Ajker Patrika

বিরোধের জেরে একের পর এক খুন, ফেসবুক পোস্টে স্বীকারোক্তি

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি  
আপডেট : ০২ মে ২০২৫, ২০: ১৩
নিহত সানা মাঝির স্ত্রী ফাতেমা বেগমের আহাজারি। সঙ্গে তাঁর তিন শিশুসন্তান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত সানা মাঝির স্ত্রী ফাতেমা বেগমের আহাজারি। সঙ্গে তাঁর তিন শিশুসন্তান। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জ সদরে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধের জেরে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে। ২৮ বছর ধরে চলা এই রক্তারক্তির সর্বশেষ শিকার হয়েছেন একজন গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে।

মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মাকাহাটি এলাকায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে একজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাত ৩টার দিকে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় সেখানে একটি পাইপগান ও দুটি কার্তুজ পাওয়া যায়।

নিহত ব্যক্তির নাম সানা মাঝি (৪২)। তিনি মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকাহাটি এলাকার প্রয়াত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে। তাঁকে খুনের কথা শিকার করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন একই এলাকার শামসুল মাঝির ছেলে বাবু মাঝি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে মাকাহাটি তালগাছতলা এলাকায় মসজিদের মাইকে ‘ডাকাত’ পড়ার ঘোষণা দিয়ে সানাকে প্রতিপক্ষ বাবুর লোকজন পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে সানা অচেতন হয়ে পড়লে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।

এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাকাহাটি গ্রামের শামসুল ও মোহাম্মদের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। একে কেন্দ্র করে ১৯৯৭ সালে খুন হন মোহাম্মদ। এর বদলা নিতে শামসুলের ছেলে শিপন মাঝিকে ২০০১ সালে খুন করা হয়। এই ঘটনায় ২০০৪ সালে আদালতে মোহাম্মদের ছেলে খলিল মাঝিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই খুনের জের ধরেই মোহাম্মদের আরেক ছেলে সানাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফেসবুকে পোস্টে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন শিপনের ভাই বাবু।

সানার ছোট ভাই আসাদ মাঝি বলেন, ‘আমার ভাই খুব গরিব মানুষ ছিলেন। বাড়িতে থাকার জায়গা না হওয়ায় তিনি দেড় বছর ধরে পাশের ডেকরাপাড়া গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে থেকে দিনমজুরের কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার স্বাধীন নামের বাবুদের এক আত্মীয় কাজের কথা বলে ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে জানতে পারি তাকে বাবুর বাড়িতে আটকে নির্যাতন করা হচ্ছে। বাবু, আলামিন, কাউসার, হিরণ, মুন্নাসহ অনেকেই নির্যাতন করেছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি বাবুদের বাড়ির পাশে মাকাহাটি রাস্তার ওপর ভাইকে মেরে ফেলে রাখা হয়েছে।’

নিহত সানার স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার আট বছর ও চার বছর বয়সী দুটা মেয়ে এবং আট মাসের একটি ছেলে আছে। আমার স্বামীর প্রতি ওদের এত আক্রোশ জানলে আমি স্বামীকে ঘর থেকে বের হতে দিতাম না। ওরা যদি আমার স্বামীর একটি হাত, একটি পা কেটে দিত, তারপরও আমি আমার সন্তানদের নিয়ে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতে পারতাম। ওরা আমার স্বামীকে নির্দয়ের মতো কুপিয়ে ও পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই।’

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ববিরোধের জেরে সানাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান শুরু করেছেন। আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে। শিগগির তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত