Ajker Patrika

দুই শিল্প গ্রুপেই তছরুপ ৩৫ হাজার কোটি টাকা

  • এমডি, পরিচালকসহ ৬ শতাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ
  • অর্থ লুটপাটে দায়ীদের চাকরিচ্যুতির সুপারিশ নিরীক্ষা কমিটির
  • জরুরি বোর্ড সভায় অভিযুক্তদের চাকরি অবসানে এমডির অনীহা
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ৫৭
দুই শিল্প গ্রুপেই তছরুপ ৩৫ হাজার কোটি টাকা

চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ৬০ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলে গেছে। ব্যাংকের এক অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এসব ঋণের ৩৩ হাজার ৭৯১ কোটি টাকাই বের করে নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ আঞ্চলিক কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ২৪টি শাখা থেকে। এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নামী-বেনামি প্রতিষ্ঠান এই টাকা তুলে নেয়। এ ছাড়া ঢাকার কয়েকটি শাখা থেকে সিকদার গ্রুপ এবং তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রাহক বের করে নিয়েছে ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, এই বিপুল পরিমাণ অর্থ তছরুপের মদদদাতা ছিলেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী। এ কাজে তাঁর সহচর ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (পদত্যাগ করা) মো. মোস্তফা খায়ের, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. মাসুদুর রহমান শাহ, চট্টগ্রাম উত্তর কার্যালয়ের তৎকালীন আঞ্চলিক প্রধান ও ইভিপি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ কার্যালয়ের তৎকালীন আঞ্চলিক প্রধান ও ইভিপি মো. কামাল উদ্দীন, ব্যাংকের কোম্পানি সচিব অলি কামাল এফসিএ এবং এমডির পিএস মিজানুর রহমান। বিশেষভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬ শতাধিক কর্মকর্তাও এতে জড়িত ছিলেন।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঋণ বিতরণে অনিয়ম তদন্তে ব্যাংকটির ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগের গঠন করা ছয়টি কমিটি গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরিদর্শনে উঠে আসে, উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের ২৪টি শাখা থেকে ৩৩ হাজার ৭৯১ কোটি টাকার নামে-বেনামে অর্থছাড় করা হয়। মূলত ৮৯টি বাই মুরাবাহ (হাইপো) এবং ৬৯টি বাই মুরাবাহ বিনিয়োগে নিয়ম না মেনে নানা চতুরতার আশ্রয় নেওয়া হয় এসব ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে।

গত ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ব্যাংকের ২৭৩তম পরিচালনা পরিষদে এসব অনিয়ম নিয়ে পর্যালোচনা হয়। সেখানে ১৫৮ জন গ্রাহকের বিনিয়োগ সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ, নবায়ন, বর্ধিতকরণ, সময়বৃদ্ধির মতো অনিয়মের বিষয়টি উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রের গুরুতর অনিয়মগুলো হলো সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ বিতরণ, সহায়ক জামানতের মূল্য বাড়িয়ে দেখানো, চতুরতার মাধ্যমে ভুল তথ্য দিয়ে বিনিয়োগ নবায়ন, বৃদ্ধিকরণ, বিনিয়োগ আদায়ে শিথিলতা, সমন্বয়ে কারচুপি এবং আইনি পদক্ষেপ এড়াতে খেলাপিকে নিয়মিত হিসাবে দেখানো। আর এই কাজে সরাসরি মদদ ছিল ব্যাংকটির এমডির।

ব্যাংকটির তদন্ত কমিটির একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চট্টগ্রামের অন্তত ২৪টি শাখায় ব্যাংকিং নিয়মাচার মানা হয়নি। ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক আলী বিশেষ তাগাদা দিয়ে গ্রাহকদের অর্থছাড় করিয়েছেন। এসব কাজ তত্ত্বাবধান করেছেন তাঁর পিএস মিজানুর রহমান। আর ব্যাংকিং নিয়মাচারবহির্ভূত আর্থিক অনিয়মের জন্য দায়ী অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (পদত্যাগ করা) মো. মোস্তফা খায়ের, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. মাসুদুর রহমান, চট্টগ্রাম উত্তরের তৎকালীন আঞ্চলিক প্রধান ও ইভিপি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণের তৎকালীন আঞ্চলিক প্রধান ও ইভিপি মো. কামাল উদ্দীন। তাঁরা ব্যাংকটির নিয়মবহির্ভূত ৩৩ হাজার ৭৯১ টাকার ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের দায় কোনোভাবে এড়াতে পারেন না। তাঁদেরকে সহযোগিতা করেছেন এস আলমের আমলে নিয়োগ পরীক্ষা ছাড়া বিশেষ তদবিরে নিয়োগপ্রাপ্ত ৬ শতাধিক কর্মকর্তা।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স বিভাগ কর্তৃক গঠিত নিরীক্ষা দল গত ১২ ডিসেম্বর পরিচালনা পর্ষদের অডিট কমিটির কাছে সুপারিশসহ অনিয়মের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে। সেখানে শাখা, অঞ্চল এবং প্রধান কার্যালয়ের সবার দায়িত্বে অবহেলার বিস্তারিত বর্ণনা এবং অপরাধ তুলে ধরে অভিযুক্তদের শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে। গত শনিবার অভিযুক্ত ৬ শতাধিক কর্মকর্তার চাকরিচ্যুতির প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। কিন্তু এমডি ওয়াসেক আলী তাতে স্বাক্ষর করতে অপারগতা জানান। পরে বোর্ড তাঁকে ওই দিনই তিন মাসের জন্য ছুটিতে পাঠায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকটির এমডি (এখন ছুটিতে) সৈয়দ ওয়াসেক আলী বলেন, বিনিয়োগের জন্য শাখা থেকে প্রস্তাব আসে। তা আঞ্চলিক পর্যায় থেকে প্রধান কার্যালয়ে যাচাই-বাছাই করা হয়। আর বড় বিনিয়োগের অর্থছাড়ে বোর্ডের অনুমোদন লাগে। সেখানে সবার দায়িত্ব থাকে।

অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম উত্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীন জুবিলী রোড শাখা গ্রাহক মেসার্স বাণিজ্য বিতান করপোরেশনসহ ২৫ গ্রাহকের কাছে নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল বিনিয়োগ করে ব্যাংক। একইভাবে আন্দরকিল্লা শাখার এহসান, হুদা এন্টারপ্রাইজসহ ১০ গ্রাহক, কদমতলী শাখার লিনিয়েজ বিজনেসসহ ১১ গ্রাহক, পাহাড়তলী শাখার হারমোনিয়াস বিজনেস হাউসসহ তিন গ্রাহক, ফতোয়াবাদ শাখার দুই গ্রাহক, খাতুনগঞ্জ শাখার ২০ গ্রাহক, হাটহাজারী শাখার তিন গ্রাহক, রাহাত্তারপুল শাখার চার গ্রাহক, হালিশহর শাখার এক গ্রাহক, বন্দরটিলা শাখার আট গ্রাহক, দোভাসী শাখার চার গ্রাহক, কুমিরা শাখার চার গ্রাহক, সদরঘাট শাখার সাত গ্রাহক এবং চকবাজার শাখার চার গ্রাহককে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা হয়।

একই প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম দক্ষিণ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রবর্তক মোড় শাখার আট গ্রাহক, বোয়ালখালী শাখার তিন গ্রাহক, মোহরা শাখার দুই গ্রাহক, আগ্রাবাদ শাখার পাঁচ গ্রাহক, চন্দনাইশ শাখার তিন গ্রাহক, পটিয়া শাখার দুই গ্রাহক, পটিয়া মহিলা শাখার তিন গ্রাহক, পাঁচলাইশ শাখার পাঁচ গ্রাহক, বহদ্দারহাট শাখার ১৫ গ্রাহককে অনিয়মের মাধ্যমে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যার দায় এড়াতে পারেন না ইভিপি মো. কামাল উদ্দিন।

এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে ব্যাংকটির কোম্পানি সচিব অলি কামালের (এফসিএ) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিনিয়োগ নিয়ম মেনে হয়েছে। তবে কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। এতে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই।’

যোগাযোগ করা হলে ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো. মাসুদুর রহমান শাহ বলেন, নিয়ম ছাড়া ব্যাংকে বিনিয়োগ করা যায় না। বড় বিনিয়োগ তো পর্ষদ অনুমোদন দেয়।

এ ছাড়া ছুটিতে থাকা এমডির পিএস তাঁর অনিয়মে যুক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘এ বিষয়ে এমডির কাছে জানতে চান।’ এই বলে ফোন কেটে দেন তিনি।

শুধু চট্টগ্রাম নয়, ব্যাংকটির ঢাকার বিভিন্ন শাখাতেও ঋণ বিতরণে বড় অনিয়ম হয়েছে। নথিপত্র অনুযায়ী, ব্যাংকটির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের দিলকুশা, বনানী, ধানমন্ডি, সেনানিবাস ও কারওয়ান বাজার শাখা থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেয় সিকদার গ্রুপ এবং তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠানে ব্যাংকটির মোট ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ ছিল ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা, যার দায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির চলতি দায়িত্বে (সিসি) এমডি আবু রেজা মো. ইয়াহিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংকের কিছু সন্দেহভাজন শাখায় সম্পদ ঝুঁকি নিরূপণ করেছে তদন্ত দল। এটা মূলত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় করা হয়েছে। সেখানে বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ ঝুঁকি হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর বিভিন্ন শাখা কর্মকর্তা, আঞ্চলিক কর্মকর্তা, প্রধান কার্যালয়ের এমডিসহ অনেকের সম্পৃক্ততা উঠে এসেছে। এসব বিষয়ে পরে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যাংকে ভূরি ভূরি অনিয়ম হয়েছে। চট্টগ্রামে বেশি হয়েছে; ঢাকাতেও হয়েছে। তখনকার এমডিসহ কোনো কর্মকর্তা অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি। এতে ব্যাংকের অর্থ তছরুপ হয়েছে। ব্যাংকের এমন বিনিয়োগের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বড়াইগ্রামের একটি গুদামে ১৩ টন গুলির খোসা নিয়ে চাঞ্চল্য

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি 
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুর বাজারে একটি গুদামে রাখা সাড়ে ১৩ টন গুলির খোসা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুর বাজারে একটি গুদামে রাখা সাড়ে ১৩ টন গুলির খোসা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুর বাজারে একটি গুদামে সাড়ে ১৩ টন এমপি কার্তুজ (গুলির খোসা) পাওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে তদন্ত শেষে পুলিশ জানিয়েছে, আইন মেনে কারখানায় ব্যবহার করার জন্য গুলির খোসাগুলো আনা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার আহম্মেদপুর বাজারে আবুল বাশারের মালিকানাধীন শিহাব এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট এজেন্সির গুদামে ট্রাক থেকে মালপত্র নামানোর সময় শ্রমিকেরা গুলির খোসা দেখতে পান। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে স্থানীয়রা শনিবার পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

আবুল বাশার শিহাব বলেন, ‘গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর সেনানিবাসের এমপি কার্তুজগুলো ওই এলাকার মা-বাবা কনস্ট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান নিলামে কিনে নেয়। পরে এ প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছ থেকে আমি কিনে নেই। শুক্রবার রাতে ট্রাকবোঝাই করে গুলির খোসাগুলো এনে বাড়িতে গুদামজাত করি।’

নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এমপি কার্তুজগুলো কারখানায় ব্যবহার করার জন্য নিয়ম মেনে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে বিক্রি করা হয়েছে। শিহাব এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট এজেন্সির মালিক শিহাব এমপি কার্তুজ কেনার বৈধ কাগজপত্র দেখিয়েছেন। এতে কোনো আইনি জটিলতা নেই। তিনি এটা কারখানায় ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানান পুলিশ সুপার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাটগ্রামে অবৈধভাবে মজুত-বিক্রি, ২০০০ বস্তা সার জব্দ

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি 
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বিভিন্ন সার বিক্রেতার দোকানে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। ছবি: আজকের পত্রিকা
লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বিভিন্ন সার বিক্রেতার দোকানে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। ছবি: আজকের পত্রিকা

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবৈধভাবে রাসায়নিক সার বিক্রির সময় অভিযান চালিয়ে ২০০০ বস্তা সার জব্দ ও দুই বিক্রেতাকে ২০ হাজার ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন সার বিক্রেতার দোকানে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসন এই অভিযান চালায়।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন সার বিক্রেতা গুদাম ও দোকানে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুত করে বেশি দামে খুচরা বিক্রি করছেন—এমন সংবাদ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উত্তম কুমার দাশ।

সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুত ও বেশি দামে খুচরা বিক্রি করার অপরাধে দহগ্রাম ফায়ার সার্ভিস সড়ক এলাকার মেসার্স ব্রাদার্স ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী হায়দার আলী রাসেলের দোকান ও গুদাম থেকে ৫০০ বস্তা ইউরিয়া, ৩০০ বস্তা টিএসপি, ২০০ বস্তা ডিএপি এবং ৩০০ বস্তা এমওপিসহ মোট ১৩০০ বস্তা সার জব্দ করা হয়। এ সময় রাসেলকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অন্যদিকে একই অপরাধে পাটগ্রাম বাজার থেকে বাইপাস সড়কগামী এলাকার খুচরা সার বিক্রেতা মেসার্স জান্নাত ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মিলন শেখের দোকান ও গুদাম থেকে ১৮০ বস্তা ইউরিয়া, ৩০০ বস্তা ডিএপি এবং ২২০ বস্তা এমওপিসহ মোট ৭০০ বস্তা সার জব্দ করা হয়। এ সময় মিলনকেও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

জব্দ করা সারগুলো উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জিম্মায় দেওয়া হয়। পরে সরকারনির্ধারিত মূল্যে উপজেলার কৃষকদের মধ্যে বিক্রি করার আদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, ‘সরকার স্বীকৃত ডিলার না হয়েও বাইরে থেকে সার এনে বেশি দামে বিক্রি করায় বাজারে সারের সার্বিক পরিস্থিতি নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমাদের কাছে যতটুকু সরকারি সার বরাদ্দ আসবে, ততটুকু ন্যায্যমূল্যে কৃষকের হাতে তুলে দিতে কাজ করছি।’

এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উত্তম কুমার দাশ বলেন, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সার মজুত করে বেশি দামে বিক্রি করার অপরাধে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অনুযায়ী দুই বিক্রেতাকে ২০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় অবৈধভাবে মজুত করা ২০০০ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে। এসব সার পাটগ্রাম উপজেলার কৃষকদের মধ্যে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতলক্ষ্যার ওপর সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শীতলক্ষ্যার ওপর সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শীতলক্ষ্যার ওপর সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জ বন্দরে নির্মাণাধীন কদমরসূল সেতুর নকশা পরিবর্তন ও নির্মাণকাজে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর পূর্বপ্রান্তে এই মানববন্ধন হয়। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনের আয়োজন করে নাগরিক সংগঠন ‘বন্দর উন্নয়ন ফোরাম’।

মানববন্ধনে সংগঠনের উপদেষ্টা মাসুদুজ্জামান মাসুদের নেতৃত্বে বক্তব্য দেন আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী নূর উদ্দিন, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, সংগঠনের আহ্বায়ক হাফেজ কবির হোসেন, সদস্যসচিব লতিফ রানা, আইনজীবী ও সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফুল ইসলাম শিপলু প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ‘বন্দরবাসী বঞ্চিত। কারণ এখনো টাকা দিয়ে তাদের নদী পারাপার হতে হয়। এই সময় এসেও এভাবে নদী পারাপারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমাদের প্রাণের দাবি দ্রুত ভিত্তিতে এই সেতু বাস্তবায়ন করতে হবে। যানজট বা অন্য কোনো দোহাই দিয়ে এই সেতুর কাজ আটকে রাখা যাবে না।’

সংগঠনের উপদেষ্টা বলেন, কদমরসূল সেতু নিয়ে নাসিকের সিইওর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কোরিয়ান কোম্পানি সময়মতো সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করবে। আমরা সেই আশ্বাস বিশ্বাস করতে চাই। প্রয়োজনে আমরা শহর ও বন্দরবাসী সিটি করপোরেশনের পাশে থাকব। দাসপ্রথার মতো ঘাটের টেন্ডার দিয়ে মানুষকে জিম্মি করা যাবে না। জনগণের পকেট থেকে টাকা ছিনতাই করা হচ্ছে। আমরা অনুরোধ করব, দ্রুত সেতু বাস্তবায়নের পাশাপাশি এই ধরনের টেন্ডার প্রথা যেন উঠিয়ে দেওয়া হয়।

মানববন্ধনে বন্দর উন্নয়ন ফোরামের সঙ্গে একাগ্রতা প্রকাশ করে ‘পরিবর্তন, বন্দর থানা ক্রীড়া কল্যাণ পরিষদ, বন্দর ক্লাব’সহ বিভিন্ন সংগঠন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম বন্দরে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মোড়ে ‘শ্রমিক-ছাত্র-পেশাজীবী-নাগরিকবৃন্দ’ আয়োজনে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মোড়ে ‘শ্রমিক-ছাত্র-পেশাজীবী-নাগরিকবৃন্দ’ আয়োজনে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়ারচর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে নগরের বাণিজ্যিক এলাকা আগ্রাবাদ মোড়ে ‘শ্রমিক-ছাত্র-পেশাজীবী-নাগরিকবৃন্দ’ আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বক্তারা এমন অভিযোগ তোলেন।

সমাবেশে গণমুক্তি ইউনিয়নের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা মিঞা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিনা টেন্ডারে ডিপি ওয়ার্ল্ডকে নিউমুরিং টার্মিনাল তুলে দেওয়ার আয়োজন সম্পন্ন করেছিল। গণ-অভ্যুত্থানের পরও বর্তমান সরকার এই চক্রান্ত বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।’

এ সময় অন্য বক্তারা বলেন, ‘অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে একাধিক বন্দর নেই, দেশের সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি যে বন্দর দিয়ে হয়, সে বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে কেউ তুলে দেয় না। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থানগত কারণে এর সঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্ব-নিরাপত্তার কৌশলগত প্রশ্নও যুক্ত। চট্টগ্রাম বন্দরের মতো কৌশলগত জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের না, বেসরকারীকরণও না।’ জাতীয় প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরিচালনা করতে হবে বলে সমাবেশে দাবি করা হয়।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি খোরশেদ আলম, গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস, স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান, বাসদ (মার্ক্সবাদী) জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শফি উদ্দিন কবির আবিদ, বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খোকন, ডক শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আখতারউদ্দিন সেলিম, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদউদ্দিন শাহীন, গণঅধিকার চর্চা কেন্দ্রের মশিউর রহমান খান, বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার পরিষদের প্রকৌশলী সিঞ্চন ভৌমিক, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুন্নবী কনক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল নেতা সাইফুর রুদ্র, বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সভাপতি হুমাযুন কবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রামের নগরের দপ্তর সম্পাদক লাবণী আকতার প্রমুখ।

সমাবেশ থেকে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার ডাকে ২৭ অক্টোবর ঢাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে সকালে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) আহূত অনশন ধর্মঘট কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ইন্দোরে শ্লীলতাহানির শিকার অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার

আদানিকে রক্ষায় গোপনে ৩৯০০ কোটি রুপির ব্যবস্থা করেন নরেন্দ্র মোদি

গ্রেপ্তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে পুলিশের সামনেই চড়, সমালোচনার ঝড়

আরপিও সংশোধন থেকে সরলে লন্ডন বৈঠকের ধারাবাহিকতায় ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া মনে করবে এনসিপি: আখতার

আফগান সিরিজ দিয়ে সাত বছর পর ফিরেছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত