Ajker Patrika

সচিবালয়ে আনসার–শিক্ষার্থী সংঘর্ষের চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১২: ৩৬
সচিবালয়ে আনসার–শিক্ষার্থী সংঘর্ষের চিত্র

চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে কয়েক দিন ধরে আনসার সদস্যরা রাজপথ অবরোধ করে রাখছিলেন। আজ রোববার সকাল থেকে তাঁরা সচিবালয় এবং আশপাশের সব ফটকের সামনে অবস্থান নেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ গণমাধ্যমকর্মীরাও ভেতরে ঢুকতে পারেননি। পরে আনসারদের চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তখন আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন সমন্বয়ক নাসির মিয়া। 

 আনসার সদস্যদের হটিয়ে দেওয়ার পর ছাত্র–জনতার সামনে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকাকিন্তু এরপরও সচিবালয় ফটকের অবস্থান নেন আনসার সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা কর্মকর্তা–কর্মচারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে অবরুদ্ধ করেন তাঁরা। 

 ছাত্র–জনতার ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্যরা। কিছু আনসার সদস্য ইউনিফরম খুলে আত্মসমর্পণ করেন। ছবি: আজকের পত্রিকাএই খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁরা সচিবালয় অভিমুখে যাত্রা করেন। সচিবালয়ের সামনে আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। সচিবালয় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জনতাও যোগ দেয়। 

সচিবালয় আটকে পড়া সমন্বয়কদের উদ্ধার করতে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আনসার সদস্যদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাসংঘর্ষ চলাকালে কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দও পাওয়া যায়। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থীকে রাস্তায় ফেলে আনসার সদস্যদের মারধর করতে দেখা যায়। 

আনসার সদস্যদের হটিয়ে সচিবালয়ের সামনে ছাত্র–জনতার জমায়েত। ছবি: আজকের পত্রিকাসংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। এ ছাড়া আনসার সদস্য এবং সাংবাদিকও রয়েছে। 

 এক শিক্ষার্থীকে মাটিতে ফেলে বেদম মারধর করেন কিছু আনসার সদস্য। ছবি: আজকের পত্রিকাসচিবালয়ে আটকে পড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও আহত হয়েছেন। তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

সচিবালয়ের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতার জমায়েত।একপর্যায়ে ছাত্র–জনতার প্রতিরোধের মুখে আনসার সদস্যরা পিছু হটতে বাধ্য হন। ধাওয়া খেয়ে অনেকেই সচিবালয় এলাকা থেকে পালিয়ে যান। এর মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক আনসার সদস্যকে ঘিরে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা ইউনিফরম খুলে হাতজোড় করে মাফ চান। পরে সেনাবাহিনী এসে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। 

 বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতাকে সামলানোর  চেষ্টা করেন সেনা সদস্যরা।আধা ঘণ্টার মধ্যে সচিবালয় এলাকা ছাত্র–জনতার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এ সময় সচিবালয়ের ভেতর আটকে পড়া কর্মকর্তা–কর্মচারী ও দর্শনার্থীদের নিরাপদে বের করে আনা হয়। 

 সংঘর্ষে আহত এক নারী আনসার সদস্যকে ধরাধরি করে নিয়ে যান সহকর্মীরা।সচিবালয় এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। 

 বিক্ষুব্ধ ছাত্র–জনতা এক আনসার সদস্যকে মারধরের চেষ্টা করলে অন্যরা তাঁকে রক্ষার চেষ্টা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকাএদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বরে জড়ো হয়ে হাজারখানেক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের নিরাপত্তায় আশপাশে সেনা ও বিজিবির সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত করল চীন

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

চীনের সহায়তায় বিদ্রোহীদের কাছে হারানো অঞ্চল আবার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নালিতাবাড়ীতে ইসলামি সম্মেলনে চার যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ে

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
বিয়ের খুতবা ও আকদ পরিচালনা করেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির আমির আল্লামা আবদুল হামিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বিয়ের খুতবা ও আকদ পরিচালনা করেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির আমির আল্লামা আবদুল হামিদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ইসলামি সম্মেলনে চারটি যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় শহীদ মিনার মঞ্চে মানবকল্যাণ সংস্থা ‘ইনসাফ’-এর আয়োজনে এই বিয়ে চারটি অনুষ্ঠিত হয়।

সম্পূর্ণ বিনা যৌতুকে ও নামমাত্র খরচে আয়োজিত এই বিয়ের আয়োজন স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইত্তেফাকুল উলামা নালিতাবাড়ী শাখার সভাপতি মাওলানা উবায়দুর রহমান। বিয়ের খুতবা ও আকদ পরিচালনা করেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির আমির আল্লামা আবদুল হামিদ।

ইনসাফ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সময়ে বিয়েতে অযথা আড়ম্বর ও ব্যয়বহুল আয়োজনের কারণে অনেক যুবক বিয়ে করতে সাহস পান না। এই পরিস্থিতিতে ইসলামি রীতি মেনে, স্বল্প খরচে ও সম্পূর্ণ যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন শুরু করেছে সংস্থাটি।

যৌতুকবিহীন বিয়েতে অংশ নেন চার যুগল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন,

প্রথম যুগল—পশ্চিম শিমুলতলা গ্রামের সিরাজ আলীর ছেলে ও ইনসাফের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুল্লাহ পাহাড়ী এবং বাগিচাপুর গ্রামের বজলুর রশিদের মেয়ে আলেমা মোছাম্মদ হাবিবা।

দ্বিতীয় যুগল—নাকশী গ্রামের সাইফুল আলমের ছেলে ও ইনসাফের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাব্বির হাসান এবং ফুলপুর বান্দেরবাজার গ্রামের রূপচাঁদ মিয়ার মেয়ে মোছা. ইভা ইসলাম।

তৃতীয় যুগল—বাইপাস দক্ষিণ কালিনগর গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে মোহাম্মদ আবু সাঈদ এবং গাজির খামার গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে মোছা. রেশমা।

চতুর্থ যুগল—ফকিরপাড়া গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আলি আহসান মোজাহিদ এবং ফুলপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে জাকিয়া খাতুন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খতমে নবুওয়াত সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি আল্লামা মুফতি ওয়াহিদুল আলম, মুফতি শহীদুল্লাহ মাহমুদ এবং নালিতাবাড়ী নূর মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আরিফুর রহমান।

ইনসাফের চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুল্লাহ পাহাড়ী বলেন, ‘যৌতুক প্রথা ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায় ও সমাজের জন্য অভিশাপ। সমাজ থেকে এই প্রথার অবসান ঘটাতে ইনসাফ যৌতুকবিহীন বিবাহের এই উদ্যোগ নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত করল চীন

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

চীনের সহায়তায় বিদ্রোহীদের কাছে হারানো অঞ্চল আবার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনখেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা ফুলবাড়ীর কৃষক

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
পোকার আক্রমণে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে। ছবি: আজকের পত্রিকা
পোকার আক্রমণে নষ্ট হচ্ছে খেতের ফসল। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকের কপালে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সপ্তাহ দুয়েক পর শুরু হবে পুরোদমে আম ধান কাটা-মাড়াই। কৃষকের গোলায় উঠবে নতুন আমন ধান। এর মধ্যে মাজরা ও কারেন্ট পোকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আমনচাষিরা। মৌসুমের শেষ সময়ে এসে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা।

উপজেলার অধিকাংশ মাঠে পোকার আক্রমণ বেড়েছে। বেশ কিছু জমিতে ধানগাছ শুকিয়ে গেছে। কৃষকেরা ফসলের মাঠে ওষুধ স্প্রে করছেন; কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ফলে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

দিনাজপুর-২
দিনাজপুর-২

কৃষকেরা বলছেন, কারেন্ট পোকা ধানগাছের নিচের অংশ কেটে দিচ্ছে। ফলে পাতা শুকিয়ে ধানের গাছ মরে যাচ্ছে। অপর দিকে মাজরা পোকার আক্রমণে পরিপক্ব হওয়ার আগেই ধানের শিষ চিটা হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া কিছু ধানগাছের গোড়া পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় চরম হতাশায় দিন কাটছে তাদের।

মাদিলা হাট এলাকার কৃষক আবু সালেহ ও আলাদীপুর এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, ‘জমিতে পোকার আক্রমণে চরম সমস্যায় পড়েছি। ধানের শিষ বের হয়েছে, অথচ জমিতে এখন কীটনাশক ছিটানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ছিটানো হচ্ছে, তবু পোকার হাত থাকে রেহাই মিলছে না। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’

দিনাজপুর-৩
দিনাজপুর-৩

কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, তালিকাভুক্ত কিছু নির্দিষ্ট কৃষক ছাড়া কৃষি কর্মকর্তা কিংবা মাঠকর্মীরা তাঁদের কোনো খোঁজ রাখেন না। ফলে কীটনাশকের দোকানদারেরা যে ওষুধ দেন, তা জমিতে স্প্রে করা হয়।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় ১৮ হাজার ১৪৮ হেক্টর জমিতে আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ও উফশী জাতের তেজগোল্ড, ব্রি-৯০, বিনা-১৭, সম্পাকাটারি, জাঁপাড়ি, ধানিগোল্ডসহ বিভিন্ন আগাম জাতের ধান ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। আগাম জাতের এসব আমন ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আবওহাওয়ার কারণে এবার একটু বেশি পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে মাঠপর্যায়ে উঠান বৈঠকসহ কৃষকদের সচেতন করতে আমরা কাজ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে (৩৪) সুগন্ধি ধান যেহেতু শেষে পাকে, তা নিয়ে একটু বেশি চিন্তিত।

কৃষকদের অভিযোগ অস্বীকার করে এ কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে মাঠকর্মীরা সার্বক্ষণিক মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নিয়ে কাজ করছে। আমি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। কৃষকদের ভালো মানের কীটনাশক ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, কৃষকদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া সম্ভব নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত করল চীন

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

চীনের সহায়তায় বিদ্রোহীদের কাছে হারানো অঞ্চল আবার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পিরোজপুর-২ আসন: বিএনপিতে প্রতিযোগিতা মাঠে একা সাঈদীর ছেলে

মো. হাবিবুল্লাহ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর)
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ১৭
আহম্মেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন, মাহামুদ হোসেন, ফকরুল আলম, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মো. জুয়েল মৃধা ও শামীম বিন সাঈদী।
আহম্মেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন, মাহামুদ হোসেন, ফকরুল আলম, মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মো. জুয়েল মৃধা ও শামীম বিন সাঈদী।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে পিরোজপুর-২ আসনে রাজনৈতিক তৎপরতা। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন ইতিমধ্যে জেলার অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত হয়েছে। যদিও দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বিভিন্নভাবে সক্রিয় রয়েছেন। প্রচার চালাচ্ছেন নিজেদের কর্মী নিয়ে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রার্থী হিসেবে দলের প্রয়াত নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদীর নাম ঘোষণা করেছে। কোনো অভ্যন্তরীণ বিভাজন ছাড়াই তিনি নির্বিঘ্নে ভোটের মাঠে রয়েছেন। তৃণমূল থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যন্ত সক্রিয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জামায়াতের এই প্রার্থী।

এ আসনে শরিক দলসহ বিএনপির অন্তত ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁরা হলেন, ভান্ডারিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি আহম্মেদ সোহেল মঞ্জুর সুমন, ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি মো. জুয়েল মৃধা, নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফকরুল আলম, সাবেক সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল বেরুনী সৈকত এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও পারিবারিক প্রভাবের কারণে সোহেল মঞ্জুর সুমন আলোচনায় এগিয়ে। তাঁর বাবা বিএনপির সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রী নুরুল ইসলাম মঞ্জুর। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সুমনের গ্রহণযোগ্যতা এবং সাংগঠনিক দক্ষতা তাঁকে হাইকমান্ডের সুনজরে রেখেছে।

মাহমুদ হোসেন ও জুয়েল মৃধা সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে জনসম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছেন। দুজনে ভোটারদের নজর কাড়তে যুক্ত আছেন দান-অনুদানে। ইতিমধ্যে তাঁরা নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ায় গড়েছেন শক্ত ঘাঁটি। ফকরুল আলম ও সৈকতও তৃণমূলে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। অন্যদিকে ইরানের নিজস্ব প্রচারণা না থাকলেও তিনি দাবি করেছেন, ধানের শীষের প্রচার-প্রচারণা চলছে। ধানের শীষ মানেই তিনি।

প্রত্যেকেই দলের প্রতি আনুগত্য ও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। সোহেল মঞ্জুর সুমন বলেন, ‘দলের দুর্দিনে পাশে ছিলাম, মনোনয়ন পেলে বিএনপির হারানো আসন পুনরুদ্ধার করে তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। দল মনোনয়ন দিলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা জুয়েল মৃধা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছি; দল তা মূল্যায়ন করবে।’

ইরান বলেন, ‘আমি জোটের প্রার্থী। যত সময় পর্যন্ত এখান থেকে কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া হবে, আমিই একমাত্র প্রার্থী। কারণ ২০১৮ সালে বিএনপি থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তাই আমিই মনোনয়নের দাবিদার।’

স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী কামাল হোসেন বলেন, ‘পিরোজপুর-২ আসনে বিএনপি থেকে যাঁরা মনোনয়ন চাচ্ছেন, তাঁরা সবাই যোগ্য লোক। তবে দেশনায়ক তারেক রহমান যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেবেন; আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করব।’

প্রবীণ রাজনীতি-সচেতন মো. আবুল হোসেন মৃধা বলেন, ‘শুনছি বিএনপি থেকে অনেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন। একজন সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত লোক এ আসনে নেতৃত্বে দেখতে চাই। যাঁরা এলাকার জন্য কাজ করবে, আশা করি দল সে ধরনের ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেবে।’

স্থানীয় রাজনীতি-সচেতন ব্যক্তিরা মনে করছেন, বিএনপির প্রার্থী নির্ধারণের পরেই এ আসনে চূড়ান্ত নির্বাচনী সমীকরণ স্পষ্ট হবে। আপাতত জামায়াতের প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী এককভাবে প্রচারণার সুবিধা ভোগ করছেন। বিএনপির অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ও মনোনয়ন চূড়ান্তে দেরি নির্বাচনী ফলে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও তারা মনে করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত করল চীন

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

চীনের সহায়তায় বিদ্রোহীদের কাছে হারানো অঞ্চল আবার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সড়কের তিন গুণ বরাদ্দ নালায়, তবু ভোগান্তি

অরূপ রায়, সাভার (ঢাকা) 
সাভার পৌরসভার কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়ক। আজকের পত্রিকা
সাভার পৌরসভার কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়ক। আজকের পত্রিকা

কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় সুড়ঙ্গ আর ঢাকনাবিহীন ম্যানহোল। এসব সুড়ঙ্গ আর ম্যানহোলের কোনোটাতে বাঁশ আর কোনোটাতে আবর্জনা। এই চিত্র রাজধানীর অদূরে সাভার পৌর এলাকার এক নম্বর ওয়ার্ডের বেদেপাড়া হিসেবে পরিচিত কাঞ্চনপুর ও পোড়াবাড়ি মহল্লার প্রধান সড়কের। ২০২২ সালে পাইপ ড্রেনসহ সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।

সাভার পৌরসভার প্রকৌশল শাখা থেকে জানানো হয়েছে, বেদেপাড়ার প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্য লুৎফর রহমানের মার্কেট থেকে বেদেপল্লির পোড়াবাড়ি সেতু পর্যন্ত ১ হাজার ২৪০ মিটার পাইপ ড্রেন নির্মাণসহ ১ হাজার ১০০ মিটার সড়ক পাকা করা হয়। ২০২২ সালে তমা কনস্ট্রাকশন এবং সিকদার কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড বিল্ডার্স নামের দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই সড়ক পাকাকরণসহ পাইপ ড্রেন নির্মাণের কাজ করে। পুরো কাজের মধ্যে ড্রেন নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ৪ কোটি ১৬ লাখ ২৭৯ টাকা এবং সড়ক পাকাকরণে ব্যয় করা হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার ৬২২ টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দলিল লেখক আক্তার হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে সেতু পর্যন্ত অন্তত ১৫টি স্থানে কার্পেটিংসহ সড়কের কয়েক ফুট জুড়ে ভেতরের দিকে ঢুকে সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা কয়েকটি সুড়ঙ্গ মাটি ও আবর্জনা দিয়ে ভড়াট করে দিলেও কয়েকটি সুড়ঙ্গ এখনো দৃশ্যমান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের পাশাপাশি চুক্তি অনুযায়ী কাজ না করায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক পাকাকরণের মাত্র আড়াই বছরের মধ্যে সড়কটি প্রায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বেদেপাড়ার লোকজন জানান, কয়েক মাস ধরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রথমে ছোট গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এর পর নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সেখানে সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে কয়েক গজ পরপরই ছোট-বড় অনেক গর্ত ও সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে সড়কটিতে। অনেক ম্যানহোলের ঢাকনা উঠে গেছে আবার অনেক ম্যানহোলের চার পাশে দেবে গেছে। তাঁরা আরও জানান, সুড়ঙ্গ বা গর্ত বড় হয়ে গেলে বিষয়টি পৌরসভাকে জানানো হয়। কিন্তু পৌরসভা থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অবশেষে স্থানীয় লোকজন কোনো কোনো স্থানে মাটি ও আবর্জনা দিয়ে ভড়াট করে দেন। কিন্তু তা স্থায়ী হয় না। বৃষ্টি হলেই আবার তা সরে যায়। তাই পথচারী ও যানবাহনের শ্রমিকদের সতর্ক

করতে সৃষ্টি হওয়া গর্ত ও সুড়ঙ্গে বাঁশ পুঁতে বা আবর্জনা দিয়ে রাখা হয়, যা দেখে যে কেউ বুঝতে পারেন জায়গাটি বিপজ্জনক।

কাঞ্চনপুর মহল্লার হালিমা বেগমের চায়ের দোকানের সামনের বাঁকে কয়েক ফুটের ব্যবধানে দুটি সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়েছিল কয়েক মাস আগে। মাঝেমধ্যে সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয়রা।

হালিমা বেগম বলেন, ‘মাস তিনেক আগে আমার দোকানের সামনে সড়কে ছোট একটা গর্তের মতো হয়। কয়েক দিনের মধ্যে ওই গর্ত বেশ বড় হয়ে যায়। একপর্যায়ে তা অনেক নিচের দিকে চলে যায় এবং সুড়ঙ্গের মতো সৃষ্টি হয়।’

যোগাযোগ করা হলে আত্মগোপনে থাকা সাভার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আহমেদ বলেন, ‘পাইপ ড্রেনের ওপরে যে মাটি ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি। এ কারণে কার্পেটিংয়ের নিচ থেকে দেবে গিয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হচ্ছে।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বলেন, ‘সম্ভবত পাইপ ড্রেনের জোড়ায় ছিদ্র হয়ে পানি বের হয়। এ কারণে ওই স্থানের মাটি সরে গিয়ে সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হয়। আমি লোক পাঠিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা কিশোরগঞ্জের আইনজীবীর, ফেসবুকে ঝড়

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত করল চীন

‘বিএনপি করি, শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’: সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি-পদোন্নতির ক্ষমতা পাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্ট

চীনের সহায়তায় বিদ্রোহীদের কাছে হারানো অঞ্চল আবার দখলে নিচ্ছে মিয়ানমার

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত