Ajker Patrika

সড়ক থেকে দূরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে সেতু, নির্মাণ করল কে?

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
সড়ক থেকে দূরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে সেতু, নির্মাণ করল কে?

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার দুর্গম ইউনিয়ন ধনপুর। ধনপুর বাজারের পূর্ব-দক্ষিণে কাটাখালী খালে ১০ বছর ধরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে সড়কহীন একটি সেতুটি। অপরিকল্পিত নির্মাণ ও সংযোগ সড়ক না থাকায় নির্মাণের পর থেকে সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। এ সেতুর দায়িত্বও নিতে চায় না কোনো দপ্তর।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ইটনা-ধনপুর- কাঠইর সড়কের দিনেশপুর এলাকায় কাটাখালী খাল। এই খাল গয়ড়া বিল থেকে কুকুর মারা হাওর দিয়ে গ্রামে উত্তর পাশে প্রবাহিত সুরমা নদীতে যুক্ত হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে ধনপুর ইউনিয়নের, বলরামপুর, চাছুয়া, মথুরাপুর, কাঠইর, করনচা, রমানাথপুর, বিঞ্চুপুর ও সুভদ্রাপুরসহ মৃগা ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ হাটবাজার ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন।

স্থানীয়রা জানান, বাঁশের সাঁকো বা নৌকা দিয়ে পার হতে হয় খাল। প্রায় ১০ বছর আগে খাল পারাপারে সড়কের কয়েক শ মিটার দক্ষিণে, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করে। স্থানীয় বাধা ও পরামর্শ উপেক্ষা করে নির্মিত সেতুটি একদিনও মানুষের ব্যবহারে আসেনি।

মূল সড়ক থেকে কয়েক মিটার দূরে সেতুটির দায়িত্ব কোনো দপ্তর নিচ্ছে নামূল সড়কের বাইরে এই সেতু নির্মাণ ও দীর্ঘদিন সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করার কারণ জানতে চাইলে ইটনা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) খলিলুর রহমান মোল্লাহ বলেন, ‘সেতুটি ত্রাণ মন্ত্রণালয় বা পিআইও নির্মাণ করেনি।’ একই প্রশ্নে ইটনা উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাশেদুল আলম বলেন, ‘কাটাখালী খালের সেতুটি এলজিইডি বিভাগের নয়।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১২-১৩ অথবা ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর সেতুটি নির্মাণ করে। ইটনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহবুবুর রহমান নির্মাণের দায়িত্ব পায়। কিন্তু মূল সড়কের সঙ্গে কোনো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।

সেতু নির্মাণকারী দপ্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার মাহবুবর রহমান বলেন, ‘অনেক দিন আগের বিষয়, যতটা মনে পরে সম্ভবত ১৫-১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। প্রায় ৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন বাস্তবায়ন অফিসের (পিআইও) অফিসের অধীনে আমি নির্মাণ করি।’

মূল সড়ক থেকে কয়েক মিটার দূরে সেতুটির দায়িত্ব কোনো দপ্তর নিচ্ছে নাস্থানীয় বাসিন্দা হিতেন্দ্র চন্দ্র দাস বলেন, ‘কেন এই ব্রিজ করেছিল জানি না। ব্রিজটা একদিনও মানুষের কাজে লাগেনি। পানির মধ্যে সাক্ষী গোপালের মতো দাঁড়িয়ে আছে! সরকারি টাকা নষ্ট করার জবাব কে দেবে! আর কে নেবে!’

ধনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রদীপ চন্দ্র দাস বলেন, ‘কাটাখালী খালের সেতুটি অপরিকল্পিত ভাবে নির্মাণের ফলে, মানুষের কাজে আসেনি। আসবেও না। সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া উন্নয়ন করলে তা মানুষের কাজে আসে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত