Ajker Patrika

কান্নার শব্দে রাস্তার পাশে মিলল নবজাতক

প্রতিনিধি, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১: ৩৬
কান্নার শব্দে রাস্তার পাশে মিলল নবজাতক

মানিকগঞ্জের ঘিওরে রাস্তার পাশ থেকে এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের পুটিয়াজানী গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় গ্রামবাসী। আজ সকালে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় শিশুটিকে ঘিওর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টায় হঠাৎ নবজাতকের কান্না শোনা যায়। স্থানীয় মো. লাভলু মিয়া ও তাঁর স্ত্রী বাসনা আক্তার কান্নার উৎস খুঁজতে বের হয় রাস্তায়। পরে রাস্তার পাশে এক ফুটফুটে নবজাতক খুঁজে পায়। নবজাতকটির শরীরে রক্তের দাগ লেগে ছিল। লাভলুর স্ত্রী নবজাতকটিকে বাড়ি নিয়ে আসেন। ওই দম্পতি শিশুটির নাম রাখেন বিলকিছ।

পরে আজ মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ওয়াদিয়া শাবাব, থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব, ওসি তদন্ত মোহাব্বত খান, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান, এসআই আল মামুনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওই মেয়ে নবজাতককে লাভলুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

বাসনা আক্তারের শাশুড়ি লাইলী বেগম বলেন, দিবাগত রাত ১১টার তিনি নিজ বাড়ির টিউবওয়েলের পাশে মাছ ধোয়ার সময় শিশুর কান্নার শব্দ শুনতে পান। পরে দেখতে পান রাস্তায় মাটিতে শুয়ে কাঁদছিল ওই শিশুটি। নবজাতককে দেখে মনে হয়েছে কয়েক ঘণ্টা পূর্বে তার জন্ম হয়েছে।

বর্তমানে শিশুটি ঘিওর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাসনা আক্তারই শিশুটির দেখাশোনা করছেন।

ঘিওর থানার ওসি মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। এই শিশুর অভিভাবকদের চিহ্নিত করতে পুলিশ কাজ শুরু করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুটিকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনা ও নিরাপত্তার বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি রিয়াজ।

ঘিওর হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাসিব আহসান জানান, শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। তবে আরও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওয়াদিয়া শাবাব জানান, শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিশুটির চিকিৎসা ও সুরক্ষায় সমাজ সেবা কর্মকর্তা, হাসপাতালের চিকিৎসক ও পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিশুটি সুস্থ হয়ে ওঠার পর এ বিষয়ে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাসনা আক্তার বলেন, শিশুটিকে পাওয়ার পর থেকে সারা রাত আমার বুকে ছিল। আজ হাসপাতালে আনার পর থেকে আমার কাছেই রয়েছে। অনেক মায়া পড়ে গেছে শিশুটির ওপর। আমার কোন মেয়ে নেই। এই মেয়েটিকে আমার মেয়ে হিসেবে মানুষ করতে চাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত