Ajker Patrika

খেয়া মাঝিকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, মামলা নেয়নি পুলিশ

মাদারীপুর প্রতিনিধি
খেয়া মাঝিকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, মামলা নেয়নি পুলিশ

খেলা মাঝিকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলেও মামলা নেয়নি মাদারীপুর সদর থানা-পুলিশ। দুই দিন আগে মাদারীপুর পৌর শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় সাইদুল মাল নামে এক খেয়া মাঝিকে বেদম মারধর করেন উঠতি বয়সী কিছু যুবক। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী মাঝি। তবে বুধবার দুপুরেও মামলা নথিভুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম মিঞা। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সী কয়েকজন যুবক লাঠি দিয়ে এক ব্যক্তিকে বেদম মারধর করছে। কিছু লোক তাদের ফেরানোও চেষ্টা করছেন। কিন্তু তারা তাঁদের কথা না শুনে লোকটাকে পেটাতে থাকে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে ১০ থেকে ১২ জন যুবক লঞ্চঘাট এলাকার দিয়ে আড়িয়াল খাঁ নদী পার হয়ে পাঁচখোলায় যাচ্ছিলেন। এ সময় নদী পারাপারের নৌকার মাঝি সাইদুল মালের খেয়ায় তারা পার হয়। প্রথম পারাপারের সময় তারা ফেরার পথে ভাড়া দেবে বলে চলে যায়। পরবর্তীতে কিছু সময় পরে ফিরে এসে আবার খেয়া নৌকায় পার হওয়ার সময় খেয়ার মাঝি ভাড়া দাবি করলে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে খেয়া মাঝি সাইদুল মালকে মারধর করে আহত করে কিশোরেরা। 

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে সদর থানায় কিশোরদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী মাঝি। তবে অজ্ঞাত কারণে দুই দিন গেলেও মামলাটি আমলে নেয়নি থানা-পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাঝি সাইদুল মাল। 

এ ব্যাপারে খেয়া মাঝি সাইদুল মাল বলেন, ‘আমি ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মাদারীপুর সদর থানায় বখাটের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করি। যেখানে আসামি করা হয় সদর উপজেলার পূর্ব রাস্তি এলাকার টিপু হাওলাদারের ছেলে সাজিদ হাওলাদার, সিরাজ বেপারীর ছেলে আকাশ বেপারী, সেন্টের ছেলে শামিম, সেলিমের ছেলে রবিন, আইয়ুবের ছেলে সরল, সুমনের ছেলে হাসান, সেলিমের ছেলে জুম্মন। এদের সবার বাড়ি সদর উপজেলার পূর্ব রাস্তি এলাকায়। এ ছাড়া অমিত ও আশিক নামের দুই জনসহ অজ্ঞাত আরও ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করা হয়। তবে কেন মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করছেন না, বিষয়টি বুঝছি না। এরা সবাই এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় হয়তো মামলা হচ্ছে না।’ 

এ ব্যাপারে খেয়া ঘাটের ইজারাদার আবদুর রশিদ গৌড়া বলেন, খেয়া দিয়ে পাঁচখোলা এলাকার চার থেকে পাঁচ হাজার লোক দৈনিক এপার-ওপার যাতায়াত করে। এলাকার গরিব জনগণের কথা চিন্তা করে আমরা ইজারাদার হিসেবে এ ঘাটের খেয়া নৌকার থেকে কোনো টাকা নেই না। যে কারণে এলাকার লোকজন মাত্র ৩ থেকে ৫ টাকা ভাড়া দিয়ে আড়িয়াল খাঁর মতো বড় একটি নদী পারাপার হতে পারছে। এরপরেও বহিরাগত এসব কিশোর যুবকেরা মাঝে মাঝেই ঘাটে এসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। 

লঞ্চঘাট ঘুরে স্থানীয় বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দোকানদারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আশপাশের কিছু বখাটে যুবক নিয়মিত লঞ্চঘাট এলাকায় এসে বাজে আড্ডায় লিপ্ত হয়। তারা ঢাকা থেকে আসা ঘাটে অবস্থান করা লঞ্চে উঠে আড্ডা দেয় এবং নেশা করে। লঞ্চ স্টাফরা কিছু বলতে সাহস পায় না। আর কিছু বললে তাঁদের গালাগালি করে। এই লঞ্চ ঘাটের দু শ গজের মধ্যে ১ নম্বর পুলিশ ফাড়ি। এলাকার লোকজনের দাবি প্রতিদিন অথবা দুই একদিনের ফাঁকে সকাল ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত যদি দুজন পুলিশ ফাঁড়ি থেকে এসে ঘাটে টহল দেয়। তাহলে এসব সন্ত্রাসীরা আর ঘাট এলাকায় এসে অপকর্ম করতে সাহস পাবে না। 

এ দিকে ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ওই সব যুবকেরা। তাদের বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। 

লঞ্চঘাট সংলগ্ন ১ নম্বর পুলিশ ফাড়ি ইনচার্জ এসআই মনির হোসেন বলেন, ‘ঘটনার পর পর সদর থানা থেকে অফিসার ও ফোর্স এসেছিল। এ ব্যাপারে খেয়া মাঝি থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আশা রাখি মামলা রেকর্ড হলে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার হবে।’ 

এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘আমি মঙ্গলবার থানায় ছিলাম না। সাইদুল মাল নামে কেউ অভিযোগ দিয়েছে কি'না, সেটা আমার জানা নেই। যদি অভিযোগ দিয়ে থাকে, তদন্ত করে মামলা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তেহরান ওপর থেকে সুন্দর, একদিন যেতে চাই: ইরানে বোমা ফেলা ইসরায়েলি পাইলট

ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছেন ট্রাম্প

জুলাই অভ্যুত্থান: নিজেদের মামলা তদন্তে ‘বেশি সতর্ক’ পুলিশ

সাইপ্রাসে বিপুল জমি কিনছে ইসরায়েলিরা, দেশ বেদখলের শঙ্কা রাজনীতিবিদদের

ট্রাম্পের প্রশংসায় পঞ্চমুখ এরদোয়ানও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত