Ajker Patrika

ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন: মতবিনিময় সভায় আসেননি নৌকার প্রার্থী, সিইসির উষ্মা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৭ জুন ২০২৩, ১৬: ৩২
ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন: মতবিনিময় সভায় আসেননি নৌকার প্রার্থী, সিইসির উষ্মা প্রকাশ

আসন্ন ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত না আসায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। 

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসির সম্মেলনকক্ষে এই উপনির্বাচনের আট প্রার্থীকে নিয়ে আচরণবিধি প্রতিপালনবিষয়ক মতবিনিময় সভা হয়। সভায় উপস্থিত থাকতে আগেই সব প্রার্থীকে জানানো হয়েছিল। 

যথাসময়ে বৈঠক শুরু হলেও প্রায় আধা ঘণ্টা পর নৌকার প্রার্থীর প্রতিনিধি হিসেবে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার উপস্থিত হন। এ সময় সিইসি সবার উপস্থিতিতে প্রতিনিধির কাছে পরিচয় জানতে চান। তখন জানানো হয়, মোহাম্মদ আলী আরাফাতের প্রতিনিধি হিসেবে এসেছেন তিনি। 

এ সময় সিইসির এক পাশে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর, অপর পাশে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার উপস্থিতিতে এক সারিতে বসেছিলেন প্রার্থী ও প্রতিনিধিরা। 

সামনে মাইক বন্ধ করে কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করে সিইসি বলেন, উনি (আরাফাত) কেন আসেননি, প্রতিনিধি কেন এলেন, মিটিং শুরুর আধা ঘণ্টা পরে কেন এসেছেন? এ সময় প্রসঙ্গক্রমে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের সময়ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে মতবিনিময়ে পাওয়া যায়নি বলেন সিইসি। জবাবে আরাফাতের প্রতিনিধি বৈঠকে জানান, প্রার্থী অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরাফাতের প্রতিনিধি উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার সাংবাদিকদের বলেন, মোহাম্মদ আলী আরাফাত গতকালই ইসির মতবিনিময় সভার আমন্ত্রণের চিঠি পেয়েছিলেন। তিনি গতকাল দু-তিনটি প্রচারকাজে অংশ নেওয়ার পর অসুস্থ বোধ করছেন। তার জ্বর। তিনি নিজের ও অন্যদের নিরাপত্তা বিবেচনায় নিজে সভায় না এসে আমাকে পাঠিয়েছেন। 

প্রতিনিধি হয়ে বিলম্বে সভাস্থলে পৌঁছানোয় সিইসির জেরার মুখে পড়ে প্রার্থীর পক্ষে সভায় আর কোনো বক্তব্যও রাখেননি বলে জানান তিনি। 

সিইসির কঠোর হুঁশিয়ারি
সমাপনী বক্তব্যে আচরণবিধি প্রতিপালনে অতি উৎসাহী হয়ে প্রচারণা না করে প্রার্থীদের সহিষ্ণু আচরণ করার আহ্বান জানান সিইসি। 

সেই সঙ্গে সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো ব্যালট পেপারে অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপি, জবরদখলের চেষ্টা করলে প্রয়োজনে সম্পূর্ণ ভোট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। 

সিইসি বলেন, ‘আমরা আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়টির জন্য আপনাদের ডেকেছি।...আমি কোনোভাবেই চাই না আচরণ ভঙ্গ হোক। আশা করি সেটা হবে না। অনেক সময় অজ্ঞতাবশত আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়। তারা অতি উৎসাহী হয়ে কিছু কিছু কর্ম করে ফেলেন আচরণ ভঙ্গজনিত। 

সোমবার প্রতীক পেয়ে প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। আগামী ১৭ জুলাই এই আসনে উপনির্বাচন হবে। 

আচরণবিধির বিষয়ে ইসির কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, ‘আপনাদের কথা স্পষ্ট হলে আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রয়োগের চেষ্টা করব। অতীতেও আমরা এই চেষ্টা করেছি। ক্ষেত্রেবিশেষে আমরা প্রার্থিতাও বাতিল করেছি। ওই রকম কোনো ঘটনা আশা করি ঘটবে না। আপনারাও সচেতন। আপনারা সংসদ সদস্য হয়ে আইন প্রণয়ন করবেন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। এটা একান্তভাবে কাম্য। কোনোভাবে সহিংস মনোভাব না দেখিয়ে সহিষ্ণু হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। 

সিইসি বলেন, কাউকে আক্রমণ করবেন না। আক্রমণাত্মক কথা বলবেন না। মিছিল করতে গিয়ে ঢিল ছুড়বেন না। দোষারোপ করে বক্তব্য দেওয়াটা পরিহার করে চলাটা ভালো। মিথ্যা প্রচারণা আপনার বিরুদ্ধে হলে সেটা কাউন্টার করবেন ভদ্রভাবে। অহিংসভাবে। সহিংসতার আশ্রয় নেবেন না। 

এই উপ নির্বাচন ইভিএমে না হলেও ব্যালটের ভোট সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণের কথা স্মরণ করিয়ে দেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন সিসিটিভি দিয়ে নিবিড়ভাবে মনিটর করব। অনেকে পেশিশক্তি লাগিয়ে ব্যালটে সিল দিয়ে স্টাম্পিং করতে থাকেন। সেটা কিন্তু করবেন না। এমনও হতে পারে, আমরা চিহ্নিত করতে পারলাম না। সে ক্ষেত্রে আমরা টোটাল ভোট বন্ধ করে দিতে পারব। যদি বুঝি এটা ব্যাপকভাবে হচ্ছে। এর জন্য সার্বিক ভোট বিপন্ন হবে, বাধাগ্রস্ত হবে। এবং জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটবে না। এটা আমাদের কাছে প্রতীয়মান হলে সম্পূর্ণ ভোট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হব।’ 

ভোটে সব কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট দেওয়ার বিষয়ে প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ করে সিইসি বলেন, পোলিং এজেন্ট না থাকলে ভোটের ক্ষেত্রে আপনারা অনেকটাই নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বেন। কেউ অন্যায় আচরণ করছে কি না, কারচুপি হচ্ছে কি না সেটা দেখার জন্য পোলিং লাগবে। নির্বাচন কমিশন এখানে বসে বসে সবকিছু দেখতে পারবে না। পোলিং এজেন্টও সেটা দেখবেন। 

ভোটারদের নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিতে কমিশনের অবস্থান তুলে ধরে সিইসি বলেন, ‘আমরা অনেক সময় অসহিষ্ণু হয়ে উঠি। প্রচারণা চালাতে হবে অহিংস পদ্ধতিতে, শালীনভাবে। আমরা ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চাই। কে কারে ভোট দিল, এটা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। ভোটাররা আসবেন। ভোট দেবেন। বাইরে এসে কোনো অভিযোগ করবেন না। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’ 

সিইসি জানান, কোনো ভোটারকে বাধা দেওয়া যাবে না। তাহলে ভোট প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে কমিশন। 

সভায় জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, মুক্তি জোটের মো. আকতার হোসেন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের রেজাউল করিম স্বপন, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল হোসেন আলম (হিরো আলম) ও তরিকুল ইসলাম ভুঞা অংশ নেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নোয়াখালীতে জিয়া সাইবার ফোর্সের মতবিনিময়, এনসিপি নেতা পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা দাহ

নোয়াখালী প্রতিনিধি
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপির পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের করণীয় এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নোয়াখালী জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) নোয়াখালী জেলা শাখার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার রাতে নোয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করে সভায় অংশগ্রহণকারীরা।

নোয়াখালী জিয়া সাইবার ফোর্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হারুনুর অর রশিদ আজাদ, নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম পলাশসহ আরও অনেকে।

এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

সভায় বক্তারা বলেন, অদৃশ্য শক্তি ক্রমশ দৃশ্যমান হয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করছে। এ অপপ্রচার রুখে দিতে হলে বিএনপির জিয়া সাইবার ফোর্স ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের সঠিক তথ্য ছবি ও প্রমাণ দিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে এবং দল থেকে যাকে ধানের শীষ দিয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাঁর পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে।

সভা শেষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ার কারণে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল এবং তাঁর ছবিসংবলিত কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে তরুণকে গুলি করে হত্যা, বিএনপির দুই গ্রুপে উত্তেজনা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৫
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি গ্রামে প্রতিপক্ষের গুলিতে তুহিন দেওয়ান (২২) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার রাত ১০টার দিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত তুহিন দেওয়ান মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ বেহেরকান্দি এলাকার ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি সেলিম দেওয়ানের ছেলে।মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির বিবদমান দুই গ্রুপের পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে।

এ ঘটনার পর থেকে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের বেহেরকান্দি ও মুন্সিকান্দি গ্রামের বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এতে স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত তুহিন মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ মোল্লা ও বিএনপি নেতা আতিক মল্লিকের অনুসারী।

নিহতের চাচাতো ভাই আকাশ দেওয়ান জানান, রোববার রাতে তুহিন হাঁটার জন্য বাসা থেকে বের হয়। এ সময় মুন্সিকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির নেতা ওজির আলী ও আওলাদ গ্রুপের অনুসারী লিটন ব্যাপারীর নেতৃত্বে পেছন থেকে তুহিনকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও গুলি করে। এ সময় তুহিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য নিয়ে তাদের মধ্যে পূর্বের বিরোধ ছিল বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রান্ত সর্দার জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পিঠে ও ঘাড়ে একাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবির জানান, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে মৌসুমের প্রথম কুয়াশা: তাপমাত্রা কমে ২০-এর নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহীতে নেমে এসেছে এ বছরের প্রথম কুয়াশা। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোর থেকেই রাজশাহী শহর ও আশপাশের উপজেলার গ্রামগুলোর চারপাশ মোড়ানো ছিল ঘন কুয়াশার চাদরে। এই কুয়াশাময় সকাল যেন জানিয়ে দিয়েছে, আসছে শীত, আসছে স্নিগ্ধতার মৌসুম।

শীতের এমন আগমনী ছোঁয়ায় বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। কুয়াশাঢাকা সকাল জানিয়ে দিচ্ছে, শীত আর বেশি দূরে নয়। এদিন ভোরের আলো ফুটলেও মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে চলতে দেখা যায় হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশা ভেদ করে গন্তব্যের পথে ছুটে যায় মানুষ।

এদিকে গ্রামের মাঠে শিশিরভেজা ঘাসে খেলায় মত্ত শিশুরা যেন প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠে। মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো মিলেমিশে সৃষ্টি করে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাকড়সার জালে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু আর ধূসর আকাশে সূর্যের মিটিমিটি আলো। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহরের রেলগেট এলাকায় কাজের সন্ধানে আসা শ্রমিক আবদুল জব্বার বলেন, ‘আজকের সকালেই এবার প্রথমবার শীত টের পেলাম। এখন থেকে হয়তো শীত বাড়বে।’

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, সোমবার ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন রোববার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এখন থেকে তাপমাত্রা কমবে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

২ বছরেই ফাটল বিদ্যালয়ের ২ কোটি টাকার ভবনে, নিম্নমানের কাজের অভিযোগ

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনে ক্লাস চালুর দুই বছর পার হতে না হতেই ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রায় দুই কোটি দুই লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ভবনের বারান্দা, সিঁড়ি, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল ধরায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকেরা।

চিরিরবন্দর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের বানিয়াখাড়ী সরকারি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে ২০২১-২২ অর্থবছরে দুই কোটি দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।

নিম্নমানের কাজের অভিযোগ এনে স্থানীয় অভিভাবক মোস্তাফিজুর রহমান এবং বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় দুই বছরের মধ্যেই বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। নির্মাণকাজের সময় আমরা মৌখিকভাবে ইঞ্জিনিয়ারকে অভিযোগ করেছিলাম, কিন্তু তিনি আমাদের কথায় কোনো গুরুত্ব দেননি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘নতুন ভবনে ক্লাস চালুর দুই বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নিচতলার সিঁড়ির বারান্দায় বড় ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষের মেঝে ও পিলারের সঙ্গে দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানোর পর তিনি এসে ছবি তুলে নিয়ে গেছেন।’

চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা
চিরিরবন্দরের বানিয়াখাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দা, মেঝে ও দেয়ালে ফাটল। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মিনারা খাতুন বলেন, ‘নতুন বিল্ডিংয়ের দুই বছর এখনো হয়নি, তাতেই মেঝেসহ অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। আমি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তারা দ্রুত মেরামত করার জন্য আশ্বাস দিয়েছে।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার আবেদ আলী মাস্টার বলেন, ‘বিল্ডিং হস্তান্তর করার প্রায় দুই বছর হয়েছে। মেঝেতে শুধু পলেস্তারায় “চিড়” ধরেছে, তেমন কোনো সমস্যা নেই। আমি আমার ম্যানেজারকে পাঠিয়ে দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করব।’

এলজিইডির চিরিরবন্দর উপজেলা প্রকৌশলী মাসুদার রহমান একই সুরে বলেন, ‘বিল্ডিংয়ের মেঝে ও সিঁড়ির কিছু অংশে কেবল পলেস্তারার ওপরে ফাটল বা চিড় ধরেছে। আমি ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত মেরামতের জন্য বলব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত