আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক আবহে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এলাকায় এলাকায় প্রভাব বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠায় চাঁদাবাজির মতো অপরাধ বেড়েছে। সমস্যার সমাধানে ‘রাজনৈতিক সহায়তা’ দরকার বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
চাঁদাবাজদের গুলি করে ভিডিও ধারণের ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল এলাকায়। চাঁদা চেয়ে না পেয়ে মনির আহমেদ নামের এক আবাসন ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। একজন গুলি করার সময় তার ভিডিও করছিল সঙ্গের একজন। তৃতীয় আরেকজন মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিল। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বলেছে, জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অপহরণের হুমকি দিয়ে আগেই চাঁদা চাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। স্কুলশিক্ষকের মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও এর শিকার হয়েছেন। ১৭ মার্চ রাজধানীর গুলশানের একটি স্কুলের শিক্ষিকাকে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়। অন্যথায় তাঁর সন্তানকে অপহরণের হুমকি দেন ফোন করা ব্যক্তি। ভুক্তভোগী নারী জানান, ফোনে তাঁকে বলা হয় থানা, পুলিশ, র্যাব করে কোনো কাজ হবে না। তাঁর ছেলে বা মেয়েকে তুলে নেওয়া হবে। তা এড়াতে চাইলে এখনই বলতে হবে কত দেওয়া হবে। টাকা না দিলে ছেলের লাশ পাওয়া যাবে। ছেলেপেলে বাসায় গিয়ে পাঁচটি করে গুলি করবে।
সন্ত্রাসীর নির্মম ভাষার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে ওই শিক্ষিকা একপর্যায়ে ফোন রেখে দেন। তবে আবারও ফোন করে হুমকি দেওয়া হতে থাকে। দাবি করা হয় একটি মোটা অঙ্কের চাঁদা। ওই নারী এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
পুলিশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে ফোন নম্বর থেকে ওই নারীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তা গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এক নারীর নামে নিবন্ধিত। তবে চাঁদা দাবি করা সন্ত্রাসী ফোন করেছিল মাদারীপুরে বসে। এখনো তাঁকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ওই শিক্ষিকা তাঁর সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন আতঙ্কে।
এভাবেই রাজধানীতে নানা কায়দায় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। কখনো ফোনে, কখনো সামনাসামনি ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বাড়ির মালিক, উচ্চ বেতনের চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলেই দেওয়া হয় অপহরণ বা হত্যার হুমকি। কখনো কখনো সত্যি সত্যিই হত্যার ঘটনাও ঘটছে।
ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের (ক্রাইম অ্যানালাইসিস ডিভিশন) তথ্য বলছে, হুমকি দিয়ে পুরোনো কায়দায়ই চাঁদাবাজি চলছে। তবে হুমকির ধরনে পরিবর্তন এসেছে। কাকে কী বলে হুমকি দিলে কাজ হবে, দৃশ্যত সেটা নিয়ে ভেবেচিন্তে কাজ করছে সন্ত্রাসীরা। আর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে নির্মাণাধীন ভবন ও বাণিজ্যিক আবাসন প্রকল্পগুলোতে। শিল্পকারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও চাঁদাবাজির বড় শিকার।
ডিএমপির হিসাব বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ৪৭ দিনে ঢাকা মহানগর পুলিশের ৮টি ক্রাইম বিভাগের ৫০টি থানায় ১১৩টি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রমনা বিভাগে ১১টি, লালবাগে ১১টি, মতিঝিলে ২২টি, তেজগাঁওয়ে ২০টি, মিরপুরে ১৭টি, গুলশানে ১৭টি, উত্তরা ৬টি এবং ওয়ারীতে ৮টি। একই সময়ে এসব মামলায় ১২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া র্যাব গ্রেপ্তার করেছে ২০ জনকে। সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে মতিঝিল, তেজগাঁও এবং গুলশানে।
রাজধানীর উল্লিখিত তিন এলাকায় চাঁদাবাজি বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব এলাকায় ব্যাংক-বিমা, শিল্পকারখানাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং বিত্তবান মানুষের বসবাস—দুটোই বেশি। অপরাধীরা এ জন্যই এসব এলাকাকে টার্গেট করে বেশি।
মোহাম্মদপুরের বছিলা এবং এর আশপাশের এলাকায় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে। এসব স্থানে প্রায়ই চাঁদাবাজি করার অভিযোগ আসছে। পুলিশ জানায়, গত ২১ মার্চ বিকেলে বছিলার সিটি হাউজিংয়ে স্টকলট ব্যবসায়ী নাজিম খান অন্তরের কাছে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফারুক হোসেন নামের এক সন্ত্রাসী। তাঁর সঙ্গে ওই এলাকার বড় সোহান, পিন্টুসহ সাত-আটজন ছিল। ভুক্তভোগী নাজিম খান সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে সেনাসদস্যরা গিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করেন।
চাঁদাবাজির ঘটনা বর্ণনা করে নাজিম খান বলেন, চাঁদা চেয়ে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে পথে আটকে মারধর করে। বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানালে সেনাসদস্যরা ফারুককে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় আরও দুটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের রূপনগরের দুয়ারীপাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না পেয়ে রাজমিস্ত্রি নিজাম উদ্দিনকে মারধর করে তারা। এই ঘটনায় রূপনগর থানায় স্থানীয় শফিকসহ ১০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শফিক রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নম্বর আঞ্চলিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। শফিকের বক্তব্যের জন্য কয়েকবার ফোন করা হলেও তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিএমপির সূত্রই বলেছে, কাজ এগিয়ে নেওয়া নির্বিঘ্ন রাখতে নির্মাণাধীন ভবনের চাঁদাবাজির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা সাধারণত থানায় অভিযোগ করেন না। অপরাধীদের সঙ্গে আপস করার চেষ্টা করেন। অল্পসংখ্যক লোক সাহস নিয়ে মামলা করেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চাঁদাবাজদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একই ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনার পর ঢাকার ব্যবসাক্ষেত্রে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্মাণ খাতের অনেক ঠিকাদার হুমকির মুখে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদের অপহরণ বা হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা এবং ভুক্তভোগীরা বলছেন, গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছুসংখ্যক শীর্ষ অপরাধীর মুক্তিও চাঁদাবাজির মাত্রা বাড়িয়ে তোলার জন্য দায়ী। ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতার হাতবদলের পর চাঁদাবাজদের মুখ পরিবর্তন হয়েছে মাত্র, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। গত জানুয়ারিতে এলাকাভিত্তিক চাঁদাবাজদের একটি তালিকা করে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। তবে তাতে আশানুরূপ ফল আসেনি। চাঁদাবাজেরা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহে চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের নেতাও রয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, ক্ষমতার পালাবদলের পরের অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের জন্য দায়ী। পুলিশ চিহ্নিত অপরাধীদের যথেষ্ট সংখ্যায় গ্রেপ্তার করছে না। অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে বের হয়ে লাপাত্তা রয়েছে। তাদের নামেও চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।
তবে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। ডিএমপি দাবি করেছে, পুলিশ ও র্যাব চাঁদাবাজি মোকাবিলায় জোরদার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ডিএমপির জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মো. তালেবুর রহমান বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। ঈদ সামনে রেখে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ টহল ও চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে।’
পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলেও রাজনৈতিক সহায়তা ছাড়া এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধ করা কঠিন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক আবহে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এলাকায় এলাকায় প্রভাব বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠায় চাঁদাবাজির মতো অপরাধ বেড়েছে। সমস্যার সমাধানে ‘রাজনৈতিক সহায়তা’ দরকার বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
চাঁদাবাজদের গুলি করে ভিডিও ধারণের ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল এলাকায়। চাঁদা চেয়ে না পেয়ে মনির আহমেদ নামের এক আবাসন ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। একজন গুলি করার সময় তার ভিডিও করছিল সঙ্গের একজন। তৃতীয় আরেকজন মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিল। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বলেছে, জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অপহরণের হুমকি দিয়ে আগেই চাঁদা চাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। স্কুলশিক্ষকের মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও এর শিকার হয়েছেন। ১৭ মার্চ রাজধানীর গুলশানের একটি স্কুলের শিক্ষিকাকে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়। অন্যথায় তাঁর সন্তানকে অপহরণের হুমকি দেন ফোন করা ব্যক্তি। ভুক্তভোগী নারী জানান, ফোনে তাঁকে বলা হয় থানা, পুলিশ, র্যাব করে কোনো কাজ হবে না। তাঁর ছেলে বা মেয়েকে তুলে নেওয়া হবে। তা এড়াতে চাইলে এখনই বলতে হবে কত দেওয়া হবে। টাকা না দিলে ছেলের লাশ পাওয়া যাবে। ছেলেপেলে বাসায় গিয়ে পাঁচটি করে গুলি করবে।
সন্ত্রাসীর নির্মম ভাষার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে ওই শিক্ষিকা একপর্যায়ে ফোন রেখে দেন। তবে আবারও ফোন করে হুমকি দেওয়া হতে থাকে। দাবি করা হয় একটি মোটা অঙ্কের চাঁদা। ওই নারী এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
পুলিশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে ফোন নম্বর থেকে ওই নারীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তা গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এক নারীর নামে নিবন্ধিত। তবে চাঁদা দাবি করা সন্ত্রাসী ফোন করেছিল মাদারীপুরে বসে। এখনো তাঁকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ওই শিক্ষিকা তাঁর সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন আতঙ্কে।
এভাবেই রাজধানীতে নানা কায়দায় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। কখনো ফোনে, কখনো সামনাসামনি ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বাড়ির মালিক, উচ্চ বেতনের চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলেই দেওয়া হয় অপহরণ বা হত্যার হুমকি। কখনো কখনো সত্যি সত্যিই হত্যার ঘটনাও ঘটছে।
ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের (ক্রাইম অ্যানালাইসিস ডিভিশন) তথ্য বলছে, হুমকি দিয়ে পুরোনো কায়দায়ই চাঁদাবাজি চলছে। তবে হুমকির ধরনে পরিবর্তন এসেছে। কাকে কী বলে হুমকি দিলে কাজ হবে, দৃশ্যত সেটা নিয়ে ভেবেচিন্তে কাজ করছে সন্ত্রাসীরা। আর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে নির্মাণাধীন ভবন ও বাণিজ্যিক আবাসন প্রকল্পগুলোতে। শিল্পকারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও চাঁদাবাজির বড় শিকার।
ডিএমপির হিসাব বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ৪৭ দিনে ঢাকা মহানগর পুলিশের ৮টি ক্রাইম বিভাগের ৫০টি থানায় ১১৩টি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রমনা বিভাগে ১১টি, লালবাগে ১১টি, মতিঝিলে ২২টি, তেজগাঁওয়ে ২০টি, মিরপুরে ১৭টি, গুলশানে ১৭টি, উত্তরা ৬টি এবং ওয়ারীতে ৮টি। একই সময়ে এসব মামলায় ১২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া র্যাব গ্রেপ্তার করেছে ২০ জনকে। সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে মতিঝিল, তেজগাঁও এবং গুলশানে।
রাজধানীর উল্লিখিত তিন এলাকায় চাঁদাবাজি বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব এলাকায় ব্যাংক-বিমা, শিল্পকারখানাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং বিত্তবান মানুষের বসবাস—দুটোই বেশি। অপরাধীরা এ জন্যই এসব এলাকাকে টার্গেট করে বেশি।
মোহাম্মদপুরের বছিলা এবং এর আশপাশের এলাকায় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে। এসব স্থানে প্রায়ই চাঁদাবাজি করার অভিযোগ আসছে। পুলিশ জানায়, গত ২১ মার্চ বিকেলে বছিলার সিটি হাউজিংয়ে স্টকলট ব্যবসায়ী নাজিম খান অন্তরের কাছে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফারুক হোসেন নামের এক সন্ত্রাসী। তাঁর সঙ্গে ওই এলাকার বড় সোহান, পিন্টুসহ সাত-আটজন ছিল। ভুক্তভোগী নাজিম খান সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে সেনাসদস্যরা গিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করেন।
চাঁদাবাজির ঘটনা বর্ণনা করে নাজিম খান বলেন, চাঁদা চেয়ে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে পথে আটকে মারধর করে। বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানালে সেনাসদস্যরা ফারুককে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় আরও দুটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের রূপনগরের দুয়ারীপাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না পেয়ে রাজমিস্ত্রি নিজাম উদ্দিনকে মারধর করে তারা। এই ঘটনায় রূপনগর থানায় স্থানীয় শফিকসহ ১০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শফিক রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নম্বর আঞ্চলিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। শফিকের বক্তব্যের জন্য কয়েকবার ফোন করা হলেও তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিএমপির সূত্রই বলেছে, কাজ এগিয়ে নেওয়া নির্বিঘ্ন রাখতে নির্মাণাধীন ভবনের চাঁদাবাজির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা সাধারণত থানায় অভিযোগ করেন না। অপরাধীদের সঙ্গে আপস করার চেষ্টা করেন। অল্পসংখ্যক লোক সাহস নিয়ে মামলা করেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চাঁদাবাজদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একই ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনার পর ঢাকার ব্যবসাক্ষেত্রে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্মাণ খাতের অনেক ঠিকাদার হুমকির মুখে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদের অপহরণ বা হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা এবং ভুক্তভোগীরা বলছেন, গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছুসংখ্যক শীর্ষ অপরাধীর মুক্তিও চাঁদাবাজির মাত্রা বাড়িয়ে তোলার জন্য দায়ী। ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতার হাতবদলের পর চাঁদাবাজদের মুখ পরিবর্তন হয়েছে মাত্র, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। গত জানুয়ারিতে এলাকাভিত্তিক চাঁদাবাজদের একটি তালিকা করে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। তবে তাতে আশানুরূপ ফল আসেনি। চাঁদাবাজেরা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহে চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের নেতাও রয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, ক্ষমতার পালাবদলের পরের অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের জন্য দায়ী। পুলিশ চিহ্নিত অপরাধীদের যথেষ্ট সংখ্যায় গ্রেপ্তার করছে না। অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে বের হয়ে লাপাত্তা রয়েছে। তাদের নামেও চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।
তবে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। ডিএমপি দাবি করেছে, পুলিশ ও র্যাব চাঁদাবাজি মোকাবিলায় জোরদার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ডিএমপির জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মো. তালেবুর রহমান বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। ঈদ সামনে রেখে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ টহল ও চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে।’
পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলেও রাজনৈতিক সহায়তা ছাড়া এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধ করা কঠিন।
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক আবহে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এলাকায় এলাকায় প্রভাব বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠায় চাঁদাবাজির মতো অপরাধ বেড়েছে। সমস্যার সমাধানে ‘রাজনৈতিক সহায়তা’ দরকার বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
চাঁদাবাজদের গুলি করে ভিডিও ধারণের ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল এলাকায়। চাঁদা চেয়ে না পেয়ে মনির আহমেদ নামের এক আবাসন ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। একজন গুলি করার সময় তার ভিডিও করছিল সঙ্গের একজন। তৃতীয় আরেকজন মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিল। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বলেছে, জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অপহরণের হুমকি দিয়ে আগেই চাঁদা চাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। স্কুলশিক্ষকের মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও এর শিকার হয়েছেন। ১৭ মার্চ রাজধানীর গুলশানের একটি স্কুলের শিক্ষিকাকে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়। অন্যথায় তাঁর সন্তানকে অপহরণের হুমকি দেন ফোন করা ব্যক্তি। ভুক্তভোগী নারী জানান, ফোনে তাঁকে বলা হয় থানা, পুলিশ, র্যাব করে কোনো কাজ হবে না। তাঁর ছেলে বা মেয়েকে তুলে নেওয়া হবে। তা এড়াতে চাইলে এখনই বলতে হবে কত দেওয়া হবে। টাকা না দিলে ছেলের লাশ পাওয়া যাবে। ছেলেপেলে বাসায় গিয়ে পাঁচটি করে গুলি করবে।
সন্ত্রাসীর নির্মম ভাষার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে ওই শিক্ষিকা একপর্যায়ে ফোন রেখে দেন। তবে আবারও ফোন করে হুমকি দেওয়া হতে থাকে। দাবি করা হয় একটি মোটা অঙ্কের চাঁদা। ওই নারী এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
পুলিশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে ফোন নম্বর থেকে ওই নারীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তা গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এক নারীর নামে নিবন্ধিত। তবে চাঁদা দাবি করা সন্ত্রাসী ফোন করেছিল মাদারীপুরে বসে। এখনো তাঁকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ওই শিক্ষিকা তাঁর সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন আতঙ্কে।
এভাবেই রাজধানীতে নানা কায়দায় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। কখনো ফোনে, কখনো সামনাসামনি ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বাড়ির মালিক, উচ্চ বেতনের চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলেই দেওয়া হয় অপহরণ বা হত্যার হুমকি। কখনো কখনো সত্যি সত্যিই হত্যার ঘটনাও ঘটছে।
ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের (ক্রাইম অ্যানালাইসিস ডিভিশন) তথ্য বলছে, হুমকি দিয়ে পুরোনো কায়দায়ই চাঁদাবাজি চলছে। তবে হুমকির ধরনে পরিবর্তন এসেছে। কাকে কী বলে হুমকি দিলে কাজ হবে, দৃশ্যত সেটা নিয়ে ভেবেচিন্তে কাজ করছে সন্ত্রাসীরা। আর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে নির্মাণাধীন ভবন ও বাণিজ্যিক আবাসন প্রকল্পগুলোতে। শিল্পকারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও চাঁদাবাজির বড় শিকার।
ডিএমপির হিসাব বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ৪৭ দিনে ঢাকা মহানগর পুলিশের ৮টি ক্রাইম বিভাগের ৫০টি থানায় ১১৩টি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রমনা বিভাগে ১১টি, লালবাগে ১১টি, মতিঝিলে ২২টি, তেজগাঁওয়ে ২০টি, মিরপুরে ১৭টি, গুলশানে ১৭টি, উত্তরা ৬টি এবং ওয়ারীতে ৮টি। একই সময়ে এসব মামলায় ১২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া র্যাব গ্রেপ্তার করেছে ২০ জনকে। সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে মতিঝিল, তেজগাঁও এবং গুলশানে।
রাজধানীর উল্লিখিত তিন এলাকায় চাঁদাবাজি বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব এলাকায় ব্যাংক-বিমা, শিল্পকারখানাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং বিত্তবান মানুষের বসবাস—দুটোই বেশি। অপরাধীরা এ জন্যই এসব এলাকাকে টার্গেট করে বেশি।
মোহাম্মদপুরের বছিলা এবং এর আশপাশের এলাকায় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে। এসব স্থানে প্রায়ই চাঁদাবাজি করার অভিযোগ আসছে। পুলিশ জানায়, গত ২১ মার্চ বিকেলে বছিলার সিটি হাউজিংয়ে স্টকলট ব্যবসায়ী নাজিম খান অন্তরের কাছে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফারুক হোসেন নামের এক সন্ত্রাসী। তাঁর সঙ্গে ওই এলাকার বড় সোহান, পিন্টুসহ সাত-আটজন ছিল। ভুক্তভোগী নাজিম খান সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে সেনাসদস্যরা গিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করেন।
চাঁদাবাজির ঘটনা বর্ণনা করে নাজিম খান বলেন, চাঁদা চেয়ে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে পথে আটকে মারধর করে। বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানালে সেনাসদস্যরা ফারুককে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় আরও দুটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের রূপনগরের দুয়ারীপাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না পেয়ে রাজমিস্ত্রি নিজাম উদ্দিনকে মারধর করে তারা। এই ঘটনায় রূপনগর থানায় স্থানীয় শফিকসহ ১০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শফিক রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নম্বর আঞ্চলিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। শফিকের বক্তব্যের জন্য কয়েকবার ফোন করা হলেও তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিএমপির সূত্রই বলেছে, কাজ এগিয়ে নেওয়া নির্বিঘ্ন রাখতে নির্মাণাধীন ভবনের চাঁদাবাজির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা সাধারণত থানায় অভিযোগ করেন না। অপরাধীদের সঙ্গে আপস করার চেষ্টা করেন। অল্পসংখ্যক লোক সাহস নিয়ে মামলা করেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চাঁদাবাজদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একই ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনার পর ঢাকার ব্যবসাক্ষেত্রে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্মাণ খাতের অনেক ঠিকাদার হুমকির মুখে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদের অপহরণ বা হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা এবং ভুক্তভোগীরা বলছেন, গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছুসংখ্যক শীর্ষ অপরাধীর মুক্তিও চাঁদাবাজির মাত্রা বাড়িয়ে তোলার জন্য দায়ী। ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতার হাতবদলের পর চাঁদাবাজদের মুখ পরিবর্তন হয়েছে মাত্র, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। গত জানুয়ারিতে এলাকাভিত্তিক চাঁদাবাজদের একটি তালিকা করে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। তবে তাতে আশানুরূপ ফল আসেনি। চাঁদাবাজেরা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহে চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের নেতাও রয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, ক্ষমতার পালাবদলের পরের অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের জন্য দায়ী। পুলিশ চিহ্নিত অপরাধীদের যথেষ্ট সংখ্যায় গ্রেপ্তার করছে না। অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে বের হয়ে লাপাত্তা রয়েছে। তাদের নামেও চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।
তবে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। ডিএমপি দাবি করেছে, পুলিশ ও র্যাব চাঁদাবাজি মোকাবিলায় জোরদার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ডিএমপির জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মো. তালেবুর রহমান বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। ঈদ সামনে রেখে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ টহল ও চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে।’
পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলেও রাজনৈতিক সহায়তা ছাড়া এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধ করা কঠিন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্তিত রাজনৈতিক আবহে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এলাকায় এলাকায় প্রভাব বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠায় চাঁদাবাজির মতো অপরাধ বেড়েছে। সমস্যার সমাধানে ‘রাজনৈতিক সহায়তা’ দরকার বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
চাঁদাবাজদের গুলি করে ভিডিও ধারণের ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল এলাকায়। চাঁদা চেয়ে না পেয়ে মনির আহমেদ নামের এক আবাসন ব্যবসায়ীর অফিসে ঢুকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। একজন গুলি করার সময় তার ভিডিও করছিল সঙ্গের একজন। তৃতীয় আরেকজন মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিল। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ বলেছে, জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
অপহরণের হুমকি দিয়ে আগেই চাঁদা চাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। স্কুলশিক্ষকের মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও এর শিকার হয়েছেন। ১৭ মার্চ রাজধানীর গুলশানের একটি স্কুলের শিক্ষিকাকে ফোন করে চাঁদা চাওয়া হয়। অন্যথায় তাঁর সন্তানকে অপহরণের হুমকি দেন ফোন করা ব্যক্তি। ভুক্তভোগী নারী জানান, ফোনে তাঁকে বলা হয় থানা, পুলিশ, র্যাব করে কোনো কাজ হবে না। তাঁর ছেলে বা মেয়েকে তুলে নেওয়া হবে। তা এড়াতে চাইলে এখনই বলতে হবে কত দেওয়া হবে। টাকা না দিলে ছেলের লাশ পাওয়া যাবে। ছেলেপেলে বাসায় গিয়ে পাঁচটি করে গুলি করবে।
সন্ত্রাসীর নির্মম ভাষার হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে ওই শিক্ষিকা একপর্যায়ে ফোন রেখে দেন। তবে আবারও ফোন করে হুমকি দেওয়া হতে থাকে। দাবি করা হয় একটি মোটা অঙ্কের চাঁদা। ওই নারী এখনো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
পুলিশের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যে ফোন নম্বর থেকে ওই নারীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তা গোপালগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এক নারীর নামে নিবন্ধিত। তবে চাঁদা দাবি করা সন্ত্রাসী ফোন করেছিল মাদারীপুরে বসে। এখনো তাঁকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ওই শিক্ষিকা তাঁর সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন আতঙ্কে।
এভাবেই রাজধানীতে নানা কায়দায় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। কখনো ফোনে, কখনো সামনাসামনি ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, বাড়ির মালিক, উচ্চ বেতনের চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলেই দেওয়া হয় অপহরণ বা হত্যার হুমকি। কখনো কখনো সত্যি সত্যিই হত্যার ঘটনাও ঘটছে।
ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের (ক্রাইম অ্যানালাইসিস ডিভিশন) তথ্য বলছে, হুমকি দিয়ে পুরোনো কায়দায়ই চাঁদাবাজি চলছে। তবে হুমকির ধরনে পরিবর্তন এসেছে। কাকে কী বলে হুমকি দিলে কাজ হবে, দৃশ্যত সেটা নিয়ে ভেবেচিন্তে কাজ করছে সন্ত্রাসীরা। আর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে নির্মাণাধীন ভবন ও বাণিজ্যিক আবাসন প্রকল্পগুলোতে। শিল্পকারখানা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও চাঁদাবাজির বড় শিকার।
ডিএমপির হিসাব বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত ৪৭ দিনে ঢাকা মহানগর পুলিশের ৮টি ক্রাইম বিভাগের ৫০টি থানায় ১১৩টি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রমনা বিভাগে ১১টি, লালবাগে ১১টি, মতিঝিলে ২২টি, তেজগাঁওয়ে ২০টি, মিরপুরে ১৭টি, গুলশানে ১৭টি, উত্তরা ৬টি এবং ওয়ারীতে ৮টি। একই সময়ে এসব মামলায় ১২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া র্যাব গ্রেপ্তার করেছে ২০ জনকে। সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে মতিঝিল, তেজগাঁও এবং গুলশানে।
রাজধানীর উল্লিখিত তিন এলাকায় চাঁদাবাজি বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিএমপির সদর দপ্তরের অপরাধ বিশ্লেষণ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব এলাকায় ব্যাংক-বিমা, শিল্পকারখানাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং বিত্তবান মানুষের বসবাস—দুটোই বেশি। অপরাধীরা এ জন্যই এসব এলাকাকে টার্গেট করে বেশি।
মোহাম্মদপুরের বছিলা এবং এর আশপাশের এলাকায় অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠছে। এসব স্থানে প্রায়ই চাঁদাবাজি করার অভিযোগ আসছে। পুলিশ জানায়, গত ২১ মার্চ বিকেলে বছিলার সিটি হাউজিংয়ে স্টকলট ব্যবসায়ী নাজিম খান অন্তরের কাছে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ফারুক হোসেন নামের এক সন্ত্রাসী। তাঁর সঙ্গে ওই এলাকার বড় সোহান, পিন্টুসহ সাত-আটজন ছিল। ভুক্তভোগী নাজিম খান সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে সেনাসদস্যরা গিয়ে ফারুককে গ্রেপ্তার করেন।
চাঁদাবাজির ঘটনা বর্ণনা করে নাজিম খান বলেন, চাঁদা চেয়ে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা তাঁকে পথে আটকে মারধর করে। বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানালে সেনাসদস্যরা ফারুককে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় আরও দুটি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মিরপুরের রূপনগরের দুয়ারীপাড়ার একটি নির্মাণাধীন ভবনে গিয়ে শ্রমিকদের মারধর করে সন্ত্রাসীরা। চাঁদা না পেয়ে রাজমিস্ত্রি নিজাম উদ্দিনকে মারধর করে তারা। এই ঘটনায় রূপনগর থানায় স্থানীয় শফিকসহ ১০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত শফিক রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬ নম্বর আঞ্চলিক ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। শফিকের বক্তব্যের জন্য কয়েকবার ফোন করা হলেও তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
ডিএমপির সূত্রই বলেছে, কাজ এগিয়ে নেওয়া নির্বিঘ্ন রাখতে নির্মাণাধীন ভবনের চাঁদাবাজির ঘটনায় ভুক্তভোগীরা সাধারণত থানায় অভিযোগ করেন না। অপরাধীদের সঙ্গে আপস করার চেষ্টা করেন। অল্পসংখ্যক লোক সাহস নিয়ে মামলা করেন।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চাঁদাবাজদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের একই ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনার পর ঢাকার ব্যবসাক্ষেত্রে আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। নির্মাণ খাতের অনেক ঠিকাদার হুমকির মুখে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যান্য খাতের ব্যবসায়ীদের অপহরণ বা হামলার শিকার হতে হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তা এবং ভুক্তভোগীরা বলছেন, গত বছরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কিছুসংখ্যক শীর্ষ অপরাধীর মুক্তিও চাঁদাবাজির মাত্রা বাড়িয়ে তোলার জন্য দায়ী। ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্ষমতার হাতবদলের পর চাঁদাবাজদের মুখ পরিবর্তন হয়েছে মাত্র, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। গত জানুয়ারিতে এলাকাভিত্তিক চাঁদাবাজদের একটি তালিকা করে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। তবে তাতে আশানুরূপ ফল আসেনি। চাঁদাবাজেরা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহে চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলের নেতাও রয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, ক্ষমতার পালাবদলের পরের অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাও চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের জন্য দায়ী। পুলিশ চিহ্নিত অপরাধীদের যথেষ্ট সংখ্যায় গ্রেপ্তার করছে না। অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে বের হয়ে লাপাত্তা রয়েছে। তাদের নামেও চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।
তবে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। ডিএমপি দাবি করেছে, পুলিশ ও র্যাব চাঁদাবাজি মোকাবিলায় জোরদার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ডিএমপির জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মো. তালেবুর রহমান বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছি। ঈদ সামনে রেখে চাঁদাবাজি প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ টহল ও চেকপোস্ট বাড়ানো হয়েছে।’
পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকলেও রাজনৈতিক সহায়তা ছাড়া এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধ করা কঠিন।
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পোড়াবাড়ি বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদ। দুই পারের মানুষের একমাত্র ভরসা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ একটি বেইলি সেতু। এর এক পাশে ত্রিশাল, অন্য পাশে ফুলবাড়িয়া উপজেলা।
২ ঘণ্টা আগেনিম্নমানের ইটের ওপরে কিছু ভালো ইট বিছিয়ে করা হচ্ছিল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের একটি রাস্তার কাজ। সংবাদকর্মীদের সামনে বিষয়টি ধরা পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কে।
২ ঘণ্টা আগেসাপের দংশনে আহত হয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন উপজেলার পালবাড়ী গ্রামের আনছের আলী (৩৬)। তাঁর খিঁচুনি শুরু হওয়ায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু আনছের আলীর স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে যান এলাকারই এক ওঝার কাছে। সেখানে গত সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
২ ঘণ্টা আগেফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পোড়াবাড়ি বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদ। দুই পারের মানুষের একমাত্র ভরসা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ একটি বেইলি সেতু। এর এক পাশে ত্রিশাল, অন্য পাশে ফুলবাড়িয়া উপজেলা।
এলাকাবাসীর দাবির পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বেইলি সেতুর পাশে নতুন পাকা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রায় এক বছর ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিদিন দুই উপজেলার লাখ মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে বেইলি সেতু পার হতে হচ্ছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস (এসইউপিআরবি)’ প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণকাজ শুরু করে এমসিই-এমএলএম (জেভি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের আগস্টে। তবে জমি অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ হয়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মকবুল হোসেন বলেন, সেতুর তিনটি স্প্যানের মধ্যে দুটির কাজ শেষ হয়েছে। একটির কাজ আটকে আছে। ১৯ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় কাজ এগোচ্ছে না। জমি বুঝিয়ে দিলে ছয় মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করা সম্ভব।
এদিকে গত মঙ্গলবার বিকেলে অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনে ভূমিমালিকদের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আজিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুর রহমান এবং প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেইলি সেতুটি নড়বড়ে। ঝুঁকি নিয়েই যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করছে। কিন্তু পাশেই পাকা সেতুর অধিকাংশ কাজ শেষ হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক এনাম বলেন, ‘শুনেছি, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে পাকা সেতুর কাজ থেমে আছে। বেইলি সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ। কিছুদিন আগেই জরাজীর্ণ ব্রিজের পাটাতন ভেঙে পড়েছিল। ভাঙা পাটাতনে পা পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হন। পাশে দুটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ এই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু দিয়ে নদ পার হচ্ছেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন সেতুর কাজ সম্পন্ন করতে অন্তত ১০টি বসতঘর ভাঙতে হবে। এর মধ্যে স্বামীহারা বাসন্তী রানীর (৫৪) তিন শতক জমি পড়েছে। অধিগ্রহণের টাকা দেওয়ার আশ্বাস পেলে তিনি জমি ছাড়তে রাজি হয়েছেন।
এলজিইডির ত্রিশাল উপজেলা প্রকৌশলী যুবায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেতুর ৭০ শতাংশ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জটিলতা নিরসন হলে দ্রুত অবশিষ্ট কাজ শেষ করা হবে।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আজিম উদ্দিন বলেন, ‘পুরোনো বেইলি সেতু মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া জমি অধিগ্রহণের জন্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ৭ ধারার নোটিশ দেওয়া হবে এবং অধিগ্রহণের প্রাক্কলন তৈরি করে দ্রুত অর্থ ছাড়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করছি, আগামী মাস দেড়েকের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে দ্রুতই শেষ করা সম্ভব হবে।’
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পোড়াবাড়ি বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদ। দুই পারের মানুষের একমাত্র ভরসা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ একটি বেইলি সেতু। এর এক পাশে ত্রিশাল, অন্য পাশে ফুলবাড়িয়া উপজেলা।
এলাকাবাসীর দাবির পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বেইলি সেতুর পাশে নতুন পাকা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করলেও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রায় এক বছর ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিদিন দুই উপজেলার লাখ মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে বেইলি সেতু পার হতে হচ্ছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস (এসইউপিআরবি)’ প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণকাজ শুরু করে এমসিই-এমএলএম (জেভি) নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের আগস্টে। তবে জমি অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ হয়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মকবুল হোসেন বলেন, সেতুর তিনটি স্প্যানের মধ্যে দুটির কাজ শেষ হয়েছে। একটির কাজ আটকে আছে। ১৯ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় কাজ এগোচ্ছে না। জমি বুঝিয়ে দিলে ছয় মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করা সম্ভব।
এদিকে গত মঙ্গলবার বিকেলে অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনে ভূমিমালিকদের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আজিম উদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুর রহমান এবং প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেইলি সেতুটি নড়বড়ে। ঝুঁকি নিয়েই যানবাহন ও পথচারীরা চলাচল করছে। কিন্তু পাশেই পাকা সেতুর অধিকাংশ কাজ শেষ হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক এনাম বলেন, ‘শুনেছি, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে পাকা সেতুর কাজ থেমে আছে। বেইলি সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ। কিছুদিন আগেই জরাজীর্ণ ব্রিজের পাটাতন ভেঙে পড়েছিল। ভাঙা পাটাতনে পা পড়ে বেশ কয়েকজন আহত হন। পাশে দুটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ এই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু দিয়ে নদ পার হচ্ছেন।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন সেতুর কাজ সম্পন্ন করতে অন্তত ১০টি বসতঘর ভাঙতে হবে। এর মধ্যে স্বামীহারা বাসন্তী রানীর (৫৪) তিন শতক জমি পড়েছে। অধিগ্রহণের টাকা দেওয়ার আশ্বাস পেলে তিনি জমি ছাড়তে রাজি হয়েছেন।
এলজিইডির ত্রিশাল উপজেলা প্রকৌশলী যুবায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সেতুর ৭০ শতাংশ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের জটিলতা নিরসন হলে দ্রুত অবশিষ্ট কাজ শেষ করা হবে।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আজিম উদ্দিন বলেন, ‘পুরোনো বেইলি সেতু মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া জমি অধিগ্রহণের জন্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ৭ ধারার নোটিশ দেওয়া হবে এবং অধিগ্রহণের প্রাক্কলন তৈরি করে দ্রুত অর্থ ছাড়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করছি, আগামী মাস দেড়েকের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে দ্রুতই শেষ করা সম্ভব হবে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্
২৭ মার্চ ২০২৫নিম্নমানের ইটের ওপরে কিছু ভালো ইট বিছিয়ে করা হচ্ছিল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের একটি রাস্তার কাজ। সংবাদকর্মীদের সামনে বিষয়টি ধরা পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কে।
২ ঘণ্টা আগেসাপের দংশনে আহত হয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন উপজেলার পালবাড়ী গ্রামের আনছের আলী (৩৬)। তাঁর খিঁচুনি শুরু হওয়ায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু আনছের আলীর স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে যান এলাকারই এক ওঝার কাছে। সেখানে গত সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
২ ঘণ্টা আগেফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
নিম্নমানের ইটের ওপরে কিছু ভালো ইট বিছিয়ে করা হচ্ছিল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের একটি রাস্তার কাজ। সংবাদকর্মীদের সামনে বিষয়টি ধরা পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের ইট ঢাকতে বালু বিছিয়ে দ্রুত কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। অথচ এই সড়ক নির্মাণে এর আগে ধীরগতির অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর। কিন্তু হঠাৎ কেন সড়কের এইচবিবির কাজ করতে গিয়ে দ্রুত করছে দেখতে গিয়ে বেরিয়ে এল নিম্নমানের ইটের বিষয়টি। তাঁদের অভিযোগ, অনিয়ম ঢাকতেই এমন কাজ করছেন ঠিকাদারের লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) আইআরডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় সড়কটির কাজ হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ফরিদগঞ্জের বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কের ৮২৫ মিটার ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমজেএআইজেবি।
সড়ক নির্মাণের প্রথম থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীরগতিতে মাটির কাজ ও সড়কের দুই পাশের পাইলিংয়ের কাজ করে বলে অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর। তাঁরা জানান, কিছুদিন ধরে সড়কের মূল কাজ (এইবিবি) শুরু করে তারা। কিন্তু এবার ধীরগতির পরিবর্তে দ্রুতগতিতে কাজ করতে থাকে। এতে সন্দেহ হয় স্থানীয় লোকজনের। অভিযোগ ওঠে, এইচবিবি কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিচে নিম্নমানের ইট বিছিয়ে দ্রুত ওপরের স্তরের ইটও বিছিয়ে দিচ্ছে। ওপরে দিচ্ছে বালু, যাতে নিচের ইট না দেখা যায়।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা এইচবিবির কাজ করছেন। নিচে নিম্নমানের ইট বিছানোর পর দ্রুত ওপরের স্তরের ইট বসাচ্ছেন। কেউ ইট বিছাচ্ছেন, আর কেউ ওপরে বালু ছিটিয়ে দিচ্ছেন। অনিয়মের মধ্য দিয়ে কাজ চলমান থাকলেও প্রকৌশল বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি।
গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে নিম্নমানের ইটের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিম্নমানের ইটের কথা স্বীকার করে শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেন।
এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষে মিজানুর রহমান, ইব্রাহীম মিয়াসহ আরও কয়েকজন বলেন, সড়ক নির্মাণকাজও ধীরগতিতে চলচিল। এখন আবার তারা নিম্নমানের ইট এনে কাজ করছে, এই ইট বেশি দিন টিকবে না। আগেও তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করেছে।
নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে ঘটনাস্থলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা হাবিবুর রহমান ভুট্টো ও শাকিল আহমেদ বলেন, ‘কিছু ইট নিম্নমানের চলে এসেছে। আমরা সড়ক থেকে সেগুলো উঠিয়ে নিচ্ছি।’ তাঁরা বলেন, এগুলোর পরিবর্তে ভালো ইট দিয়ে কাজ চলবে। এর আগে কাজের ধীরগতির বিষয়ে তাঁরা অভিযোগ করেন, এলজিইডি ছয় মাস কাজ করতে দেয়নি।
জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবরার আহাম্মদ বলেন, ‘নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি জেনেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলেছি নিম্নমানের ইট সরিয়ে নিতে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নিম্নমানের ইটের ওপরে কিছু ভালো ইট বিছিয়ে করা হচ্ছিল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের একটি রাস্তার কাজ। সংবাদকর্মীদের সামনে বিষয়টি ধরা পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের ইট ঢাকতে বালু বিছিয়ে দ্রুত কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। অথচ এই সড়ক নির্মাণে এর আগে ধীরগতির অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর। কিন্তু হঠাৎ কেন সড়কের এইচবিবির কাজ করতে গিয়ে দ্রুত করছে দেখতে গিয়ে বেরিয়ে এল নিম্নমানের ইটের বিষয়টি। তাঁদের অভিযোগ, অনিয়ম ঢাকতেই এমন কাজ করছেন ঠিকাদারের লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) আইআরডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় সড়কটির কাজ হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ফরিদগঞ্জের বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কের ৮২৫ মিটার ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমজেএআইজেবি।
সড়ক নির্মাণের প্রথম থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীরগতিতে মাটির কাজ ও সড়কের দুই পাশের পাইলিংয়ের কাজ করে বলে অভিযোগ ছিল এলাকাবাসীর। তাঁরা জানান, কিছুদিন ধরে সড়কের মূল কাজ (এইবিবি) শুরু করে তারা। কিন্তু এবার ধীরগতির পরিবর্তে দ্রুতগতিতে কাজ করতে থাকে। এতে সন্দেহ হয় স্থানীয় লোকজনের। অভিযোগ ওঠে, এইচবিবি কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিচে নিম্নমানের ইট বিছিয়ে দ্রুত ওপরের স্তরের ইটও বিছিয়ে দিচ্ছে। ওপরে দিচ্ছে বালু, যাতে নিচের ইট না দেখা যায়।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা এইচবিবির কাজ করছেন। নিচে নিম্নমানের ইট বিছানোর পর দ্রুত ওপরের স্তরের ইট বসাচ্ছেন। কেউ ইট বিছাচ্ছেন, আর কেউ ওপরে বালু ছিটিয়ে দিচ্ছেন। অনিয়মের মধ্য দিয়ে কাজ চলমান থাকলেও প্রকৌশল বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি।
গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে নিম্নমানের ইটের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন নিম্নমানের ইটের কথা স্বীকার করে শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশনা দেন।
এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষে মিজানুর রহমান, ইব্রাহীম মিয়াসহ আরও কয়েকজন বলেন, সড়ক নির্মাণকাজও ধীরগতিতে চলচিল। এখন আবার তারা নিম্নমানের ইট এনে কাজ করছে, এই ইট বেশি দিন টিকবে না। আগেও তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করেছে।
নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে ঘটনাস্থলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা হাবিবুর রহমান ভুট্টো ও শাকিল আহমেদ বলেন, ‘কিছু ইট নিম্নমানের চলে এসেছে। আমরা সড়ক থেকে সেগুলো উঠিয়ে নিচ্ছি।’ তাঁরা বলেন, এগুলোর পরিবর্তে ভালো ইট দিয়ে কাজ চলবে। এর আগে কাজের ধীরগতির বিষয়ে তাঁরা অভিযোগ করেন, এলজিইডি ছয় মাস কাজ করতে দেয়নি।
জানতে চাইলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবরার আহাম্মদ বলেন, ‘নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি জেনেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলেছি নিম্নমানের ইট সরিয়ে নিতে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্
২৭ মার্চ ২০২৫ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পোড়াবাড়ি বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদ। দুই পারের মানুষের একমাত্র ভরসা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ একটি বেইলি সেতু। এর এক পাশে ত্রিশাল, অন্য পাশে ফুলবাড়িয়া উপজেলা।
২ ঘণ্টা আগেসাপের দংশনে আহত হয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন উপজেলার পালবাড়ী গ্রামের আনছের আলী (৩৬)। তাঁর খিঁচুনি শুরু হওয়ায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু আনছের আলীর স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে যান এলাকারই এক ওঝার কাছে। সেখানে গত সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
২ ঘণ্টা আগেফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেআনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল
সাপের দংশনে আহত হয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন উপজেলার পালবাড়ী গ্রামের আনছের আলী (৩৬)। তাঁর খিঁচুনি শুরু হওয়ায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু আনছের আলীর স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে যান এলাকারই এক ওঝার কাছে। সেখানে গত সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, সাপে দংশনের পর আনছের আলী অনেকটা অচেতন ছিলেন এবং তাঁর খিঁচুনি শুরু হয়েছিল। তাঁর শরীরে অ্যান্টিভেনম দেওয়ার জন্য আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) প্রয়োজন। কিন্তু মধুপুরে তা নেই। তাই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগীর স্বজনেরা তাঁকে মেডিকেলে না নিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মাসে ১১৯ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার (পাঠানো) করা হয়েছে। তাদের পরিণতি কি আনছের আলীর মতোই হয়েছে কি না, কেউ বলতে পারেনি।
টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার মধ্যে পাহাড়ি চারটি উপজেলা মধুপুর, সখীপুর, ঘাটাইল ও মির্জাপুরে সাপের উপদ্রব একটু বেশি। অন্য ৮টি উপজেলায়ও সাপের বিচরণ রয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, চলতি বছরের গত ৯ মাসে মধুপুরে ২১৫ জন, সখীপুরে ২৭০ জন, মির্জাপুরে ১৬৩ জনসহ জেলায় ১ হাজার ২৭৮ জন সাপের দংশনের শিকার হয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ১ হাজার ১৫৫ জন সুস্থ হয়। ১১৯ জনকে রেফার করা হয়েছে এবং চারজন মৃত্যুবরণ করে।
এই হিসাবের বাইরেও বহু মানুষ সাপের দংশনে আহত হয়ে কবিরাজ এবং ওঝার কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেয়। তাদের অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে, আবার কারও কারও জীবনাবসান ঘটে সাপের বিষে নীল হয়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক জানান, সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি উপজেলায় প্রশিক্ষিত চিকিৎসক আছেন। ভ্যাকসিন অ্যান্টিভেনমও রয়েছে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ের কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসিইউ নেই। তাই ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জেলা সদরে পাঠানো হয়। কারণ, রোগীর মৃত্যু হলে অনেকে চিকিৎসকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকে। চিকিৎসকেরা অনেকটা বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নেন না।
আনছের আলীর ভাতিজা ইমরান হোসেন বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় চাচা বংশাই নদে মাছ ধরতে যান। এ সময় বিষধর সাপ তাঁকে ছোবল দেয়। এ সময় তিনি সাপের দিকে টর্চলাইট ধরলে সাপটি আবার তাঁকে ছোবল দিতে আসে। তখন চাচা তাঁর হাতে থাকা ফছকা (মাঝ ধরার দেশীয় যন্ত্র) দিয়ে সাপ আটকান এবং পরে পিটিয়ে মেরে বাড়িতে আসেন। এরই মধ্যে চাচার অবস্থার অবনতি ঘটলে মধুপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে তাঁরা ওঝার কাছে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ওঝা আনোয়ার হোসেন বানুরগাছী মাদরাসার হেড মোহাদ্দিছ। তিনি তুলা রাশির লোকের সহযোগিতা নিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলেন। তাঁর ভাষ্য, প্রতিদিন তিনি দু-তিনজন সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা দেন। গত ৯ মাসে প্রায় ৮০০ সাপে কাটা রোগীকে চিকিৎসা করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ফরাজী মো. আজমল হোসেন বলেন, ‘সবার আগে আমাদের সচেতনতা প্রয়োজন। সাপে দংশন করলে সঙ্গে সঙ্গে ওঝার কাছে ছোটাছুটি না করে হাসপাতালে নিয়ে আসাই বাঞ্ছনীয়। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা দিতে পারলে রোগী অবশ্যই সুস্থ হয়ে ওঠে। মুমূর্ষু হয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করতেই হবে।’ তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে যন্ত্রপাতি আছে, কিন্তু আইসিইউ চালু নেই। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জনবলের অভাবে আইসিইউ বন্ধ। আর ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন পর্যন্ত আইসিইউ স্থাপনের উদ্যোগ এখনো নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাপের দংশনে আহত হয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন উপজেলার পালবাড়ী গ্রামের আনছের আলী (৩৬)। তাঁর খিঁচুনি শুরু হওয়ায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু আনছের আলীর স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে যান এলাকারই এক ওঝার কাছে। সেখানে গত সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, সাপে দংশনের পর আনছের আলী অনেকটা অচেতন ছিলেন এবং তাঁর খিঁচুনি শুরু হয়েছিল। তাঁর শরীরে অ্যান্টিভেনম দেওয়ার জন্য আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) প্রয়োজন। কিন্তু মধুপুরে তা নেই। তাই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রোগীর স্বজনেরা তাঁকে মেডিকেলে না নিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মাসে ১১৯ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলার ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার (পাঠানো) করা হয়েছে। তাদের পরিণতি কি আনছের আলীর মতোই হয়েছে কি না, কেউ বলতে পারেনি।
টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার মধ্যে পাহাড়ি চারটি উপজেলা মধুপুর, সখীপুর, ঘাটাইল ও মির্জাপুরে সাপের উপদ্রব একটু বেশি। অন্য ৮টি উপজেলায়ও সাপের বিচরণ রয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, চলতি বছরের গত ৯ মাসে মধুপুরে ২১৫ জন, সখীপুরে ২৭০ জন, মির্জাপুরে ১৬৩ জনসহ জেলায় ১ হাজার ২৭৮ জন সাপের দংশনের শিকার হয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ১ হাজার ১৫৫ জন সুস্থ হয়। ১১৯ জনকে রেফার করা হয়েছে এবং চারজন মৃত্যুবরণ করে।
এই হিসাবের বাইরেও বহু মানুষ সাপের দংশনে আহত হয়ে কবিরাজ এবং ওঝার কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেয়। তাদের অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরে, আবার কারও কারও জীবনাবসান ঘটে সাপের বিষে নীল হয়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক জানান, সাপে কাটা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি উপজেলায় প্রশিক্ষিত চিকিৎসক আছেন। ভ্যাকসিন অ্যান্টিভেনমও রয়েছে। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ের কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসিইউ নেই। তাই ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের জেলা সদরে পাঠানো হয়। কারণ, রোগীর মৃত্যু হলে অনেকে চিকিৎসকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকে। চিকিৎসকেরা অনেকটা বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নেন না।
আনছের আলীর ভাতিজা ইমরান হোসেন বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় চাচা বংশাই নদে মাছ ধরতে যান। এ সময় বিষধর সাপ তাঁকে ছোবল দেয়। এ সময় তিনি সাপের দিকে টর্চলাইট ধরলে সাপটি আবার তাঁকে ছোবল দিতে আসে। তখন চাচা তাঁর হাতে থাকা ফছকা (মাঝ ধরার দেশীয় যন্ত্র) দিয়ে সাপ আটকান এবং পরে পিটিয়ে মেরে বাড়িতে আসেন। এরই মধ্যে চাচার অবস্থার অবনতি ঘটলে মধুপুর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে তাঁরা ওঝার কাছে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ওঝা আনোয়ার হোসেন বানুরগাছী মাদরাসার হেড মোহাদ্দিছ। তিনি তুলা রাশির লোকের সহযোগিতা নিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলেন। তাঁর ভাষ্য, প্রতিদিন তিনি দু-তিনজন সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা দেন। গত ৯ মাসে প্রায় ৮০০ সাপে কাটা রোগীকে চিকিৎসা করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ফরাজী মো. আজমল হোসেন বলেন, ‘সবার আগে আমাদের সচেতনতা প্রয়োজন। সাপে দংশন করলে সঙ্গে সঙ্গে ওঝার কাছে ছোটাছুটি না করে হাসপাতালে নিয়ে আসাই বাঞ্ছনীয়। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা দিতে পারলে রোগী অবশ্যই সুস্থ হয়ে ওঠে। মুমূর্ষু হয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করতেই হবে।’ তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে যন্ত্রপাতি আছে, কিন্তু আইসিইউ চালু নেই। ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জনবলের অভাবে আইসিইউ বন্ধ। আর ১২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন পর্যন্ত আইসিইউ স্থাপনের উদ্যোগ এখনো নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্
২৭ মার্চ ২০২৫ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পোড়াবাড়ি বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদ। দুই পারের মানুষের একমাত্র ভরসা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ একটি বেইলি সেতু। এর এক পাশে ত্রিশাল, অন্য পাশে ফুলবাড়িয়া উপজেলা।
২ ঘণ্টা আগেনিম্নমানের ইটের ওপরে কিছু ভালো ইট বিছিয়ে করা হচ্ছিল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের একটি রাস্তার কাজ। সংবাদকর্মীদের সামনে বিষয়টি ধরা পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কে।
২ ঘণ্টা আগেফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেফেনী প্রতিনিধি
ফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার আলা উদ্দিন পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকার মজিবুল হকের ছেলে। তিনি দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
জানা গেছে, ৫ অক্টোবর গভীর রাতে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনিয়া খুশিপুর এলাকায় দুই বাড়ি থেকে ছয়টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। এ ঘটনায় সর্বশেষ ২১ অক্টোবর দিবাগত রাতে পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকা থেকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আলা উদ্দিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে ভিন্নমতের রাজনীতি করার কারণে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হয়েছিলেন। ওই মামলাগুলোয় জামিনে আছেন। বর্তমানে প্রতিহিংসা করে তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’
দাগনভূঞা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যদি এ ঘটনা সত্য হয়, তাহলে তা দলের জন্য বিব্রতকর। ঘটনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে যদি তিনি জড়িত থাকেন, অবশ্যই তাঁর বিচার হোক। আইন সবার জন্য সমান। এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হবে।
এ ব্যাপারে দাগনভূঞা থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, গরু চুরির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দাগনভূঞা ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।
ফেনীতে গরু চুরির মামলায় দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার আলা উদ্দিন পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকার মজিবুল হকের ছেলে। তিনি দাগনভূঞা পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
জানা গেছে, ৫ অক্টোবর গভীর রাতে দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের সিলোনিয়া খুশিপুর এলাকায় দুই বাড়ি থেকে ছয়টি গরু চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র। এ ঘটনায় সর্বশেষ ২১ অক্টোবর দিবাগত রাতে পৌর এলাকার উত্তর শ্রীধরপুর এলাকা থেকে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলা উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আলা উদ্দিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি বিগত আওয়ামী সরকারের সময়ে ভিন্নমতের রাজনীতি করার কারণে বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হয়েছিলেন। ওই মামলাগুলোয় জামিনে আছেন। বর্তমানে প্রতিহিংসা করে তাঁকে ষড়যন্ত্রমূলক এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’
দাগনভূঞা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যদি এ ঘটনা সত্য হয়, তাহলে তা দলের জন্য বিব্রতকর। ঘটনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে যদি তিনি জড়িত থাকেন, অবশ্যই তাঁর বিচার হোক। আইন সবার জন্য সমান। এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের অবহিত করা হবে।
এ ব্যাপারে দাগনভূঞা থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়াহিদ পারভেজ বলেন, গরু চুরির মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দাগনভূঞা ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের নানা অঙ্গীকার এবং তৎপরতার পরও রাজধানীতে অপরাধের মাত্রা কমাতে দৃশ্যমান প্রভাব নেই; বিশেষ করে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য চরমে উঠেছে। চাঁদাবাজেরা এমনই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে আতঙ্ক ছড়াতে গুলি করে তার ভিডিও ধারণ করার ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে। পুলিশের কর্মর্কতারা বলছেন, পরিবর্
২৭ মার্চ ২০২৫ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার পোড়াবাড়ি বাজারের ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে খিরু নদ। দুই পারের মানুষের একমাত্র ভরসা এখনো ঝুঁকিপূর্ণ একটি বেইলি সেতু। এর এক পাশে ত্রিশাল, অন্য পাশে ফুলবাড়িয়া উপজেলা।
২ ঘণ্টা আগেনিম্নমানের ইটের ওপরে কিছু ভালো ইট বিছিয়ে করা হচ্ছিল চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের একটি রাস্তার কাজ। সংবাদকর্মীদের সামনে বিষয়টি ধরা পড়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন শ্রমিকদের ইট উঠিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার উপজেলার বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের সেকদি-চান্দ্রা সড়কে।
২ ঘণ্টা আগেসাপের দংশনে আহত হয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন উপজেলার পালবাড়ী গ্রামের আনছের আলী (৩৬)। তাঁর খিঁচুনি শুরু হওয়ায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু আনছের আলীর স্বজনেরা তাঁকে নিয়ে যান এলাকারই এক ওঝার কাছে। সেখানে গত সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
২ ঘণ্টা আগে