Ajker Patrika

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ছিল পরিকল্পিত: টিআইবির ইফতেখারুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৩, ১৮: ৩৩
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ছিল পরিকল্পিত: টিআইবির ইফতেখারুজ্জামান

পঞ্চগড় শহরের আহম্মদনগর এলাকায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রধান নির্বাহী ড. ইফতেখারুজ্জামান।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা পরিকল্পিত বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ৩ মার্চ এই হামলায় পুলিশের গুলিতে একজন ও বিক্ষোভকারীদের হামলায় দুজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় শতাধিক ব্যক্তি। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়, সেই সঙ্গে হামলা চালানো হয় ওই সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এমন ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। এটা যে ঘটতে পারে, সেটাও অজানা ছিল না। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছিল। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, কেন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলো না।’

টিআইবির প্রধান বলেন, ‘মোটা দাগে এটা সবাইকে উদ্বিগ্ন করে যে, দেশে যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার চেতনা, আমাদের যে সংবিধান তার যে মৌলিক নীতিগুলো আছে তার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক দেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম এবং দেখি। আর সেই জায়গা আমাদের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। সেই জায়গায় এমন একটি ঘটনা সবাইকে উদ্বিগ্ন করে। এর মাধ্যমে সংবিধানের চেতানা, স্বাধীনতার চেতনা পদদলিত করা হচ্ছে।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সমাজের সকল তথ্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটছে। আর প্রধান কারণ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তোষণ। একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন বিষয়গুলোকে উসকে দেওয়া হচ্ছে।’ 

নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী প্রধান জাকির হোসেন বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠদের সুপারম্যাসি প্রতিষ্ঠা করার চিন্তা চলছে। চারদিকে পুলিশ থাকবে আর ধর্ম পালন করতে হবে—এটা তো হতে পারে না। রাষ্ট্র যদি সঠিক পরিকল্পনা না নেয়, তাহলে এখান থেক বের হওয়া যাবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে এইচআরএফবির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে ও সংঘবদ্ধভাবে হামলা, লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। জাহিদ ইসলাম নামে তরুণকে নির্যাতন করে হত্যার সময় পুলিশের ভূমিকা নীরব ছিল। হামলার আগে পতাকা দিয়ে বাড়ি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। জলসা নিয়ে আগে থেকে প্রশাসনকে বললেও তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করার পরেও এই হামলা ঘটে। প্রশাসনের অসতর্কতায় আরেক তরুণের মৃত্যু হয়। সামাজিক গণমাধ্যমে বা অফলাইনে নানা মিথ্যা প্রচারণা ও ঘৃণা ছড়িয়ে এই হামলা আরও সংগঠিত করা হয়।

মানবাধিকার ফোরাম থেকে পাঁচটি দাবি তুলে ধরা হয়। তা হলো—হামলায় জড়িতদের সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তসাপেক্ষে চিহ্নিত করা ও বিচার করা। আহমদিয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অনলাইন, অফলাইনে যারা ঘৃণা ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। আগের সব হামলার বিচার করা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামসহ অন্যরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত