Ajker Patrika

হারপিক খাইয়ে ৯ মাসের সন্তানকে হত্যার পর গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা 

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৮: ৩৮
হারপিক খাইয়ে ৯ মাসের সন্তানকে হত্যার পর গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা 

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ৯ মাসের কন্যাসন্তানকে হারপিক খাওয়ানোর পর মাও হারপিক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনায় মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার আমিনুর রহমান। 

এর আগে, গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন স্থানীয়রা। পরে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। 

গৃহবধূ আঁখি বেগম (১৮) টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের গাছকাটা শ্রমিক মামুন তালুকদারের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মামুন তালুকদারের স্ত্রী আঁখি বেগম তাঁর ৯ মাসের মেয়ে আফিয়াকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রথমে হারপিক খাওয়ান। নিজেও হারপিক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে তাঁর আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। 

তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক বাচ্চাটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ছাড়া মাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকদের কাছে হারপিক খাওয়ার বিষয়টি জানান তিনি। 

স্থানীয়রা আরও জানান, প্রায় দুই বছর আগে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী গ্রামের নূর আলম শেখের মেয়ে আঁখি বেগমের সঙ্গে একই উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মামুন তালুকদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মামুন তেমন কোনো কাজ করতেন না। মাঝেমধ্যে গাছকাটা শ্রমিকের কাজ করলেও অধিকাংশ সময় বেকার থাকতেন। তাই সংসারে অভাব-অনটন লেগেই ছিল। 

এ কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ ও মনোমালিন্য চলেই আসছিল। এর মধ্যেই ৯ মাস আগে এ দম্পতির একটি মেয়েসন্তান জন্ম নেয়। তারপরও স্বামী কোনো আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করেননি। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই ছিল। 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়। মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল রাতেই গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি খন্দকার আমিনুর রহমান জানান, পরিবারটি অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিন যাপন করছিল। এই কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিয়মিত ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। তাই রাগ, দুঃখ ও অভিমানে মামুন তালুকদারের স্ত্রী আঁখি এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। 

ওসি আরও বলেন, শিশুটির মরদেহ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। তবে ঘটনাটির তদন্ত চলছে। কেউ অভিযোগ করলে অথবা তদন্তে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত