Ajker Patrika

ছাত্রলীগের সূত্রাপুর থানা ও জবি শাখা কর্মীদের মারামারি, আহত ৪ 

জবি সংবাদদাতা 
আপডেট : ০২ জুন ২০২৪, ১৯: ০৪
ছাত্রলীগের সূত্রাপুর থানা ও জবি শাখা কর্মীদের মারামারি, আহত ৪ 

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে ও ন্যাশনাল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। 

এতে দুই গ্রুপের ২ জন করে ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জবি ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে প্রথম মারামারির সূত্রপাত ঘটে। এ সময় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মীরা রড, হাতুড়ি, ইট দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজির কর্মী মেহেদী হাসান মিরাজসহ তার বন্ধুদের মারধর করে গুরুতর আহত করে। এরপর তাঁদের ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে নেওয়া হলে সোহরাওয়ার্দী-সূত্রাপুর ছাত্রলীগের কয়েকজন হাসপাতালে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসেন। এ সময় খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি গ্রুপের ৩০-৪০ জন নেতা-কর্মী রড, লাঠি, জিআই পাইপ নিয়ে এসে তাদের ওপর হামলা করে। এতে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন গুরুতর আহত হন। 

পরবর্তীতে জবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় লাঠি সোঁটা নিয়ে শোডাউন দিয়ে বিপক্ষ গ্রুপকে খুঁজতে থাকে। এ সময় জবি ছাত্রলীগের ১৩ ব্যাচের চয়ন, ১৫ ব্যাচের সিফাত উল্লাহ, রহিম ও রাজাসহ অনেকে নেতৃত্ব দেয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একজনকে আটক করে থানায়ও নেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাতে জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন খবর পেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। 

এ বিষয়ে আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপের কর্মী ও অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, ‘আমি পুরান ঢাকার স্থানীয়। গতকাল রাতে জগন্নাথের ৫-৬ জন ও পুরান ঢাকার আরও ৫-৬ জন বন্ধুরা মিলে সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে আমরা আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় আমার বন্ধু আকাশের (বাবু বাজারে ব্যবসা করে) সঙ্গে পুরোনো শত্রুতার জের ধরে আমাদের ওপর হামলা করে। তাঁরা ৭-৮ জন হাতুড়ি ও রড দিয়ে হামলা করে।’ 

মিরাজ আরও বলেন, ‘এ সময় আমার কয়েকজন বন্ধু মার খেয়ে দৌড় দেয়। একা পেয়ে আমাকে ও আমার বন্ধু সাব্বিরকে (জুবিলি স্কুলে পড়ালেখা করেন) মেরে গুরুতর আহত করে। এরপর আমাকে ন্যাশনাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই গ্রুপের কয়েকজন হাসপাতালে আমাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে আসে। মনে করছে জগন্নাথের কেউ নেই। তবে খবর পেয়ে ফরাজী ভাইয়ের গ্রুপের আমার বড় ভাইরা আসে। তখন বিপক্ষ গ্রুপের সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন মার খেয়েছে।’ 

বিপক্ষ গ্রুপের পরিচয় জানতে চাইলে মিরাজ আরও বলেন, ‘তারা কেউ সোহরাওয়ার্দী ছাত্রলীগের, আবার কেউ সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের কর্মী। তাদের নেতা আজিম। আর আজিম সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিল্লালের রাজনীতি করে।’ 

জানা গেছে, আলী আজিম খাঁন সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। পড়ালেখা করেছেন সোহরাওয়ার্দী কলেজে। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে শান্ত নামে মেহেদীর এক বন্ধুকে থানায় আটক করেছে সূত্রাপুর থানা-পুলিশ। 

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজম খাঁন বলেন, ‘সিয়ামকে মারতে জগন্নাথের ৩০-৪০ জন আসে। আর এরা ছিল মাত্র ৩-৪ জন। তাদের হামলায় সিয়াম ও ফয়সাল নামে দুজন আহত হয়েছে। সিয়াম একটি কলেজে ও ফয়সাল লালবাগ কলেজে পড়ে। আমার সঙ্গে ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করে মাঝে মাঝে। এটা রাজনৈতিক ঘটনা না। বন্ধুদের ভেতর হাতাহাতি।’ 

সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কলেজের কেউ এ ঘটনায় জড়িত নয়। বহিরাগতরা কলেজের নাম ভাঙিয়ে ঘটনা ঘটায়। সিয়াম, ফয়সাল কলেজের কেউ নয়।’ 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আক্তার হোসেন বলেন, ‘গতকালের মারামারির ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নাই। জগন্নাথের যে ছেলে মার খেয়েছে, সে ছাত্রলীগের কোনো পদে নাই, কর্মীও নয়।’ 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জড়িত ছিল, অনেকে আহত হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে জবি ছাত্রলীগ না।’ 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ভেতর কোনো মারামারি হয়নি। জেনেছি এই ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ছিল। কোনো অপরাধকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্রয় দেয় না। পুলিশ প্রশাসন ঘটনা তদন্ত করছে। তাঁরা ব্যবস্থা নিবে।’ 

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনায় হাতাহাতি। আমরা ঘটনাস্থলে আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়েছি। এ ঘটনার তদন্ত চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাদির ওপর হামলাকারীরা সীমান্ত দিয়ে পালিয়েছে কি না—তা শতভাগ নিশ্চিত নয় বিজিবি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা
বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান । ছবি: আজকের পত্রিকা

বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সরকার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ঢাকায় শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি বর্ষণকারী ব্যক্তিরা ময়মনসিংহ সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়েছে কি না—তা এখনো শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

সোমবার ময়মনসিংহ নগরীর খাগডহর বিজিবি ক্যাম্পে তিনি আরও জানান, শুক্রবার ৯টার মধ্যে বিজিবি সদর দপ্তরের নির্দেশনায় সম্ভাব্য পাচারের রুটগুলো চিহ্নিত করে টহল এবং চেকপোস্ট বসানো হয় সীমান্তের অধিকাংশ স্থানে। পরদিন অর্থাৎ শনিবারে পুলিশ এবং বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। ঢাকা থেকে আগত পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডারের নিয়মিত যোগাযোগ এবং অপারেশন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আলোচনায় দুটি স্থানে একসঙ্গে অপারেশনের প্ল্যান করা হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে অবস্থানরত ফিলিপ স্নালকে আটকের পরিকল্পনা করা হয়। পুলিশের আরেকটি টিম হালুয়াঘাট এলাকায় অপারেশনের প্ল্যান করে। হালুয়াঘাটে অপারেশনের বিষয়ে বিজিবির সোর্স এবং অন্যান্য বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করেছে। অপর দিকে নালিতাবাড়ীর বারোমারি এলাকায় অপারেশন পরিচালিত হয় বিজিবির নেতৃত্বে এবং ঢাকা হতে আগত ও হালুয়াঘাট থানার পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ে। কিন্তু ফিলিপকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী ডেলটা চিরান, শ্বশুর ইয়ারসন রংডি এবং মানব পাচারকারী লুইস লেংমিঞ্জাকে আটক করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়।’

তাঁদের পরিবারের তিনজনসহ এ পর্যন্ত বিজিবি চারজনকে আটক করেছে। এঁদের মধ্যে সোমবার সকালে মানব পাচারকারী বেঞ্জামিন চিরামকে আটক করা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বরগুনায় স্বামীকে গলা টিপে হত্যা, স্ত্রী ও পরকীয়া প্রেমিক আটক

বরগুনা প্রতিনিধি
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত
আটক পরকীয়া প্রেমিক আলামিন। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জেরে এক প্রবাসফেরত স্বামীকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (৪৫)। তিনি উপজেলার রামনা ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের বাসিন্দা।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৩৫) ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক আলামিনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুল জলিলের নিজ বাড়িতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে একই এলাকার আবু খতিবের ছেলে আলামিন নিহতের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে নাজমা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রায় ১৫ দিন আগে প্রবাস থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন আব্দুল জলিল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার বিকেলে স্ত্রী ও ওই গৃহকর্মী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জলিলকে গলা টিপে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে বামনা থানায় নিয়ে যায়। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের স্ত্রী ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিককে তাৎক্ষণিকভাবে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা দুজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল সাময়িক বন্ধ থাকবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মেট্রোরেল চলাচল সাময়িক বন্ধ থাকবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় প্যারাজাম্প অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্যারাট্রুপারদের নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ডিএমটিসিএল ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর দুপুর ১১টা ৫০ মিনিট হতে ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত, অর্থাৎ মোট ৪০ মিনিটের জন্য মেট্রোরেল চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।

ডিএমটিসিএল সাময়িক অসুবিধার জন্য যাত্রীসাধারণের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। যাত্রীদের এই সময়সূচি মেনে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইডেনের সেই ছাত্রীকে বিয়ের ছয়মাস পর নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের চার্জশিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত
নোবেল। ছবি: সংগৃহীত

বাসায় আটকে রেখে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। গত ২৯ নভেম্বর ডেমরা থানার উপপরিদর্শক এসআই মুরাদ হোসেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) ইলামনি আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আগামী ২৮ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্রটি উপস্থাপন করা হবে। পরে এ সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।

নোবেলের আইনজীবী মোসতাক আহমেদ জানান, এই ধর্ষণ মামলার বাদীকে বিয়ে করেছেন নোবেল। তাঁরা সংসার করছেন।

গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ইডেন কলেজের ওই ছাত্রী। নোবেলকে গ্রেপ্তার করার পর কারাগারে পাঠানো হলে বিয়ের শর্তে তিনি জামিন পান। ১৯ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে নোবেল ওই ছাত্রীকে বিয়ে করেন।

এই মামলায় অভিযোগ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় নোবেলের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল তাঁর স্টুডিও দেখানোর কথা বলে ছাত্রীকে ডেমরার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আটকে রাখেন, মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নেন। এরপর ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। কথামতো না চললে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান।

অভিযোগে বলা হয়, ওই তরুণীকে ছয় মাস ধরে ডেমরার ওই বাসায় আটকে রাখা হয়, মারধর করা হতো প্রায়ই। দু-তিন জনের সহায়তায় বাদীকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন নোবেল। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়ালে বাদীর বাবা-মা তাঁকে চিনতে পারেন। এরপর পরিবার পুলিশের সহায়তায় তাঁকে ১৯ মে উদ্ধার করে এবং পুলিশ নোবেলকে গ্রেপ্তার করে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নোবেল বাদীকে আটক রেখে ধর্ষণ করেন এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন। বাসায় না থাকলে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নোবেল নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে তাঁকে মারপিট করেছেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাদীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামি নোবেল জামিনে আছেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে আরও বলেছেন, বাদীকে মারধর ও ধর্ষণে আসামিকে আরও কয়েকজন সহযোগিতা করেছেন। তবে তাঁদের নাম-ঠিকানা উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে তাঁদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা সম্ভব হলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

এখন কী হবে:

নোবেলের আইনজীবী বলেছেন, নোবেল মামলার বাদীকে বিয়ে করে সংসার করছেন। তাই এই অভিযোগপত্রে নোবেলের কোনো সমস্যা হবে না। বিচারিক ট্রাইব্যুনালে বাদী আপসনামা দেওয়ার পর মামলা নিষ্পত্তি হবে। খালাস পাবেন নোবেল।

উল্লেখ্য, ভারতের সংগীত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান ‘সা রে গা মা’ দিয়ে পরিচিতি পান এই গায়ক। এর আগে মাদকে আসক্ত হয়ে সংগীত ছেড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও শ্রোতাদের সামনে হাজির হন। সেবার নোবেল জানিয়েছিলেন, তিনি আর কখনো দর্শকদের হতাশ করবেন না। সব অতীত পেছনে ফেলে নিয়মিত গান উপহার দেবেন।

কিন্তু ২০২৩ সালে অগ্রিম টাকা নিয়ে গান গাইতে না যাওয়ায় প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় নোবেলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। জানা যায়, ওই বছর ১৬ মে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ হেডকোয়ার্টার পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০১৬-এর অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়ার প্রতারণায় অভিযোগে আটক হয়েছিলেন। সে সময় একদিন রিমান্ডেও ছিলেন এই গায়ক। পরে আপসের মাধ্যমে ওই মামলা থেকে অব্যাহতিও পান নোবেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত