Ajker Patrika

গাজীপুরের মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের ধীরগতি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈদযাত্রায় গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এতে স্টেশন এলাকাগুলোতে থেমে থেমে যানবাহন চলছে। তবে এখনো মহাসড়কের কোথাও কোনো তীব্র যানজট তৈরি হয়নি।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে আজ গাজীপুরের অবশিষ্ট ৫০ ভাগ পোশাক কারখানায় ছুটি হওয়ার কথা রয়েছে। এ কারণে বিকেলে যানবাহন ও যাত্রীদের এই চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিকেলের পর ঈদযাত্রায় চাপ বেশি থাকতে পারে বলে জানা গেছে। তখন যানজট হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহাসড়কে কাজ করছেন ৪ হাজার পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া কাজ করছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরা।

গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা দিয়ে ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন উত্তরাঞ্চলের কর্মজীবী মানুষ। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী এলাকা ও ভোগড়া বাইপাস থেকে সালনা তিন কিলোমিটার, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ও এর আশপাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকায় গত রাত থেকে যানবাহনের ধীরগতি লক্ষ করা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও স্টেশন এলাকাগুলোতে যাত্রী বাড়তে থাকায় এবং যানবাহনের ধীরগতির কারণে যাত্রীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, এবার তিন পর্বে পোশাক কারখানায় ঈদের ছুটি হচ্ছে। গেল মঙ্গলবার ১০ ভাগ, গতকাল বুধবার ৪০ ভাগ এবং আজ বৃহস্পতিবার ৫০ ভাগ কারখানায় ঈদের ছুটি হচ্ছে। বেশির ভাগ কারখানাতেই শ্রমিকেরা বাড়ি যাওয়ার জন্য আগে থেকেই নিজেদের পরিবহনের ব্যবস্থা রেখেছেন। যাঁরা গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেননি, তাঁরা স্টেশনগুলোতে দীর্ঘ সময় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে পর্যাপ্ত যানবাহন না পেয়ে খোলা ট্রাক, বাসের ছাদ, পিকআপ বা অন্য ছোট যানবাহনে করেই ঈদে বাড়ি যাচ্ছেন।

এদিকে পরিবহনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।

সালনা হাইওয়ে পুলিশের ওসি সওগাতুল আলম বলেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মহাসড়কে পুলিশ সদস্য ছাড়াও সেনা ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

গাজীপুর জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক জানান, এবারের ঈদযাত্রায় গাজীপুর জেলা পুলিশ মহাসড়কের তাদের অংশে প্রায় ৮০০ পুলিশ সদস্য নিয়ে যানজট নিরসন ও যাত্রী-চালকদের সেবায় কাজ করছেন। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈর চন্দ্রা এলাকায় ৫৯৭ জন পুলিশ সদস্য এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা এলাকায় ২০০ পুলিশ সদস্য কাজ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমিসহ অন্য সিনিয়র কর্মকর্তারা সরাসরি মহাসড়কে উপস্থিত থেকে যানজট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।’

ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ৪০০ পুলিশ সদস্য নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। জিএমপি কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান জানান, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অধীনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী পর্যন্ত দুটি মহাসড়কের যানজট নিরসন ও ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করতে কাজ করছে ট্রাফিক বিভাগ। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এ কাজে ভ্রাম্যমাণ আদালত যুক্ত রয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক করা। যাত্রীরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, তাঁরা যাতে নিরাপদে গাড়িতে উঠতে পারেন এবং বাসে যাতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে, সে জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত