Ajker Patrika

আশরাফুলের লাশ ঘরে রেখেই শারীরিক সম্পর্ক করেন জরেজ ও শামীমা: র‍্যাব

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৩৭
আশরাফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে শনিবার র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আশরাফুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে শনিবার র‍্যাবের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে হত্যা করে তাঁর লাশ ২৬ টুকরো করে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের পাশে দুটি ড্রামে ফেলে রাখার ঘটনায় প্রধান আসামির প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুরকে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব–৩। গতকাল শুক্রবার সকালে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বড় বিজরা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে জরেজকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ শনিবার সকালে র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফিন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আশরাফুল হক ও জরেজুল ইসলাম জরেজ বন্ধু ছিলেন। আশরাফুলের কাছে অনেক টাকা-পয়সা আছে এটা জরেজ জানতেন। তাই তাঁকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে। নিজের প্রেমিকা শামীমাকে কাজে লাগান তিনি। তাঁরা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেছিলেন।

এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এক মাস ধরে শামীমা মোবাইল ফোনে আশরাফুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে তাঁকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন।

গত ১১ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে ব্যবসা–সংক্রান্ত পাওনা আদায়ের কথা বলে জরেজ আশরাফুলকে রংপুর থেকে ঢাকায় ডেকে আনেন। ঢাকায় এসে পরদিন ১২ নভেম্বর তিনজন মিলে শনিরআখড়ার নূরপুর এলাকায় সাড়ে ৫ হাজার টাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন।

জরেজের নির্দেশনা অনুযায়ী শামীমা প্রেমের অভিনয় করে আশরাফুলকে মালটার শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। জরেজ বাইরে থেকে তাঁদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেন।

শামীমার জবানবন্দির বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, ১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে গেলে জরেজ তাঁর হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেন। এরপর ইয়াবা সেবন করে জরেজ হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই আশরাফুলের মৃত্যু হয়।

মৃতদেহ একই ঘরে রেখে রাতে জরেজ ও শামীমা অবস্থান করেন এবং শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন।

১৩ নভেম্বর সকালে জরেজ চাপাতি ও দুটি নীল ড্রাম কিনে এনে আশরাফুলের লাশ ২৬ টুকরা করে ড্রামে ভরেন। দুপুরে একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে ড্রামগুলো বাসা থেকে বের করেন। ধরা পড়ার আশঙ্কায় অটোরিকশা পরিবর্তন করে হাইকোর্ট এলাকায় পৌঁছান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে তাঁরা দ্রুত পানির পাম্প সংলগ্ন বড় গাছের নিচে ড্রাম দুটি ফেলে পালিয়ে যান।

ঘটনার পর শামীমাকে কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে বলেন জরেজ। জরেজ নিজে রংপুরে ফেরার কথা বললেও এরপর থেকে গা-ঢাকা দেন।

১১ নভেম্বর থেকে আশরাফুলের ফোন বন্ধ পাওয়ায় পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট এলাকার পানির পাম্পের পাশে পড়ে থাকা দুটি ড্রাম থেকে এক পুরুষের ২৬ খণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে শাহবাগ থানা-পুলিশ। আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণ করে তা আশরাফুল হকের বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

ঘটনার রাতেই আশরাফুলের বোন শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। র‍্যাব–৩ তদন্তে নেমে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রধান সহযোগী শামীমাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শনিরআখড়ার বাসা থেকে আশরাফুলের রক্তমাখা পাঞ্জাবি–পায়জামা, হত্যায় ব্যবহৃত দড়ি, স্কচটেপ, একটি গেঞ্জি, হাফপ্যান্টসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, ব্ল্যাকমেল করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল অভিযুক্তদের। তবে কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল কি না, তা প্রধান আসামি জরেজকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।

গ্রেপ্তার শামীমাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রলবোমা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
ক্ষতিগ্রস্ত সাইনবোর্ড। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্ষতিগ্রস্ত সাইনবোর্ড। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কেউ হতাহত না হলেও ব্যাংকের সাইনবোর্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেছে। গতকাল শনিবার (১৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের বারোতোপা বাজারে গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় এই ঘটনা ঘটে।

নিক্ষেপ করা পেট্রলবোমা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিক্ষেপ করা পেট্রলবোমা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গ্রামীণ ব্যাংক মাওনা বাজার শাখার ব্যবস্থাপক রেহেনা বেগম বলেন, ‘ব্যাংকের বেশির ভাগ কমকর্তা-কর্মচারী ব্যাংকেই রাত যাপন করেন। রাত আনুমানিক ২টার দিকে সাত-আটজন যুবক অতর্কিতভাবে এসে পরপর তিনটি পেট্রলবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। একটি পেট্রলবোমা সীমানা প্রাচীরের ভেতর ও দুটি বোমা সীমানা ঘেঁষে বিস্ফোরিত হয়। এতে ব্যাংকের সাইনবোর্ড ও জানালায় আঘাত করে ভেতরে চলে আসে। এতে সাইনবোর্ড ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেছে। আমাদের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’ তিনি জানান, তাঁদের কেউ আহত হননি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘যেকোনো পরিবহন যোগে এসে দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকে তিনটি পেট্রলবোমা মারে। দুটি বাইরে, একটি ভেতরে। তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যেমনটি তারা করতে চেয়েছিল। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আশা করি, অপরাধীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকুন্দিয়ায় আগুনে পুড়ল চার দোকান

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডে চারটি দোকান পুড়ে গেছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাকুন্দিয়া পৌরসভার ডিগ্রি কলেজ গেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ খালিদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সিদ্দিক হোসেন মাসুদ জানান, আগুনে একটি ফুচকার দোকান, পর্দার দোকান, টাইলসের দোকান ও একটি স্টুডিও ভস্মীভূত হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পাকুন্দিয়া ডিগ্রি কলেজের সামনে একটি ফুচকার দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আগুন পাশের আরও কয়েকটি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ খালিদ বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন লাগার পর সাধারণ জনগণের সহায়তায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে।

খবর পেয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন ও পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াৎ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থী-শ্রমিক সংঘর্ষের জেরে বরিশালে বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
ব‌রিশাল নথুল্লাবাদ বাস টা‌র্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ব‌রিশাল নথুল্লাবাদ বাস টা‌র্মিনাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালে শনিবার রাতে শিক্ষার্থী ও পরিবহনশ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। আজ রোববার সকাল থেকে বরিশাল জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা জানিয়েছেন, ভাঙচুর করা বাসের ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে।

হঠাৎ এই পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। কিছু মাহিন্দ্রা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করলেও যাত্রীদের দ্বিগুণ বা তারও বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

‘হাফ ভাড়া’ দেওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার সন্ধ্যার পর বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাসের শ্রমিকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ২০ থেকে ৩০টি বাস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই সংঘর্ষের কারণে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ওই ঘটনার জেরে রোববার সকাল থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা প্রায় ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখেন।

বরিশাল নথুল্লাবাদ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন বলেন, ‘আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখব। আমাদের যে গাড়িগুলো ভাঙচুর করা হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অর্ধশত শ্রমিক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। একই সঙ্গে পরে যেন এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার নিশ্চয়তা দেওয়ার পরই কেবল গাড়ি চলাচল শুরু হবে।’

হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘটের কারণে যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছে। বিকল্প যানবাহনে তাদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৮৪টি ডাকঘরের ৬৮টি ভাড়া করা, পরিত্যক্ত ভবনেও চলছে কার্যক্রম

মাদারীপুর প্রতিনিধি
চরমুগরিয়া এলাকার ডাকঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
চরমুগরিয়া এলাকার ডাকঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর জেলায় ৮৪টি ডাকঘর আছে। এর মধ্যে ২৭টির জন্য বরাদ্দ করা জমি রয়েছে। কিন্তু জমি বরাদ্দ থাকলেও নিজস্ব ভবন আছে মাত্র ১৬টির। বাকি ৬৮টি ডাকঘরের কার্যক্রম চলছে ভাড়া করা ভবনে। এই ভাড়া করা বেশির ভাগ ভবনের অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়াও পরিত্যক্ত কিছু ভবনেও চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম। এই অবস্থা বছরের পর বছর থাকলেও এ ব্যাপারে কোনো উন্নতি হয়নি। ফলে এই ঝুঁকির মধ্য দিয়ে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জরাজীর্ণ ও অরক্ষিত ডাকঘরগুলো থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে, নেই জানালা-দরজা। সামান্য বৃষ্টিতেই ভেতরে পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র। মাদারীপুরের চরমুগরিয়া, কুলপদ্বী, পুরানবাজার, মস্তফাপুর এলাকার ডাকঘরসহ অধিকাংশ ডাকঘরের অবস্থা জরাজীর্ণ।

জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকায় রয়েছে উপডাকঘর। এটি ব্রিটিশ আমলে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার অধীনে নির্মাণ করা হয়। এরপর তেমন একটা সংস্কার হয়নি। বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে আছে। এই ডাকঘর থেকে ১৫টি ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এই গুরুত্বপূর্ণ একতলা ভবনটি থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। আবার কোথাও রড বেরিয়ে গেছে। বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথি পানিতে ভিজে যায়। তারপরও দীর্ঘদিন ধরে এই ভবনে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।

কুলপদ্বী এলাকার ডাকঘরটি টিনের তৈরি। দরজা-জানালাও ঠিকমতো লাগানো যায় না। রোদ-বৃষ্টি ভেতরে ঢোকে। এতে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ভিজে যায়। এমনকি চোরের ভয়ে কর্মচারীদের অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যেতে হয়। পুরানবাজারের ডাকঘরের চিত্রও একই।

কুলপদ্বী এলাকার ডাকঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুলপদ্বী এলাকার ডাকঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

চরমুগরিয়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহজাহান খান বলেন, ‘আমি বহু বছর ধরে এই চরমুগরিয়া এলাকার ডাকঘরের এই অবস্থা দেখে আসছি। জরাজীর্ণ ভবনে যুগের পর যুগ কার্যক্রম হয়ে আসছে। এর কোনো উন্নতি হয়নি।’

পুরানবাজার এলাকার বাসিন্দা সোহাগ হাসান বলেন, ‘মাদারীপুর শহরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হচ্ছে পুরানবাজার। এখানকার ডাকঘরই জরাজীর্ণ অবস্থা।’

মাদারীপুরের চরমুগরিয়ার উপডাকঘরের পোস্টমাস্টার আব্দুস সামাদ ফকির বলেন, ‘আমাদের এ ভবনটি অনেক আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এই ভবন থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। একটু বৃষ্টি হলে ভেতরে পানি ঢুকে যায়। এই ঝুঁকির মধ্যেই আমাদের সব কাজ করতে হচ্ছে।’

পুরানবাজার এলাকার ডাকঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুরানবাজার এলাকার ডাকঘর। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর শহরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পুরানবাজার ডাকঘরের পোস্টমাস্টার মেহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। বৃষ্টি হলে টিনের চালা দিয়ে চুইয়ে ভেতরে পানি পড়ে। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ভিজে যায়। আলমারিও ভাঙা। অনেক সময় চোরের ভয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে করে বাড়িতে নিয়ে যেতে হয়।’

মাদারীপুর প্রধান ডাকঘরের পরিদর্শক মো. জিহাদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন ভবন নির্মাণ করতে একাধিকবার আঞ্চলিক অফিসকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। আমরা চাই, দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক। নতুন ভবন নির্মাণ হলে কার্যক্রমও অনেক বেড়ে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত