এরপর সেখানে ধর্মীয় আলোচনা এবং তাঁদের বিভাগের পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিলের বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। তখন কয়েকজন এসে তাঁদের সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। তাঁরা বের হয়ে রাস্তার ওপর এলে হঠাৎ কয়েকজন মোটরসাইকেল নিয়ে এসে এলোপাতাড়ি মারধর করে। 

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, আহতদের তিনজনের অবস্থা গুরুতর। শাহিনুরকে জরুরি বিভাগের নিউরোসার্জারি ও সাকিবকে নাক, কান, গলা বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা আইন বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী আবু তালহা বলেন, ‘আমাদের অনুষদেও নামাজের স্থান রয়েছে। তবে সেখানে জামাতের সুযোগ না থাকায় আমরা বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে নামাজ পড়তে যাই। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল রমজানে কী আমল করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করা। তখনই ছাত্রলীগের কয়েকজন আমাদের হুমকি দেওয়া শুরু করে। আমরা শুধু আলোচনা করতে বসেছি, তাঁরা আমাদের শিবির ট্যাগ দিয়ে হামলা করে। অথচ এখানে কেউ শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।’ 

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক লোকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, হামলাকারীদের নেতৃত্বে ছিলেন শাহবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম সুজন। সুজন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডের অনুসারী বলে পরিচিত। সুজন বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ নীলক্ষেত কর্মচারী কোয়ার্টারে অবৈধভাবে থাকেন। 
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে সুজন বলেন, ‘আমি সেখানে নামাজ পড়তে গেছি, সেখানে দেখি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু পোলাপান আলোচনা করছে, পরে হামলার ঘটনা ঘটে। আমি হামলায় জড়িত ছিলাম না, আমি কিছুই জানি না।’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। 

এদিকে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। হামলার ঘটনায় রাজু ভাস্কর্যে মানববন্ধন করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তিন ছাত্রকে আটক করায় এসআই ক্লোজড, ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

আটক ৩ জনকে ছাড়িয়ে নিতে উত্তরায় থানায় হামলা শিক্ষার্থীদের

রাজধানীতে নিখোঁজ কিশোরী নওগাঁয়, যা বললেন সঙ্গে থাকা তরুণের বাবা

থানায় হামলা করে আটকদের ছাড়িয়ে নিল ছাত্ররা, বদলির মুখে ওসি-এসআই

উপদেষ্টা রিজওয়ানার কাছে মাত্র ১৫ মিনিট সময় চেয়ে পাইনি: বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত